জ্বালানি
আপনার আশেপাশের মানুষজনের ব্যবহার দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন যে, আপনার সঙ্গে কি হচ্ছে বা আপনাকে তারা কিভাবে গ্রহণ করছে । এই কথাটা বলার যথেষ্ট কারণ আছে । একটু ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
আমি আমার নিজের ব্যক্তিগত জীবন থেকেই কিছু উদাহরণ দিচ্ছি। সব থেকে বড় যে ব্যাপার, আমার চারিপাশে যে মানুষগুলো থাকে তারা আসলে মানুষ সাদৃশ্য হলেও, তারা আসলে ভিতরে ভিতরে যে পরিমাণ আমাকে নিয়ে ভিন্ন চিন্তাচেতনা পোষণ করে থাকে, তা যখন মাঝে মাঝে আমার খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়, তখন আমি সত্যি অবাক হই না বরং আমি ব্যাপার গুলোকে উপভোগ করি ।
এইতো গত সন্ধ্যেতেই আমার ফেলে আসা জীবনের বন্ধুদের সঙ্গে আবারো দেখা হয়ে গেল। এদের সঙ্গে ফেলা আসা জীবনে বেশ লম্বা একটা সময় কাটিয়েছি। যদি বলি কি পেয়েছি এদের কাছ থেকে, আপাতত এই উত্তর দেওয়া এই মুহূর্তে বেশ কঠিন। তবে শুধু এতোটুকু বলতে পারি, ওদের মন্তব্য আমাকে প্রচুর এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে ।
জীবনে মিষ্টি কথা শুনতে ভালই লাগে। তবে মুখ মিষ্টি কথা দিয়ে আর যাই চলুক, জীবন চলে না। আপনি জীবনে যতটা পরিমাণ তীর্যক সমালোচনার শিকার হবেন, তখন আপনি নিজেই বুঝে যাবেন জীবনে নিজেকে কিভাবে প্রস্তুত করতে হবে। আর সেই তীর্যক মন্তব্য গুলো যদি বন্ধু নামক মানুষগুলোর কাছ থেকে পাওয়া যায়, তাহলে পরিবর্তনটা আরো দ্রুত চলে আসে।
আমার ভালো আমি নিজেই বুঝি, তবে আমি ইচ্ছে করেই ওদের সামনে মাঝে মাঝে একটু নিজের মতো করে নিজেকে উপস্থাপন করি। তবে ওদের সমালোচনা গুলো যখন কানে আসে, তখন মনে হয় আমাকে আরো এগিয়ে যেতে হবে, আমার এখনো অনেক কিছুই করার বাকি আছে।
আমার আসলে ওদের প্রতি বিন্দুমাত্র অভিমান অভিযোগ নেই বললেই চলে। আমি মনে করি এগুলো জীবনের একটা অংশ। কেউ আমাকে নিয়ে যদি তীর্যক মন্তব্য করেই ফেলে, ব্যাপারটা আমার কাছে ভীষণ স্বাভাবিক। তবে দিনশেষে সেই বিষয়গুলো থেকে আমি কি শিক্ষা গ্রহণ করলাম, এটাই আমার কাছে মুখ্য বিষয়।
তবে একটা কথা বলি ভাই, জীবনে বন্ধু থাকা প্রয়োজন, তবে সেই বন্ধুগুলো কতটুকু আপনার জীবনে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারবে তেমনটাও কিন্তু ভাবা উচিত। আর আপনি যেমনটা ভাবে চিন্তা করেন তাদেরকে নিয়ে, তারা কিন্তু সেভাবে আপনাকে নিয়ে ভাবতে নাও পারে। তাদের কাছে আপনি অনেক সময় শুধুমাত্র তামাশার পাত্র হতে পারেন।
গত সন্ধ্যেবেলা যে শিক্ষা আমি পেয়েছি, তা হয়তো আমার আজীবন মনে থাকবে। হয়তো নতুন একটা সংকল্প আমার ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিভাবে নিজেকে আরো পরিপক্ক ভাবে তৈরি করতে হবে এবং কিভাবে নিজের লক্ষ্যে আরও দ্রুত পৌঁছাতে হবে, তার জন্য আমি কিন্তু সদা প্রস্তুত হয়ে গিয়েছি।
