আত্মতৃপ্তি ||@shy-fox 10% beneficiary
যে কাজগুলোর সঙ্গে আমি আগে থেকে সম্পৃক্ত ছিলাম না, এখন মোটামুটি নিজের সংসার হওয়ার কারণে সেই কাজ গুলো নিজের থেকেই করতে হয় এবং এতে আমি অবশ্য কোনো লজ্জিত হই না। কারণ দিনশেষে যখন নিজের কাজ নিজেই করতে পারি, তখন ভিতরে একটা আত্মতৃপ্তি কাজ করে। যাইহোক ব্যপারগুলো আমি মনে করি সবার ক্ষেত্রেই এমনই ।
গত কয়েকদিন থেকে হিরা বলছিল যে, বাসার চাল শেষ হয়ে গিয়েছে । তাই চাল কিনতে হবে কিন্তু আমি আসলে কোনভাবেই সময় করে উঠতে পারছিলাম না বাজারে যাওয়ার জন্য। মূলত রিয়েল লাইফের কাজ এবং ভার্চুয়াল লাইফের অনেক বড় একটা দায়িত্ব নিজের উপর আছে, তাই মোটামুটি অনেকটাই কাজে ব্যস্ত থাকতে হয় প্রতিনিয়ত । কিন্তু যেহেতু সংসারটা আমার, তাই আমাকে সেই দিকটাতেও নজর দিতে হয় । তাই মোটামুটি একটু সময় বের করে চেষ্টা করছিলাম যে , বাজারে গিয়ে কেনাকাটা করার জন্য ।
যদিও এর আগে কখনো আমাকে চাল কিনতে হয়নি । কারণ মোটামুটি শ্বশুরবাড়ি থেকেই আমাকে বাসার জন্য চাল পাঠিয়ে দিত । তবে এবার যেহেতু আমার শ্বাশুড়ি এবং সবাই মোটামুটি আমার বাসাতেই থাকে, তাই তারা এবার ধান ভেঙে চাল প্রসেস করতে পারেনি। তাই ব্যাপারটা একটু কমপ্লিকেটেড হয়ে গিয়েছে আমার জন্য । কি আর করার , আমাকে তো চাল কিনতে যেতেই হবে । যাইহোক গত রাতে যখন ঘুমিয়েছি মোটামুটি সব কাজ শেষ করে , তখন দেখলাম ঘড়ির কাটায় সাড়ে তিনটার মতো বাজে । তারপরেও সকাল বেলা মোবাইলে এলার্ম দিয়ে রেখেছিলাম। কারণ বাজার যেতে হবে, চাল কিনতে হবে এটার জন্য ।
সকালবেলা যখন কোন মত করে এলার্মের শব্দে ঘুমটা ভাঙলো। তখন মনে হচ্ছিল যেন , আমার কাছে সবকিছু এলোমেলো লাগছিল । তাও অনেক কষ্ট করে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে এই ঠান্ডার ভিতরে সকালবেলা কোন মত ঘুম থেকে উঠলাম এবং উঠেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, খুব তাড়াতাড়ি বাজারে গিয়ে বাজার করে নিয়ে চলে আসব । আমার আসলে সত্যি বলতে কি, চাল বাজার সম্পর্কে খুব একটা বেশি সঠিক অভিজ্ঞতা নেই । হিরা আমাকে যেভাবে বলে দিয়েছে , আমি ঠিক সেইভাবে গিয়েই চেষ্টা করছি চালের বাজারে গিয়ে চাল কেনার জন্য ।
আড়াই হাজার টাকা বস্তা। তার মানে প্রতি কেজি চালের দাম দাঁড়াচ্ছে ৫০ টাকা কেজি। আমি যখন এইভাবে হিসাব করতে লাগলাম, তখন কিছুটা আমার কাছে খটকা লাগলো। সবকিছুর দাম যদি এইভাবে বেড়ে যায়, তাহলে সাধারণ মানুষের জীবন একদম করুন হয়ে যাবে। কারণ সবার তো আর এত পয়সা দিয়ে চাল কেনার সামর্থ্য নেই ।এই ব্যপারগুলো আমাকে প্রতিনিয়ত মানসিকভাবে বিব্রত করে ফেলে । আমি যখন এক বস্তা চালের অর্ডার করেছি, তখন দেখলাম পাশ থেকে এক গরিব মহিলা সে এক কেজি চাল কেনার জন্য তার থলে থেকে কিছু কয়েন গুনে গুনে বের করছে কিন্তু তাও তার এক কেজি চাল কেনার মতো পয়সা হচ্ছেনা ।
ব্যাপারটা আমি খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করছিলাম । যাইহোক সকাল-সকাল এমন একটা ব্যাপার সন্মুখীন আমাকে হতে হবে, আমি এটার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম না । আমি দোকানদারকে বললাম , ভদ্র মহিলার কাছ থেকে চালের পয়সা নিয়েন না । তাকে তার চালটা দিয়ে দিয়েন । ভদ্রমহিলা আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে ছিল, যেন সে মনে হয় অন্য কিছু দেখছে। যাইহোক আমি তাকে বিনীত সুরে বললাম, এই চাল আপনার । এটার জন্য পয়সা দিতে হবে না।
