নিজে হাতেই কাজ সারলাম || @shy-fox 10% beneficiary
আমার এখনো ভালোভাবে মনে আছে । আমি হীরার প্রথম টিকা দেওয়ার ঘটনা শেয়ার করেছিলাম । আজ দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়ার ঘটনা শেয়ার করব । তবে আজকের ঘটনাটা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম । বাবার অফিসে অবশ্য খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া আমার যাওয়া হয়না । শেষ যেবার গিয়েছিলাম মূলত টিকা দেওয়াকেই কেন্দ্র করে । আবারো ৩২ দিন পরে এবার গেলাম সেই টিকা দেওয়াকেই কেন্দ্র করে ।
যেহেতু সামনে ঈদে আসছে, তাই মূলত এবার একটু বাবার জন্য গিফট কিনে নিয়ে গিয়েছিলাম । তেমন কিছু না, শুধুমাত্র একটা শার্টের পিস আর প্যান্টের পিস কিনে নিয়ে গিয়েছিলাম । যেহেতু দাদুভাইয়ের অফিসে শায়ান যাচ্ছে আর দীর্ঘদিন পরে । তাই মূলত এ যাত্রায় শায়ানের মাধ্যমে তার দাদুভাইকে উপহার দেওয়া হয়েছিল ।
আব্বু আমার কাছ থেকে তেমন কিছু নিতে চায় না । তবে এবার যেহেতু শায়ানের হাত দিয়ে দিয়েছি, তাই সেটা আর প্রত্যাখ্যান করেনি । সেটা সাদরেই গ্রহণ করেছে । ব্যাপারটা আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে । নিজের কষ্টের পরিশ্রমের পয়সায় বাবার জন্য জিনিস কিনেছি আর বাবা সেটা গ্রহণ করেছে , এর থেকে আর বেশি তৃপ্তি আমি মনে করি অন্য কিছু হতে পারে না ।
তবে এবারের টিকা দেওয়ার ঘটনাটি বেশ অন্যরকম ছিল হীরা এবং আমার কাছে । যেহেতু দ্বিতীয় ডোজের গণ টিকা চলছে। তাই ব্যাপারটি একটু অন্যরকম ছিল । মূলত প্রথমবারের ডোজজ ভালোভাবেই দিতে পেরেছিলাম , আমাদের এক পরিচিত নার্সের সহযোগিতায় । কিন্তু এবার অবস্থা আরো শোচনীয় । কারণ এমনিতেই হসপিটালে স্টাফ খুবই সংকট । তার মধ্যে গণ টিকার দ্বিতীয় ডোজ চলছে । সর্বোপরি অবস্থা বেগতিক ।
আমরা যেহেতু বাসা থেকে বের হয়ে মূলত প্রথমে বাবার জন্য মার্কেটে গিয়েছিলাম কেনাকাটা করতে । তারপরে হসপিটাল ক্যাম্পাসে পৌঁছতে পৌঁছতে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে । গিয়ে দেখি সে কি লম্বা লাইন , লোকে-লোকারণ এবং বাবার সঙ্গে যখন কথা বললাম । তখন বাবা আমাকে বললো, তুমি এমন দিনে এসেছো । যখন আমাদের নিজেদেরই স্টাফ শর্ট। যাইহোক তুমি কার্ডটা নিয়ে টিকাকেন্দ্রের রুমে যাও এবং গিয়ে তোমার পরিচয় দিয়ে, ব্যাপারটা নিয়ে ভালোভাবে কথা বলে একটা ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করে, তুমি নিজেই হীরাকে পুশ করে দাও ।
যেহেতু বিগত সময় আমি একটা কথা বলেছিলাম। কারণ এই হসপিটালে আমি দীর্ঘ প্রায় দুই বছরের মতো অনারারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। তাই কিছু পরিচিত স্টাফের সঙ্গে আমার আগে থেকেই পরিচয় আছে । অতঃপর তাদেরকে ব্যাপারটা বলে টিকার কার্ড ভালোভাবে দেখিয়ে, একটা ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করে নিলাম ।
এমনিতেই সেইরকম তীব্র গরম । তার মধ্যে লোকে-লোকারণ্য টিকাকেন্দ্রের রুমের ভিতরে ঢুকতে আর বের হতে হতেই আমার পুরো শরীর ঘেমে শেষ । যাইহোক অতঃপর ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে নিয়ে বাবার রুমে আবার চলে আসলাম । হীরাকে বললাম মানসিকভাবে প্রস্তুতি নাও । এবারের ভ্যাকসিন আমি তোমাকে পুশ করে দেব ।
যদিও তার প্রথমবার দিয়ে সাহস হয়েছে কিন্তু আমার হাতে দেবে জেনে , প্রথমে কিছুটা অস্বস্তি বোধ করছিল । তবে আমি তাকে অভয় দিয়ে বললাম, তোমার থেকেও বেশি মানসিক চিন্তা আমার হচ্ছে । কারণ আমি তোমাকে টিকা দিয়ে দিচ্ছি এটা ভেবে । যাইহোক তুমি চিন্তামুক্ত থাকো, তেমন কিছুই হবে না । আমি তোমাকে বুঝতেই দেব না, কিভাবে তোমাকে পুশ করে দেবো ।
