মায়ামনিতে কিছু সময় || @shy-fox 10% beneficiary
সময়ের পরিক্রমায় বড় পরিবারগুলো একটা সময় ক্রমশ ছোট হয়ে আসে । হয়তো সেটা জীবিকা নতুবা কর্মের জন্য । একথা কেউ বিশ্বাস না করলেও, এটা আমি বিশ্বাস করি । এক সময় পরিবারে বাবা-মা ও আমরা তিন ভাই ছিলাম । সময়ের ব্যবধানে বড় ভাইয়ের বিয়ে হওয়ার পর তার একটা পরিবার তৈরি হয়ে যায় । কর্মের জন্য বড় ভাই এখন তার পরিবার নিয়ে ঢাকায় সেটেল ।
এক সময় আমিও বাসায় ছিলাম । তবে আমার বিয়ের পরে যখন আমার পরিবার বড় হয়ে যায় ,তখন বাধ্য হয়ে আমিও আলাদা বাসা নেই । পুরাতন বাসায় এখন শুধুমাত্র বাবা-মা আর আমার ছোট ভাইটা থাকে । সময় বদলায়, হয়তো তার জন্য আজকে অনেকটাই আমার নিজের পরিবারের কাছ থেকে দূরে থাকা । হয়তো নিজের বউ-বাচ্চা ও কাজের কারণে আলাদা জায়গায় থাকতে হচ্ছে । ব্যাপার গুলো সহজ করে নিলেই সহজ আর জটিল করলে একটু জটিলতা সম্পন্ন ।
ঐ যে বললাম সময় এখন অন্য দিকে গড়িয়ে যাচ্ছে । আগের দিনের মতো এখন আর বড় পরিবার চোখে পড়ে না বললেই চলে । যত দিন যাচ্ছে , পরিবারগুলো যেন ততই ক্রমশ ছোট থেকে আরো ছোট হয়ে আসছে । আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি অফিস থেকে ফেরার পথে , মা আর ছোট ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করে আসার জন্য । অনেকটা বলতে পারেন , দৈনন্দিন রুটিন এটা আমার ।
গতরাতেও ঠিক যখন বাসায় আব্বু -আম্মুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছি । হুট করে মা বলেই ফেলল, আজকে রান্না করতে ইচ্ছা করছে না । আমরা বাইরে খেতে চাই । আমি আমার ছোট ভাইকে বললাম, শান্ত চলো আজকে আমরা সবাই মিলে বাইরে খাবো । হীরা কে ফোন দিয়ে বললাম, আজ আমি বাসায় খেতে চাচ্ছি না । আমি আব্বু-আম্মু ও শান্ত কে নিয়ে বাইরে হোটেলে খাবো । তুমি আমার জন্য দেরি না করে বরং খেয়ে নিও তাড়াতাড়ি ।
আমি আম্মুকে বললাম তুমি কোথায় খাবে । আম্মু আমাকে বলল, তোমার যেখানে ভাল মনে হয় আমাদেরকে সেখানে নিয়ে চলো । অতঃপর এ শহরের সবথেকে পুরনো ও নামকরা হোটেলে চলে গেলাম । খুব একটা বেশি সময় লাগেনি কারণ আমাদের পুরাতন বাসার খুব কাছেই সেই হোটেলটি । সত্যি আমার আলাদা একটা প্রশান্তি কাজ করছিল দীর্ঘদিন পরে । হয়তো আপনারা ইতিমধ্যেই বুঝে গেছেন , আমার প্রশান্তির কারণটা । কারণ দীর্ঘদিন পরে আব্বু-আম্মু ও ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে বাইরে খেতে যাচ্ছি , এটা যেন একটা অন্যরকম আত্মতৃপ্তির ব্যাপার ।
