আলো
প্রত্যাশা-প্রাপ্তি, ভালোলাগা ও আঁকড়ে থাকা ব্যাপারগুলো আসলে খুব তারাতাড়ি সৃষ্টি হয় না। অনেকটা ধীরে ধীরে জন্মায় । এই যে ধরুন আপনি একটা জায়গায় অনেকদিন যাবত থেকে আছেন এবং তার চারিপাশের মানুষজনের সঙ্গে আপনার অনেক ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে। তবে নশ্বর পৃথিবীতে একটা সময় সবকিছুই ধুলোয় মিশে যায়। সবাই সব কিছুই ভুলে যায়, হয়তো এটাই প্রকৃতির নিয়ম।
আমরা সকলেই সবই বুঝি কিন্তু তারপরেও অবুঝের মত প্রতিনিয়ত না বোঝার ভান করে থাকি। আমাদের প্রাপ্তি আর প্রত্যাশা সবকিছুকেই যেন গুলিয়ে দেয়। তবে এতো কিছুর পরেও এটা সত্য, যার প্রত্যাশা যত কম, সে ততই ঝামেলাহীন ও চিন্তামুক্ত থাকে।
কিন্তু এই সত্য কথাটাই বা ক'জন মেনে নিতে পারে। সাময়িক ঐশ্বর্যের কাছে অনেকটাই নত হয়ে যাই আমরা। এতো সবের মাঝেও যারা প্রতিনিয়ত কষ্ট করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে, তাদেরকে দেখে আবার অনেকের জঞ্জাল মনে হতে পারে। তবে সত্য কথা হচ্ছে, সকলের কিন্তু মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে সুখে থাকা।
তবে সুখ কি আর চাইলেই পাওয়া যায়। হয়তো প্রচুর ঐশ্বর্যের মাঝে থেকেও যে শান্তিটা আপনি খুঁজে পাচ্ছেন না, তা হয়তো কেউ ঐশ্বর্যের ছোঁয়া বিহীন অবস্থাতে থেকেও খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
জীবন বড়ই বৈচিত্র্যময়, কেউ পাওয়ার আশায় ব্যাকুল হয়ে আছে আবার যার কিছুই নেই, সেও শুধুমাত্র অল্প কিছু পাওয়ার নেশায় মত্ত হয়ে আছে । আসলে সকলেই ব্যস্ত আপন চিন্তায়, আপন ভাবনায় । তবে তারপরেও দিন শেষে কিছু কথা থেকে যায় , যে কথাগুলো আসলেই বাস্তবিক।
কিছু ব্যাপার অনেকটা জ্যামিতিক গোলকধাঁধার মতো । আপনার কর্মফল কিন্তু আপনাকেই ভোগ করতে হবে , ব্যাপারটা ভীষণ স্বাভাবিক । হয়তো আপনি সাময়িক সময়ের জন্য হঠাৎ ক্ষমতাবান হয়ে গেলেন, নিজেকে সর্বশক্তিমান ভাবছেন কিন্তু একটা সময় কিন্তু সবই ভঙ্গুর । সবকিছুর যেমন সৃষ্টি আছে, তেমন আবার ধ্বংস আছে । এটা মেনে নিতে কষ্ট হলেও, এটা কিন্তু বাস্তব ।
পৃথিবীতে আমরা সকলেই ক্ষণস্থায়ী, কি দরকার মান-অভিমানের পাল্লাটা কে ভারী করার, কি দরকার পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে আরো জটিলতাপূর্ণ করার , কি দরকার নিজের অস্তিত্বে কালিমা ফেলানোর , কোন দরকার আছে কি । আমার তো মনে হয় , কোন দরকার নেই ।
আসলে সবাই বেঁচে থাকতে চায় । হয়তো একটু ভালো , স্বাধীন ও সচ্ছল ভাবে । আন্তরিকতাই আসলে মুখ্য বিষয়, তবে এই গুণ সকলের ভিতরে থাকে না । এই ব্যাপারটা আয়ত্তে নিয়ে আসতে হয় । যদিও মানুষ হওয়া সহজ না, তবে চেষ্টা করলে সমস্যা কোথায়।
সত্যিই কেউ থাকবে না, একদিন এই পৃথিবীটাতে । তারপরেও এতো ক্ষমতা, ঐশ্বর্য, প্রতিপত্তি , পাওয়ার প্রত্যাশা যেন আমাদের কে ডুবিয়ে ছাড়ছে । আসলে স্বভাবজাত স্বভাব থেকে যেন , কোন ভাবেই আমরা বের হতে পারছি না ।
কটা দিন আগেও যখন মহামারী ছিল, পৃথিবীর চিত্র যেন তখন মুহূর্তেই বদলে গিয়েছিল । খুব বেশিদিন আগের কথা না কিন্তু । তারপরেও আমি মনে করি, সবকিছু আবারও স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে । তবে মানুষের মনস্তান্ত্রিক চিন্তাভাবনার পরিবর্তনটা যেন কোনভাবেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে না ।
