উদ্দেশ্যহীন ঘোরাঘুরি
কিছু সময় একান্তই নিজের, অনেকটা ব্যক্তিগত। যেখানে হয়তো নিজের ভালো থাকার জন্যই, নিজেকে কিছুটা হলেও সময় দেওয়া দরকার। তবে পরিবার-পরিজন, পারিপার্শ্বিক চাপ সামলিয়ে নিজেকে দেওয়ার মতো করে সময় যেন হয়েই ওঠেনা।
আজ অনেকটা উদ্দেশ্যহীন ভাবেই ঘোরাঘুরি হয়েছে আমাদের তিন বন্ধুর। হয়তো আমরা তিনজনই মুখিয়ে ছিলাম এমন সময়ের জন্য। প্রতিনিয়তই দেখা যায় পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজনদেরকে সময় দিতে গিয়ে, নিজেদের যে কিছুটা চাওয়া পাওয়া থাকে, সেটা হয়তো অনেকটা অপূর্ণতাই থেকে যায়।
পলকের সাম্প্রতিক সময়ে নতুন চাকরি হয়েছে। সে নামকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক পদে যুক্ত হয়েছে আর ফুয়াদ অনেকটাই ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করে নিজেদের পারিবারিক ব্যবসা দেখাশোনা করে। বলা যায়, স্কুল বা কলেজ জীবনে আমরা যে সময় গুলো কাটিয়েছি, সেটা অনেকটাই এখন ফিকে হয়ে গিয়েছে আমাদের কাছে ।
আর আমার ব্যস্ততার কথা নাইবা বললাম, সবমিলিয়ে নিজেদের ভিতরে সাক্ষাৎকার করা যেন অনেকটাই দুরূহ হয়ে গিয়েছিল। এই বয়সেই যদি এই অবস্থা হয়, আর তো দিন পরেই আছে। তখন যে কি হবে, তা বলা মুশকিল। পলক স্বল্প সময়ের ছুটিতে এসেছে, আগামীকালই ফিরে যাবে। তারপরেও ও পারিবারিক ব্যস্ততা কাটিয়ে, গতকাল মুঠোফোনে জানিয়েছিল, আজ যে করেই হোক বিকেল বেলা বাহিরে বের হবে, অনেকটা এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়ানোর জন্য।
ওদিক থেকে ফুয়াদ বেশ ভালই সাড়া দিয়েছিল। তবে আমি চিন্তিত ছিলাম নিজেকে নিয়ে, কারণ বাবুকে রেখে বাসার বাহিরে এক কদম পা ফেলানো আমার জন্য যেন, এক প্রকার চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়েছিল। তাও বিকেল বেলার ঠিক আগ মুহূর্তে বাবু যখন ঘুমিয়ে ছিল, তখন খুবই সতর্কতার সঙ্গে দরজা খুলে, কোন রকমে বাহিরে বের হয়েছি, যাতে বাবু ভুলেও টের না পায়।
অবশেষে গন্তব্য প্রথমত পলকের বাসার উদ্দেশ্যে, মুঠো ফোনে জানিয়ে দিলাম একাই বের হতে পেরেছি, এখন নিজে তাড়াতাড়ি বের হয়ে আমাকে রক্ষা করো। ওদিক থেকে ফুয়াদ আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সায় চেপে তিন বন্ধু শহরের বাহিরে চলে গিয়েছিলাম কোলাহলমুক্ত পরিবেশে।
কত গল্প জমে আছে, মুহূর্তেই যখন কথা শুরু হয়ে গিয়েছিল তখন যেন কথা থামছিলই না। আশেপাশে কি চলছে, কি হচ্ছে এসব ভাবার সময় কই। অনেকটা নিজেদের ভিতরে কথা বলে প্রশান্তির যেন ঢেকুর তুলছিলাম। আমাদের তিন বন্ধুর কথোপকথন দেখে, রিক্সাওয়ালা ভদ্রলোক কিছুটা ভেবাচ্যাকা খেয়েছিল। বারবার বলছিল, ভাই আপনারা কোন দিকে যাবেন, কোথায় থামবেন। অতঃপর একপ্রকার তাকে তো বাধ্য হয়ে বলেই ফেললাম, আপনার দুচোখ যেদিকে যায় আমাদের কে সেদিকে নিয়ে যান। আমরা আজ অনেকটাই মুক্ত নিজের কাছে।