যেহেতু বাসার খুব কাছেই হোটেল, তাই হেঁটে গিয়েছে । যাত্রাপথে হালকা ঘন অন্ধকারের মাঝে নিয়ন আলোর রাস্তায়, ফিরফিরি বাতাসের ভিতর বেশ ভালই লাগছিল । আব্বু-আম্মু আগে হেঁটে যাচ্ছিল আর খোশ গল্প করছিল এবং তাদের কথা আমি শুনিনি । আমি আর আমার ছোট ভাই তাদের পিছনে পিছনে হেঁটে হেঁটে যাচ্ছিলাম । মিনিট পাঁচেক পরেই অবশেষে হোটেলের সামনে চলে আসলাম । যে সময়টাতে হয়ে গিয়েছি ,তখন পুরো হোটেল ফাঁকা বললেই চলে। রাত্রি তখন সাড়ে দশটার মত বাজে ।
আমাদের পুরো পরিবারকে দেখে হোটেল ম্যানেজার বলেই ফেলল । কি খবর, আপনারা এত রাত্রিবেলা । আমি বললাম এই মুহূর্তে কি খাবার পাওয়া যাবে, আমরা খাবার খেতে এসেছি । সে বেশ আগ্রহের সঙ্গেই আমাদেরকে বলল যে, আপনার টেবিলে বসুন । এখানকার লোক, আপনাদের কাছে যাবে এবং অর্ডার নেবে ।
এখানকার খাসির মাংস, মুরগির মাংস ও বিশেষ করে কলিজা ভুনা দিয়ে খিচুড়ির আলাদা একটা সুনাম আছে । বলতে পারেন মায়ামনি হোটেলের সুনাম আশেপাশে এলাকাতেও বেশ ভালোই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গিয়েছে । কারণ দীর্ঘ ত্রিশ বছরের বেশি সময় থেকে তারা এই জায়গায় ব্যবসা করছে । অবশেষে আম্মুর ও আমার ছোট ভাইয়ের পছন্দের খাবারগুলো অর্ডার করে ফেললাম । তবে আব্বু খেতে রাজি নয় । আব্বু মূলত বাহির থেকে তার আগে খেয়ে এসেছে । এই জন্য আব্বু শুধুমাত্র এক কাপ চিনি ছাড়া দুধ চা অর্ডার করেছে ।
অবশেষে খানিক বাদেই আমাদের খাবারগুলো চলে আসলো টেবিলে । তারপর পরিবারের সবাই একত্রে মিলে রাতের খানা খাওয়া শুরু করে দিলাম । তবে খাবার আসার আগ মুহূর্তে আমি হোটেলের ভিতরে কিছু কারুকার্যের ছবি তুলেছি। বিশেষ করে দেয়ালে যে, গ্রামীণ চিত্রগুলো ছিল সেগুলো আমার বেশ নজর কেড়েছিল । তাই চেষ্টা করেছি সেগুলোর ছবি ক্যামেরাবন্দি করার জন্য ।
সর্বোপরি মায়ামনি হোটেলে বেশ দীর্ঘ দিন পরে, ভালো একটা সময় কেটেছে আমাদের পুরো পরিবারের । এমন সময় আবার কবে আসবে, তা আমার আপাতত জানা নেই । তবে এমন মধুর সময় মাঝেমাঝে আসলে মন্দ হতো না ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
সত্যি ভাই দিন দিন বড় পরিবার ভেঙে ছোট পরিবার হচ্ছে। আগের দিনের গল্প শুনতাম এক পরিবারে ১৫ জন করেও মানুষ থাকতো। এদের জন্য আবার এক সাথেই রান্না হতো। এগুলো অনেক মজার সময় ছিলো। তবে এখন বাচ্চার স্কুলের চিন্তা পরিবেশের চিন্তা সব কিছু থেকেই মানুষ পরিবার ছোট করে ফেলে।
যাইহোক, আপনি পরিবার দিনে ভালো সময় কাটাইছেন। খাওয়া দাওয়ার আইটেমও অনেক ভালো ছিলো। রাতের বেলা তাও অনেক কিছু পাইছেন। ভাই শুভকামনা রইলো আপনার জন্য। 💞💞
যায় দিন ভালো । আসে দিন আরও কঠিন থেকে কঠিনতর হয় । চেষ্টা করেছি পরিবার নিয়ে নিজের মতো করে সময় কাটানোর জন্য।
