স্বপ্নীল || @shy-fox 10% beneficiary
স্বপ্নীল নামটা রূপকথা নয় । এই চরিত্রটা কাল্পনিক নয় । এ নামের সঙ্গে অনেক অতীত জড়িয়ে আছে । মাঝে মাঝে যখন হুট করে অতীত মনে পড়ে, তখন অনেকটাই আবেগপ্রবণ হয়ে যাই । অতীত গুলো মাঝে মাঝে এসে এমনভাবে খোঁচা দেয় , যেন জানান দেওয়ার চেষ্টা করে অনেকটা সময় জুড়ে তাদের সঙ্গে আমার সখ্যতা ছিল ।
হুট করে একটা রবি নাম্বার থেকে কল এসেছে । রাত্রি তখন ২:৩০ টার মত হবে । কোনরকম ঘুমকাতুরে চোখে ফোনটা ধরতেই ওপাশ থেকে একটা কন্ঠ ভেসে আসছে । কেমন আছেন ভাইজান, কতদিন হলো দেখা নেই । আমাকে চিনতে পেরেছেন । আমি স্বপ্নীল।
মানুষের মস্তিষ্কে অতীত ঘাঁটতে খুব একটা সময় লাগে না । কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই যেন, মুহূর্তেই কয়েক বছর পিছনে ফিরে দেখা যায় । ভাসমান স্মৃতিতে একটা রোগা-পাতলা, হ্যাংলা ছেলেটার মুখ মাঝরাতেই মনে পড়ে গেল । চাপ দাঁড়িতেও সে সময় তাকে অনেকটা বাচ্চা ছেলের মতো লাগতো । সে আর কেউ নয়, সে আমার পরিচিত ছোট ভাই স্বপ্নীল ।
ভাষা ভাষা কথাতে তার কথা যখন মনে পড়ছিল, সে তখন সম্ভবত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ অধ্যায়নরত ছিল । দুচোখ ভর্তি স্বপ্নের উত্তাল ঝিলিক । কত কথাই বলেছিল সেই সময় সে আমাকে । গ্রাজুয়েশন শেষ করার পরে, এটা করবে, সেটা করবে । আসলে দোষটা ওর না , এই একাডেমিক পড়াশোনা অনেকটা নিছক মরীচিকার মত । এই গোলকধাধাঁর প্যাঁচে যে পড়েছে , সেই বুঝেছে জীবনটাকে । দিনশেষে শুধুই সার্টিফিকেট তার বাহিরে আর কিছুই না ।
যদিও এমন কথা তাকে বিগত সময়েই বলেছিলাম । বলেছিলাম একটু চেষ্টা করো , পড়াশোনার পাশাপাশি কোন কাজে দক্ষতা তৈরি করার জন্য । তবে কে শোনে কার কথা । আসলে যখন চোখে স্বপ্ন অনেকটাই ঘূর্ণায়মান থাকে, তখন আসলে আশেপাশের অনেক কথাই তেতো লাগে ।
সেই উখিয়ার পাহাড়ী অঞ্চল থেকে এই মাঝরাতে সে ফোন করেছে । ওখানে সে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখাশুনার জন্য একটা এনজিও প্রকল্পে কাজ করছে । আমি তার কাজকে অসম্মান করছি না । তবে ছাত্র অবস্থায় থেকেই সে যদি একটু পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করত , হয়তো তার কাজের জগৎটা আজ একটু আলাদা হতে পারত ।
যদি হিসাব করে দেখি, তাহলে তার কর্মস্থল দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে । হুট করেই আজ সেই সময় গুলোর কথাগুলো সে আমাকে নিজের থেকেই বলছিল । তার একাডেমিক পড়াশোনার প্রভাব ও তার সেই সময়কার ঝিলিক দেওয়া স্বপ্ন গুলো আজ বাস্তবতার কাছে অনেকটাই ফিকে হয়ে গিয়েছে । সে আজ নিজের থেকে নিজেই অনেকটা চরম লজ্জিত । আসলে যে লজ্জা পায় , তাকে আর নতুন করে লজ্জা দিতে নেই ।
