জীবন খাতা ||@shy-fox 10% beneficiary
জীবনের গল্প গুলো জায়গায় ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে এবং এই কথাটা আমি বিগত সময়েও বহুবার বলেছি । যেহেতু আমি একজন রিয়েল লাইফ লেখক বা রিয়েল লাইফ বিষয় নিয়ে লিখতে বেশি পছন্দ করি। তাই আমার কাছে যে বিষয়টা বেশি আকর্ষণ করে, সেই বিষয়টাতে আমি বরাবরই বেশি প্রাধান্য দিই। যাইহোক আজকে যে বিষয়টা নিয়ে লেখার চেষ্টা করব, তা একদম আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে, আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে।
এ শহরের এত মানুষের ভিড়ে, আমি দিন শেষে প্রকৃত মানুষ খুঁজে পাইনা । কেন পাই না তার সঠিক কারণ আমার জানা নেই । যদিও সব রক্তে মাংসে গড়া মানুষ, তবে দিন শেষে তাদের মধ্যে যে পশুসুলভ আচার-আচরণ আছে তা ক্ষেত্রবিশেষে বিভিন্ন সময় সেই আচরন ভেসে ওঠে। এজন্য এই শহরের আমি খুব একটা বেশি মানুষ খুঁজে পাইনা । তবে হুটহাট যখন প্রকৃত মানুষ আমার চোখে পড়ে, তখন সেই মানুষকে দুচোখ ভরে দেখতে আমার ভালো লাগে ।
কিছু মানুষের জীবন গুলো সত্যিই অনেকটা বিস্ময়কর । এই মানুষগুলো খুব বেশি চাহিদা থাকে না , খুব বেশি প্রাপ্তি থাকেনা, তাদের কাছে জীবনটাতে কোন মত বেঁচে থাকতে পারলেই হলো। কারণ এই ঊর্ধ্বমুখী দ্রব্যমূল্যের বাজারে এই বাস্তবতায় যে, তারা জীবনে টিকে আছে এটাই বা কম কিসের।
সারাদিনের কর্ম শেষে, শফিক ভাই হাঁটে গিয়েছে। তার চাওয়া একদম নগণ্য বলতে পারেন। আমাদের আকাশচুম্বী চাওয়ার কাছে, তার চাওয়া একদম নগণ্য। আমরা যখন নিজেরা ব্যস্ত বিভিন্ন অস্বাভাবিক চিন্তা করে ,কিভাবে সেটা হাসিল করা যায় । সেই সময় সে শুধুমাত্র ব্যস্ত, কিভাবে তার তিলের খাজা গুলো বাজারে সঠিকভাবে বিক্রি করা যায়। এটার মাঝেই সে যেন প্রকৃত আত্মতৃপ্তি খুঁজে পাবে, সেই চিন্তায় সে বরাবরই ব্যস্ত থাকে।
যদিও তিলের খাজার প্রতি ,আমার খুব একটা আগ্রহ নেই । তবে তার ব্যক্তিত্ব মাঝে মাঝে আমাকে মুগ্ধ করে। সে দামে ও মাপে সঠিকভাবে দেওয়ার চেষ্টা করে , এইজন্যই আমার তার ব্যক্তিত্বটা ভালো লাগে । যদিও তেমন বেশি সময় আমি এই মিষ্টান্ন জাতীয় জিনিস গুলো খাইনা, আর তার ভিতরে যেহেতু খোলাবাজারে বিক্রি করা এই বিষয়টাও আমাকে মাথায় রাখতে হয়, এজন্য দেখা যায় যে ম্যাক্সিমাম সময় আমি তিলের খাজা কিনে হয়তো আমার অ্যাসিস্ট্যান্টকে দিয়ে দেই নতুবা অন্য কোন পরিচিত মানুষকে দেখলে তাকে দিয়ে দেই,মানে যার তিলের খাজা খাওয়ার ইচ্ছা আছে তাকে ।
গতকাল সন্ধ্যার পরে আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট কে বললাম, কি খবর তিলের খাজা খাবেন। সে আমাকে একদম মাথা নাড়িয়ে বলল, হ্যাঁ । আমি বললাম তাহলে চলেন ,শফিক ভাইয়ের দোকানে। শফিক ভাই আমাকে দেখেই যেন কিছুটা খুশি হয়েছে । আসলে কিছু কিছু খুশির কারণ মানুষের আচার-আচরণ দেখলেই বোঝা যায় । যাইহোক আমি কিছুটা সময়ের জন্য শফিক ভাইয়ের সঙ্গে গল্প করলাম এবং যা জানতে পারলাম, তার ব্যবসা এই মুহূর্তে খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। আসলে যে দ্রব্যমূল্যের বাজার যাচ্ছে,আসলে এই মূহুর্তে কোন ব্যবসায়ীর ব্যবসাই ভালো যাচ্ছে না এটাই দিনশেষে প্রকৃত সত্য কথা। সব থেকে বেশি বিপদগ্রস্ত হয়েছে মধ্যম ও নিম্ন মধ্যম আয়ের মানুষজনের ।
