পড়ন্ত বেলায়
এখানকার মানুষের জীবন সম্পূর্ণই আলাদা । হয়তো আমার আপনার জীবন শহরে যেভাবে কাটে তার সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র এখানে। এখানকার জনজীবন অনেকটাই সাদামাটা ও ছিমছাম ।
এখনো আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি এই নদীর তীরবর্তী গ্রামে । তবে মজার একটা ব্যাপার হচ্ছে, যদি কেউ আধুনিকতার ছোঁয়া ছাড়াও একটু জীবনটাকে ভিন্নভাবে দেখতে চায়, তাহলে আমি মনে করি এইরকম গ্রাম হতে পারে , একদম আদর্শ একটা জায়গা । যেখানে শুধুমাত্র প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা যাবে , একদম আপন ভাবে ।
একটা বার চিন্তা করে দেখুন তো , যেখানে সূর্যের আলোয় সবকিছু এবং সেই আলোতেই সব কার্য শেষ করতে হবে আর সন্ধ্যের পরে নেমে যাবে চতুর্দিকে ঘন অন্ধকার । তেমন একটা পরিবেশে যদি, নিজেকে আবিষ্কার করা যায় তাহলে কেমন লাগবে । হয়তো নিশ্চয়ই ভিন্ন রকম একটা অনুভূতি হবে । আসলে এখানে যারা থেকে অভ্যস্ত তাদের কাছে এটা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে ।
তবে আমার মতো যারা মানুষ আছে, যারা সমসাময়িক সময়ের জন্য এখানে আসে , তারা খুব একটা বেশিক্ষণ এই পরিবেশে টিকে থাকতে পারবে না । হয়তো প্রকৃতির সান্নিধ্য নেওয়ার জন্য সাময়িক সময়ের জন্য ব্যাপারটা ঠিক আছে, তবে পুরোপুরি চিন্তা করলে, সেদিক থেকে শহরেই আবার ফিরে যেতে হবে ।
নদীর চরের উপর এখন আখের চাষ হচ্ছে, এই সময়টাতেই মূলত আখের চাষ হয় এই অঞ্চলে । কারণ পরবর্তী সময়গুলোতে তো বন্যার পানিতে এই জায়গাগুলো ডুবে থাকে । দুই পাশে ঘন সবুজ আখের জমি মাঝ দিয়ে ছোট্ট আঁকাবাঁকা রাস্তা এবং সেটা চলে গিয়েছে একদম ঘাটের কাছাকাছি । যেখানে মাঝি অপেক্ষা করছে নৌকো নিয়ে যাত্রী পারাপার করার জন্য ।
মাঝির একটু পরেই ছুটি হয়ে যাবে কারণ সারাদিনের ক্লান্তি শেষে, সেও ফিরে যাবে তার আপন গৃহে । এখানে তার কর্ম ঘন্টা খুবই সীমিত, সেই সকাল থেকে শুরু হয় , যা শেষ হয় এই সন্ধ্যে বেলাতে, যখন আর কি সূর্যের আলো থাকে না ।
হিম শীতল বাতাস বইছে চারিদিকে , শীতের যে আগমনী বার্তা হয়েছে তা কিন্তু বেশ ভালোভাবেই বোঝা যাচ্ছে । ঐ ডুবন্ত সূর্যের দিকে যখন তাকাচ্ছি , তখন যেন সকলের মাঝেই বেশ নীরবতা দেখতে পাচ্ছি । কারণ যেদিকেই দেখছি শুধু ফাঁকা আর ফাঁকা । কারণ সবাই যে যার গৃহে চলে গিয়েছে আর একটু পরেই যে সন্ধ্যা নেমে যাবে , তাই হয়তো সকলেই ব্যস্ত নিজের আপন গৃহে যাওয়ার জন্য ।
যেহেতু নদী তীরবর্তী অঞ্চলে গিয়েছিলাম, তাই চেষ্টা করেছি মুঠোফোন দিয়ে কিছু ছবি তোলার জন্য । চেয়েছি পাঠকদের কে দেখানোর জন্য যে, এই সময়ে এসেও কিছু এলাকা থাকে , যেখানে এখনো আধুনিকতার কোন ছোঁয়া লাগেনি । তবে সেখানকার মানুষজন ভীষণ সহজ-সরল এবং তারা এত প্রতিকূল পরিবেশের মাঝে থেকেও টিকে আছে এবং বেশ ভালোভাবেই বেঁচে আছে । তাদের কাছে দিনের আলোটাই যেন বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর সন্ধ্যে হলে যেন সারা দিনের ক্লান্তি নেমে আসে ঐ অন্ধকারের সঙ্গে ।
এখানকার জীবনের সঙ্গে যদি শহুরে জীবনের তুলনা করি , তাহলে মনে হয় বেশ ভালই আমরা শান্তিতে আছি । তবে আমি মনেকরি , যদি মন থেকেই কেউ প্রশান্তি খুঁজে পেতে চায় , তাহলে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও , এমন পরিবেশে গিয়ে সময় কাটানো একটু হলেও দরকার । হয়তো ভিন্ন রকম ভালোলাগা বোধ ও উষ্ণতা কাজ করবে তখন নিজের মনের ভিতরে, যেমনটি আমার হয়েছিল সেদিনের সেই পড়ন্ত বেলায় ।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