এই বলে আমি আমার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। অতঃপর এক বস্তা চাল রিক্সায় করে নিয়ে বাসায় উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলাম । যাইহোক কে শোনে কার কথা । কিছু আত্মতৃপ্তির কথা মুখে বলে প্রকাশ করতে নেই বা মুখে বলে প্রকাশ করাও যায় না । কিছু কিছু ব্যাপার গুলো মনে মনে উপলব্ধি করতে হয় । যাইহোক এই দ্রব্যমূল্যের বাজারে সবাই খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকুক এই কামনাই করি ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
বাজারে সবকিছুর দাম যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে মধ্যবিত্তরা আরো বেশি সমস্যার মধ্যে পরছে। কারণ মধ্যবিত্তরা বা আমাদের সমাজের খেটে খাওয়া মানুষগুলো দিন আনে দিন খায়। তারা যদি চাল কিনেই সব টাকা শেষ করে ফেলে তাহলে অন্যান্য খরচ কিভাবে চালাবে। দিনে দিনে সবকিছুর দাম অনেকটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনি অসহায় একজন মানুষকে সাহায্য করেছেন এটা জেনে অনেক ভালো লাগলো। এই সময় যদি আপনি না থেকে অন্য কেউ থাকতো তাহলে হয়তো সেই মহিলাটিকে তার জমানো কষ্টের টাকা দিয়ে এই চাল কিনতে হতো। এই বিষয়গুলো খুবই খারাপ লাগে দেখলে। সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ তারা কিভাবে তাদের সংসার চালায় এই বিষয়গুলো ভাবলে খুবই খারাপ লাগে। অনেক সুন্দর একটি বিষয় উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
ঠিকই বলেছেন ভাই নিজের কাজ নিজে করলে আলাদা একটা আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়। এবং আমি একজন ছাএ। এখন পূর্ণাঙ্গভাবে ক্লাস চলছে আমি তো সময় পাই না। এবং আপনি তো বাস্তব জীবনে বড় একটি পেশা পাশাপাশি আমার বাংলা ব্লগ এর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন তো আপনার ব্যস্ততার কথা কী বলব।
ঠিকই বলেছেন ভাই প্রতিটা দ্রব্যের মূল্য বেশি। গরীব মানুষ কী খেয়ে বাঁচবে এই চিন্তা যেকোনো সচেতন মানুষের মধ্যে আসবে। এবং মহিলা টার অবস্থা শুনে খুবই খারাপ লাগল। না জানি এমন কত লোক রয়েছে বাংলাদেশে।
অসাধারণ একটি পোস্ট ছিল ভাই।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
💖🙂
ভাইয়া আপনার আজকের পোস্টটি পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো। সত্যি ভাইয়া আপনার মত একজন মানুষের সাথে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করতে পারছি এটা অনেক বড় পাওয়া। আমাদের চারপাশের গরিব দুঃখী মানুষ গুলোকে আমরা যদি সাহায্য করি তাহলে তারা অনেক বেশি উপকৃত হয়। তারা অল্পতেই অনেক খুশি হয়। আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যাদেরকে সব সময় উপকার করলেও তারা কখনও সেই উপকার মনে রাখে না। কিন্তু আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে তাদেরকে সামান্য পরিমাণ সাহায্য করলে তারা সারাজীবন সেই উপকার মনে রাখে। ভাইয়া আপনি ওই মহিলাটির যে উপকার করেছেন সে সারাজীবন সেই কথাটি মনে রাখবে। অনেক সময় সামান্য কিছু পেয়ে অনেকে সন্তুষ্ট হয়। তেমনি আমরাও গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করতে পারলে মনের মধ্যে আত্মতৃপ্তি পাই। আপনার লেখাগুলো যখন পড়ছিলাম তখন কেন জানি অজানা এক কষ্ট বুকের মাঝে বাসা বেঁধেছিল। মনে হচ্ছিল যেন আমাদের সমাজে এরকম ঘটনা সব সময় ঘটে চলেছে। যারা তাদের কষ্টের জমানো টাকা দিয়ে নিজের খাবার কিনে খাচ্ছে। একটি একটি করে টাকা জমিয়ে দুমুঠো ভাতের জোগাড় করছে। ভাতের কষ্ট সত্যিই অনেক বেশি কষ্টদায়ক। হয়তো এই মানুষগুলো দুমুঠো ভাতের আশায় সারাদিন হন্যে হয়ে ঘুরছে। এসব মানুষের মুখে দু'মুঠো ভাত তুলে দিতে পারলে খুবই ভালো লাগে। ভাইয়া আপনি আজকে আপনার এই কাজের মাধ্যমে অনেক আত্মতৃপ্তি পেয়েছেন এটা জেনে অনেক ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
