ধোঁয়া ওঠা সন্ধ্যা || @shy-fox 10% beneficiary
এইতো কিছুদিন আগে আমি আর আমার খালাতো ভাই মিলে বেরিয়ে পড়েছিলাম , তেলে ভাজা খাবার খাওয়ার সন্ধানে । সব থেকে বড় ব্যাপার হচ্ছে আমাদের এলাকার যেখানে একদম পাইকারি বাজার আছে , তার পাশেই মূলত সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয়ে যায় স্ট্রিট ফুড বিক্রির জলসা ।
বলতে পারেন অনেকটা প্রতিযোগিতা চলে সেখানে স্ট্রিট ফুড বিক্রির । অনেক ধরনের খাবারের সমাহার সবগুলোই তেলে ভাজা খাবার আর এটা অনেকটাই মুখরোচক । কারণ এটার স্বাদ বেশ ভালই লাগে খেতে । আর এই সম্পর্কে আমার খুব একটা বেশি ধারণা ছিল না । মূলত আগ্রহ জন্মেছে আমার খালাতো ভাইয়ের মাধ্যমে । কারণ ও এই খাবারগুলো খেয়ে অভ্যস্ত এবং এবং এই জায়গাটায় বেশ ভালই কয়েকবার সে গিয়েছিল ।
সেদিন সন্ধ্যাবেলায় যখন আমার খুব একাকীত্ব সময় কাটছিল , তখন হুট করে ওকে ফোন দিয়ে বললাম রাজমতি মার্কেটের সামনে আয় । তোকে নিয়ে আজ সেই পাইকারি বাজারের ঐ খাবারের দোকানগুলোতে যাব । বেশ ইচ্ছে করছে সেই খাবারগুলো খাওয়ার । যেগুলোর কথা তুই আমাকে বলেছিল ।
আমার খালাতো ভাইয়ের অবশ্য বেশ ভালোই আগ্রহ আছে এই ব্যাপারগুলোতে । ও আমাকে সরাসরি বলেই ফেলল , ঠিক আছে তুমি জলদি বের হও। আমিও চেষ্টা করছি জলদি আসার জন্য । অতঃপর দুই ভাই মিলে রিক্সা নিয়ে আমাদের সেই পাইকারি বাজারের খাবারের দোকান গুলোর দিকে চলে গেলাম।
মিনিট দশেক পরে সেখানে পৌঁছে যাওয়ার পরপরই, অনেকটা জটলা পাকা লোকজনের ভিড় । বোঝাই যাচ্ছে যে , এখানে মূলত সবাই আমাদের মত ভোজন রসিক মানুষ এসেছে । যারা এক কথায় প্রচন্ড তেলে ভাজা খাবার খেতে পছন্দ করে ,ঠিক তারা । আসলে খাবারগুলো খেতেই সবাই এই সন্ধ্যাবেলা এই দোকানগুলোর কাছে ভিড় করে ।
যাইহোক রিক্সা থেকে নেমে মোটামুটি দুই ভাই মিলে একটু ঘুরে ফিরে দেখার চেষ্টা করলাম এবং কিছু কিছু খাবার দেখে দেখে রাখলাম এবং সেগুলোর দাম জানার চেষ্টা করলাম । তো যাইহোক মোটামুটি এবার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললাম, যেহেতু খুব স্বল্প পয়সায় খাবার গুলো পাওয়া যায়,তাই চেষ্টা করলাম প্রত্যেকটা দোকানের স্পেশাল খাবার গুলোর বিশেষত্ব জানার জন্য ।
বিশেষ খাবার বলতে যেগুলো বুঝানো হয়েছে, কোন দোকানের পিঁয়াজি, কোন দোকানের হালিম, কোন দোকানের চটপটি বা ফুচকা , কোন দোকানের ডিমের চপ বা ভেজিটেবল রোল আবার কোন দোকানের নুডুলস । অতঃপর যেমন সিদ্ধান্ত তেমন কাজ । এক এক করে প্রত্যেকটা দোকানে গিয়ে সেই দোকান মালিকের সঙ্গে কথা বলে , প্রত্যেকটা খাবার একটু স্পেশাল ভাবে বানিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলাম । যেহেতু একদম চোখের সামনেই সবকিছু ভাজা হচ্ছে এবং সেগুলো ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে, তাই ব্যাপার গুলো দেখে কিছুটা ভালই লাগলো ।
তবে এই খাবারগুলো কতটা স্বাস্থ্যকর , এই নিশ্চয়তা আমি দিতে পারছি না । তবে যারা ভোজন রসিক মানুষ আছে , তারা আসলে এত কিছু ভাবে না । আসলে চোখের সামনে যা পায় সেটাই চেষ্টা করে একটু স্বাদ নেওয়ার জন্য । অতঃপর এক এক করে শুরু হয়ে গেল আমাদের খাওয়া পর্ব । একবার এই দোকানে তো অন্যবার আরেক দোকানে । এভাবে চলতেই থাকলো, মোটামুটি ঘন্টা খানেকের মাঝেই আমরা সবগুলো দোকানের খাবার খেয়ে শেষ করলাম । তাও হাতে গুনে দেখলাম ৩০০ টাকার ভিতরেই সব খাওয়া দাওয়া শেষ । মানে ৩০০ টাকায় ভরপুর খাওয়া-দাওয়া হল ।
