বিব্রতকর একটা সকাল || @shy-fox 10% beneficiary
বুধবার আর বৃহস্পতিবার আমার কাছে ভীষণ ব্যস্ততম পূর্ণ সময় যায় । আর কতটা পরিমাণ ব্যস্ত থাকি, এটা নিয়ে আমি আসলে বলতে গেলে কোন কিছুই গুছিয়ে বলতে পারব না । কারণ অনেক কিছু টাইম মাফিক এবং অনেক কিছুই গুছিয়ে রাখতে হয় আবার সকলের সঙ্গে ডিসকাশন করে, তারপরে সেগুলো আবার পরবর্তী দিনের জন্য রেডি রাখতে হয় । বেশ ভালই ধকল যায় শরীরের উপর দিয়ে । তবে কিছুই করার নেই , সব কিছুই আসলে জীবন ও জীবিকার জন্য ।
যাইহোক আজকে যেহেতু বুধবার আর মোটামুটি সকাল থেকে বেশ চাপের ভিতরে ছিলাম, তবে তারপরেও গত রাতে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আজকে যে করেই হোক হসপিটালে যেতে হবে এবং হীরাকে বুস্টার ডোজটা দিয়ে নিয়ে আসতে হবে ।
আমি মূলত এখন থেকে মাস চারেক আগে সম্ভবত হসপিটালে গিয়েছিলাম । কারণ সেবার মূলত বাবুর টিকা দেওয়ার জন্য গিয়েছিলাম । তারপরে সেই সময়েই দ্বিতীয় ডোজ করোনার টিকা দিয়ে নিয়েছিলাম হীরাকে কিন্তু তারপরে দীর্ঘ চার মাস হয়ে যাচ্ছে । অতঃপর মূলত আমি গতরাতে হীরাকে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলেছিলাম । তবে আমার একটা জায়গায় ভুল ছিল, সেটা হচ্ছে আমি কোন ভাবেই টিকার কার্ডটি ভালোভাবে দেখার চেষ্টা করিনি শেষ তারিখ কবে ছিল আর আজকে কত তারিখ চলছে, ঠিক এই ব্যাপারটা ।
এছাড়াও হাতে সময় পাওয়ার ব্যাপারটা তো ছিলই । তবে আজ কিছুটা সময় হাতে পেয়েছি । যার প্রথম কারণ হচ্ছে আমার শাশুড়ি আমাদের বাসায় বেড়াতে এসেছে । মূলত এই জন্যই বাবুকে নিয়ে আর কোন চিন্তা নেই । কারণ বাবু তার খেলার সঙ্গী পেয়ে গিয়েছে । যার কারণে আমরা নিশ্চিন্তে হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি সকাল সকাল । কোন রকম ঘুম থেকে উঠেই কষ্ট করে হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া হয়েছে ।
যেহেতু হসপিটাল সংস্করণের কাজ চলছে, তাই মূলত আগে যেখানে টিকা দেওয়ার কার্যক্রম চলতো সেটা পরিবর্তন করে পুরনো একটা বিল্ডিং এ টিকা কেন্দ্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে । আর সবথেকে বড় ব্যাপার হচ্ছে, এখন তেমন আর কোন ভিড় নেই টিকা কেন্দ্রে । স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সবাই টিকা গ্রহণ করছে আর বিষয়টার সঙ্গে যেহেতু সবাই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে, তাই কমবেশি সকলের মাঝেই সচেতনতা কাজ করছে ।
অতঃপরেও টিকা রুমে ঢুকতে মোটামুটি বেশ ভালই বেগ পেতে হল । কারণ এ সমস্ত জায়গায় আমি আসলে নিজের পরিচয় দিতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দবোধ করি না । যেহেতু এই সকল জায়গা পাবলিক প্রপার্টি, আমি মনে করি সকল নাগরিকের সমান অধিকার আছে । অতঃপর লাইনে দাঁড়িয়ে গেলাম এবং বেশ ভালোই রোদ লাগছিল ।
হীরার হয়ে আমি নিজেই রোদের মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলাম আর হীরা , বাবু ও আমার শাশুড়িকে ছায়াযুক্ত স্থানে দাঁড়িয়ে রেখে ছিলাম । কারণ এমন তাপমাত্রায় তাদের লাইনে না দাঁড়ানোই ভালো । অতঃপর কোন রকমে যখন ভিতরে প্রবেশ করলাম, তারপরে বললাম যে এটা আমার স্ত্রীর কার্ড তাকে আসলে ভিতরে নিয়ে আসতে পারিনি । যদি একটু কার্ডটা দেখে বলতেন ওর এখন বুস্টার ডোজ দেওয়ার সময় হয়েছে কিনা । আমাকে স্বাস্থ্যকর্মী বলল, দেখুন কেবল চার মাসে পড়েছে, এই মাসটা শেষ হোক । তারপরে আপনার ওয়াইফকে টিকা দিয়ে নিয়েন ।
