নতুন অতিথি
ঘটনাটি কয়েকদিন আগের। লিখব লিখব করে আর সেভাবে লেখার সময় হয়ে উঠছিল না। তবে আজকে লেখার চেষ্টা করছি।
ভোরবেলার দিকে করে ঘুমিয়ে যাওয়া ইতিমধ্যেই এটা আমার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে। সারারাত খুব বেশি যে কাজ করি তেমনটাও কিন্তু না। তবে ঐ টুকটাক কাজগুলো করতেই রাতটা শেষ হয়ে যায়। তবে ভোরবেলার পরে আর কোনভাবেই যেন চোখ দুটো খুলে রাখা যায় না, শুধু নিদ্রা চায় ।
এমন গভীর নিদ্রার সময় হুট করে ছোট মোবাইলটা বেজে উঠলো। ফোন ধরতেই, ফোনের অপর প্রান্ত থেকে শহীদ দুলাভাই, অস্থির হয়ে আমাকে বারবার বলছে কই তুমি শুভ। একটু জলদি জনতা ক্লিনিকে আসো তো, তোমার ভাস্তির ব্যথা উঠেছে গত রাত্রি থেকে । এমন অবস্থায় দুলাভাইকে, আমি কিভাবে স্থির করবো, সেটাই ভেবে পাচ্ছিলাম না। আর তাছাড়া উনি মেডিকেল প্রফেশনের কেউ না যে, উনাকে হুট করে কোন কিছু বললে উনি সেটা বুঝে যাবে। তাও ভাবছিলাম,কিভাবে ওনাকে স্থির করবো।
দুলাভাইয়ের কাছ থেকে ঘটনাটার বিস্তারিত একটু জানার চেষ্টা করলাম। অতঃপর বুঝতে পারলাম, আমার ভাতিজির ডেলিভারির সময় হয়ে এসেছে। আলট্রাসনোগ্রামের যে তারিখ ছিল, সেই তারিখ অনুযায়ী সবকিছু মোটামুটি ঠিকঠাক আছে। যেহেতু প্রথম বাচ্চা, তাই তাদের পরিবার থেকেই সবাই একটু চিন্তিত।
দুলাভাইয়ের একমাত্র মেয়ে হচ্ছে, আমার ভাতিজি। যদিও এই মুহূর্তে আমার সেখানে গিয়েও কোন লাভ হবে না। তবে তার থেকে যদি আমি সেখানকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে পারি, আমার মনে হয় সেটাই বেশি ভালোভাবে দুলাভাইয়ের জন্য।
দুলাভাইকে বলার চেষ্টা করলাম, আপনি একটু ক্লিনিকে কর্তব্যরত যে কোন নার্সের সঙ্গে আমার একটু কথা বলে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন এবং আপনি একটু স্থির থাকুন। বাকিটা আমি তাদের কাছ থেকে কথা বলে, জেনে নিচ্ছি ।
অবশেষে খানিকবাদেই দুলাভাই সেখানকার এক নার্সের সঙ্গে আমাকে ফোনে কথা বলে দেওয়ার ব্যবস্থা করলো। আমি শুরুতেই আমার বাস্তব জীবনের আগের যে পেশাতে ছিলাম সেই পেশার পরিচয়টা দিয়েছিলাম নার্সকে, বিধায় সে বেশ আন্তরিকভাবেই কথা বলার চেষ্টা করছিল।
তার কাছ থেকে আমি আসলে ঘটনা পুরোপুরি জানার চেষ্টা করলাম। সে আমাকে যা বলল, তাতে আমি বুঝলাম যে রোগীকে এই মুহূর্তে তারা সিজারের জন্য প্রস্তুত করে ফেলেছে আর তাছাড়া রোগীর শারীরিক যে পরীক্ষা গুলো করা দরকার, তার সবকিছুই ঠিকঠাক আছে ।
যেহেতু আমি ছোটবেলা থেকেই এই শহরে বড় হয়েছি। মোটামুটি কমবেশি কোন কোন ডাক্তার আছে, কোন ডাক্তার কোন কাজে বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন তা আমার জানা আছে। এবার নার্সকে জিজ্ঞাসা করলাম, সার্জন এবং এ্যানেসথেটিষ্ট কে থাকবে এবং কারা অ্যাসিস্ট করবে। মোটামুটি যে নাম গুলো শুনলাম, তাদের সবাই আমার পূর্ব পরিচিত। এবার তাকে ধন্যবাদ দিয়ে আবারো দুলাভাইয়ের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলাম।
