প্রিতমের বিবাহ বার্ষিকীতে || @shy-fox 10% beneficiary
দেখতে দেখতে বছর দুয়েক সময় কিভাবে যে কেটে গেল বুঝতেই পারলাম না। এখনো মনে আছে, ঐতো সেদিন প্রিতম আমাকে বিয়ের কার্ড দিয়ে গেল এবং আমার খুব ভালোভাবে মনে আছে, ওর বিয়ের প্রথম দাওয়াতের ফোন কলটা আমার কাছেই এসেছিলো । যাইহোক ওর সঙ্গে আমার জীবনের কমপক্ষে পনের বছর সময় কেটেছে । সম্পর্কে এলাকার ছোট ভাই হলেও, ওর সঙ্গে অনেকটাই ভালো বন্ধুর মতো সম্পর্ক ছিল আমার।
আসলে অন্য কারণে ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল । প্রিয়ার সঙ্গে যখন ওর বিয়ে হয়েছিল, তার আগে থেকেই প্রিয়ার সঙ্গে ওর প্রেমের সম্পর্ক ছিল । যাইহোক একসঙ্গে ভার্সিটিতে পড়ত এবং ওদের প্রেমের সম্পর্কের উত্থান-পতনের বহুৎ কিছুর সাক্ষী আমি ছিলাম এবং অনেক চড়াই উতরাই পাড়ি দেওয়ার পরে ওদের সম্পর্কটা বিয়েতে গড়িয়েছিল।
প্রথম যেবার প্রিতম, প্রিয়াকে আমার চেম্বারে নিয়ে এসেছিল। সে বার আমি প্রিয়াকে দেখে অনেকটাই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম । এখনো বিয়ে হয়নি তার আগেই ওরা দেখা করতে এসেছে আমার চেম্বারে। যাইহোক সেটা করোনার আগের ঘটনা । আমার চেম্বারটাকেই নিরাপদ স্থল ভেবেছিল ওরা দেখা করার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে । এলাকার বড় ভাই ছিলাম তাই মূলত ওদের আকুতি আমি ফেলতে পারিনি ।
কারণ মূলত ভার্সিটি বন্ধ ছিল এবং দুজনের ভিতরে দেখা সাক্ষাৎ ছিলনা এবং দুজনের ভিতরে সাক্ষাত করার জন্য তারা এসেছিল আমার চেম্বারে । একজোড়া আবেগময় দুটো মন, তাদের আবেগকে আমি ফেলে দিতে পারিনি । যাইহোক ওদের ঐদিন চোখ মুখ দেখেই অনেকটাই আমি বুঝতে পেরেছিলাম, ওদের মনের ভাষা ।
প্রিতম আগে থেকেই অনেকটা লাজুক প্রকৃতির ছেলে ছিল। কিভাবে যে ও প্রেমের চক্করে পড়ে গিয়েছিল, সে নিজেও জানে না এবং সে আমার কাছে ব্যপারগুলো অনেকটাই শেয়ার করেছিল এবং বহু ক্ষেত্রেই তাদের প্রেমের সাক্ষী আমি ছিলাম এবং ওদের পিছনে আমার বহুৎ পয়সাও খরচ হয়েছে । তবে যাইহোক ওদের সম্পর্কটা যে বিয়েতে প্রণয় হয়েছে সেটাই বা কম কিসের ।
দুইদিন আগে প্রিতম আমাকে ফোন দিয়ে বলল, ভাই সামনে কিন্তু আমাদের বিবাহবার্ষিকী। আপনাকে কিন্তু আসতেই হবে । ভাবীকে ও বাবুকে নিয়ে অবশ্যই কিন্তু আমার বাসায় আসবেন । প্রিতমের কথাটা আমি ফেলতে পারিনি । কারণ ও যখন আমাকে ফোন করেছিল, ওর কথাগুলো শোনার পরে মুহূর্তেই আমি বছর দুয়েক আগের কথা চিন্তা করছিলাম। ওদের বিয়েতেও আমি গিয়েছিলাম এবং আমার খুব ভালোভাবে মনে আছে, প্রিতম যে গাড়িতে চড়ে বিয়ে করতে গিয়েছিল , সেই গাড়িতে প্রিতমের পাশের সিটেই আমি বসে ছিলাম । ও আমাকে ছাড়া অনেকটাই কেন জানি সাহস পাচ্ছিল না । যাইহোক ব্যাপারটা মনে পড়ছিল খুব ভালোভাবে ।
সেই চিরচেনা দুজনার আকুল চোখ, ব্যাকুল হৃদয়। তাদের বিবাহের আজ দুটি বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে । এই প্রথম তারা ঘটা করে একটু বিবাহ বার্ষিকী পালন করছে। এর আগে প্রিতমের চাকরি হয়নি, মাঝে আরো অনেক কমপ্লিকেটেড সময় গিয়েছে ওদের সাংসারিক জীবনে। যাইহোক কেবল একটু গুছিয়ে উঠতে শুরু করছে ওরা ।