মোটামুটি সকালবেলাই বেশ ভালই বোকা সেজে গেলাম । কারণ যদিও আমি নিজে মেডিকেল পার্সন তারপরেও আসলে অনেক কিছুই মাথার ভিতরে নেই । আসলে মাথার ভিতরে এত্ত সকল কিছু জায়গা করে নিয়েছে যে, নিজের প্রফেশনের ব্যাপার গুলোও আজকাল মনে থাকে না । অতঃপর আমি নিজেকে মানসিকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলাম যে, ঠিক আছে যেহেতু যেটা নিয়ম ঠিক সেভাবেই এগিয়ে চলাই ভালো হবে । তারপর কোন রকমে রুমের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে হীরাকে বললাম, তোমার চার মাস এখনো ভালোভাবে পূরণ হয়নি । আগে তোমার চার মাস পূর্ণ হোক তারপরে তুমি টিকা গ্রহণ করিও ।
হীরা মোটামুটি কিছুটা রাগে গজ গজ করছে আমার উপর । কারণ সে আমাকে বারবার বলার চেষ্টা করছে, তুমি আগে থেকে এসব খেয়াল করে রাখতে পারো না । এখানে এতো কষ্ট করে এসেও যদি এই রকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় ।তাহলে কেমন লাগে তুমিই বলো । পরবর্তীতে আসার আগে এইসব আগে থেকে খেয়াল করে রাখিও । আজকাল কি এমন করো যে, যার জন্য কোন কিছুই তোমার মনে থাকে না । আসলে এই সকল কথার কোন উত্তর নেই , আমার কাছে ।আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে একবার হাসার চেষ্টা করলাম এবং বললাম , আসলে আজকাল আমার তেমন কোন কিছুই মনে থাকে না । আমি দুঃখিত কারণ ব্যাপারটা আগেই আমার জানা উচিত ছিল । তোমাদেরকে এই রোদের মধ্যে কষ্ট দেওয়ার জন্য আমি সত্যিই দুঃখিত । চলো আমরা বাসার দিকে ফিরে যাই ।
তারপর হীরা আর আমার শাশুড়ি বলল , যেহেতু আমরা বাহিরে এসেছি, তাই আমরা একটু বাজারে যেতে চাই । তো আমি আর তাদেরকে কোন কথা বললাম না । আমি বললাম ঠিক আছে , আপনারা আপনাদের মত করে সময় কাটান । তবে আমার একটু বিশ্রাম খুবই প্রয়োজন । অতঃপর আমি তাদেরকে বাজারের রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে, সোজা বাসার উদ্দেশ্যে ফেরত আসলাম এবং ক্লান্ত শরীর নিয়ে আবার ঘুমিয়ে গেলাম । কারণ গত কয়েকদিন থেকে ঠিকঠাক মতো ঘুম হচ্ছে না এবং আগামীকাল আবার হ্যাংআউট আছে । সর্বোপরি একটা ব্যস্ততাপূর্ণ সময় থেকেই যাবে । তাই মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে আর এটাই হলো আসল কথা ।
তারপরও আমি শুধু এতোটুকুই কথা বলতে চাই, আসলে পুরুষ মানুষের কোনভাবেই ভুলে গেলে চলবে না যে তাদের কাঁধের উপর পরিবারের দায়িত্বটা থাকে । এটা আসলে প্রথমত প্রাধান্য দিতে হবে এবং তারপরে বাকি সকল কাজগুলোকে ভালোভাবে নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসতে হবে ।
যাইহোক আমি বুঝতে পারছি যে , আজকাল আমার পরিবারের উপর কোন সময় দেওয়া হচ্ছে না । তারপরও চেষ্টা করছি , সব কিছু গুছিয়ে নিজের জায়গায় ভালোভাবে সচেতন থাকার জন্য ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
যাই হোক ভাইয়া, বোকা সেজে অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন। তাছাড়াও আপনার পরিশ্রম অনুযায়ী ঘুম হয় না আপনার পোস্ট পড়ে এটা বুঝতে পারলাম হ্যাংআউটের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়। পুরুষ মানুষকে ফ্যামিলির পিছনে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতেই হয়। এছাড়াও কমিউনিটির অ্যাডমিন হিসেবে আপনি যথেষ্ট পরিশ্রম করেন। অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। সময় না থাকার পরেও আপনার দৈনন্দিন, কার্যক্রম সুন্দরভাবে আপনার ঘটমান প্রক্রিয়াগুলো উপস্থাপন করেছেন। শুভকামনা সব সময় সবসময় ভাইয়া, আমার পক্ষ থেকে।