তবে যাইহোক, প্রত্যাশা খুবই সামান্য । বিশুদ্ধ আলো আসুক পৃথিবীতে, সেই আলোতে আলোকিত হোক সবাই ।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
অনেক ভাল লাগলো ভাইয়া পড়ে। খুব বাস্তবিক সত্যি কথাই লিখেছেন। যার যত আছে, তত চায়। কেউ আবার অল্প কিছুর জন্য ই যুদ্ধ করে বেঁচে থাকে। দিনশেষে কিছুই কিন্তু সাথে যাবে না। তারপরেও মানুষ কি আশায় এতকিছু নিয়ে পরে থাকে। আপনি ঠিক বলেছেন,করোনার সময় অনেকেই কিছুটা নিজেদের পরিবর্তন করেছে আর তা ধরে ও রেখেছে। আবার কেউ তার আগের অবস্থাতেই আছে।তবে আমি মনে করি, নিজেকে পরিবর্তন করে রবের কাছে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।
অসাধারণ লিখেছেন ভাইয়া।আমরা চুরি চামারি,হিংসা প্রতিহিংসা সব কিছু করছি যাতে নিজেরা একটু সুখে থাকতে পারি।অথচ সুখে থাকার জন্য এত কিছু করার দরকার নেই।এসব ত্যাগ করলেই সুখ নিজে থেকে ধরা দেবে।আপনার আশা পূর্ণ হোক,আলোয় ভরে উঠুক পৃথিবী।ধন্যবাদ ভাইয়া দারুন বাস্তবধর্মী পোস্টের জন্য।
লেখাগুলো বড্ড বেশি বাস্তবধর্মী ভাই। আমরা কে কেমন কি করছি , ভালো মন্দ সবটা বোঝার সাধ্য হয়তো সবার নেই। এখানে সবাই স্বার্থের পাগল। ভালো মানুষ হয়ে থাকাটাই যেন দায়। তারপরেও আমাদের বেঁচে থাকতে হয়। সামনে এগিয়ে যেতে হয়। ছদ্মবেশ ধরতে হয় প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে।
দেখছি শিখছি ভাবছি আর দীর্ঘশ্বাস ফেলছি।
শুভ দা আপনি একদম বাস্তব প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন ৷ যেটা আমাদের চোখে অবিরাম চোখে পড়ছে এসব দৃশ্য গুলো ৷ আর আপনি সেটা চমৎকার করে উপস্থাপনা করেছেন ৷
তবে ভাই আমি একটা কথাই বলতে চাই এই নশ্বর পৃথিবীতে আসলে চাওয়া পাওয়া শেষ নেই ৷ আর সুখ তো উপভোক করতে জানি না ৷ আর খুজে পাবো কোথায় ৷ এটাই হলো বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপট ৷ আমার শুধু দৌড়াচ্ছি ৷
আসলেই আমরা দৌড়াচ্ছি, কে কোন দিকে তা বলা মুশকিল ভাই।
ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে মনে হচ্ছে যেন বাস্তবিক সব বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। আসলে ঠিকই বলেছেন প্রত্যাশা যার কম সে ততোই ঝামেলা মুক্ত। তাছাড়া অনেকের ঐশ্বর্য থাকা সত্ত্বেও সেই সুখী নয় আবার কেউ ঐশ্বর্য ছাড়াই সুখী। আসলে ভালো থাকাটাই অনেক দামি। এই সব কিছু যেন এখন চোখের সামনেই দেখতে পাই। ভীষণ ভালো লাগলো আপনার লেখাগুলো পড়ে।
আমার কাছেও ঠিক তেমনটাই মনে হয় আপু, যার প্রত্যাশা যত কম সে ততো সুখী।
আমি বুঝে পাই না দাদা এই সুখে থাকার মাপকাঠিটা কী? এই ধরুন এখন আমার যা পরিস্থিতি আমি বলব আমি সুখে নেই। আবার আমার চেয়ে যার অবস্থা আরো শোচনীয় সে ও বলবে আমি সুখী নই। আবার আম্বানী কে জিজ্ঞাসা করলে সে ও বলবে সে সুখে নেই। এই সুখ বিষয়টা বড্ডই আপেক্ষিক মনে হয় এখন। আমি নিজের পরিস্থিতি কে সব সময় খোটা দিচ্ছি কিন্তু রাস্তায় বেড়োলে দেখা যায় আমার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতিতে অনেকেই আছে। আসলে সুখ কখনোই অর্থ দিয়ে তো পরিমাপ করা যায় না। বর্তমানে সবাই ই সুখকে অর্থ দিয়েই পরিমাপ করে।