দুলাভাইকে বলেই ফেললাম, যা শুনেছি মোটামুটি ভালই শুনেছি। তোমার চিন্তা করার কিছুই নেই আর তাছাড়া এই সকালবেলা আমি ওখানে গিয়েও কোন প্রকার লাভ হবে না। ওরা সিজারের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। যে মানুষগুলো সিজার করবে, তাদের নাম আমি জেনেছি। আমি চেষ্টা করছি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার। তুমি চিন্তা মুক্ত থাকো। আমি ঘুম থেকে ওঠার পরে, অবশ্যই তোমাদের সঙ্গে দেখা করে আসবো ।
অবশেষে যে সার্জন সিজার করবে তার সঙ্গেই মূলত যোগাযোগ করার চেষ্টা করলাম। কারণ আমার স্ত্রীর সিজারের সময় তিনিই দায়িত্বে ছিল। চেষ্টা করলাম তার সঙ্গে আমার ভাতিজির ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলার জন্য এবং সে আমাকে বলল, চিন্তা করার কিছু নেই। সে নিজ দায়িত্বেই কাজটা করবে।
আসলে ক্লিনিক গুলোতে এমনিতেই অযথা লোকজন বাড়তি গিয়ে অন্যান্য রোগীদের ঝামেলা না করাই শ্রেয়। তাই তাৎক্ষণিক আমি যেতে প্রস্তুত ছিলাম না। আমি যতটুকু করার, ফোনে কথা বলেই করেছি । তবে বিকালের দিকে গিয়েছিলাম পুরো পরিবার নিয়ে। দেখে আসলাম নতুন অতিথিকে। যাইহোক হীরার চাচাতো বোনের মেয়ের বাচ্চা হয়েছে, সেই সুবাদে আমি তো নানুভাই হয়ে গেলাম ।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
সবকিছু ঠিকঠাক ছিল জেনে ভালো লাগলো। আসলে চেনা জানা থাকলে যেতে না পারলেও ফোনের মাধ্যমে সব কিছু বুঝে নেওয়া যায়। যেহেতু ওনার প্রথমবার বাচ্চা হবে তাই উনি হয়তো একটু বেশি চিন্তিত ছিলেন। যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে স্টোরি টা শেয়ার করার জন্য। এবং বাচ্চাটার জন্য দোয়া রইল।
বাহ ভাইয়া সপ্নি তো তাড়াতাড়ি নানু ভাই হয়ে গেলেন ।বেশ ভালো লাগলো ।আসলে এই মুহূর্তে সবাই একটু টেনশনের মধ্যে থাকে তাই কাছের মানুষজনকে কাছে পেতে চায়। হয়তো সেখান থেকেই আপনাকে ফোন দিয়েছে ।তারপরেও আপনি সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এটা বেশ ভাল ছিল। আসলে অপারেশন থিয়েটারের বাইরে অত মানুষের ভিড় না করাই ভালো। যাইহোক নতুন অতিথিকে দেখে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
আমার অনুভূতি বোঝার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আপু।
প্রতিটি পরিবারে একজন নতুন শিশুর আগমনী বার্তা নিয়ে আসে আনন্দের ধারা। নতুন অতিথির জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইল।❤️❤️❤️❤️