অবশেষে শায়ানকে তার দাদুর কোলে দিয়ে । হীরাকে যখন আমি পুশ করতে যাব, হীরা তখন একটু ভয় পাচ্ছিল এবং বলছিল না না তুমি করোনা , ব্যাপার গুলো কেমন লাগছে আমার কাছে । এই ব্যাপার গুলো দেখে শায়ান কিছুটা কেঁদে ফেলেছিল। যাইহোক আমি হুট করে দ্রুত পুশ করে দিয়েছি হীরা বুঝে ওঠার আগেই ।
যাইহোক বাবা অবশেষে বাঁচা গেল । আর দ্বিতীয় ডোজটা সম্পন্ন হলো । এখন অপেক্ষা তৃতীয় ডোজের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। আর আজকে সকালবেলাটা ঠিক এরকম একটা ব্যস্ততম সময়ের ভিতর দিয়েই গিয়েছে আমাদের । তবে তাও ভালোইভালোই হীরাকে এত ঝামেলার মাঝেও দ্বিতীয় ডোজটা ভালো ভাবে দিতে পেরেছি, এটাই ভেবে বেশ ভালো লাগছে ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
নিজের কষ্টে উপার্জিত বা পরিশ্রমে অর্জিত টাকা থেকে বাবা-মাকে কোন কিছু উপহার দিলে খুবই ভালো লাগে। আসলে এর মাঝে কি যে পরিতৃপ্তি আছে তা অন্য কাউকে বলে বোঝানো যায় না। খুবই ভালো লাগলো বিষয়টি। তবে যাই হোক হিরা মনি আপুর দ্বিতীয় ডোজ করোনা টিকা দেওয়া শেষ হয়েছে এবং সে আপনার হাতেই টিকা দিয়েছে জেনে ভালো লাগলো। আপনার পরিবারের সকলের জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া।
এইটা একদম ঠিক কথা বলেছেন আপু । এই অনুভূতি একটু ভিন্ন রকম ছিল। শুভেচ্ছা রইল।
আপনার বাবার জন্য শার্টের পিস নিয়ে গেছেন জেনে ভালো লাগলো। আর শায়ান তার নিজ হাতে তার দাদুকে গিফট করেছে না নিয়ে উপায় আছে?
আর আপনি নিজেই ভাবীকে ইঞ্জেকশন পুষ করেছেন দেখে ভালোই লাগলো। তবে আমার কাছে এই ইঞ্জেকশন একদমই ভয় লাগে না। আমার মনে হয় আমি নিজেরটা নিজেই দিতে পারতাম। 😁
আসলেই তাই কারণ টিকার ইঞ্জেকশন গুলো অন্যান্য গুলোর থেকে অনেক হালকা ও চিকন নিডিলের হয় ।
ধীরে ধীরে শায়ানবাবু অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে। সামনে ঈদ ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে অনেক কেনাকাটা করা হয় বিশেষ করে আত্মীয় স্বজনের জন্য বাবা-মায়ের জন্য ।আর সেই কেনা টা যদি নিজের উপার্জনের টাকা হয় এবং তা দিয়ে বাবা-মাকে দেওয়া হয় যে প্রশান্তি পাওয়া যায় তাহলে টাকা দিয়ে পাওয়া যাবে না। বাবা মারা সাধারণত সন্তানের ইনকামের প্রত্যাশা কখনো করে না কিন্তু সেই সন্তান যখন খুশি করে তার হাতে কিছু দেয় তখন তার ভেতরে যে প্রশান্তির ছাপ দেখা যায় তা আসলে কল্পনা করা যায় না। সায়ান বাবুর হাতে আপনি আপনার বাবাকে গিফট দিয়েছেন তিনি যে কত খুশি হয়েছে হয়তো আপনারা ভালো জানেন। অন্যদিকে দ্বিতীয় ডোজের টিকার অভিজ্ঞতা আপনি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন বিশেষ করে আপুকে যখন আপনি নিজেই টিকা দিয়েছেন এত ভিড়ের মধ্যে সংকটের মধ্যে অত্যন্ত ভালো হয়েছে বলে আমি মনে করছি ।সেই সাথে তিনিও আপনার থেকে টিকা নেওয়ার ফলে আশ্বস্ত হয়েছেন আমরা সাধারণত অনেক সময়ই বলে থাকি নার্সদের থেকে টিকা নিলে টিকা দিল কিনা বুঝতে পারলাম না এমন ভাবে বলি। তবে যাই হোক সবার আগে নিজেই সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে তাহলে সবাই সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারব। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমিও গতকাল গিয়েছিলাম বুস্টার ডোজ নেওয়ার জন্য। কিন্তু এত ভিড় ছিল আর টিকারো স্বল্পতা ছিল, তাই টিকা না দিয়েই চলে এসেছি। খুব ভালো লাগলো আপুকে টিকা আপনি নিজের হাতে দিয়েছেন বিষয়টি দেখে।শুভকামনা রইল আপনাদের জন্য।
