জীবন
সত্যি বলতে কি,শহুরে জীবনের থেকে অনেকটাই প্রান্তিক গ্রামীণ মানুষগুলোর জীবন আলাদা।তাদের ভিতরে হয়তো যান্ত্রিকতা নেই তবে তাদেরকে প্রতিনিয়ত যে পরিমাণ কায়িক পরিশ্রম করতে হয় তা যেন বলা বড্ড কঠিন। আর এসবের মাঝেই তারা জীবিকা নির্বাহের পথ খুঁজে পায়।
শহুরে মানুষের থেকে আকাশ পাতাল তফাৎ এই সহজ সরল গ্রামীন মানুষগুলোর জীবন । এবার যেহেতু ধান কাটামাড়ীর সময় গ্রামে গিয়েছিলাম, তাই স্বচক্ষে তাদের এই কর্ম জীবনটা দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল।
আমি তো মনেকরি জীবনের আসল সৌন্দর্য ও সুখ উপভোগ করে এই মানুষ গুলোই । তাছাড়াও এতো কায়িক পরিশ্রমের পরেও মানুষগুলোর তেমন রোগবালাই নেই বললেই চলে আর অপরদিকে আমরা যারা শহুরে জীবনে অভ্যস্ত তারা তো বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাইয়ের সংস্পর্শেই প্রতিনিয়ত থাকি।
যাইহোক এখানে আমি গ্রামীন জীবন আর শহুরে জীবনের মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য টানবো না। তবে আমি মনে করি, এই মানুষগুলোর জীবনযাপন দেখার পরে, আমার হয়তো কিছুটা হলেও জীবন নিয়ে অভিযোগ কমেছে।
একদম প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে পারাটা মূলত যোগ্যতা বা সৌভাগ্যের ব্যাপার। যা আসলে আমাদের মত যান্ত্রিক মানুষের জীবনে হয় না বললেই চলে। এখানকার জীবন সম্পূর্ণ আলাদা। খুব সকালে যখন কেবল ভোরের আলো ফুটেছে, সেই মুহূর্তেই বাড়ির সবাই উঠে গিয়েছে। সবাই এখন বড্ড ব্যস্ত। যেহেতু জমি থেকে বাড়িতে ফসল এসেছে এবং বাড়ির উঠোন ইতিমধ্যেই ভর্তি হয়ে গিয়েছে ফসল দিয়ে।
যেহেতু একটু পরেই মাড়াই শুরু হবে, তাই বাড়ির যেন কারোই দম ফেলানোর সময় নেই। বাড়ির প্রবীণ মানুষটা থেকে শুরু করে একদম নবীন, সবাই নিজের জায়গা থেকে কাজের জন্য প্রস্তুত। এসবের মাঝেই যেহেতু তাদের জীবিকা লুকিয়ে আছে, তাই এই জায়গায় ফাঁকি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই।
ঘাড়ে করে যখন ফসল নিয়ে আসছিল তখন দৃশ্যটা দেখেই, আমার শরীরের ভিতরে যেন শিহরণ জেগে উঠেছিল। কি পরিমান কায়িক পরিশ্রম হয়, এটা চিন্তা করতেই যেন আমি গুলিয়ে গিয়েছিলাম। এখানে প্রতিটা পদক্ষেপে বেঁচে থাকার লড়াই। ফসলগুলো কখন মাড়াই হবে, আর সেখান থেকে ধানে প্রস্তুত করা আবার সেই ধান থেকে চাল বানানো, তারপর সেগুলো আবারো বস্তাবন্দী করে হাট-বাজারে তোলা। হয়তো কাঁচা টাকা হাতে পেলেই যেন কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে। তারপরেও তা অনেকটা অনিশ্চিত, যদি সঠিক দামটা না পায়।
বিষয় গুলো এবার খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। যদিওবা এ সময় গ্রামে না যেতাম তাহলে হয়তো অনেক কিছুই অদেখা থেকে যেত। আমার বা আপনার মতো আকাশ সমান চাহিদা, এদের ভিতরে একদম নেই। কোন রকম খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে পারলেই হলো আর তাতেই যেন তারা প্রকৃত সুখ খুঁজে পায়।
সেই ধানের চারা রোপণ করা থেকে শুরু করে একদম ধান হাটে তুলে বিক্রি করা পর্যন্ত, প্রত্যেকটা ধাপে যে কতশত গল্প লুকিয়ে আছে, তার খোঁজ-খবর কেউ রাখতে চায় না। কেউ জানতে চায় না, কি পরিমান মানসিক ও শারীরিক পরিশ্রম গিয়েছে এ নিরীহ মানুষগুলোর । এখানে জীবনগুলো বড্ড অদ্ভুত। এক কথায়, আমার আপনার মত না। সত্যিই না।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1662398145765216257?t=na6uBjC-4m70Jv0lLtJqkw&s=19
ভাইয়া, খেটে খাওয়া মানুষরাই হচ্ছে প্রকৃত মানুষ। তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে দিন এনে দিন খেয়ে সুখে শান্তিতে থাকতে চায়। আপনি ঠিক বলেছেন ভাইয়া, আমাদের মত এই খেটে খাওয়া মানুষের আকাশ সমান চাহিদা নেই, তারা অল্পতেই খুবই সন্তুষ্ট থাকে। আমাদের গ্রামের বাড়িতেও এরকম ধান মাড়াইয়ের কাজে অনেক খেটে খাওয়া মানুষকে জীবিকা নির্বাহ করতে দেখেছি খুব কাছ থেকেই। তাদের কঠোর পরিশ্রমের কোন তুলনাই হয় না। এত পরিশ্রমের পরেও তারাই হচ্ছে প্রকৃত সুখী। গ্রামীণ মানুষগুলোর জীবন যাপন নিয়ে আপনার সুন্দর অনুভূতিগুলো প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।
আমি চেষ্টা করেছি ভাই, সাধ্য অনুযায়ী আলোকচিত্র সবার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।
গ্রামে যারা বসবাস করে তাদের জীবন জীবিকার কথা চিন্তুা কররে মাঝে মাঝে আমি নিজেও বেশ অবাক হয়ে যাই। সেই ভোর হতে তাদের কাজের সময় শুরু হয় চলে সন্ধে অবদি। হোক সে ধান বান্ধা আর হউক সে চাষ করা। বেশ সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া। অসাধারন লেগেছে আপনার আজকের পোস্টটি।
গ্রামের মানুষগুলোর জীবন গুলো আসলেই অদ্ভুত, যা হয়তো স্বচক্ষে দেখার পরে আরও কিছুটা প্রমাণ পেলাম।