মনের আর্তনাদ

in আমার বাংলা ব্লগlast year

khichuri-g1ce4e0e44_1920.jpg
Source

ঘুম থেকে যখন উঠেছি তখন ঘড়িতে ঠিক সন্ধ্যে সাড়ে ছয়টা থেকে সাতটার মত বাজে। কোন রকমে উঠে ভাবলাম যে আমার চা খাওয়া বড্ড দরকার। কারণ যদি এখন চা না খেতে পারি, তাহলে রাতে কাজ করতে পারবো না।

এই বিকেল বেলা বা সন্ধ্যাবেলা করে চা খাওয়াটা আমার একপ্রকার নেশা। বিশেষ করে যারা আমার লেখা কমবেশি পড়ে, তারা জানে যে, ঐ চার রাস্তার মোড়ের চায়ের দোকানে সন্ধ্যাবেলায় গিয়ে দুটো খোশগল্প করে চা খাওয়া আর ছুটে চলা মানুষ দেখা আমার অনেকটা বদঅভ্যেস।

যত দ্রুত উঠেছি ঠিক তত দ্রুতই বাবুকে কোলে করে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লাম। বাহিরে গিয়ে দেখি ইতিমধ্যেই সন্ধ্যে হয়ে গিয়েছে। বারবার দমকা হাওয়া ও সঙ্গে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল। এ লক্ষণ মোটেও ভালো নয়। কারণ যে কোন সময় ভারী বর্ষণে এ শহর ভিজে যেতে পারে। যেমন ভাবনা, তেমন হলোও তা।

মোখলেস ভাইয়ের দোকানে পৌঁছতে না পৌঁছতেই, তীব্র বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। কখন যে এই বৃষ্টি থামবে, কে জানে তা। আর যে লক্ষণ তা মনে হয় না, সহজে এই বৃষ্টি থামবে । এমনিতেই বাপ বেটা মিলে চা খেতে বের হয়েছি তার ভিতরে এই অবস্থার শিকার আমরা। যাইহোক মোখলেস ভাইয়ের দোকানের ছাতার নিচেই দু বাপ-বেটা আমরা বসে গেলাম আর বৃষ্টি উপভোগ করছিলাম।

বৃষ্টির সঙ্গে বাতাসের যে ক্রমাগত বেগ,তা যেন কমে নি। শরীরে এসে দমকা বাতাস যখন ধাক্কা দিচ্ছিল, তাতে হালকা ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছিল। বাবুকে একটু জোরে বুকের মাঝে জড়িয়ে রেখে কিছুটা সময় বসে ছিলাম। তারপর যেই বৃষ্টিটা কমে গেল, অতঃপর মোখলেস ভাইয়ের মাধ্যমেই সেখানে চা নিয়ে আসার ব্যবস্থা করালাম। সবাই মিলে চা খেয়ে দ্রুত বাসার উদ্দেশ্যে ফেরত আসলাম। কারণ আবারও বৃষ্টি নামতে পারে, হয়তো এই আবহাওয়া তাই বলছে।

চা খেয়ে যখন বাসার উদ্দেশ্যে ফিরছিলাম তখন গলির ভিতরে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে পা পড়ে মোটামুটি কিছুটা প্যান্ট ভিজে গিয়েছে। নিচতলাতে এসে যখন পা পরিষ্কার করে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠছিলাম, তখন ভুনা খিচুড়ির
মাতোয়ারা গন্ধ যেন ক্রমাগত ছুটে আসছিল।

কার যে বাসায় রান্না হচ্ছে, কে জানে তা। আঠারোটা পরিবার থাকে এই বাসায়। কতগুলো মানুষ এই পুরো ভবনে। কার বাসায় কি রান্না হয়, তা তো বলা মুশকিল। তবে গন্ধ তো আর ঘরে আটকিয়ে রাখা যায় না, গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে এদিক-সেদিক আর আমার মত মানুষ যখন সিঁড়ি দিয়ে উঠানামা করে, তখন ছড়িয়ে পড়া গন্ধে যেন আরও অভুক্ত হয়ে যায়।

