খুশি || @shy-fox 10% beneficiary
গল্পের চরিত্রে যাকে নিয়ে আমি লিখব তার কথা আমি বিগত সময়েও বলেছিলাম । এই সময়ে মানুষ যে এত অল্পতে খুশি হতে পারে, হয়তো তাকে না দেখলে আমি খুব একটা বেশি সেটি বুঝতে পারতাম না । তবে এই ছোট ছোট বিষয় গুলো থেকে যখন এত বড় আনন্দ পাওয়া যায়, তখন সেটার অংশীদার হতে পেরে নিজেকে বড় সৌভাগ্যবান মনে হয় ।
বলছি খালেক মিয়ার কথা । খালেক মিয়া সম্পর্কে আমার জেঠাশ্বশুর হলেও, কাজের জায়গায় সে আমার কলিগ । সে আমার চেম্বারে রিসিপশনিস্ট হিসেবে কাজ করে । আমি মূলত তিন ঘন্টার জন্য গ্রামে একটা চেম্বার করি । ঙযাইহোক তিন ঘন্টা মানে একদম ঘড়ির কাঁটায় কাঁটায় তিন ঘন্টা । বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা টা পর্যন্ত ।
খালেক মিয়ার অবশ্য বাড়িতে তেমন কোন কাজ নেই । বয়স যেহেতু ৬৫ বছর হয়েছে তাও তার এই বয়সে বেশ কাজের প্রতি আগ্রহ । হয়তো সেই আগ্রহের জন্যই তাকে আমার খুব ভালো লাগে । হয়তো তার এই আগ্রহটাই আমাকে বেশি অনুপ্রাণিত করেছে । বিধায় তাকে আমার চেম্বারে আমি রিসিপশনিস্ট হিসেবে রেখেছি ।
তবে ভদ্রলোককে যে আমি খুব বেশি কাজ করতে দেই , তা কিন্তু না । তার খুবই সাদামাটা কিছু কাজ আছে । সে আমার আগেই চেম্বারে আসে, চেম্বারটা একটু পরিষ্কার করে । তারপর সে বসে যায় তার রুমে এবং সিরিয়ালের রোগী গুলোর সঙ্গে একটু কথোপকথন করে এবং তাদেরকে একটু বুঝানোর চেষ্টা করে । আর তারপরে যখন আমি চলে আসি, তখন আমার সঙ্গে টুকটাক রোগী দেখার সময় সহযোগিতা করে ।
সেই এই কাজগুলো করতে দ্বিধাবোধ করে না বরং সে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই এই কাজগুলো করে ফেলে । কারণ দিনশেষে সে সরাসরি মানুষের সেবা করতে পারছে, এটা ভেবেই তার কাছে ভালো লাগে। যেমনটা আমার কাছে ভালো লাগে । ঠিক একই রকম অনুভূতি নাকি তার ভিতরেও হয় ।
দীর্ঘ সময় থেকে একসঙ্গে দুজন কাজ করছি । কখনো আমাদের মতের অমিল হয়নি বরং সে বয়স্ক মানুষ , আমি চেষ্টা করি তার কাছ থেকে টুকটাক কিছু বিষয় শিখে নেওয়ার জন্য । অনেক সময় তো কাজ না থাকলে, আমরা দুজন বসে বসে গল্প করি । অতীত জানার চেষ্টা করি ,আগের সময়গুলো কেমন ছিল ঠিক এই ব্যাপার গুলো নিয়ে মাঝে মাঝে আমি তাকে প্রশ্ন করি । সেও মাঝে মাঝেই আমাকে প্রশ্ন করে,এত গল্প শুনে আপনি কি করেন । আমি তার প্রশ্নের উত্তর দেই না , আমি শুধু হাসি ।
সামনে ঈদ চলে আসছে । তার বাড়িতে বড় একটা বোবা সন্তান আছে এবং তার যে দুটো বড় মেয়ে ছিল , তাদের বিয়ে দিয়ে দিয়েছে অনেক আগেই। এখন বোবা সন্তান ও তার সন্তানের বউ এবং নাতি নাতনি নিয়েই তার সংসার। যেহেতু বাড়িতে গরু লালন পালন করে থাকে এবং কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত সে এবং পাশাপাশি রিসিপশনের এই কাজ । মূলত এই দিয়েই দিব্যি চলে যায় তার সংসার ।
প্রত্যেকদিন তিন ঘন্টার জন্য একশো টাকা করে, মাসিক তিনহাজার টাকা বেতনে সে আমার চেম্বারে চাকুরি করে । তবে মাঝে মাঝে কিন্তু রোগী দেখার উপর নির্ভর করে বকশিশ পেয়ে যায় । তাও সর্বসাকুল্যে তার মাসিক বেতন ও বকশিশ সহ প্রায় পাঁচ হাজার টাকার মতো তার হয়ে যায় ।
ঐ যে বললাম সামনে ঈদ । আমি আসলে উৎসব মানে যেটা বুঝি, সেটা হচ্ছে খুশি আর এই খুশিটাকে ভাগাভাগি করে নেওয়া । খালেক মিয়াকে আজকে বেতন দিতে হবে । তার মধ্যে কয়েকটা রোজা চলেও গিয়েছে । যাইহোক আজকে বেতন দেওয়ার পরে, তাকে পরবর্তীতে যখন আবারো আলাদা করে ডেকে যখন আমি কিছু পয়সা হাতে দিয়ে বললাম , এই গুলো দিয়ে আপনার পরিবারের জন্য ঈদের কেনাকাটা করে নিবেন। তখন যে , আনন্দঘন একটা মুহূর্ত ঘটেছিল । আমি মনে করি, ঈদের আসল খুশিটা আমি সেই সাময়িক সময়ের ভিতরেই পেয়েছিলাম ।
