শখ জাগে
বাজারের শুরুতেই মসজিদের পাশে যে দোকানটা আছে, সেখানেই মোটামুটি মাঝে মাঝে কাঁচাবাজার করতে যাই। মূলত ঐ দোকানটা একদম বাজারে ঢুকতেই পড়ে, তাই ওখান থেকেই কাঁচাবাজার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
তবে কাঁচাবাজারের দোকানটির পাশেই ছোট্ট একটা পাখির দোকান আছে। দোকানটা প্রায়ই দেখি তবে রিক্সা থেকে নেমে গিয়ে যে, পাখিগুলোর ব্যাপারে জানার চেষ্টা করব, সেটা কখনো হয়ে ওঠেনি। হয়তো সেটা সময় স্বল্পতার কারণে।
তবে সেদিন ইচ্ছে করেই, অনেকটা সময় বাজার করার পরে রিক্সা দাঁড় করিয়ে রেখে, সেই দোকানে একটু উঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম এবং রীতিমতো আমি জানার চেষ্টা করছিলাম পাখি ও কবুতর সম্পর্কে।
দোকানদার ভাই অনেকটাই অপ্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল, আমার কথাবার্তা শুনে। কারণ আমি এমনভাবে তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করেছিলাম, তাতে দোকানদার ভাই অনেকটাই ভেবে বসে ছিল যে, আমি সাংবাদিক। তবে পরবর্তীতে তাকে আমি আশ্বস্ত করে বললাম যে, আমি মূলত আগ্রহের জায়গা থেকেই ব্যাপারগুলো সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি।
রাশেদ ভাই, তার মামার মাধ্যমেই মূলত এই ব্যবসায় এসেছে । তারপরে ব্যাপারটা কখন যে নিজের ভালোলাগায় জড়িয়ে গিয়েছে, সেটা সে আর বুঝে উঠতেই পারেনি। দীর্ঘ ২০ বছরের অধিক সময় থেকে তার মামা এই কবুতর ও পাখির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সে ছোটবেলা থেকেই দেখেছে তার মামার বাড়িতে কবুতরের খামার। যা পরবর্তীতে এই দোকানে পরিণত হয়েছে।
যেহেতু ছোটবেলা থেকেই, তার মামার সঙ্গে সে বেড়ে উঠেছে, তাই মামার কার্যকলাপ গুলো খুব কাছ থেকেই তার দেখার সুযোগ হয়ে গিয়েছিল। হয়তো সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সেও সেদিকটাতে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করেছে, তারপরে থেকেই মোটামুটি পাখি ও কবুতরের প্রতি তার দুর্বলতা কাজ করে, যা এখনো চলমান।
আমি খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারি, ওদের কখন কি দরকার। ওরা অনেকটা আমার বন্ধুর মতো হয়ে গিয়েছে। যদিও জীবিকার তাগিদে ওদের বিক্রি করতে হয়, তবে কষ্ট হয়। কারণ দীর্ঘ সময় থেকে ওদের যত্ন করে বড় করেছি, তাই হয়তো কিছুটা দুর্বলতা কাজ করে।
ক্রেতার সংখ্যার এখানে ভিন্নতা আছে। কারণ হরেক রকমের কবুতর ও পাখির সমাহার এখানে। তার ভিতরে সামর্থ্যের একটা ব্যাপার তো থাকছেই। তবে যারা মূলত পাখি বা কবুতর কিনে থাকে, তারা আসলে দাম নিয়ে খুব একটা চিন্তা করেনা কারণ এগুলো শখ। তাছাড়াও এখানে পাখির খাবার বিক্রি করা হয় ।
অনেকে তো আমাদের কাছে এসে তাদের পোষা কবুতর বিক্রি করে যায়, আমরা সেটাও কিনে থাকি। তাছাড়াও আমাদের কাছ থেকে নিত্য নতুন জাতের কবুতর ও পাখি পাওয়া যায়। তবে যারা এসব সংগ্রহ করে, তারা মূলত সৌখিন মানুষ। বিশেষ করে যাদের পাখি পোষা নেশাতে পরিণত হয়ে গিয়েছে, তারাই মূলত আমাদের ক্রেতা।
যদিও আমি নিজেই এত কিছু বুঝি না। কারণ এই বিষয়ে আমার সীমিত জ্ঞান। তবে এতোটুকু আমি স্বল্প আলাপচারিতায় বুঝতে পেরেছি, পাখি বা কবুতর পোষার মধ্যে আধ্যাত্মিক একটা প্রশান্তি পাওয়া যায়। আমি যখন দোকানটি ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম আর ছবি তুলছিলাম, তখন যেন কবুতর গুলো দেখেই একটা আলাদা রকম ভালোলাগা বোধ কাজ করছিল নিজের মাঝে।
রাশেদ ভাইয়ের আগ্রহ, শখ, ভালোলাগা, জীবন-জীবিকা সবটাই এখন পাখির উপর নির্ভর করে। পাখিগুলো সুস্থ থাকলেই, সেও যেন সুস্থ থাকে। সে চায় তার পাখি বা কবুতর গুলো, যে ক্রেতাদের কাছে চলে যাচ্ছে, তারাও যেন তার মতো করেই পাখিগুলোর যত্ন নেয়, এমনটাই তো বিক্রেতা হিসেবে সে প্রত্যাশা করে।
রাশেদ ভাইয়ের সঙ্গে স্বল্প কথোপকথনে, যে কথাগুলো জানতে পারলাম, তা অনেকটাই গ্রহণযোগ্য হয়েছে আমার কাছে। ভাবছি সময় সুযোগ হলে, এক জোড়া ফুটফুটে সাদা কবুতর কিনে ফেলবো। চেষ্টা করব পোষ মানানোর জন্য, দেখি হয় কিনা।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
পাখি পালন বেশ সৌখিন একটা কাজ। আমার নিজের দুটো লাভবার্ড রয়েছে এগুলো যত্ন করতে আর খাবার দিতে কি যে ভালো লাগে বলা বাহুল্য। তবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হয় বেশ। আপনার পাখি পালনের ইচ্ছে জেগেছে ভেবেই ভালো লাগছে ভাই। একজোড়া সাদা কবুতর কিনে ফেলুন এই কামনা করছি।
ভাই ইচ্ছে আছে খুব শীঘ্রই কেনার। আপনার পাখি আছে জেনে ভালো লাগলো ভাই।