ভাইয়া সব সময় কার মতো নেই আপনার চিন্তা ভাবনা গুলো একটু অন্যরকম এবং তার মধ্যে সত্যি আত্মতৃপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়, যদি আমরা তেমনটা করতে পারি।
আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত যাদের একটু সামর্থ্য আছে , একটু ভালো অবস্থায় আছেন তারা যাতে আমাদের নিম্ন শ্রেণীর মানুষগুলোর কে কিছুটা করে হলেও সহায়তা করতে পারি।
আপনার আজকের দিনের অভিজ্ঞতা টি জেনে খুবই ভালো লাগলো।
শ্রদ্ধা আর ভালবাসার মাত্রা দিন দিন শুধু বাড়ছেই এটাই বলব। শুভ হোক আপনার আগামীর পথচলা।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
জীবনে চলার পথে ছেলেদের অনেক দায়িত্ব নিতে হয়। দায়িত্ব না নিতে চাইলেও এটা আমাদের গ্রহণ করতে হয়। নিজের কাজ নিজে করাতেই আসল আনন্দ। তবে শীতকালে মানুষের আলসেমি বেড়ে যায় আরকি। সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠতে মান চায়। যাইহোক কাজের বেলায় ঘুম ত্যাগ করতে হয়। আপনার পোস্ট পড়ে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া !
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
হ্যাঁ ভাইয়া আমাদের সবারই উচিত নিজের কাজটা নিজেই করা। আর যেহেতু সংসার বলে কথা। আর সেখানে অন্য ব্যক্তির হস্তক্ষেপ মোটেই সম্ভব না। যাইহোক অনেক ব্যস্ততার পরও আপনি বাজার করতে হলো। কিন্তু সকাল সকাল এরকম একটা পরিস্থিতিতে পড়তে হবে সেটা আপনি মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো আপনার মত চিন্তা ধারা এবং কি মানসিক বিচার-বিশ্লেষণ করে যদি সমাজের প্রতিটা মানুষ চলতো তাহলে সমাজের দরিদ্র অবহেলিত মানুষ বলতে কোন কিছু থাকত না। তবে সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হচ্ছে আপনি যে একটি ভালো কাজ করে আত্মতৃপ্তি পেয়েছেন নিজের কাছ থেকেও আসলে এটা প্রশংসনীয় এমনকি সম্মানের ও। আমাদের সাথে এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা রইলো
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
আপনি অনেক সুন্দর একটা কাজের মাধ্যমে দিন কাটিয়েছেন
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
ভাইয়া আপনার পোষ্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। দিন দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য গুলোর দাম ঊর্ধ্বগতিতে বাড়ছে। আর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য গুলোর মধ্যে চাউল অন্যতম। আর চাউলের দাম বর্তমানে আমাদের দেশের বাজারে সম্পূর্ণ ঊর্ধ্বগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর চালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আমাদের দেশের সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলো। আর ভাইয়া আপনি একজন অসহায় মানুষের সাহায্য করেছেন এটা জানতে পেরে আমার অনেক অনেক ভালো লাগলো। এভাবে আমাদের দেশের উচ্চ শ্রেণীর মানুষগুলোর যদি নিম্ন শ্রেণীর মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায় তাহলে দেশের নিম্ন শ্রেণীর মানুষ গুলো বেঁচে থাকার নতুন আবার আসা ভরসা পাই। সুন্দর একটি পোষ্ট উপহার দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
আসলে সংসারের কাজে কোন লজ্জা নাই। ভাইয়া নিজের কাজ নিজে করাই উত্তম। আসলে ভাই আপনি অনেক ব্যস্ত থাকেন তার মধ্য দিয়েও পরিবারকে সময় দেন অনেক কষ্ট করে। আসলেই যখন পরিবারকে একটু সময় দেন তখন সকল কষ্ট দূর হয়ে যায় বলে মনে করি আমি। হ্যাঁ এইতো সবাই খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকুক এটাই কামনা করি। সত্যি ভাইয়া অনেক ভালো লাগলো আপনি বেশ উদার মনের একজন মানুষ। আপনার সবকিছু আমার খুবই ভালো লাগে। আপনার জন্য দোয়া রইল আপনি যদি ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন ভাইয়া