দীর্ঘদিন পরে মায়ের সঙ্গে
একটা সময়ের পরে, বড় পরিবারগুলো ধীরে ধীরে ছোট হয়ে যায়। শুধুমাত্র নিজেদের কে একাই থাকতে হয়, এটাই হয়তো জগতের নিয়ম ।
যদি এই শহরেই আমার মা, তার নিজস্ব বাসাতে থাকে। তবে হয়তো পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও আমার কর্মের জন্য আমাকে কিছুটা আলাদা থাকতে হয়। তাছাড়াও এখন আমার নিজেরই পরিবার হয়ে গিয়েছে, বউ-বাচ্চা আছে, সংসার আছে। হয়তো একটা সময়ের পরে চাইলেও আর কি একসঙ্গে থাকা যায় না বা থাকাটা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।
আমার মা, তিনি নিজেও একজন কর্মজীবী মানুষ। সে একটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা। এসবের বাহিরেও তার নিজের সংসার আছে। যদিও এই শহরেই আমরা পাশাপাশি থাকি,তারপরেও মা সময় পেলেই আমাদের বাসায় আসে এবং আমিও সময় পেলে মাঝে মাঝে মায়ের বাসা থেকে ঘুরে আসি ।
অন্যান্য দিনের মতোই আজকের সময়টা ছিল, তবে কিছুটা ব্যতিক্রম। কারণ আজকে মাকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে ছিলাম। বাবুর আসলে কয়দিন থেকে ঠান্ডা লেগেছে আর তাছাড়া আমি নিজেও একই সমস্যায় ভুগছি। তাই যখন সন্ধ্যাবেলা ঔষুধ কেনার জন্য বেরিয়েছে, তখন প্রথমে মার বাসায় গিয়েছি। মার সঙ্গে দেখা করে, মাকে বলেই ফেললাম তোমার হাতে যদি সময় থাকে, তুমি চাইলে আমাদের সঙ্গে ঘুরতে যেতে পারো।
অনেকটা দিন পরে স্বেচ্ছায় মা রাজি হয়েছিল। তাই অতঃপর সবাই মিলে বেরিয়ে পড়লাম। আমি, মা আর বাবু ছোট্ট একটা রিক্সা নিয়ে এ শহরের মোটামুটি অনেকটা জায়গায় এদিক-সেদিক ঘোরাফেরা করে, ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে নিয়ে, তারপরে এ শহরের একদম শেষ প্রান্তে রেজাউল কাকুর বিরিয়ানির দোকানে গিয়েছিলাম।
আমার মার পছন্দের খাবার ইলিশ মাছ, বিরিয়ানি, খাসির কলিজা ভুনা আর দেশি মুরগির রোস্ট। যদিও রেজাউল কাকুর দোকানে সবই ছিল, তবে ইলিশ মাছটা ছিল না। মাকে বললাম, আজ বাসায় গিয়ে রান্না করার দরকার নেই। তুমি আর আমি এখানেই রাতের খাবারটা খেয়ে নেই। অতঃপর সবাই মিলে একসঙ্গে বসে, এই সন্ধ্যা বেলাতেই রাতের খাবারটা খেয়ে নিলাম ।
অনেকটা দিন পরে, ঠিক কতটা দিন পরে, এটা সঠিক আমি এই মুহূর্তে বলতে পারবো না। তবে তাও তো বেশ ভালই দিন পর হবে, একসঙ্গে বসে আমি আর মা বাহিরের হোটেলে খাবার খেয়ে নিলাম। বেশ ভালই ছিল সময়টা। কারণ দীর্ঘদিন পরে মায়ের সঙ্গে একান্ত সময় কাটালাম।