সত্যি বলতে কি সেদিনের সন্ধ্যাটা অন্যান্য দিনের থেকে সত্যিই আলাদা ছিল । আর সব থেকে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এমনিতেই প্রত্যেকটা খাবার তেলে ভাজা, সেই জন্য যেন পুরো এলাকায় একদম ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে । এক কথায় বলা যায় ধোঁয়া ওঠা সন্ধ্যা । তার ভিতরে আমি ও আমার খালাতো ভাই, দুজন মিলে চেষ্টা করছি প্রত্যেকটা খাবারের স্বাদ ভালোভাবে পড়খ করে নেওয়ার জন্য ।
এসব খাবারের আসলে মানসম্মত ব্যাপারগুলো নিয়ে আমি খুব একটা কিছু মন্তব্য করতে চাই না । কারণ এইসব ব্যাপারে টুকটাক ধারণা আপনারাও কম বেশি রাখেন । তাই মোটামুটি আমি যদি বলি, আমার দিক থেকে ভালোই লেগেছে । তবে কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত এটা বলতে পারব না । তবে পেট ভরেছে, মজা পেয়েছি এবং ভালো একটা সময় কেটেছে, এতোটুকুই তো আমার কাছে অনেক বেশি ।
তারপরেও বলতে চাই , যারা স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তি আছে তাদের এইরকম বাহিরের খাবার না খাওয়াই শ্রেয় । তবে যদি ভুল ক্রমে মাঝে মাঝে খেয়েও ফেলেন তাহলে খুব একটা সমস্যা নেই ।তারপরও বলবো আমি কাউকে ব্যক্তিগতভাবে চাপ দিচ্ছি না । যদি কারো মন চায় খেয়ে একটু দেখতে পারেন । একদম যে খুব খারাপ তাও না আবার একদম আহামরি ভালো সেটাও না । তবে মনের প্রশান্তি বড় প্রশান্তি ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
লোভনীয় সব খাবার দেখলে স্বাস্থ্য সচেতনতা আর থাকে না ভাইয়া। এত সব লোভনীয় খাবার গুলো দেখে একবার হলেও খেতে ইচ্ছে করে। বিকেল বেলায় যদি বাজারে যাওয়া হয় তাহলে মাঝে মাঝেই এই মজার খাবারগুলো খাওয়া হয়। সন্ধ্যাবেলায় ধোঁয়া ওঠা খাবারের স্বাদ এক অন্যরকম অনুভূতি তৈরি করে। দারুন কিছু অনুভূতি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন এজন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। ♥️♥️♥️
এইটা একদম ঠিক বলেছেন ভাই , আমার অবস্থাও তেমনটাই হয়েছিল। অবশেষে বেশ ভালোই খেয়েছিলাম দুই ভাই মিলে ।
তেলে ভাজা যে কোন খাবারের স্বাদ হয় দারুন আবার স্ট্রিট ফুডের দোকান গুলোতে এর দাম ও থাকে তুলনা মুলক কম । তাই এর স্বাদ নিতে গেলে পকেটের চিন্তা মাথায় না নিলেও চলে শুধু অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা না থাকলেই হলো ।
বর্ণনা কৃত সব খাবারের স্বাদই মোটামুটি গ্রহণ করার সুযোগ হয়েছে । শুধু নুডুলস এর আইটেমটা আমার কাছে নতুন মনে হলো । এভাবে কখনো খাওয়ার সুযোগ হয়নি ।
দাওয়াত দিলাম নুডুলস খাওয়ার। চলে আসেন একদিন দুই ভাই মিলে ঘোরাফেরা করবো আর খাবো ।
মুখরোচক তেলে ভাজা খাবার গুলো খেতে যেমন ভালো লাগে তেমনি অনেক সময় শরীরের জন্য অনেক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবুও আমরা বাঙালিরা বিভিন্ন রকমের তেলেভাজা খেতে ভালোবাসি। কারণ আমরা ভোজন রসিক বাঙালি। ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আপনার খাওয়া-দাওয়ার মুহূর্ত উপস্থাপন করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। তবে খাবারগুলো কিন্তু বেশ লোভনীয় ছিল। শুভকামনা রইল ভাইয়া।
ঐ যে বললাম খেতে পারেন , তবে আমি কাউকে জোর করবো না আপু । আসলেই লোভ সামাল দেওয়া কঠিন ।
এতো মানসম্মত কিনা তার দিকে নজর না দিয়ে খাবারের দিকে নজর দেওয়াটাই হলো মূল ব্যাপার।😜😜
ঠিক ঠিক । তাই খাবারের দিকেই মনোযোগী হয়েছি আপু । বেশ মজার ছিল খাবার গুলো ।
বগুড়া এসে খাবারগুলো এমনিতেই মিস করছিলাম,তার মধ্যে সেই খাবারগুলো নিয়েই লেখা😑।সহ্য করা যায়না তো!
