একবেলার সফর || @shy-fox 10% beneficiary

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

20220506_161305-01.jpeg
বিগত কয়েকদিনের গল্প থেকে আজকের গল্পের ধারাবাহিকতা একটু আলাদা হবে । যাইহোক ঘটনাটি ঈদের দুই দিন পরের । একবেলার সফরে বেড়াতে গিয়েছিলাম নানি শাশুড়ির বাড়িতে । অনেকটা বলতে পারেন ঈদের দাওয়াত খেতে । তবে অন্য আর দশটা ঘটনার থেকে এই ঘটনাটা একটু আলাদা ছিল । আজকে সেটাই ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব ।

ঈদের তৃতীয় দিন সকালবেলায় পরিবার নিয়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম । যদিও আগে থেকেই দাওয়াত গ্রহণ করেছিলাম বিধায় মোটামুটি মানসিক প্রস্তুতি আগে থেকেই ছিল । অতঃপর ছোট্ট একটা সিএনজি নিয়ে যাত্রা শুরু ।

20220506_114530.jpg

সকাল বেলার দিকে আবহাওয়া বেশ ভালই ছিল । আকাশে রোদ উঠেছিল, মোটামুটি অন্যান্য দিনের থেকে আবহাওয়া অনেকটাই আলাদা । যাইহোক বেশ ফুরফুরে মেজাজে সবাই মিলে রওনা দিয়েছি কিন্তু পথিমধ্যেই বিপত্তিটা মূলত হয়ে গেল । আকাশের পরিবর্তন স্বচক্ষে দেখতে লাগলাম ।নীল আকাশ মুহূর্তেই কাল হতে শুরু করেছে । তারোই মাঝ দিয়ে আমাদের ছোট সিএনজি গাড়িটা যাচ্ছে তার নিজস্ব গতিতে । মোটামুটি বাতাসের বেগ বেড়েই চলছে, বোঝা যাচ্ছে এই আবহাওয়া সুবিধার না ।

20220506_115532.jpg

আমি শুধু শঙ্কায় আছি, যদি মাঝ পথে বৃষ্টি শুরু হয় , তা হলে তো অনেকটাই ঝামেলায় পড়ে যাব । কারণ সিএনজির দু'পাশেই উন্মুক্ত । বৃষ্টি আসলে নির্ঘাত শরীর ভিজে যাবে । মোটামুটি শহরের যানজট পেরিয়ে যখন গ্রামীণ রাস্তায় ঢুকে গিয়েছি তখন আকাশের দিকে দেখছিলাম । মনে হচ্ছিল আকাশটা যেন ভেঙে পড়বে । পুরো আকাশ কালো হয়ে গিয়েছে, মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে ও সঙ্গে বাতাসের বেগ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে ।

20220506_115823-01.jpeg

একটা বার চিন্তা করে দেখুন । রাস্তার দু'পাশে শুধুমাত্র ধানের জমি আর মাঝ দিয়ে কাঁচা রাস্তা । আর তার উপর দিয়ে আমাদের ছোট সিএনজি গাড়িটা যাচ্ছে । অতঃপর বৃষ্টি হতে আর রেহাই নেই । নানি শাশুড়ির গ্রামের ঢুকতেই বৃষ্টির দেখা । বৃষ্টি যেন অবিরাম ঝরছে তার নিজের মতো করেই ।

20220506_120915-01.jpeg

ভাগ্যিস খুব একটা বেশি ভিজতে হয়নি । কারণ ড্রাইভার ভদ্রলোক বেশ দ্রুত গতিতে চালিয়ে নিয়ে গিয়েছে । কারণ সে আমাদের পূর্ব পরিচিত । তাই তার আগে থেকেই বাড়ি চেনা । যাইহোক বাড়ির দরজার সামনে গাড়ি দাঁড়াতেই, লোকজন এসে হাজির ছাতা নিয়ে । আমি এ বাড়ির নাতি জামাই । তারপরে তো আবার সঙ্গে শায়ান বাবু আছে । তাই মোটামুটি তারা একদম নিরাপত্তার চাদরে বৃষ্টির হাত থেকে অনেকটা মুক্ত করে, আমাদেরকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে গেল ।

