বৌদির জন্মদিন
ব্যক্তি জীবনে আমার বন্ধুবান্ধব যেমন খুবই সীমিত, ঠিক সেই রকম বলা যায় আমার শুভাকাঙ্ক্ষীর সংখ্যাও হাতেগোনা। আর সেই হাতেগোনা সংখ্যার মাঝে বৌদির নামটা বেশ পরিপক্ক ভাবেই আছে।
গত সন্ধ্যাতেই গ্রাম থেকে বাসায় ফিরেছিলাম আর ফিরেই মোটামুটি তার বাসার অনুষ্ঠানে যোগদান করার মত সুযোগ হয়েছিল। যদিও আমি দীর্ঘ সময়ের জন্য সেখানে থাকতে পারিনি, তবে যতটুকু সময়ের জন্য ছিলাম, সময়টা বেশ ভালোই কেটেছে। মূলত গতকালকে হ্যাংআউট ছিল আর এজন্যই গ্রাম থেকে দ্রুত বাসায় চলে এসেছি আর এসেই সন্ধ্যাবেলা বৌদির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলাম।
বৌদি অনেকটাই সৌভাগ্যবান যে, তার দুটো লক্ষ্মী মেয়ে আছে আর তারাই মোটামুটি তার মায়ের এই অনুষ্ঠানটি নিজেদের থেকে আয়োজন করেছিল। সেই রান্না করা থেকে শুরু করে, কেক সংগ্রহ করা এবং পুরো অনুষ্ঠানটি তার মেয়েরাই এরেঞ্জ করেছিল। এককথায় বৌদি যেমনটা সঠিক চিন্তাধারার মানুষ, সে নিজেও চেষ্টা করছে তার মেয়ে দুটোকে সঠিকভাবে বেড়ে তোলার জন্য।
তখনো বসায় আমি নিজের মতো করে কাজ করছিলাম আর যেহেতু আজই গ্রাম থেকে বাসায় এসেছি, তাই মোটামুটি সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে, ঠিকঠাক করে কাজের পরিবেশ তৈরি করতেই, সন্ধ্যা বেলাতেই হঠাৎ বৌদির ফোন এসেছিল এবং ব্যাপারটা জানালো। অতঃপর নিজের আগ্রহ থেকেই যাওয়ার চেষ্টা করলাম তার বাসায়।
এই কংক্রিটের শহরে কত মানুষের বসবাস। কে রাখে কার খোঁজ, তারপরেও ভদ্রমহিলা আমাদের খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করে। সময়-অসময়ে আমাদের কে টুকটাক পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করে আর তাছাড়াও আমার গিন্নির সঙ্গে তো তার সম্পর্ক অনেকটা বান্ধবীর মতো। আমি ব্যাপারগুলোকে বেশ ভালোভাবেই গ্রহণ করি। কারণ মানুষ একে অপরের প্রতি নির্ভরশীল, সেটা যে কোন পরিবেশেই। এদিক থেকে এই শহুরে জীবনে, তার মতো একটা প্রতিবেশী পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার।
ব্যক্তি জীবনে আমার যে মানুষগুলোর সঙ্গে খুব বেশি ঘনিষ্ঠতা হয়, তাদের মানসিকতা কিছুটা হলেও আমার মানসিকতার সঙ্গে মিলে যায়। আমি অনেক যৌক্তিক চিন্তাভাবনা নিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি আর সেদিক থেকে বলা যায় বৌদি চেষ্টা করছে প্রতিনিয়ত নিজেকে আরো সহজ ও সহযোগিতা পূর্ণ মনোভাব পোষণ করার জন্য।
দেখতে দেখতে দুটো বছর হয়ে গেল এই বাসাতে আসা। আগে তো বৌদি আমাদের সামনের ফ্ল্যাটেই থাকতো, এখন হয়তো সে দোতালায় চলে গিয়েছে। তারপরেও আমার মনে হয় না যে আমাদের ভিতরে কখনও অতিরিক্ত দুটো কথা হয়েছে বরং যে কথাগুলোই হয়েছে, সেই কথাগুলোতেই সে আমাকে উপদেশ দিয়েছে এবং তার কাছে আমি নিজের থেকেই কৃতজ্ঞ।
কিছু সম্পর্কের আসলে দিনশেষে কোন মানে থাকে না, থাকে না নির্দিষ্ট কোন নাম, ঠিকানা বা গন্তব্য, তারপরেও সম্পর্ক গুলো প্রতিনিয়ত সতেজ ভাবে বেঁচে থাকে। হয়তো এমন একটা সম্পর্কের বাঁধনেই জড়িয়ে গিয়েছি আমরা। বৌদির এই জন্মদিনে, আমি তার ছোট ভাই হিসেবে তার জন্য মন থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তার আগামী দিনগুলো সুন্দর হোক ও চলার পথ আরো মসৃণ হোক, এমনটাই প্রত্যাশা করি।
