প্রত্যাশা পূর্ণ হোক
প্রত্যাশা আর হতাশা ব্যাপারটা মনেহয় একে অপরের পরিপূরক, আমার কাছে তেমনটাই মনে হয়। ধরুন আপনি যে কোন একটা বিষয় নিয়ে প্রত্যাশা করে আছেন, তবে সেটা যদি মনমতো না হয় তখনই কিন্তু হতাশা ব্যাপারটা কাজ করে।
বিলের অনেকটা অংশ জুড়ে, জলিল মিয়া দীর্ঘ সময় থেকে খুব যত্ন সহকারে করে মাছ চাষ করে আসছে। কারণ এবার যেহেতু বৈশাখী মেলা আর ঈদ উৎসব দুটোই একসঙ্গে পালিত হতে যাচ্ছে তাই মোটামুটি জলিল মিয়ার চিন্তা ছিল, বিল থেকে মাছ তুলে হাটে বিক্রি করবে।
তাছাড়া এটা নিতান্তই স্বাভাবিক যে, এসময় অবশ্যই প্রত্যাশার পরিমাণটা বেশি কাজ করে। কারণ যেহেতু দুটো উৎসব একদম একসঙ্গেই হচ্ছে, তাই তার মাছ হাটে তুললে বিক্রি হবে এবং তার দীর্ঘ সময়ের অক্লান্ত পরিশ্রমের, ভালো ফলাফল সে আশা করছে।
বিলের অনেকটা অংশ জুড়ে, সে ঘের দিয়ে মাছগুলো চাষ করেছে। প্রতিদিন পরিচর্চা থেকে শুরু করে দেখাশোনা এই ব্যাপার গুলো তো ছিলই। তাছাড়াও রাত জেগে পাহারা দেওয়া লাগতো ঘেরটাকে, বিলের উপরে ছোট্ট মাচার ঘরে থাকে।
সেদিন যখন ঘটনাগুলো নিজের কানে শুনছিলাম, তখন যেন জলিল মিয়ার সেই সময়কার মুহূর্তগুলো কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পেরেছিলাম। এই মাছগুলো চাষ করার করার জন্য, তার যে বেশ ভালই শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রম গিয়েছে। তা যেন কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছি।
ঈদের দুই দিন আগে বৈশাখী মেলায় গিয়েছিলাম এবং বেশ ভালই ঘোরাঘুরি করেছিলাম। যখন বাজারের ভিতরে ঢুকে ছিলাম, তখন এই মাছগুলো দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। অনেক বড় আকৃতির মাছ, দেখেই অনেকটা চক্ষু স্থির হয়ে গিয়েছিল।
কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে ছিলাম মাছগুলো দেখার জন্য। তখনও মাছগুলো পানির ভিতরে নড়াচড়া করছিল। বেশ তরতাজা ছিল মাছ গুলো। জলিল মিয়া তো মাঝে মাঝেই হাঁক ছাড়ছে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। অবশ্য অনেক লোক আশেপাশে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল আর দেখছিল তাজা মাছগুলোকে। ইচ্ছে করেই একবার দাম শোনার চেষ্টা করলাম, তবে যে পরিমাণ দাম বলেছে, তাতে আসলে আমার কেনার মতো সামর্থ্য নেই।
তবে কৌতূহল বসত কেন এতো দাম চাচ্ছে এই মাছগুলোর, সেটা যখন জানার চেষ্টা করেছি, তখন যা জানতে পেরেছি, তাতে আসলে এই মাছগুলোর এমন চড়া দাম হওয়া, নিতান্তই স্বাভাবিক বলে মনে হয়েছে।
আমি নিতে পারিনি বলে, তেমন একটা খারাপ লাগে নি। তবে যখন অনেকেই সঠিক দাম দিয়ে মাছগুলো কিনছিল, তখন বেশ ভালো লাগছিল।
জলিল মিয়ার চোখে-মুখে তখনো কিছুটা হতাশার ছাপ দেখতে পারছিলাম। কারণ তার হয়তো যে পরিমাণ প্রত্যাশা, সেটা হয়তো এখনো পূরণ হয়নি। তখনো অনেকগুলো মাছ বিক্রি হওয়া বাকি আছে। হয়তো সেগুলো যদি পুরোটাই বিক্রি হয়ে যায়, তাহলে হয়তো সেই হতাশার ছাপটা কেটে যাবে।
আমার শখ ছিল, তবে সাধ্য ছিল না । তাই কিনতে পারিনি। তবে জলিল মিয়ার প্রত্যাশা পূরণ হোক, মাছগুলো বিক্রি হয়ে যাক, তার হতাশা দূর হয়ে যাক, এমনটাই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি। একজন দর্শক হিসেবে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
ভাই আজ কিনতে পারেন নি ৷ আরেকদিন তো নিবেন ৷ ভাল লাগলো জলিল মিয়ার পুকুরে চাষ করেছে বেশ বড় মাছ ৷ সর্বোপরি মাঝে মধ্যে এমন হয় ৷ যে আশা প্রতার্শা গুলো পূর্নতা পায় না ৷
তবে জলিল মিয়ার প্রত্যাশা পূর্ণতা পাক, এমনটাই আমি আশা করি। ধন্যবাদ আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য।
জি ভাইয়া আপনার ধারণা একদম ঠিক হতাশা আর প্রত্যাশা একে অপরের পরিপূরক।প্রত্যাশা পূরণ না হলেই হতাশা শুরু হয় মনে।এখানে জলিল মিয়া ভেবেছিলেন দুই উৎসবে বেশ লাভবান হবেন তার মাছগুলো বিক্রি করে।কিন্তু মন মতো দামে বিক্রি করতে পারছিলেন না সব মাছ।কিছু বিক্রি হলেও বাকিগুলো বিক্রি হয়নি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
তবে আমি মন থেকেই চেয়ে ছিলাম, জলিল মিয়ার প্রত্যাশা পূর্ণ হোক, আপু।
ভাইয়া আপনার লেখা পোস্টটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো আমার। শেষ পর্যন্ত হয়তো জলিল মিয়া তার মাছগুলো তার কাঙ্খিত মূল্যে বিক্রয় করতে পেরেছে। আর মাছগুলো কাঙ্ক্ষিত মূল্যে বিক্রয়ের মাধ্যমেই হয়তো তার প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। সত্যি ভাইয়া দারুন একটি বিষয় নিয়ে একটি চমৎকার পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
শেষ পর্যন্ত আমি আসলে ছিলাম না, তবে আমি ব্যক্তিগতভাবেই চাচ্ছিলাম, তার প্রত্যাশাটা পূর্ণ হোক ।
ভাইয়া ছোট একটি বিষয়কে নিয়ে কিভাবে বড় পোষ্ট বানানো যায় আপনার থেকে শিখতেছি। এত সুন্দর করে গুছিয়ে কথা গুলো লিখেন পড়তেই মন চাই। বড় মাছ দেখলে আমিও আপনার মত দর্শক সারিতে দাড়িয়ে থাকি। আমিও প্রত্যাশা করি জরি জলিল মিয়ার প্রত্যাশা পুরন হোক। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে আমাদের মতো মধ্যম আয়ের মানুষদের, দর্শক হওয়া ছাড়া আর কিবা করার আছে?