আসলে আমি আমজনতা মানুষ এবং সাধারন কাতারের লোক বলতে পারেন। আমার আসলে সমবেদনা জানানো ছাড়া আর তেমন কিছুই করার নেই, বড়জোর আমি অতিরিক্ত কিছু তিলের খাজা কিনতে পারি তার কাছ থেকে। যাইহোক আমি আমার জায়গা থেকে আমার দায়িত্বটা পালন করেছি এবং তার প্রতি বরাবরই শ্রদ্ধা থাকে কারণ তার এই কষ্ট করে, এই কঠিন সময়ে জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে পরিবার নিয়ে এটার জন্য । বেঁচে থাকুক এই প্রকৃত মানুষগুলো বহুদিন ,এই পৃথিবীর বুকে। শুভেচ্ছা রইল তাদের জন্য ।
ডিসকর্ড লিংক
শফিক ভাই লোকটি ভালো, তার মতো লোক কম পাওয়া যায়।এখন বর্তমানে সব দোকানদারেরা মাপে কম দিয়ে মানুষকে ঠকানোর চেষ্টা করে।সততা নিয়ে চললে আলাদা তৃপ্তি পাওয়া যায় মনে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
দিন শেষে আমরা অনেকেই মানুষ দাবি করি। কিন্তু এই মানুষের ভীড়ে আমরা প্রকৃতপক্ষে সকলেই মানুষ নয়। মানুষ নয় বলছি এ কারণে শুধু নামধারী মানুষের চামড়া গায়ে থাকলে মানুষ হয় না। মানুষ হতে হলে অবশ্যই আমাদের মনুষ্যত্ব বোধ থাকা দরকার।
শফিক ভাইয়ের মতো এমন মানুষ সত্যবাদী লোক পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া সত্যিই বিরল। তার দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ আপনি তুলে ধরেছেন। খুব ভালো লাগলো।
দিল্লির খাজা আপনার খুব পছন্দ না হলেও আমার কিন্তু খুব প্রিয় লাগে ভাই। খেতে খুবই মজা লাগে।
আপনার কথা গুলু অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে , অনেক সুন্দর করে কথা গুলু বুঝিয়ে দিলেন, আমি আপনার মন্তব্যের সাথে একমত। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আসলেই তারা বেঁচে থাকুক। আমাদের প্রতিদিনের এই এতো এতো চাহিদার ভীড়ে যদি তাদের চাহিদার হিসাব করতে যাই তাহলে খাতাটি হয়তো শূন্যই পাবে।কারণ আমাদের চাহিদা বিলাশিতায় চলে যায়ভার তাদের চাহিদা দু মুঠো খেয়ে পরে বেঁচে থাকা। আমিও আমার সাধ্যমত চেষ্টা করি কারণ দিনশেষে নিজের চেয়ে তাদের ই বেশি প্রকৃত মানুষ বলেই মনে হয়।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা এখনো সততার সাথে নিজের জীবন পরিচালনা করছে। শফিক ভাই হয়তো খুবই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কিন্তু তার মাঝে রয়েছে সততার গুণাবলী। তিনি নিজের জীবনকে সৎ ভাবে পরিচালনা করার জন্য আজও সততার সাথে এই ক্ষুদ্র ব্যবসা করে যাচ্ছেন। আমি শফিক ভাইদের মত মানুষদের সততাকে স্যালুট জানাই। যারা নিজের অভাব অনটনের জীবনেও নিজের সততাকে ধরে রেখেছে। ভাইয়া আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইলো আপনি এত সুন্দর একটি বিষয় আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আজকাল এই রকম মানুষ খুজে পাওয়া কঠিন।আজকালকার বেশিরভাগ মানুষদের চিন্তা ভাবনা কিভাবে কাওকে মেরে ধরে নিজে উপরে উঠবে কিন্তু তার জায়গায় এই ভাই সৎ থেকে কষ্ট করে জীবন চালাচ্ছে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ভাই কি বলবো!
সত্যি আপনার এই গল্প রূপী বাস্তববিক ঘটনায় আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। 😇
আসলেই আমাদের আশেপাশে মানুষ রূপী অনেক অমানুষের বিচরণ, তবে তার মধ্যেও কিছু নিরীহ আর অসহায় মানুষের জীবনের বেদনা কাছে থেকে দেখলে অনুভব করা যায় তাদের ঠিক কি মুহূর্ত চলছে
দোয়া রইলো মন থেকে আপনার জন্য ভাই ❤️
আমি এই কমউনিটির নতুন সদস্য। আপনার পোস্ট পড়ে ভালো লাগলো