সত্যি বলতে কি , এইরকম অজস্র ঘটনা প্রতিনিয়ত আশেপাশেই ঘটছে । আমি মনে করি, আসল ঈদের খুশি গুলো ঠিক এইরকম ছোট ছোট ঘটনার মাঝেই লুকিয়ে আছে । খুশি গুলো ছড়িয়ে যাক সর্বত্র , এই কামনাই করি ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
ভাইয়া খুবই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার পোষ্টটি পড়ে আমার কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। আপনার দেয়া ঈদ বোনাসে খালেক চাচার মুখে হাসি ফুটেছে এটা ভাবতেই আমারও ভীষণ ভালো লাগছে। ঈদ মানেই আনন্দ আর খুশি। আর এই আনন্দ ও খুশি টুকু শুধু নিজের পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করে না নিয়ে, আপনি খালেক চাচাকেও সেই আনন্দ খুশির অংশীদার করেছেন। আর তা দেখে আপনার উদার মনের পরিচয় পেয়ে যাচ্ছি। আপনার মহান কাজটি কে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া। সেই মহান কাজটির জন্য আজ হয়তো খালেক চাচা তার পরিবারে ঈদের কেনাকাটার সাথে সাথে আনন্দ ও খুশি উপভোগ করবে। ভাইয়া খুবই সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য আবারো আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
মানবিক হয়ে উঠুক মানুষ, সহানুভূতি ছড়িয়ে যাক সর্বত্র। এই কামনাই করছি ।
ঈদ মানেই হচ্ছে সকলের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার উৎসব। আসলে নিজে ভালো থাকার মধ্যে কোন আনন্দ নেই। সকলকে নিয়ে ভালো থাকার মধ্যে অনেক আনন্দ আছে। আপনার দেওয়া ঈদ উপহার কেনার টাকা পেয়ে খালেক চাচার মুখে যে হাসি ফুটে উঠেছে তা লক্ষ টাকা দিয়েও কেনা যাবে না। সত্যি ভাইয়া আপনি অনেক কিছু চিন্তা করে সব সময় চলেন। সেজন্য আপনাকে অনেক ভালো লাগে। আপনার জন্য এবং খালেক চাচার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া।
চেষ্টা করেছি পারিপার্শ্বিক অবস্থার উপর নির্ভর করে বিষয়টা আলোকপাত করার জন্য। শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা ছড়িয়ে যাক সর্বত্র।
আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। ভাইয়া আসলেই উৎসব মানে খুশি আর এই খুশিকে সকলের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার মধ্যেই রয়েছে সবচাইতে আনন্দ এবং শান্তি। আজকে আপনি খুবই সুন্দর একটি কাজ করেছেন। আসলে খালেক মিয়ার ঘর একটি বোবা সন্তান রয়েছে। এই বয়সে সে আপনার এখানে কাজ করছে জেনে খুবই ভালো লাগলো। আসলেই বয়স্ক মানুষের কাছ থেকে পুরনো গল্প শুনতে খুবই ভালো লাগে আমারও। যাইহোক আপনি বেতন দেওয়ার পরেও তাকে যখন ঈদের খুশি হিসেবে কিছু টাকা দিলেন,সেভ টাকা পেয়ে অনেক খুশি হয়েছে। তার মধ্যে ঈদের খুশি এখনই ফুটে উঠেছে। খুবই ভালো লাগলো। আপনার জন্য রইল শুভকামনা ভাইয়া।
আসলে অনেক কিছু চিন্তা ভাবনা করেই কাজটাতে অগ্রশীল হয়েছিলাম । তবে এইটা সত্য কথা ,বেশ ভালোই অভিজ্ঞতা ছিল।
অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া ঘটনাটি পড়ে। ইদ মানে আনন্দ ইদ মানে খুশি। সেই ইদ যদি ধনী গরিব ছোট বড় সবাই মিলে ভাগ করে নেয়া যায় তবে ইদের স্বার্থকতা।ইদ শুধু নিজের জন্য নয় আপনি সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। খালেক মিয়ার সাথে আপনার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক। সেই সাথে তাকে আপনি কতটা মূল্যায়ন করে হেল্প করলেন বুঝতে পেরেছি। এভাবে ভালোবাসা গুলো ছড়িয়ে যাক সবার জীবনে।