দেখেন অন্য দিন ভিড় কমলে নিয়ে নিতে পারেন । যেহেতু সুযোগ আছে তাই একটু ধৈর্য্য ধরে টিকা গ্রহণ করাই শ্রেয় আপু ।
সেজন্যই তো ভাইয়া জোরাজুরি না করে চলে এসেছি। পরে যাতে ধীরেসুস্থে নেয়া যায়। তাছাড়া বাচ্চাদের সাথে করে নিয়ে গিয়েছিলাম বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকাও সম্ভব ছিল না।
আসলে প্রতিটি ডাক্তারকেই দেখেছি এই ব্যাপারটি।যতোই ভালো,বড় ডাক্তার হোক না কেনো নিজের পরিবারের কালো শরীরে একটি ইঞ্জেকশন পুষ করতেও চিন্তিত বোধ করে।হয়তো ভালোবাসা থেকেই এমনটা হয়,পরিবারের কষ্ট দেখতে না পারা হয়তো এটা।
ঠিক তাই আপু । একদম মনের কথাটাই বলেছেন আপু । তবে আমি ভালো ভাবেই দিতে সক্ষম হয়েছি ।
আসলেই নিজের কষ্ট অর্জিত টাকায় বাবাকে উপহার দেওয়ার জন্য অন্য রকম একটা প্রশান্তি কাজ করে নিজের মনের মধ্যে। আপনার বাবার প্রতি ভালোবাসা চির জীবন অটুট থাক। আর ভাবির রিয়াকশন দেখেই বোঝা যাচ্ছে বেশ ভয়ে ছিলেন।😁
এইটা সত্য যে ব্যাপারটা কিছুটা আবেগপ্রবণ ছিল। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
সামনে যেহেতু ঈদ চলে আসছে তাই আগে থেকেই আপনার বাবাকে গিফট কিনে দিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া। সেই সাথে ভালো লাগলো আপনি অনেকটা ঝামেলা ছাড়াই ভাবির সেকেন্ড ডোজের ভ্যাকসিন দেওয়া কমপ্লিট করলেন। আসলে বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে প্রচন্ড ভিড়। তারপরেও যে আপনারা খুব সহজেই এই কাজটি সম্পন্ন করতে পেরেছেন এটাই অনেক বেশি। ভালো লাগলো আপনি নিজেই আপনার প্রিয় মানুষটিকে করোনা টিকা দিলেন। ভাইয়া আপনি সব দিকেই বেশ পারদর্শী। সেজন্য আপনাকে অনেক ভালো লাগে আমার। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া। 💗💗💗💗💗
চেষ্টা করি ভাই সব দিকেই একটু নিজেকে একটিভ রাখার জন্য। কখন কোন কাজে লেগে যেতে হয় এই জন্য।
বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতামত এর মধ্যে আমিও ভিন্ন ধরনের মতামত নিয়ে হাজির হয়েছি আপনার এই কমেন্ট বক্সের মধ্যে ।
আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে বিভিন্ন পেশার বিভিন্ন রকমের মানুষ রয়েছে। তবে এই জেনে ভালো লাগছে যে আমাদের মধ্যে একজন ডাক্তার ভাই রয়েছেন। জিনিয়াস বাংলা ব্লগ কমিউনিটির অন্যরকম প্রাণ বললেই চলে,আবার উনি নিজেই পরিবারের জন্য এবং অন্যান্যদের জন্য সেবামূলক কাজে নিয়োজিত সত্যিই প্রশংসনীয়। শুধু প্রশংসনীয় আপনার পরিবারের জন্য নয়, আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের জন্য।
আমি কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করছি এবং অনুপ্রাণিত হয়ছি ,আপনার মন্তব্যে ।
আপনার উপরের কথা গুলো পরে ভিশন ভালো লাগলো। আপনি ঠিক বলেন নিজের কষ্ঠের টাকায় বাবার জন্য কাপড় কেনার একটা আলাদা আনন্দ লুকিয়ে থাকে। ভাবির জন্য দোয়া রইল টিকা নেয়ার পরে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন ইনশাআল্লাহ।
আসলেই ঐটার একটা অন্যরকম আত্মতৃপ্তি থাকে । ব্যাপারটা একটু আবেগপ্রবণ।
যাক ভাই অবশেষে দ্বিতীয় ডোজ ও সম্পন্ন করলেন। আসলে এ টিকা সম্পূর্ণ করলে চিন্তা থেকে বাচা যায়। তবে আপনি যে হিরা আপুর আপুর টিকা নিজেই দিয়েছেন এটা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আর আপনার বাবার জন্য যে গিফট নিয়ে গিয়েছিলেন এটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই এই মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ওতো প্রথমে একটু অস্থিরতায় ভুগছিল ,তবে ব্যাপারটা আমি নিজেই সহজ করে নিয়েছি ।