অনেকটা দিন ধরেই একঘেয়ামি জীবনযাপন আমি করছিলাম। দীর্ঘদিন ধরে ওদের সঙ্গে দেখা ছিল না। তবে এই দেখা-সাক্ষাৎ করে একপ্রকার ভালোই হয়েছে। যদিও পিকনিকের মত আয়োজন ছিল। তবে এসবের মাঝেও যখন তাদের সামনে নিজেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছিলাম, তীর্যক সমালোচনা গুলো যেন বারবার ছুটে আসছিল ।
তবে এটা সত্য কথা, আপনি যখন নিজের লক্ষ্যে অটুট থাকবেন, তখন আপনাকে নিয়ে তামাশা হবে হাসি ঠাট্টা হবে এবং অন্যের গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে আপনি এসে যাবেন। তার মানে আপনি আপনার গতিতে ঠিক আছেন, এই জন্য আশেপাশে একটু আলাপচারিতা হচ্ছে আপনাকে নিয়ে। ব্যাপারটা বেশ উপভোগ্য।
আমি পরখ করে বলতে পারি, এদের সঙ্গে আমার আবারও দেখা হবে হয়তো সেটা কালে ভদ্রে। এদের কথার জবাব আমি কোনদিন নিজের মুখে দেবো না বা দেওয়ার ইচ্ছাও নেই। হয়তো অবস্থান-কাল ভেদে ওদের উওর ওরা নিজেরাই পেয়ে যাবে, তবে শুধু একটু সময়ের দরকার।
ওরা আমার বন্ধু ,এটা যেমন ঠিক। তবে আমি বিপদে পড়লে ওদেরকে কখনো পাশে পাবো না, এটাও তেমন ঠিক। তাহলে তাও ওদেরকে কেন পাশে রাখছি, এমন প্রশ্ন আপনার মাথায় এখন আসতেই পারে। তাহলে চলুন, এক কথায় উত্তর দিচ্ছি। ওরা আসলে আমার জীবনে শুধুইমাত্র জ্বালানি, যা আমাকে প্রতিনিয়ত জ্বলতে সহযোগিতা করে।
এজন্য ওদের কাছে আমি বরাবরই কৃতজ্ঞ।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
সত্যি বলেছেন ভাইয়া মিষ্টি কথা শুনতে ভালোই লাগে তবে মিষ্টি কথা দিয়ে কখনো জীবন চলে না।আসলে ভাইয়া কথায় আছে বন্ধুর মতো বন্ধুকে বিশ্বাস করতে হবে তবে খল বন্ধুকে নয়।সত্যি ভাইয়া কিছু মানুষের উত্তর মুখে দিতে হয়, উত্তর এরা একাই পেয়ে যায়,শুধু সময়ের অপেক্ষা। আশাকরি এ সকল বন্ধু থেকে দূরে থাকবেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ভাই আপনার পোস্টগুলো পড়লে অনেক বাস্তবতা খুব কাছ থেকে দেখতে পাই মনে হয়। উপরের কথাটা একদমই অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে। বন্ধু নামক জীব যখন শুধুমাত্র অবস্থানের মোড়কে নিজেকে মুড়িয়ে যখন একটা আলগা ভাব নেয় তখন মুখে মুচকি হাসি দিয়ে আর মনে মনে বলতে ইচ্ছে করে একদিন তোর সিঙ্গারা খাওয়ার মতো টাকা ছিল না কিন্তু আমি খাইয়েছিলাম। আর এখন এই আলগা ভাব আমায় একটু বিনোদন দেয় আর নতুন করে জ্বলে উঠতে সাহায্য করে। আর কিছু বলার নেই ভাই, এরা এমনি।।।
তবে হয়তো একদিন এরা জ্বলবে আপনাকে দেখে।
আপনি ঠিকই বলেছেন ভাই আশেপাশে মানুষগুলো দেখলে বোঝা যায় আসলে আমার সাথে তারা কি ব্যবহার করতে যাচ্ছে। আসলে মানুষ জন্মগতভাবেই স্বার্থ নিজ। আমাদের সমাজে কিছু মিষ্টিভাষী লোক আছে যারা মিষ্টি কথা বলে থাকে। কিন্তু তাদের এই মিষ্টি কথা তো জীবন চলে না, জীবন তার নিজস্ব গতিতেই চলে। সুসময়ে অনেক বন্ধু থাকে দুঃসময় তাদের ব্যবহার দেখলে মনে হয় এরা আগে আদো কি আমার বন্ধু ছিল?