এবার আসলে আবার যাবো ভাইয়া অন্য কোথাও। তুমি শুধু খোঁজ রাখো ।
ভাই আমরা বাঙালি স্বাস্থ্য অস্বাস্থ্যকর বলে কিছু বোঝিনা পেটে হজম হলে সবই স্বাস্থ্যকর আর পেটে হজম না হলে কোন কিছু স্বাস্থ্যকর নয়। এ ধরনের খাবারগুলা আমরাও খাই কিন্তু কোনদিন সমস্যা হয়নি। ধন্যবাদ ভাই আপনার লেখাটি পড়ে খুব ভালো লাগলো।
যুক্তিযুক্ত তাই আমিও ভরপুর খেয়ে ফেলেছি ভাই ।
আমি একদমই স্বাস্থ্য সচেতন না। বাইরে গেলে এরকম ভাজাপোড়া স্ট্রিট ফুড গুলো খেয়ে খেয়ে পেট ভরাই। পরে অবশ্য এসিডিটি সমস্যায় ভুগতে হয়। তবুও ভাজাপোড়া খাওয়া ছাড়ি না।
আপনি আর আপনার খালাতো ভাই মিলে ভাজাপোড়া খেতে খেতে খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আপনার আনন্দের মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
তবে আপু মাঝেমাঝেই স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া উচিত কিন্তু । এইটা সত্য আমার সময়টা বেশ ভালোই ছিল ।
তেলেভাজার সব ধরনের আইটেম গুলো দেখা যাচ্ছে আপনার ফটোগ্রাফির মধ্যে, খুবই ভালো লাগলো খালাতো ভাইয়ের সাথে চমৎকার একটি সন্ধ্যা কাটিয়েছেন। আমারও ভাজাপোড়া খেতে বেশ ভালো লাগে তবে অনেকদিন হলো বাহিরের খাবার খাওয়া হয়না।
বাহিরের খাওয়াতে আলাদা একটা মজা কাজ করে , তবে এইসব ক্ষেত্রে একটু সচেতন থাকা দরকার।
প্রত্যেকটা শহরে সন্ধ্যার পর এইরকম স্ট্রিট ফুডের মেলা বসে। আর আমাদের সমাজ ব্যবস্থাটাই এইরকম একজন কোন ব্যবসায় একটু ভালো করলে তার পাশে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। আমিও স্বাস্থ্যসম্মত হবে কিনা এ বিষয়ে চিন্তা করে খুব কম যাই। তবে মাঝে মাঝে গেলে ছোলা বুট ও পিয়াজি এই দুটোই বেশি খাওয়া হয়। যাইহোক ভাইয়া সন্ধ্যার পর আপনার খালাতো ভাইকে নিয়ে ভাজা পোড়া অনেক বেশি খেয়ে ফেলেছেন। এই ধরনের দোকানে ৩০০ টাকায় অনেক খাবার পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে খাওয়া দাওয়া সহ বেশ আনন্দঘন কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন। আপনার সেই মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
হুম ভাই এইটা সত্য তিনশো টাকায় ভরপুর খাওয়া দাওয়া । যা একদম অবিশ্বাস্য। সময়টা আসলেই ভালো ছিল।
সত্যিই প্রতিযোগিতা চলে ভাইয়া, স্ট্রিট ফুডের দোকানে ।এগুলো খেতে ভালো লাগে কিন্তু পরে সমস্যা হয়।আমি বাড়িতে তৈরি করে খাওয়ার চেষ্টা করি যতদূর সম্ভব।চাউমিন খুবই লোভনীয় ছিল, ধন্যবাদ আপনাকে।
চাউমিন আমারও খেতে ভালই লাগে আপু । ধন্যবাদ মতামত দেয়ার জন্য।