এমন বর্ষণমুখর বেলায় এরকম ভুনা খিচুড়ির তীব্র গন্ধ যখন নাকের সামনে ঘুরপাক করে, তখন আসলে নিজেকে সামলিয়ে রাখা অনেকটাই কঠিন হয়ে যায়। আমার মনে যে আর্তনাদ বেড়ে গিয়েছে, তা হয়তো আমার বুঝতে বাকি নেই। হয়তো ঐ ভুনা খিচুড়ি খাওয়ার লোভে,আমি অনেকটাই লোভী হয়ে গিয়েছি ।

Banner-15.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 last year 

বর্তমান সময়ে বৈরী আবহাওয়া বড্ড ভয়ঙ্কর। যখন তখন বজ্রপাত তার ভয়ঙ্কর রূপ দেখিয়ে সবাইকে ভয় দেখিয়ে যায়। গতকাল রাতে আমি বজ্রপাতের ভয়ঙ্কর রূপ দেখে সত্যিই ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তাই ভাইয়া বৃষ্টির সময় বাইরে বের না হওয়াই উচিত।। তার উপরে আবার ছোট্ট শায়ান বাবুও ছিল আপনার সাথে। যাই হোক ভাইয়া, বৃষ্টিভেজা দিনে বাপ বেটা মিলে চা খেয়ে সুন্দর মুহূর্ত পার করেছেন তা আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম। আর হ্যাঁ, বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খেতে আমারও বড্ড লোভ লাগে। তাই বৃষ্টি শুরু হলে আমিও বাসায় ভুনা খিচুড়ি তৈরি করতে বলি। আর যদি বাড়ির পাশে কেউ খিচুড়ি রান্নার শুঘ্রাণ ছড়িয়ে দেয়, তাহলেতো সে লোভ সংবরণ করা বড়ই মুশকিল। ভাইয়া, আপনার জায়গায় আমি থাকলে হয়তো বা আমারও একই অবস্থা হতো।

 last year 

আপনার ব্যাপারটা জেনে খুশি হলাম ভাই, তাই মানে খাবারের প্রতি সকলেরই কমবেশি দুর্বলতা আছে।

 last year 

কিন্তু আমার প্রশ্ন হল ভাইয়া সেই বিখ্যাত ভুনা খিচুড়িটি কার বাসায় রান্না হলো? আমি তো যতদূর জানি দুতলা তিনতলা চারতলায় যে ফ্লাটি বলি না কেন আপনারা তো সবাই এক। নক করে এক নক করে একটি বাসায় ঢুকে গেলে হতো, তাহলে তার মনের এতো আর্তনাদ থাকত না। তবে ভাই আপনার মত আমারও কিন্তু বেশ চা খাওয়ার নেশা ছিল।

 last year 

আপু, আপনি যাদের কথা চিন্তা করেছেন, তাদের কারো বাসায় হলে, অবশ্যই তারা আমাকে ডাকতো অন্তত এই বিশ্বাসটুকু তাদের প্রতি আমার আছে।

 last year 

বর্ষণমুখর বেলায় ভুনা খিচুড়ির তীব্র গন্ধ নাকে এলে নিজেকে সামলানো ভীষণ মুশকিল। যাইহোক ভাইয়া এই সময় হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টি চলে আসে। আকাশ কখন খারাপ হয়ে যায় বোঝাই যায় না। তবে যাই হোক অবশেষে বাবুকে নিয়ে নিরাপদে বাসায় ফিরতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো।

 last year 

বাসায় নিরাপদেই ফিরতে পেরেছিলাম, তবে খিচুড়ির গন্ধ আমাকে লোভী বানিয়ে ফেলেছিল।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.031
BTC 58836.39
ETH 2494.30
USDT 1.00
SBD 2.44