আসলে ভাইয়া, আপনার পোস্টগুলো দেখলে ভীষণ ভালো লাগে। কারণ আপনি একদম বাস্তবিক বিষয়গুলো মুখের উপরে বলে দেন। আর বন্ধুরা যদি এরকম হয় তাহলে তো, আমি মনে করি তারা থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো। আর মিষ্টি কথা, সে তো সবাই বলতে পারে। কিন্তু প্রয়োজনে উপকারে কে আসে সেটা হচ্ছে মূল কথা। আর আপনি ঠিকই বলেছেন, এরা পেছনে যতই সমালোচনা করুক না কেন, এদেরকে জবাব দেওয়ার জন্য আরও বেশি এগিয়ে যেতে হবে।
আসলে কাছের মানুষগুলো যখন সমালোচনা করে তখন একদিকে যেমন খারাপ লাগে তেমনি অন্যদিকে নিজেকে আরো ভালোভাবে তৈরি করার প্রতি উৎসাহ তৈরি হয়। সত্যি কথা বলতে কিছু কিছু মানুষ আছে যারা মনের অজান্তেই আমাদের উপকার করে ফেলে। আসলে তাদের সমালোচনা এবং তির্যক কথাগুলোই আমাদের হৃদয়ে কাটার মতো বিধে। আর সফলতার পথে আমরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। তবে ভাইয়া বন্ধু নামক মানুষগুলো সত্যি কেমন জানি স্বার্থপর। একেবারে চিরন্তন সত্য কথাই আপনি তুলে ধরেছেন। আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই হয়তো এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। তবে যত বেশি আঘাত পাবো মনে, তত বেশি হৃদয় পরিপক্ক হবে ভালো কিছু করতে। মাঝে মাঝে আঘাত থেকেও অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়।
প্রথমে জ্বালানি মানে ভেবেছিলাম দাদা খাবার দাবার রান্না করেছো সেই সম্পর্কে লিখবে। পরে পড়ে দেখলাম বন্ধু বান্ধবের সমালোচনা কে জ্বালানি হিসেবে নিয়েছেন। তাদের ঐসব আলোচনার মধ্যে যেন শক্তির একটা উৎস পাওয়া যায় যা নিজেকে ইম্প্রুভ করার জন্য বেশ কাজে লাগে।
ভাইয়া আমিও আপনার সাথে একমত পোষন করছি। কে কি বললো সেটা দেখে আমাদের লাভ নেই। প্রত্যেকের জীবনেই এমন কিছু বন্ধু থাকে যারা অন্য বন্ধুকে নিয়ে সমালোচনা করে। তবে তাদের সমালোচনা থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিৎ। ধন্যবাদ ভাইয়া।
এই জ্বালানি আছে বলেই আমরা জ্বলতে পারি! না হয় কখনো শুকনো কাঠের মতোই থেকে যেতাম। তবে বন্ধুদের তির্যক মন্তব্য আমাকেও ব্যথিত করে! কথার দ্বারা আঘাত দেয়ার মতো কষ্ট আর নেই! তবে মজার ব্যাপার হলো, আপনাকে নিয়ে সবসময় তারা ভাববে! এই ভাবনাটাই বা কয়জনে করে!