সত্যি বলতে কি, আমার শ্রেষ্ঠত্বের কারণ আমার মা। তবে আমাদের পরিবারের সবাই যেহেতু কর্মজীবী, তাই হয়তো অনেকটাই যে যার মত করে থাকে। মাকে প্রচুর ভালোবাসি, তাকে তো বলেই দিয়েছি, তোমার যখন যা প্রয়োজন আমাকে বলবে, মন চাইলে আমার বাসায় এসে তুমি থাকতে পারো, কোন সমস্যা নেই ।
আসলে সমস্যাটা অন্য জায়গায়, আমার মায়ের তার নিজের বাড়ির প্রতি অনেকটাই দুর্বলতা আছে আর এমনটা হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ ওখানে শুধু আমি একা থাকি নি, আমার বাকি আরো দুটো ভাইকে নিয়ে মা সেই দীর্ঘ সময় ঐ বাড়িতে কাটিয়েছে। তাই হয়তো সেই মায়ায় সে, বাড়িটা ছাড়তে পারে না। যাইহোক মাকে নিয়ে আসলে যাই বলব, তাই কম হয়ে যাবে। পৃথিবীর সকল মায়েরা ভালো থাকুক, এমনটাই তো প্রত্যাশা করি।
মাঝে মাঝে মনে হয়, আগে যখন ছোট ছিলাম হয়তো তখনই ভালো ছিলাম। তখন মায়ের আদরেই প্রতিনিয়ত থাকতাম হয়তো এখনো আছি, তবে পথের দূরত্বটা একটু বেড়ে গিয়েছে। হয়তো সেটা কর্মের তাগিদে। সত্যি বলতে কি, মায়ের ঋণ কোনভাবেই পরিশোধ করা যাবে না। এটা একদম অপরিশোধ যোগ্য।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
মা ছোট্ট একটা কথা ৷ কিন্তু এর মাঝে লুকিয়ে হাজারো গল্প কথা ৷ মা যার ১০ মাস ১০ দিন গর্ভে ধারন করে ৷ শত কষ্ট বেদনা সহ্য করে এই সুন্দর পৃথিবী বুকে আলো দেখলাম ৷ কিন্তু সময় আর কর্ম জীবনের তাগিদে মা কিংবা পরিবার থাকতে হয় অনেক দুরে ৷ আসলে মাকে নিয়ে বললেও শেষ করা যাবে না ৷ সর্বোপরি মাকে নিয়ে বাইরে ঘোরাঘুরি খাওয়া দাওয়া বেশ সুন্দর একটি অতিবাহিত করেছেন ৷
পরিশেষে আপনার মা আমারো মা তিনি যেন সুস্থ ও ভালো থাকে এমনটাই কামনা ঈশ্বরের নিকট ৷
একদম বাস্তব কিছু কথা তুলে ধরেছেন ভাই। আসলে ব্যস্ততার শহর এবং কর্মজীবন সবমিলিয়ে একটা সময় দেখা যায়, বড় বড় পরিবারগুলো ছোট হতে থাকে। আর ছোট না হয়েও উপায় নেই যখন ছেলে সন্তান আলাদা ভাবে বিয়ে-শাদী করে এবং বাচ্চাকাচ্চা হয়। তখন সংসার তো বড় হবেই। সেজন্য একই সংসারে থাকা সম্ভব নয়। যাক এটা জেনে ভালো লাগলো আপনার আম্মু একজন প্রধান শিক্ষক।আর আম্মুকে নিয়ে ভালোই ঘোরাফেরা এবং ভালোই খাওয়া দাওয়া হয়েছে। আশা করছি আম্মু অনেক তৃপ্তি পেয়েছে ঘুরাঘুরি করে আপনার সাথে। আর আপনিও মায়ের সাথে ভালো কোয়ালিটি ফুল সময় কাটাতে পেরেছেন। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
এইটা সত্য ভাই আসলেই আমাদের সময়টা বেশ ভালোই কেটেছে সেদিন।