ভাইয়া আপনি নানা ভাই হয়ে গেলেন খুবই হাসি পাচ্ছে। অবশ্য এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক যেহেতু আপুর চাচাতো বোনের মেয়ের বাচ্চা। তবে এসব ব্যাপারে একটু রিস্ক থাকে যদি ডাক্তারদের সাথে ভালোভাবে কথা বলার লোক না থাকে। আপনি যেহেতু ফোনে আলাপ করে বুঝতে পেরেছেন সব ঠিক আছে তাতেই তারা নিশ্চিন্তে হতে পেরেছে। নতুন অতিথি মাশাল্লাহ অনেক কিউট হয়েছে।
প্রথমেই নতুন নানু ভাইকে শুভেচ্ছা জানাই এবং মিষ্টি খাওয়ানোর প্রস্তাব জানাই। ☺️
ভীষণ খুশির খবর এটি, যাক আল্লাহ পাক সুস্থ রাখুন এবং নেক হায়াত দান করুন।
আপনি আপনার অবস্থান থেকে যতটুকু সাপোর্ট দেয়ার চেষ্টা করেছেন এটাই অনেক কিছু ভাই। সবকিছু ভালোভাবে হয়েছে এটাই আলহামদুলিল্লাহ 🤲
অবশ্যই মিষ্টি মুখ করানো দরকার এইটা কিন্তু ঠিক বলেছেন ভাই।
সত্যি ভাইয়া খুবই অল্প বয়সে নানু ভাই হয়ে গেলেন। ব্যাপারটি কিন্তু বেশ মজার। যাই হোক মা এবং বাচ্চা সুস্থ আছে এটাই সবচেয়ে বড় বিষয়। যেহেতু প্রথম বাচ্চা তাইতো তার পরিবারের লোকজন একটু ঘাবড়ে গিয়েছিল। আপনার যেহেতু আগে থেকেই সবার সাথে পরিচয় আছে তাই তো ব্যাপারটি খুব সহজেই হয়ে গিয়েছে। নতুন অতিথির মুখ দেখে সত্যি অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া।
সত্যি ভাইয়া আপনি তো দেখছি অনেক তারাতাড়ি নানু হয়ে গেলেন।সত্যি বলেছেন ভাইয়া সিজারের সময় লোকজন বেশি হলে ঝামেলা হওয়া স্বাভাবিক তবে আপনজন থাকলে রুগির একটু হলেও সাহস বাড়ে।তবে সব কিছু ঠিক ঠাক ছিল জেনে অনেক ভালো লাগল। নতুন অতিথির জন্য শুভকামনা রইল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মূহুর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
বাস্তবতা চিন্তা করে সিজারের সময় যাই নি আপু। ধন্যবাদ আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য।
এই ইয়াং বয়সে নানুভাই সত্যি মনের মধ্যে এক অন্য অনুভুতি কাজ করছে ৷ কী বলেন ভাই ঠিক বলেছি তো ???
যা হোক আপনি ফোনের মাধ্যমেই সবকিছু ঠিকঠাক করার ব্যবস্থা নিয়েছেন অনেক ভালো করেছেন ৷ আর সর্বোপরি নতুন অতিথির জন্য অনেক শুভকামনা ৷ আর দেখতেও বেশ সুন্দর আর কিউট লাগছে ৷
একদম ঠিক বলেছেন ভাই। আসলেই অনুভূতিটা একটু ভিন্ন রকম ছিল।
প্রথমেই আপনার শহীদ দুলাভাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন নতুন অতিথিকে সুস্থভাবে পৃথিবীতে আনার জন্য। শুভ দা আপনার দুলাভাইয়ের এমন পরিস্থিতিতে আপনার আন্তরিকতা দেখে অবাক হয়ে গেলাম। খুব সুন্দর ভাবে তাকে মেন্টালি সান্ত্বনা দিয়েছেন আপনি। এই সময়টাতে এই সাপোর্টটারই সবথেকে বেশি প্রয়োজন হয়। সিজার ব্যাপারটা এখন কমন হয়ে গেছে কিন্তু এই বিষয়ে অধিকাংশ মানুষই ভয় পায় যা খুবই স্বাভাবিক।