সত্যি কথা বলতে পরিবারের প্রিয় মানুষগুলোকে খাওয়াতে পারলে খুবই ভালো লাগে। ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে খুবই ভালো লেগেছে আমার। কারণ আপনি আপনার পরিবারের সেই প্রিয় মানুষগুলোকে তাদের পছন্দের খাবার খাইয়েছেন। মাঝে মাঝে এভাবে যদি বাইরে পরিবার নিয়ে খেতে যাওয়া হয় তাহলে অনেক ভালো লাগে। আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে আপনি আপনার বাবা মার সাথে দেখা করতে প্রতিদিন যান এই বিষয়টি। সত্যি ভাইয়া আপনি আপনার ব্যস্ততার মাঝেও প্রতিটি কাজের প্রতি অনেক দায়িত্বশীল। অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার লেখা পড়ে। এভাবেই একজন ভালো মানুষ হয়ে থাকবেন এবং প্রিয় মানুষদের মুখে হাসি ফোটাবে এই কামনাই করছি। শুভকামনা রইলো ভাইয়া।
জীবন তো এটাই আপু ,ব্যালেন্স করে চলার চেষ্টা করছি । হুম এটাও সত্যি কথা ,সময়টা বেশ ভালোই উপভোগ করেছি ।
মায়ামনি হোটেল। নামটা খুব সুন্দর।পরিবারের সকলে মিলে এক সাথে খাবার খাওয়ার মজাই আলাদা। সুন্দর একটা মূহুর্ত পার করেছেন।মুরগির রান টা কিন্তু দারুন ছিল। হালকা রসালো ঝোল তবে আমার কাছে সাদা ভাতই বেশী ভাল লাগে। ভাল লাগলো আপনার জীবনের বাস্তবিক আরো একটি গল্প পড়ে।ভাল থাকবেন। আর মাঝে মাঝেই বাবা মাকে নিয়ে এভাবেই সময় কাটাবেন। একটা প্রশান্তি আছে আমি জানি। শুভেচ্ছা।
একদম ঠিক এমন মধুর সময় মাঝেমধ্যে আসলে কিন্তু বেশ ভালোই লাগে। আর পরিবারের সাথে সময় কাটানো তো সৌভাগ্যের ব্যাপার।
একদম ঠিক কথা বলেছেন আপু । এমন সময় মাঝে মাঝে আসলে মন্দ হয় না ।
ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন সময়ের পরিক্রমায় বড় পরিবার এখন ছোট হয়ে যাচ্ছে। কারণ সবাই যে যার মত কর্মব্যস্ত জীবন কাটাচ্ছে। কর্মের তাগিদে হয়তো পরিবার নিয়ে অনেক দূরে অবস্থান করতে হচ্ছে। তবে যাইহোক ভাইয়া আপনি আপনার পরিবার থেকে আলাদা থেকেও তাদের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রেখেছেন এবং তাদের সাথে দেখা করছেন জেনে ভালো লেগেছে আমার। আর আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে আপনার মা, বাবা ও ভাইকে একটি ভালো রেস্টুরেন্টে খাওয়াতে নিয়ে গেছেন। ওই রেস্টুরেন্টের দেয়ালের কারুকার্য গুলো সত্যিই অনেক সুন্দর। সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল বাবা মায়ের মুখে হাসি ফুটালে তাদের যে দোয়া পাওয়া যায় তা লাখ টাকা দিয়েও কিনতে পাওয়া যায় না। ভাইয়া আপনি এরকম একজন ভালো সন্তান হয়েই সবসময় মা বাবার পাশে থাকবেন এবং তাদের মুখে হাসি ফোটাবেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। ❣️❣️❣️❣️
চেষ্টা করছি ভাই নিজের জায়গা থেকে সবার সঙ্গেই একটু মিলেমিশে চলার জন্য। আশীর্বাদ করবেন ভাই ।
শুভ ভাই, এই মায়মনি হোটেলে আমিও গেছি অনেকবার। এই হোটেলের কালো মিষ্টি বেশ ভালো লাগতো। আমার মাসির বাড়ি ওখানে। মাসী মেসো আসার সময় ওখান থেকে মিষ্টি আনতেন। এটা হাই রোড এর পাশের ওই হোটেল টা তো তাই না?