মানুষ কে কি বলল, অন্য প্রতিবেশীরা কে কি ভাবলো, এসব নিয়ে আসলে এতো মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। @bristychaki জীবনটা আপনার, নিজের মতো করে বাঁচতে শিখুন।
আপনার জন্য ভালোবাসা নিরন্তর।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1662034976152629248?t=eT1NupBk5OpPddCTrQ5hlQ&s=19
আপনার লেখাটা পড়ে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো ভাইয়া । আসলে এরকম প্রতিবেশী পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার । কেননা বর্তমান সমাজে কে কার খবর রাখে । পাশের বাসার ফ্লাটে কে থাকে সেটাই মানুষ জানে না । আর এরকম মধুর সম্পর্ক প্রতিবেশীর সঙ্গে হওয়া তো এখন বর্তমানে খুবই দুরূহ ব্যাপার । তারপরেও আপনারা বেশ মিলেমিশে বসবাস করছেন এটা দেখে বরাবরই আমার কাছে বেশ ভালো লাগে ।আপনাদের সম্পর্ক আরো সুদৃয় হোক সেই কামনায় । ধন্যবাদ ।
আপু, আমি আপনার মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ঠিকই বলেছেন ভাইয়া এমনো আছে যে পাশাপাশি থেকে একই বিল্ডিং থেকে কেউ কারো খোঁজ রাখে না ।এরকম একজন প্রতিবেশী বন্ধু পাওয়া আসলেই ভাগ্যের একটি ব্যাপার ।সুখে দুখে বিপদে-আপদে এদেরকেই তো সব সময় পাশে পাওয়া যায়। আর বৃষ্টি চাকি বৌদির সাথে আপনাদের অনেক ভালো একটি সম্পর্ক সেটা ভাবির পোস্ট থেকেই বোঝা যায়। গ্রাম থেকে এসেই সুন্দর একটি পার্টিতে অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন ।আর আয়োজন দেখে মনে হলো ঘরোয়া ভাবে খুব সুন্দরভাবে গুছিয়ে আয়োজন করেছে। ভালো লাগলো আপনাদের সবাইকে একসাথে দেখে।
আপু এটা সত্য যে, একদম ঘরোয়া ভাবেই অনুষ্ঠানটা হয়েছে। আর তাছাড়া আমি নিজেও বেশ কৃতজ্ঞ বৌদির কাছে। ধন্যবাদ আপু, আমার অনুভূতি বুঝতে পারার জন্য।
কি আর বলবো ভেবে পাচ্ছি না। তবে প্রথমেই রইল আমার তরফ হতে আপনার বৌদি আর আমার প্রিয় আর অন্তরের দিদিরি প্রতি জন্ম দিনের শুভেচ্ছা। আসলে আপনার মুখে দিদির এত সুন্দর প্রশংসা শুনে মুগ্ধ হেয়ে গেলাম। নিতান্তই দিদিনি নিজের মত করে তার মেয়ে দুটোকে মানুষ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাই তো কতদিন যাবৎ বলছি আমি আপনাদের ওখানটায় চলে যাই। যাক শুভ কামনা রইল যে আপনারা একে অপরে বেশ ভালো প্রতিবেশী পেয়েছেন।
আপনাকে তো আসতেই বলি, আপনিই তো আসেন না আপু। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
আমার জীবনের প্রথম জন্মদিন পালন করা এটা তাই আমি অনেক বেশি খুশি ছিলাম যে আমার মেয়েরা আমাকে এতো সুন্দর একটি দিন উপহার দিয়েছে।আপনারা সবাই ছিলেন বলেই মুহুর্ত গুলো আরও অনেক বেশি সুন্দর হয়েছে।প্রতিবেশী বন্ধু হলো সবচেয়ে কাছের মানুষ তাই কাছের মানুষ গুলোকে নিয়ে সবসময়ই ভালো থাকতে চাই।আমার জন্মদিনের মুহূর্ত গুলো সুন্দর করে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া।সবসময়ই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।🙏🙏💙💙
আপনার জন্য নিরন্তর শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইল। 🙏