20220506_122617-01.jpeg

আমি অবশ্য সব পরিবেশেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারি । যদি সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক ভালো ভাবে পাওয়া যায় তাহলে । দুঃখের বিষয় এমনিতেই মাটির বাড়ি তাই এখানে নেটওয়ার্কের দেখা পাওয়াটা অনেকটাই অমাবস্যার চাঁদের মত ।

20220506_122656-01.jpeg

যেহেতু আমি নেটওয়ার্কের ভিতরে থাকা মানুষ । তাই আমার মোবাইলে যদি নেটওয়ার্ক না থাকে, তাহলে মনেহয় আমি অনেকটাই পৃথিবীর বাইরে আছি । কারণ আমার যেটা জগত, সেখানে যদি আমি না থাকতে পারি , তাহলে আমি মনেহয় কবরে আছি , ব্যাপারটা ঠিক এমন লাগে আমার কাছে ।

20220506_122653-01.jpeg

হীরাকে তাড়াতাড়ি বলছি বৃষ্টি থামার পরে, খাওয়া-দাওয়া করেই কিন্তু আমরা চলে যাব । কারণ এখানে নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে না । হীরা মোটামুটি রাগে গজগজ করছে, এতদিন পরে বেড়াতে এসে , খালি যাই-যাই । যাবোই তো, একটু সহ্য করা যাচ্ছে না । আসলে আমার ব্যথা বোঝার মানুষ এখানে কেউ নেই । আর এই ব্যথা কাউকে বলাও যাবে না ।

20220506_122624-01.jpeg

অতঃপর মুখ বুজে সহ্য করলাম, শুধুমাত্র বিকাল হওয়ার জন্য । যেহেতু বেড়াতে এসেছি তাই চেষ্টা করলাম, একটু নেটওয়ার্ক না থাকলেও ঘন্টা তিনেক যেন ভালোভাবে সময় কাটাতে পারি, সেই পরিকল্পনা মোটামুটি করেই ফেললাম। পরিবারের সব লোকজনের সঙ্গে একটু একটু করে গল্প করার চেষ্টা করলাম । তাদের খোঁজ খবর নেওয়ার চেষ্টা করলাম । এই ভাবেই কিছুটা সময় কেটে গেল অতঃপর নানী শাশুড়ির হাতে রান্না করা বিভিন্ন খাবার খেয়ে , মোটামুটি দেখতে দেখতে বিকাল হয়ে গেল ।

20220506_141335-01.jpeg

20220506_161311-01.jpeg

এখন বিদায় পর্ব, চেষ্টা করলাম দীর্ঘদিন পরে যেহেতু সবাই একত্রে হয়েছি, তাই একটা পারিবারিক ছবি তুলে রাখলে মন্দ হয় না । যেমন সিদ্ধান্ত ,তেমন কাজ । অতঃপর কিছু ছবি তুলে রাখলাম নিজেদের । যাইহোক হয়তো ছবিগুলো পরবর্তীতে দেখবো আর মনে করবো, এই সময়টার কথা । যদিও একবেলার সফর ছিল, তবে সময়টা কিন্তু বেশ মনে রাখার মত।

Banner.png

ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

ভাই পুরো গল্প পড়ে ভালোই লাগলো। তবে ভাই আপনি ঠিকই বলছেন, আপনার মতো আমিও নেটওয়ার্কের বাইরে থাকতে পারি না। আমার মনে হয় আমাকে এক রোমে টানা সাত দিন থাকতে বললেও থাকতে পারবো রোম থেকে বের হবো না। কিন্তু ওয়াইফাই টা কনফার্ম থাকলেই হবে। হাহাহা।

ভাই, কালো মেঘ যুক্ত আকাশের ছবি অনেক সুন্দর হয়েছে। আর অনেক দিন পর মাটির ঘর দেখা হলো। যাইহোক ভাই ভালো লাগলো আপনার একবেলার সফর। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আসলে আমাদের জীবন জীবিকা চলছে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে, এটাই যদি না থাকে তাহলে তো একটু এলোমেলো লাগেই ।