ভদ্রলোক কোথায় নিয়ে যাচ্ছিল, তা নিয়ে আমাদের মোটেও মাথাব্যথা ছিল না। আমরা তো মশগুল ছিলাম আমাদের আলাপে, সত্যিই অনেকটা দিন পরে নিজের মতো করে সময়টা কাটালাম। চমৎকার একটা বিকেল ছিল। এমন সময় আবার কবে আসবে, তা বলা মুশকিল। তবে ঘুরেফিরে কালে ভদ্রে যদি এমন সময় পাওয়া যায়, তাহলে জীবনে বেঁচে থাকার পরিপূর্ণতা যেন আরেকটু বৃদ্ধি পায়।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1695732996425551914?t=_b6CGRayOxJibnp36dDudQ&s=19
যাক একটি দিন তাহলে বাবুকে ছাড়া বের হতে পারলেন। বাবা, যে বাবা ভ্ক্ত ছেলেরে। তবে আপনাদের তিন বন্ধুকে দেখে আর আপনার গল্প পড়ে আমি নিজেও কিন্তু ভ্যাবাচিকা খেয়ে যাচিছলাম। তাহলে রিকশা ওয়ালা বেচারার কি দোষ। তা যাই হোক সব মিলিয়ে বেশ ভালোই যে একটি সময় পার করেছেন তা আপনাদের কে দেখেই বুঝা যাচেছ।
এটা সত্য, আমাদের তিন বন্ধুর বেশ ভালোই সময় কেটেছিল।
অও,রাস্তাটি তো খুবই সুন্দর।এমন নিরিবিলি রাস্তায় সারাদিন চললেও যেন ক্লান্তিবোধ হয় না।ব্যস্ততাকে দূরে সরিয়ে রেখে বন্ধুদের সঙ্গে দারুণ সময় পার করেছেন ভাইয়া।এমন দিনগুলো যেন স্মরণীয় হয়ে থাকে মনে, ভালো লাগলো আপনার বন্ধুদের সম্পর্কে জেনে।ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপু আমার অনুভূতি বুঝতে পেরে মন্তব্য করার জন্য।
বন্ধুরা মিলে এভাবে ঘুরতে গেলে ভালোই লাগে।আর বেশিরভাগ তিন বন্ধুই থাকে ঘুরতে যাওয়ার সময়।আমাদের এটা হতো,আপনারাও তিনজন ঘুরেছেন।বন্ধুত্বের টানেই হাজার ব্যস্ততার মাঝে আপনার বন্ধু পলক এসেছিলেন কাজের স্থলে যাবার পূর্বে একটু আড্ডা দিতে।এটাই আসলে বন্ধুত্ত্ব।ভালো লেগেছে ভাইয়া পোস্টটি।মাঝে মাঝে উদ্দেশ্যহীন ঘুরতে আসলে ভালোই লাগে।ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
ব্যস্ততা! এই ব্যস্ততার জন্যই বন্ধুত্ব্বের সম্পর্কে অনেক দূরত্ব তৈরি হয়! আগের মতো জমিয়ে আড্ডা দেয়া হয় না, প্রাণখুলে কথাও বলা হয়না! তবে বন্ধুত্বটা কিন্তু ঠিকই রয়ে যায়। সেটা রয়েও যাবে আজীবন। শত ব্যস্ততার পরেও তিন বন্ধুর কিছুটা সময় তো কাটানো বিকাল বেলায়, প্রাণখুলে হাসা হলো! এটাই বা কম কিসের! বেচেঁ থাকুক বন্ধুত্ব 🌼
আসলেই ভাই পারিবারিক চাপে নিজের জন্য সময় বের করা বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে দিনদিন। তবে নিজেকে সময় দেওয়াটাও বেশ জরুরী। যাইহোক অনেকদিন পর তিন বন্ধু মিলে দারুণ একটি বিকেল পার করলেন। অনেক দিন পর বন্ধুদের সাথে দেখা হলে কথা যেন শেষ হতে চায় না। আপনাদের ক্ষেত্রেও তেমনটা ঘটেছে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
দীর্ঘদিন পরে যখন প্রিয় বন্ধুরা এক হয় তখন যা হয় আরকি। তিনজন উদ্দেশ্যহীন ভাবেই ঘুরাঘুরি করেছেন। মনের অনেক জমানো কথা শেয়ার করলেন। আগের কাটানো স্মৃতি গুলো যেমন ভুলা যায় না। ঠিক তেমনি আজকের স্মৃতি গুলোও ভুলার নয়। ধন্যবাদ।