হসপিটালের পিছনেই প্রিতমদের বাড়ি । তাই যেতে খুব একটা সমস্যা হয়নি । হিরা ও বাবুকে নিয়ে দুপুরবেলা বাসা থেকে বের হয়েই, আমরা ওদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলাম। মিনিট দশেকের ভিতরেই আমাদের গাড়ি ওদের বাসার সামনে গিয়ে পৌঁছলো। গাড়ি থেকে নামার পরে মনে হল , বহুদিন পরে যেন এখানে আসলাম। আসলেই তো অনেকদিন পর এই জায়গায় আসা হলো । শেষ যেবার এসেছিলাম, তখন প্রিতমের বিয়েতে । তারপরে আর কোনভাবেই সময় করে উঠতে পারছিলাম না । যাইহোক আজ নতুন করে যখন জায়গাটাতে আসলাম, তখন একটা আলাদা ভালোলাগা বোধ কাজ করছিল ।
বাড়ির ভিতরটাতে যখন ঢুকেছিলাম ,তখন দেখছিলাম অনেকেই খাওয়া-দাওয়া করছিল। প্রিয়াতো আমাদেরকে দেখেই মোটামুটি বেশ ভালোই খুশি । প্রিতম দেখি বেশ ব্যস্ত সময় পার করছে তার অন্য আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে। যাইহোক আমরা মূলত ওদের ড্রয়িং রুমে গিয়ে বসলাম এবং তারপরে প্রিয়া শায়ানকে নিয়ে বেশ ব্যস্ত হয়ে গেল । হিরাও বেশ ভালো সময় কাটাচ্ছিল প্রিয়ার সঙ্গে । হিরার সঙ্গে প্রিয়ার মাঝেমাঝেই ভিডিও কলে কথা হতো কিন্তু কখনো সাক্ষাৎ হয়নি । এই প্রথম হিরার সঙ্গে প্রিয়ার সাক্ষাৎ হয়েছে । হিরাও বেশ মোটামুটি ভালো সময় কাটাচ্ছিল । কারণ দীর্ঘদিন পরে তাদের দেখা হয়েছে, তাই আন্তরিকতার ব্যাপারতো থাকছেই ।
বিবাহ বার্ষিকীর কেক কর্তন পর্ব থেকে শুরু করে, বেশ ভালোই অতিথি আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেছে প্রিতম । ওতো একবার কাছে এসে বলল, ভাই কি খবর। আমি বললাম, বেশ ভালোই আয়োজন করেছিস । প্রিতম মুচকি হেসে বলে দিল, ভাই কেবল তো একটু গুছিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। ওর মুখ থেকে কথাগুলো শোনার পরে বেশ ভালই লাগলো । কারণ আমি যে প্রিতমকে আজকে চোখে দেখছি , সে একজন কর্মজীবী মানুষ। মোটামুটি জীবনের একটা গতিপথে উঠে গেছে। এরকম মানুষগুলোকে দেখলে ভালোই লাগে ।
অবশেষে দুপুরের ভোজ শেষ করে, প্রিতম আর প্রিয়াকে কাছে ডেকে দুটো একহাজার টাকার নোট হাতে গুজে দিয়ে বললাম, প্রিয়াকে একটা শাড়ি কিনে দিস। যদিও প্রিতম প্রথমে নিতে নারাজ , আমি বললাম রেখে দে কাজে লাগবে । আজ তাহলে আমি চলি , হাতে সময় খুব কম রে। প্রিয়াকে নিয়ে বাসায় বেড়াতে আসিস, আর ভালো থাকিস তোরা । শুভেচ্ছা রইল তোদের জন্য ।।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
দুষ্টু মিষ্টি প্রেমের গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। যখন আপনার লেখাগুলো পড়ছিলাম তখন আমার চোখের সামনে তাদের দুষ্টু মিষ্টি সেই প্রেমের কাহিনী গুলো ভেসে বেড়াচ্ছিল। তাদের ভালবাসার পূর্ণতা পেয়েছে এবং দুজনে অনেক সুখে আছে এটা দেখে ভালো লাগলো। এভাবে ভালবাসাগুলো যেন পূর্ণতা পায় এবং সকলে তাদের প্রিয় মানুষকে নিয়ে ভালো থাকতে পারে এই কামনা করছি। আপনি আপনার সেই ছোট ভাইয়ের বিবাহ বার্ষিকীতে অনেক আনন্দ করেছেন এবং তাদের সাথে অনেকদিন পর দেখা করে অনেক গল্প করেছেন এটা বোঝাই যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যখন ভালোবাসার সম্পর্কগুলো পূর্ণতা পায় তখন দেখে অনেক ভালো লাগে। তাদের দাম্পত্য জীবনের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো এবং তাদের জন্য বিবাহ বার্ষিকীর শুভেচ্ছা রইলো।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
আপনার বন্ধু প্রীতম ভাইয়ের বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে পরিবার পরিজন এবং বন্ধুরা মিলে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। আপনাদের কাটানো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