 2 years ago 

ভাই শুরুতেই বলব আপনি বেশ ভাগ্যবান। কেননা আপনার নানী শ্বাশুড়ি এখনো জীবিত আছে। অনেকদিন আগে আপনার মত আমিও সিএনজির মধ্যে ফাঁকা মাঠে থাকাকালীন অবস্থায় ঝড়ের কবলে পড়েছিলাম। সে অভিজ্ঞতা বলে বোঝানোর নয়। বাতাসের প্রচন্ড ঝাপটায় আমাদের ছোট্ট সিএনজি যেন ছিটকে পড়ার অপেক্ষায় ছিল। আপনি বড় বাঁচা বেঁচে গিয়েছেন। যাই হোক আমরা বর্তমানে নেটওয়ার্কের সঙ্গে এতটাই কানেকটেড হয়ে গেছি এর বাইরে গেলেই নিজেকে একজন বিচ্ছিন্ন মানুষ মনে হয়। সুন্দর ছিল আজকের লেখা। ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

আপনার সিএনজির ঘটনাটা শুনে বেশ খারাপ লাগলো ।নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন ভাই । ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাই বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের নেটওয়ার্কের যে সমস্যা তাতে কোনো কিছু করা যায় না। আমাকেও অনেক সময় আম্মু বলে কোথাও গেলে শুধুমাত্র নাকি আমি যাই যাই বলি এজন্য অনেক সময় বকুনিও খেতে হয়। তারপরও আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক চমৎকার ছিল এবং চমৎকারভাবে আপনি সম্পূর্ণ বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন। বিশেষ করে মেঘলা আকাশে ছবিটি আমার অনেক ভালো লেগেছিল। পরিবারের সাথে সময় কাটানোর মজাই আলাদা। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

 2 years ago 

একই অবস্থা আমারও রে ভাই, ঐদিকে তুমি তোমার আম্মুর বকা খাচ্ছো আর এইদিকে আমি মাঝে মাঝে কোথাও যাই না বলে, হীরার বকা খাই ।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনি সব পরিবেশেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন তা আপনার পোস্টগুলো পড়ে অনেক আগেই বুঝতে পেরেছি। এজন্যই আপনাকে আমার এত ভালো লাগে। নানি শাশুড়ির বাসায় গিয়ে এত সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন অথচ পেট ভোজনের কোন ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেন নি। পাছে আবার আমরা আপনার সেই খাবারে ভাগ বসিয়ে ফেলি এজন্যই হয়তো খাবারের আয়োজন এর কোন ফটোগ্রাফি ধারণ করেন নি। তাই আমাদের দাওয়াতটা কিন্তু থেকেই গেল ভাইয়া। বৃষ্টির দিনে নানি শাশুড়ির বাড়িতে গিয়ে খুবই সুন্দর সময় কাটিয়েছেন তা দেখে বেশ ভালই লাগছে। আপনার একবেলার সফর খুবই সুন্দর ভাবে উপভোগ করেছেন তা আপনার পুরো পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম। সুন্দর বর্ণনার মাধ্যমে এবং সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে এত সুন্দর একটি এক বেলার সফর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনাদের দাওয়াত হলো আমার বাড়িতে । যখন মন চায় , চলে আসবেন । আমি কৃতজ্ঞ থাকবো ।

 2 years ago 

আসলে ভাইয়া গ্রামীণ পরিবেশে এই নেটওয়ার্কের সমস্যা প্রায়ই দেখা যায়। বিশেষ করে গ্রামে নেটওয়ার্ক খুবই ঝামেলা করে। আর নেটওয়ার্ক ছাড়া এক মুহূর্ত থাকা অসম্ভব। কারণ আমরা নেটওয়ার্কের ভিতরে ঢুকে গেছি একদম। যাইহোক আপনার নানি শ্বশুর বাড়িতে অনেক সুন্দর সময় পার করলেন। তবে বৃষ্টির কারণে একটু সমস্যা হয়েছিল। তবে ঠিকঠাক ভাবে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এটা জানতে পেরে ভালো লাগলো। শুভকামনা রইল আপনার জন্য এবং আপনার পরিবারের সকলের সুস্থতা কামনা করছি।