ব্লগটি পড়ে খুব ভাল লাগলো ভাইয়া। মায়ের সাথে কাটানো মূহুর্তগুলো পড়ছিলাম আর আমার ভেতর ভাললাগাগুলো বাড়তে শুরু করছিল। মায়েরা আসলে নিজ বাসা ছেড়ে কোথাও শান্তি পায়না। এমনটা অনেককেই করতে দেখেছি।যাই হোক মায়ের পছন্দের খাবার বিরিয়ানি শহরের শেষ মাথায় হলেও নিয়ে গিয়ে একসাথে খেয়েছেন খুব খুশি হলাম। সুন্দর মুহুর্ত অতিবাহিত করেছেন আর শেয়ার করেছেন পড়ে খুব ভাল লাগলো। সায়ানের সুস্থতা কামনা করছি। সবাইকে নিয়ে ভাল থাকবেন এমনটাই প্রত্যাশা করি।ধন্যবাদ ভাইয়া।
সত্যি ভাইয়া মায়ের ঋণ কখনো শোধ হয় না। আপনার মা কর্মজীবী মানুষ তাই তো ব্যস্ত থাকে। তবে আপনি অসুস্থ এবং বাবু অসুস্থ জেনে সত্যিই খারাপ লাগলো। আসলে এই সময় সবাই কম বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। যাই হোক মায়ের সাথে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন বুঝতে পারছি। আসলে কিছু কিছু অনুভূতি আছে যেগুলো প্রকাশ করা যায় না। অনেক ভালো থাকবেন এই প্রত্যাশাই করি ভাইয়া।
আসলে হঠাৎ করেই আবহাওয়া পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে যার কারণেই মূলত এই অবস্থা আপু।
মায়ের সাথে কিছুটা মুহূর্ত কাটানোর সুযোগ পেয়েছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো।আপনি এবং আপনার মায়ের এই মুহূর্ত বারবার ফিরে আসুক এটাই কামনা করছি। তবে আপনার ব্যস্ততা বা মায়ের ব্যস্ততার কারনে আপনি এবং আপনার মা দুজনই আলাদা ভাবে থাকেন, এটা শুনে খারাপ থাকলে। বাড়ির সবাই মিলে একসাথে বসবাস করলে সেখানে সবচেয়ে বেশি আনন্দ বিদ্যমান থাকে। হয়তোবা সেটা সব সময় সম্ভব হয়ে ওঠেনা। যাইহোক এত মধুর একটা মুহূর্ত আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
দাদা ব্লগটি পড়ে বেশ ভাল লাগলো। কিছুক্ষন ভাবছিলাম । তারপর ভাবলাম কিছু একটা না লেখলে হয় না। আসলে মায়ের ঋণ কোনভাবেই পরিশোধ করা যাবে না। এটা একদম অপরিশোধ যোগ্য। আমাদের বর্তমান পারিপাশ্বিক যে অবস্থা তাতে যৌথ পরিবার গুলো ভেঙ্গে খান খান হয়ে যাচেছ। তবে মায়ের প্রতি আপনার যে অনুভূতি আমার কিন্তু বেশ ভাল লেগেছে। আরও একটি বিষয়ও আমার ভাল লেগেছে আর তা হলো আন্টি একজন কর্মজীবি মানুষ।
আসলে জীবনটা এখন এমন হয়ে যাচ্ছে। হয়তো সেটা কর্মের তাগিদে।
আপনার লেখাটি পড়ে অনেক ভালো লেগেছে ভাইয়া তবে মনের মধ্যে খুব বেশি মায়া জমে গেছে আন্টির জন্য।আসলেই একটা সময় এসে মায়েরা একা হয়ে যায় সন্তানেরা নিজ নিজ সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।সত্যি মায়েদের দেখলে মায়া হলেও করার কিছু থাকে না আসলে এসব কিছু নিয়তি সবকিছু পারিপার্শ্বিক অবস্থা।আমি দূর থেকে মাকে অনেক মিস করি তাই আবেগী কথাগুলো বললাম কিছু মনে করবেন না।অনেক ভালো লেগেছে আপনারা দুজনে মিলে একসাথে খাওয়া দাওয়া করেছেন অনেকদিন পরে।