সত্যি ভাইয়া গ্রামের এই প্রকৃতির সান্নিধ্যে গেলে মনটা ভাল হয়ে যায়। কিন্ত আমরা শহরে থেকে থেকে অভ্যস্থ হয়ে গেছি।আমরা চাইলেও এই পরিবেশে নিজেদেরকে মানিয়ে নিতে পারব না।অনেক ভাল লাগলো পোস্টটি পড়ে। এখানে মানুষ সূর্যের আলোতে কাজ সেরে নেয়,সন্ধ্যার পর অন্ধকার।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
সত্যি ভাইয়া আপনি বাংলা লেখা অপরূপ প্রকৃতি আমাদেরকে আজ দেখালেন। আর যে গ্রামের দৃশ্য আপনি দেখালেন এখনই কোন জনমানব নেই। আমি তো এমনিও গ্রামে থাকতে ভয় পাই।আপনার পোস্ট দেখে চলে গিয়েছিলাম সেই ছেলেবেলায় টিভিতে দেখা গ্রামের কাছে।
পাঠকের সন্তুষ্টি লেখকের আত্মতৃপ্তির বহিঃপ্রকাশ।
সত্যি ভাইয়া আমরা যদি মানসিক প্রশান্তি পেতে চাই তাহলে এরকম একটা জায়গায় কিছুটা সময় কাটালে ভালই লাগবে। আসলে গ্রাম অঞ্চলের পরিবেশ ভালই লাগে। খোলা হাওয়া, চারপাশে পরিবেশ দেখতে ভালোই লাগে। হয়তো তাদের জীবনযাত্রার ধরণ আমাদের জীবনযাত্রার ধরনের থেকে একেবারে আলাদা। তাইতো আমরা স্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস করতে পারি না। কিন্তু তারা এই জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। আসলে শহরের চার দেয়ালের মাঝে বন্দী থাকতে থাকতে আমরা যখন হাঁপিয়ে উঠি তখন যদি এরকম পরিবেশে সময় কাটাতে পারি তাহলে মনে হয় ভালই লাগবে। ভাইয়া আপনার অনুভূতি এবং সেই সাথে ফটোগ্রাফি গুলো তুলে ধরেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমার কাছেও ঠিক তেমনটাই মনে হয় আপু, মানসিক প্রশান্তির জন্য এই রকম জায়গা হতে পারে, একদম পরিপক্ব।
আসলে দাদা শহরের জীবন থেকে এই গ্রামের জীবনের মাঝে যে সূক্ষ্ম বিভেদরেখা আছে আমার মনে হয় সত্যিই সেটা থাকা জরুরী। এই নির্মল আকাশ, বাতাস, জল সব দূষণে কলুষিত হয়ে যাক আমরা কেউই মনে হয় চাই না। এই ভাবে আখের ক্ষেত,কাঁচা রাস্তা, নদীর টলমলে স্বচ্ছ জল এগুলো ওই ভাবেই বেঁচে থাকুক। বিদ্যুৎহীন রাতগুলো লন্ঠন বা হ্যারিকেনের আলোতেই আলোকিত হোক। জানি দৈনন্দিন কাজের ক্ষেত্রে এখন এগুলো বাঁধাই। তবে কিছু পরিবেশকে সত্যিই রিস্টোর করা প্রয়োজন আছে।
যথার্থ বলেছেন কথাগুলো। বেশ ভালো লাগলো শুনে।
এটা অবশ্যই ভাই গ্রামে এখনো আধুনিকতার পরশ পায় নি ৷ গ্রাম মানেই হলো সাদা মাটা জীবন ৷ আর প্রতিটি মুহূর্ত কাটে প্রকৃতির সাথে ৷ সেই কাক ডাকা ভোর শুরু হলো গ্রামের মানুষের জীবন জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা ৷ আর নিশ্চুপ সন্ধা নামার আগেই নিজ গৃহে ফেরা ৷ আর এভাবেই একেক টি দিন চলে যায় ৷
শুভ ভাই আপনি গ্রামের প্রকৃতি রুপ রেখা তাল মিলিয়ে খুব সুন্দর একটি টপিক তুলে ধরেছেন ৷ তার সাথে গ্রামের প্রকৃতি সৌন্দর্য সত্যি অসাধারণ ৷
ধন্যবাদ শুভ ভাই ৷
গ্রাম আমার বরাবরই পছন্দের।তাই বলে আধুনিকতার ছোয়া লাগে নি এমন গ্রাম বসবাসের জন্য না হলে ও নীরবতা ও নিস্তব্ধ মুহূর্ত কাটানোর জন্য বেশ উপযোগী।গ্রামের মাঠ, আখ ক্ষেত,মাঝি ও নদীর দৃশ্য দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া।শহর জীবন খুবই ব্যস্ততার।ধন্যবাদ ভাইয়া ।
প্রকৃতি হচ্ছে বেঁচে থাকার স্বন্জিবনী শক্তি। মাঝে মাঝেই হারিয়ে যাওয়া উচিত এই প্রকৃতির মাঝে, আর এই অপরুপ সুন্দর উপভোগ করতে হলে সত্যিই বোঝার ক্ষমতা থাকতে হবে। যেভাবে আপনি আপনার চমৎকার উপলব্ধি প্রকাশ করলেন ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। বিশেষ করে গ্রামের সহজ সরল মানুষ আর সুন্দর প্রকৃতি বেশ ভালো লাগার অনুভূতি সৃষ্টি করে। তবে একটা জিনিস সন্ধ্যা হলে তারা প্রশান্তির সাথে ঘুমিয়ে পরে যা আমরা অনেকেই পারি না। তবে আমরা শহুরে জীবনে বাঁধা পরে গেছি চাইলেও দীর্ঘ সময় থাকতে পারিনা এই সবুজ গ্রামে।