মাঝে মাঝে আমাদেরকে এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে পড়তে হয় যে পরিস্থিতি মেনে নেওয়া সত্যি অনেক কষ্টের। এত পরিশ্রম করে এবং লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা কেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন অথচ ভাবীর বোস্টার ডোজ দিতে পারলেন না জেনে খারাপ লাগলো। এছাড়াও এই রোদের মধ্যে সবারই অনেক কষ্ট হয়েছে এটা বুঝতেই পারছি। বিশেষ করে শায়ান বাবুর বেশি কষ্ট হয়েছে এটা বোঝাই যাচ্ছে। তবে কি আর করার সব কিছুই তো নিয়মের ভেতরেই চলে। ভাইয়া আপনি আপনার অনুভূতি উপস্থাপন করেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এক্ষেত্রে আসলে কিছুই করার আমার ছিল না , যদিও বোকামীটা আমি প্রথমেই করেছি আপু ।
যার উপর পরিবারের দায়িত্ব রয়েছে শুধু সেই উপলব্ধি করতে পারে নিজের পরিবারের প্রতি নিজের দায়িত্ব কতটুকু। ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন পুরুষ মানুষকে কখনোই ভুলে গেলে চলবে না তার কাঁধের উপর পরিবারের দায়িত্ব আছে। আপনি আপনার ব্যস্ততার মাঝেও সময় বের করে হসপিটালে গিয়েছেন। কিন্তু যে জন্য গিয়েছেন সেই কাজটি সফল হয়নি জেনে খারাপ লাগলো। কি আর করার সরকারি নিয়মের মাঝে আমরা সবাই বন্দী। তাই আবারো একদিন যেতে হবে। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আপনার এই পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।❤️❤️❤️
ধন্যবাদ ভাই আমার অনুভূতি সহজে বুঝে নেওয়ার জন্য । আমি কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করছি ।
আপনার লেখাটি পড়ে তিনটি বিষয়ে আমার কাছে ক্লিয়ার হল। এক আমরা পুরুষরা অনেক ব্যস্ত মানুষ। আমাদের উপর পুরো পরিবারের দায়িত্বের বোঝা বয়ে বেড়াতে হয় ।দ্বিতীয়তঃ সময়ের মূল্যায়ন আসলে সময়ের মূল্যটা একেকজনের কাছে একেক ধরনের কারও এক ঘন্টার দাম ৫০০ টাকা কারও আবার এক ঘন্টার দাম বিশ টাকা ।এটা ব্যক্তি বিশেষে ভিন্নতা তৈরি হয় সর্বশেষ আমাদেরকে অনেক সময় এতই নির্মম বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয় জীবিকার তাগিদে নিজের পরিবারকেও সময় দেয়া সম্ভব হয় না। কাজটাই আসলে বড় কারণ। এই কাজের মধ্যেই পরিবারের রুটি রোজগার।
জীবন-জীবিকা , দায়িত্ব-ব্যস্ততা সব কিছুই একটু একত্রে করে মানিয়ে নেওয়া খুবই মুশকিল। তাও চলছে জীবন।
এই রোদের মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে যখন কাঙ্ক্ষিত সময়টি এসেছে তখন এমন কথা শুনে আসলে বোকা হওয়ারই কথা। আর ভাবীরও রাগে গজগজ করাটা স্বাভাবিক। বাচ্চা নিয়ে এই গরমের মধ্যে এত সময় দাঁড়িয়ে থাকার পরও যদি কাজই না হয়। আশা করি এর পরের বার ঠিক মতো জেনে শুনে তারপরে যাবেন। আর শত ব্যস্ততার মধ্যেও পরিবারকে একটু সময় দেয়ার চেষ্টা করা উচিত।
তেমনটাই ভাবছি আপু , আসলেই আজকাল অনেক কিছুই এলোমেল হয়ে যাচ্ছে , ঠিকঠাক কিছুই মনে রাখতে পারছি না ।
তাহলে এত কষ্ট করে রোদের মধ্যে লাইনে দাড়িয়ে থেকেও অবশেষে বোস্টার ডোজ দেওয়া হলো না। ভাবি যে আপনাকে কিছু বলে নাই এটাই অনেক কিছু। ভাবি অনেক ভাল মানুষ মনে হয়। আমার ও বোস্টার ডোজের ম্যাসেজ এসেছে। শনিবারে দিবো ইনশাআল্লাহ।
আসলেই ও একটু চেষ্টা করেছে নিজেকে সংযত রাখার জন্য, যদিও এই ক্ষেত্রে আমার কিছুটা বোঝার ভুল ছিল ।