 2 years ago 

নেটওয়ার্ক বিহীন জীবনটা তো , অনেকটা কবরের মতো লাগে ভাই এই সময়ে এসে ।

 2 years ago 

ভাই আমিও ঠিক আপনারই মত, আমি নিজেকে যেকোনো পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারি শুধু মোবাইলের নেটওয়ার্কটা থাকলেই হলো। আর এ কারণেই আমার যেকোনো গ্রামে গিয়ে থাকতে একটু অসুবিধাই হয়।
যাই হোক, ভাইয়া আপনার নানি শাশুড়ির বাড়ির এলাকাটা তো দারুন। মাটির বাড়ি গুলোর কারনে খুবই ভালো লাগছে দেখতে, এরকম মাটির বাড়ি অনেক দিন পর দেখলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

হ্যাঁ এটা সত্য কথা , আমাদের এলাকাতে এখনো অনেক মাটির বাড়ি আছে । তবে সেখানে নেটওয়ার্কের দূর্বলতা অনেক বেশি, এই কারনেই আসলে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খুব একটা যাওয়া হয় না ।

 2 years ago 

নানি শাশুড়ির বাড়িতে ঘুরতে গিয়ে বিরূপ একটা পরিবেশের মুখে পড়তে হয়েছিল ভাই। শুনে খারাপ লাগল আসলে। আসলে প্রকৃতি কখন তার ভয়াল রূপ নয় আসলে বলা অসম্ভব। তবে আমি মনে করি প্রকৃতি যা করে হয়তো তার ভালোর জন্যই করে। আর ভাই সত্যি কথা বলতে আমি আপনার মতই। নেটওয়ার্ক ছাড়া কখনো কোথায় থাকতে পারিনা। কারণ সারাদিন মোবাইলটা আমার হাতেই থাকে। নেটওয়ার্ক ছাড়া যেন জীবনটা অচল হয়ে দাঁড়ায়। ধন্যবাদ আপনাকে এরকম একটি সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য ভাই। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

সময়টাই এখন চলছে প্রযুক্তি আর নেটওয়ার্কের উপর । তাই নেটওয়ার্ক বিহীন থাকা তো একদম অসম্ভব ।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার একবেলার সফরটা বেশ ভালই ছিল ।অনেকদিন পর এভাবে সবাই মিলে গ্রামে ঘুরতে গেলে বেশ মজাই লাগে ।আমার কাছে তো বেশ ভালো লাগে ।তবে আপনি ঠিকই বলেছেন এখন আমরা এমন একটা সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি যখন যেখানেই যাই না কেন নেটওয়ার্কে বাইরে থাকা সম্ভব নয়। যত আনন্দের মধ্যেই থাকি না কেন নেট লাগবেই। তার পরেও আপনি কষ্ট করে নেটের বাইরে থেকেও সময়টা বেশ উপভোগ করেছেন ছবি গুলো দেখেই বুঝতে পারছি। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সঙ্গে আপনার এত সুন্দর সফরের কাহিনী শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

এইটা সত্য যে, সফরটা ভালো ছিল । তবে বৃষ্টির কারণে একটু ঝামেলা হয়েছিল । মূলত বিপত্তিটা লেগেছিল নেটওয়ার্কের কারণে । হয়তো নেটওয়ার্ক ভাল থাকলে এক রাত থেকে আসতাম ।

 2 years ago 

এই বর্ষায় গ্রামের পরিবেশ আমার কাছে ভালো লাগে।গ্রামের লোকেরা এই বর্ষায় সবাই একত্রিত হয়ে গল্প করতে ভিশন ভালোবাসে।

 2 years ago 

মাটির বাড়ি এখন সচারাচর দেখা যায় না,ছবি এর মাধ্যমে অনেক দিন পর দেখলাম।কি কপাল ভাই আপনার নানী শাশুড়ীর বাসায় দাওয়াত খান😊😊।যাই হোক ভালো ছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আমাদের এইদিকের গ্রাম অঞ্চলে এখনো অনেক মাটির বাড়ি আছে । তবে হ্যাঁ এটা সত্য কথা, আমার নানী শ্বাশুড়ি এখনো বেঁচে আছে ।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 60061.12
ETH 3196.84
USDT 1.00
SBD 2.45