আপনার লেখা এই লাইনটি অনেক সুন্দর ছিল। চোখের মাঝে কিছু কিছু কথা লুকিয়ে থাকে। আপনার লেখা লাইনটি আমার অনেক ভালো লেগেছে।তাদের জীবনের চলার পথ অনেক বেশি সুখের হোক এবং তাদের ভালোবাসার বন্ধন এভাবেই অটুট থাকুক। তারা তাদের সেই দীর্ঘ দিনের সম্পর্কের মাঝে জীবনের পূর্ণতা অর্জন করেছে। এজন্য তারা আপনার কাছে অনেক কৃতজ্ঞ। আশা করছি প্রীতম ভাইয়া এবং প্রিয়া আপুর জীবন অনেক সুখের হবে। যে সম্পর্ক গুলো সুখ দুঃখের মাঝে গড়ে ওঠে সে সম্পর্ক গুলো আজীবন ভালো থাকে। আশা করছি তাদের সম্পর্ক আরো সুন্দর হবে এবং আগামী দিনের চলার পথ অনেক মধুর হবে। প্রিয়া আপু ও প্রীতম ভাইয়ের জন্য আমার তরফ থেকে বিবাহ বার্ষিকীর শুভেচ্ছা রইলো।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
কাছের মানুষগুলোর জন্য কিছু করতে পারাটা খুব ভাগ্যের ব্যাপার। এবং নিজের প্রিয় ছোট ভাই হোক আর বড় ভাই হোক মানুষটির জন্য অনেক সময় আমরা অনেক কিছু ত্যাগ করি কারণ তাকে হৃদয় থেকেই ভালোবাসি। আপনার ব্যাপারটা ঠিক ওরকমই প্রীতম ভাই কে আপনি খুব ভালোভাবেই জানেন এবং প্রায় ১৫ বছর ওনার সাথে কাটিয়েছেন সেই সুবাদে আপনি ওনার আবদার ফেলতে পারেননি। যাইহোক বিবাহবার্ষিকীতে অনেক সুন্দর আনন্দঘন মুহূর্ত কাটিয়েছেন এবং বিস্তারিত আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। এত সুন্দর আনন্দঘন মুহূর্ত আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
ভাইয়া সত্যি বলতে আমি আপনার পোষ্টের টাইটেল দেখে মনে করেছিলাম প্রিয়তমার বিবাহ বার্ষিক😇। এর পর মনে মনে ভাবতে লাগলাম আর ক্লিক করে ভালো করে ঘুরে দেখার পর বুঝলাম প্রিতমের বিবাহ বার্ষিক।যাই হোক প্রিতম দাদা শুভ বিবাহ বার্ষিকের শুভেচ্ছা🏡 এবং আপনার আপন জনের জন্য অনেক শুভ কামনা রইল।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
আপনার সহায়তায় দুজন মানুষের শুভ পরিণয় সম্পন্ন হল। আমি মনে করি এটা একটা বিশাল পাওয়া। বর্তমান সমাজে প্রেমের সম্পর্ক গুলো বেশিরভাগই বিয়ে পর্যন্ত গড়ায় না। সেখানে আপনার অবদান কোনো অংশেই ফেলনা নয়। বড় ভাই হিসেবে অনেক দায়িত্ব পালন করেছেন। আশাকরি আপনাদের এই সম্পর্ক কখনই শেষ হবে না
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
কাছের মানুষ গুলো কে যখন নতুন করে আবার কাছে পাওয়া যায় তখন অনুভূতি গুলো যেন নাড়া দিয়ে ওঠে। তারপর যদি হয় বহুদিন পর। আপনার লেখা পড়ে বুঝতে পারলাম ওরা আপনার খুবি কাছের অর্থাৎ ভালবাসার মানুষ। সুন্দর একটি দিন কাটিয়েছেন। মূহুর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন ভাই।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
ভাই একটা জিনিস খেয়াল করবেন৷ যারা বেশি লাজুক থাকে তাদেরই গার্ল ফ্রেন্ড থাকে। আর যারা বেশি দুরন্ত থাকে তাদের কিছু বান্ধুবী থাকে তাদের প্রেম করতে অনেক সময় লাগে।
আপনারা সবাই মিলে বিবাহ বার্ষিকী একদম মাতিয়ে রাখছেন। দেখে অনেক ভালো লাগলো। আমি মনে করি প্রতিটি স্পেশাল তারিখগুলো আমাদের উপভোগ করা উচিত এতে করে পরিবারের ভালোবাসার বন্ধন আরো দৃঢ় হয়। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি মুহুর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
অবশেষে প্রিতম + প্রিয়া বৌদির জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।