আমি মনে করি পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও এমনটাই হওয়া উচিত। আমি শুধু চেষ্টা করেছি মাত্র।
বিগত সময়ে আমাদের খালেক মিয়ার কথা মনে আছে। আপনি একদিন তাকে বাজার করে দিয়েছিলেন তার অজান্তে তখন সে কতটা খুশি হয়েছে সত্যিই আমার কাছে ভীষণ ভাল লাগেছে আর সে আপনার কলিগ 😍আসলে যারা কাজ করে তারা বসে থাকতে পারে না। এটাই বাস্তবতা হাত-পা কামড়ায়।আসলে মানুষের সেবা করার মধ্যে আলাদা একটা মনের ভেতর প্রশান্তি কাজ করে। যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।আসলে এটাই সবথেকে বড় কথা ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি। একজনের ঈদের আনন্দের অংশীদার হওয়ার সত্যি খুবই ভাগ্যবান ব্যাপার।আসলেই সকলের ঈদ কাটুক আনন্দময়। আমাদের উচিত তো সকলেরই খোঁজখবর নেওয়া আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশী এবং খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া এবং আপনার পোস্টগুলো পড়ে আমি দারুন কিছু শিক্ষা পাই।আপনার জন্য শুভকামনা রইলো
লেখকের কৃতজ্ঞতাবোধ জন্মায় ,যখন পাঠকের মুখ থেকে অতীততের পুনরাবৃত্তি শোনা যায় । ভালোবাসা অবিরাম ভাই ।
আপনি ঠিক কথাই বলেছেন ঈদের খুশি গুলো এভাবেই সর্বত্র ছড়িয়ে যায়। ঈদের খুশি সকলের সাথে ভাগ করে নিতে ভালো লাগে। যারা অল্পতেই সন্তুষ্ট হয় তাদেরকে খুশি করতে পারলে নিজের অনেক ভালো লাগে। কারণ সেই খুশির মাঝে রয়েছে অনেক বেশি আত্মতৃপ্তি। এভাবেই খুশি গুলো সর্বত্র ছড়িয়ে যাক এই প্রত্যাশা আমরাও করছি ভাইয়া।
ছড়িয়ে যাক খুশি সর্বত্র। মানবিক হয়ে উঠুক মানুষ, এই কামনাই করি ।
আপনি খালেক চাচা কে খুশি করতে পেরেছেন। খালিক চাচার খুশিতে আমরাও খুশি। আমার খুবই ভালো লেগেছে আপনার এই পোস্টটি,এ থেকে অনেকে সজাগ ও সচেতন হবে।
ধন্যবাদ আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য ভাই ।
ঠিকই বলেছেন ভাইয়া। ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করে নেয়া। আপনি খুবই সুন্দর করে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। যা দেখে আমি সত্যিই অভিভূত হয়েছি। এভাবে আপনি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে থেকে মানুষকে এগিয়ে নেবেন। খুশি করবেন। আপনার কাছে একটাই প্রত্যাশা।প্রতিবছর আমিও এরকম অনেক মানুষকে নতুন পোশাক কিছু খাবার কিনে দিয়ে পাশে থাকার চেষ্টা করি ঈদের আনন্দ ভাগ করে নেয়ার চেষ্টা করি♥♥
সত্যি বলতে কি , ভালো কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারাটা ,অনেকটাই আত্মতৃপ্তির ব্যাপার আপু । এইটা আমি বিশ্বাস করি ।
আমিও,,,,,
ওনার মুখের হাসিটাতেই সব কিছু বুঝা যাচ্ছে। অর্থাৎ ওনার মুখের হাসি বলে দিচ্ছে আপনার কাজটিতে কতোটি আনন্দ পেয়েছে তিনি। সত্যি দারুন লাগলো ভাইয়া আপনার এই কাজটি দেখে।
বুঝতে পারার জন্য ধন্যবাদ আপু। আসলেই ঐটা প্রশান্তির হাসির ছাপ । শুভেচ্ছা রইল।
ঠিক বলছেন ভাই অল্পতে খুশি হয় এমন পৃথিবীতে অনেক কম নেই বললেই চলে। আপনার কলিগ খালেক মিয়ার বৃওান্ত শুনে বোঝা যাচ্ছে তিনি একজন সংগ্রামী মানুষ। এই বয়সেও এইরকম উদ্যোমে আপনার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। উনার ইদ উপহার টা পেয়ে উনি হয়তো অনেক খুশি। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে সুস্থ্য রাখুক। আপনার এই ব্যাপারগুলো আমার অনেক ভালো লাগে অনুপ্রেরণা পাই।
যারা কাজ করতে চায় ,তাদের কাছে সহযোগিতার হাত বাড়াতে ভালোই লাগে ।
💖💖💖