অনেকটা অসহায় হয়ে তার কষ্টের কথা গুলো বলছিল । যে টাকা বেতন পায়, তাতে তার নিজের পেটটা কোন রকমে চলে যায় । সে যে বিয়ে করবে, এই সাহসটা পর্যন্ত পাচ্ছে না । ছুটিতে যে বাড়িতে আসবে , এই আসা যাওয়ার খরচ হিসেব করলে অনেকটা বাধ্য হয়েই বাড়ি আসার ইচ্ছেটা দমিয়ে রাখে । কি একটা অবস্থায় সে দিনানিপাত করছে, তা আমি একটু হলেও বুঝতে পারছি ।
স্বপ্নীল, তুমি আমার ছোট ভাই । তার মধ্যে একসময় তোমার সঙ্গে আমার বেশ সখ্যতা হয়েছিল, তা কিন্তু আমি ভুলে যাইনি । হয়তো সময়টা বদলে গিয়েছে , বদলে গিয়েছে জীবনের গতিপথ, তবে অতীত গুলো কিন্তু আমি ভুলে যাই নি । যাইহোক জীবনে এমনি রে ভাই , জায়গাভেদে সংজ্ঞাগুলো শুধু আলাদা । তবে তুমি একটু বুদ্ধি খাটাও, এই প্রযুক্তির যুগে চাইলেই পাশাপাশি আরো অনেক কিছুই করা যায় । যদি তোমার স্বতস্ফূর্ত ইচ্ছা থাকে, তাহলে । ভালো থেকো তুমি ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমাদের সবার জীবনে একটি দারুন অতীত থাকে সে অতীত নিয়ে আমরা মাঝে মাঝে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। কারো অতি সুন্দর কারণ অতীত মরীচিকায় ভরা। তবে আপনার অতীত এ সময় কাটানো সেই স্বপ্নীল নামের সাথে ভালো-মন্দ হয়তো কিছু সময় পার করেছেন। হঠাৎ করেই যখন সেই মানুষ ফোন দিয়ে বলে তখন চোখের সামনে অন্যরকম স্মৃতি ভেসে ওঠে। আসলেই আমাদের সামনে এমন কিছু মুহুর্ত আসে যখন চাইলেই আমরা সঠিক পথে চলতে পারি না তবে যদি সঠিক নির্দেশনা পাওয়া যায় তাহলে আমরা আমাদের কাজের পাশাপাশি অনেক কিছুই করতে পারি। স্বপ্নীল কে আপনি দারুন পরামর্শ দিয়েছেন আশা করি সে আপনার পরামর্শ অনুযায়ী চলতে পারবে।
দেখুন আমি তার এলাকার ভাই, চেষ্টা করেছি আমার জায়গা থেকে শুধুমাত্র পরামর্শ দেওয়ার জন্য। ঠিক এতোটুকুই, দেখি এখন সে কি করে ।
আমাদের জীবনে একসময় অনেক মানুষের সাথে পরিচয় থাকে ভাই। কিন্তু হয়তো আমরা যখন সংসারের দায়িত্ব কাঁধে নেই তখন অনেক মানুষের সাথে সম্পর্ক কথাগুলো মনে থাকে না। সবাই দূরে ছিটকে যায় কিন্তু কাছে এলে অবশ্যই আমাদের সে সম্পর্ক গুলোর কথা মনে থাকে। সবারই অতীত থাকে অতীতের কথা হঠাৎ করে মনে পড়ে যায়। কেননা আমরা অতীতকে বেশি মনে রাখি। আপনি স্বপ্নীলের যে কথাগুলো শেয়ার করেছেন আসলে অনেকের জীবনে এরকম হয়ে যায়।তবে আপনি তাকে শেষে যে কথাগুলো বলেছেন কথাগুলো খুবই কাজে দিবে।
আমার জায়গা থেকে যেটা করেছি সেটা শুধুমাত্র ভাই হিসেবে করেছি , দেখি এখন সে করবে ,সেটা দেখার অপেক্ষায় আছি ।
ভাইয়া আপনার লেখাগুলো যখন পড়ি তখন নিজেকে নতুনভাবে তৈরি করার আগ্রহ পাই। আসলে আমাদের জীবনের চলার পথ বড়ই কঠিন। জীবনের বাস্তবতার কাছে আমরা অনেক অসহায়। আমরা যদি নিজেকে সময়ের সাথে সাথে এগিয়ে নিয়ে যাই এবং নিজের দক্ষতা কাজে লাগাই তাহলে হয়তো একটুখানি সুখের আশা করতে পারি। হয়তো আমাদের কাছের মানুষগুলোকে ভালো রাখতে পারি। অনেক সুন্দর ভাবে আপনি আপনার ছোট ভাই স্বপ্নীল ভাইয়ার কথা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছে। এই পোস্ট পড়ার মাধ্যমে আমাদের মাঝেও নতুন উদ্যমের সঞ্চার হয়েছে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া। ♥️♥️