যাই হোক, পরিবারকে নিয়ে এভাবে বাইরে যাওয়া ,খাওয়া দাওয়া করা এটা সত্যি অনেক বড় ভাগ্যের ব্যাপার আমার মনে হয়। সবাই মিলে অনেক ভালো থাকবেন। আঙ্কেল আন্টির জন্য সালাম রইল।
তাই নাকি , আমাদের এলাকায় যে আপনার আত্মীয়ের বাড়ি আছে তা তো জানতাম না । ব্যাপারটা জেনে খুশি হলাম। ভালোবাসা রইল।
আসল ভাই আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। অনেকদিন পর বাবা-মার সাথে এভাবে সুন্দর পরিবেশের মধ্যে খাওয়া-দাওয়া সত্যিই অনেক আনন্দের। আসলেই আপনার আজকের পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লেগেছে, কারণ সবাইকে সাথে নিয়ে আনন্দময় সময় পার করেছেন এবং সুন্দর ভাবে খাবার পরিবেশন দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। শুভকামনা রইলো আপনাদের জন্য। সকলের সুস্থতা কামনা করছি।
ধন্যবাদ ভাই। আসলেই সময়টা আমার কাছে বেশ ভালই কেটেছে ।
ঠিকই বলেছেন ভাই সময়ের পরিক্রমায় এবং কর্মের জন্য বড় পরিবার গুলো ক্রমেই ছোট হয়ে যাচ্ছে। আপনার আগে পোস্ট গুলোর একটা কমন বিষয় ছিল আপনার ছবিতে আপনি মাস্ক পড়ে থাকতেন কিন্তু বেশ কিছুদিন দেখছি মাস্কের পরিবর্তে আপনার মুখে হাত। পরিবার নিয়ে মায়ামনিতে খেতে যাওয়া টা দারুণ ছিল। রেস্টুরেন্ট টা বেশ সুন্দর। দারুণ লিখেছেন ভাই।
মাক্স নিয়ে যাইনি ,তাই হাত ব্যবহার করেছি ভাই । ধন্যবাদ ব্যাপারটি খেয়াল করার জন্য।
ভাইয়া, আপনার লেখা পোস্ট টি পড়ে সত্যিই আমার খুব ভালো লেগেছে। ভাইয়া আগে আমার বাবার থেকে শুনতাম আমার দাদা আমার দাদার ভাইয়েরা পুরা ২০-৩০ জন সদস্য নিয়ে একটি পরিবার গঠিত আর এই পরিবারের সকলে একসাথে মিলেমিশে থাকতো।এখন সত্যি কথা বলতে কি ভাইয়া,কর্মের জন্য বাবা মা কে ফেলে চলে যেতে হচ্ছে আর পরিবারগুলো ছোট হয়ে আসছে। ভাইয়া, ছোট ভাই বাবা মাকে নিয়ে আনন্দের মুহূর্তের কিছু অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন পড়ে খুব ভালো লেগেছে। ভাইয়া, হোটেলের নামটা বেশ সুন্দর আর হোটেলের খাবার গুলো দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু তরতাজা।দোয়া করি ভাইয়া,এমন মধুর সময় যেন আপনার প্রতি দিনই আসে।অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
পাঠকের সন্তুষ্টি লেখকের আত্মতৃপ্তির ব্যাপার। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ভাইয়া আজকের পোস্ট সব থেকে বেস্ট ছিল। আমার কাছে মনে হয় নিজের পরিবারের উপরে কিছু হতে পারে না। নিজের মা বাবা ভাই বোন কে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে যা শান্তি পাওয়া যায় তা আর কিছুতেই পাওয়া সম্ভব না। অনেক দোয়া রইলো ভাইয়া আপনার জন্যে , আজ আপনার পোস্ট দেখে অনেক খুশি হলাম আমি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আশীর্বাদ করবেন আপু । এমন সময় যেন বারবার আসে । আসলেই সময়টা বেশ ভালই ছিল ।