দক্ষতাই এখন সব । যে পারছে সেই তো এগিয়ে যাচ্ছে ।চেষ্টা করেছি আমার জায়গা থেকে তাকে একটু পরামর্শ দেওয়ার জন্য।
অনেকেই জীবনের প্রয়োজনে অনেক কিছু করে। হয়তো তাদের স্বপ্ন ছিল ভিন্ন ধরনের কিন্তু সবাই কি আর স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে পারে। আসলে আপনি যেটা বলেছেন সেটাই। মাঝে মাঝে কিছুটা কারিগরি দক্ষতার প্রয়োজন হয়। গাইবান্ধা থেকে টেকনাফ যাওয়া আর সৌদি আরব যাওয়া প্রায় সমান। ভালো থাকুক সবাই এটাই প্রত্যাশা।
একদম ঠিক বলেছেন ভাই , কারিগরি দক্ষতা না থাকলে এখন অনেক দিক থেকেই পেছনে পড়ে থাকতে হবে । তাছাড়াও দূরত্বের কথার সঙ্গে একদম সহমত পোষণ করছি ভাই ।
ভাইয়া,,স্বপ্নীল নামটি আমার খুব পছন্দের।স্বপ্নিল নামে আমার খুব সুন্দর একটি গল্প আছে।ঠিক আপনার গল্পটির মত কিছুটা।মধ্যরাতে ফোনের রিংটোন এবং সেই পিছন ফিরে দেখা।♥♥
আপনার গল্প জানার অপেক্ষায় থাকলাম আপু । ধন্যবাদ আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য।
♥♥
ভাইয়া,কিছু অতীত সহজে ভুলা যায় না আর ভুলে থাকতে চাইলেও সে অতীত গুলো মনের মধ্যে এসে বারবার খোঁচা দেয়।ভাইয়া,স্বপ্নীল নামটা দেখে আমি মনে করেছি রূপকথা কোন গল্প লিখছেন।আসলে পুরো পোস্টটা পড়ে বুঝতে পারলাম স্বপ্নীল একটি ছেলে এবং আপনার ভাই স্বপ্নীলের ব্যাপারে আমি আরেকটা পোস্ট পড়ে ছিলাম।যাইহোক ভাইয়া,যখন কোন মানুষকে ভালো পরামর্শ দেয়া হয় তখন সে পরামর্শগুলো শুনতে নারাজ হয় প্রতিটা মানুষ। পড়ালেখা করছে মনে করে পড়ালেখা শেষ হলে সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে চাকরি পেয়ে যাবে কিন্তু বাস্তব খুবই কঠিন ভাইয়া।একটা ভালো চাকরি পাওয়া খুব কঠিন এখন কার সময়।ভাইয়া,আপনার কথাগুলো তখন শুনলে খারাপ লাগত তার। যদি স্বপ্নীল আপনার কথা শুনত তাহলে হয়তো তার এই অবস্থা হতো না।ভাইয়া,আপনার পোষ্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে।ভাইয়া বাস্তবিক লেখা গুলো পড়তে আমার খুব ভালো লাগে ধন্যবাদ ভাইয়া।।
এর আগেরবার যেটা লিখেছিলাম সেটা আহসানের ঘটনা আপু ।
আপনার কথাটার সাথে আমি একমত। একাডেমিক পড়ালেখা খারাপ কিছু না। তবে সেই পড়াশোনার ফল পেতে অনেক সময় লাগে। তবে পড়াশোনার পাশাপাশি ভালো কোনো কাজে স্কিল থাকলে এটা বিশাল বড় প্লাস পয়েন্ট। আমার এক বন্ধু আছে যার মাসে ইনকাম লাখের উপর। তবে আমরা এক সাথেই পড়াশোনা করতাম। তবে যাইহোক,আপনার পোস্ট পড়ে আমার বেশ ভালো লেগেছে।
বাহ্ আপনার বন্ধুর ব্যাপারটা জেনে বেশ ভালোই লাগল। দক্ষতা আসলে খুবই দরকার এই সময়ে ।
আশা করি শেষ দিকের লাইনগুলো উনার জীবনে পরিবর্তন আনলেও আনতে পারবে।