কোন এক সন্ধ্যায় বাসায় আইসক্রিম পার্টি || @shy-fox 10% beneficiary
এই ছবিগুলো এখন শুধুই মাত্র স্মৃতি । আচ্ছা যাইহোক এই স্মৃতির পিছনের কিছু কথা একটু ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করি । কদিন আগেই মূলত যখন প্রচুর পরিমাণে গরম যাচ্ছিল । সেই সময় এক সন্ধ্যা বেলায় হুট করে বাসার বাহিরে গিয়েছিলাম আর মূলত গিয়ে মনেহল যে একটা বড় চকলেট আইসক্রিম বাসার জন্য কিনে নিয়ে যাই আর তাছাড়াও আমি কিছুদিন বাসার সবাইকে কথা দিয়েছিলাম যে আইসক্রিম খাওয়ার ।
একটা ব্যাপার আমাকে ভীষণ পরিমাণে ছুঁয়ে গিয়েছে । যখন প্রথম আইসক্রিমের দোকানে গিয়ে আমি ছোট বাটি আইসক্রিম খাচ্ছিলাম তখন পার্শ্ববর্তী এক বয়স্ক লোক আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে ছিল যেন আমাকে কিছু বলতে চায় ।
আমি যখন ব্যাপারটাতে আগ্রহ দেখিয়েছি এবং বললাম আপনি কি আইসক্রিম খাবেন, তখন ভদ্রলোক মাথা নাড়িয়ে সম্মোধন জানিয়েছিল । এই ব্যস্ত শহরে সন্ধ্যা বেলার দিকে নবীন ও প্রবীণ প্রাণ দুজন মিলে খোলা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আইসক্রিম খাচ্ছে আর ফিসফিস করে গল্প করছে । বাবাজি আইসক্রিম খেতে তোমার কেমন লাগছে । সে তো বলেই ফেলল এটাতো একদম অমৃতের মত ।
২০ টাকায় যে অমৃত কিনতে পাওয়া যায় তা আমার হয়তো জানা ছিলনা । জায়গাভেদে অনেকের মন্তব্য আলাদা হতেই পারে । তবে তাকে যে ২০ টাকায় অমৃত খাওয়াতে পেরেছি, এটা ভেবেই নিজের কাছে অনেকটা আত্মতৃপ্তিবোধ হচ্ছিল ।
মূলত আগের সপ্তাহে আমি বাসার সকলকে কথা দিয়েছিলাম যে, এবার বাহিরে গেলে ফেরার সময় বড় আইসক্রিম কিনে নিয়ে আসব । বাসার আসলে সকলে বলতে তখন বৌদির মেয়েরা আমার বাসায় যাতায়াত করত আর ওরা আমার ছেলের খেলার সাথী ছিল । যার কারণে ওদের বিষয়টা সবসময় মাথায় থাকতো । ওদেরকে নিয়েই মূলত আইসক্রিম খেতে চেয়েছিলাম ।
আমি কথা রাখতে ভালোবাসি । আমার কাছে কথা রাখার ব্যাপারটা এমন যে, আমি যদি মরেও যাই তাও মানুষকে দেওয়া কথা গুলো যেন পূর্ণ করে মরে যেতে পারি ব্যাপারটা ঠিক এমনটাই। যতদিন বেঁচে থাকব, যাদেরকে যে কথাগুলো দিয়েছি সেই কথাগুলো যেন আমি রাখতে পারি , এমনটাই কামনা করি ।
সন্ধ্যাবেলার দিকে পুরো বাজার খুঁজেও যেন আমি বড় আইসক্রিমের বাটি খুঁজে পাচ্ছিলাম না । অতঃপর যেমন চিন্তা তেমন ভাবনা । অনেকগুলো দোকান খোঁজার পরে একটা দোকানে গিয়ে বড় একটা চকলেট আইসক্রিমের বাটি পেয়ে গেলাম । সম্ভবত এটা এক লিটারের বেশি হবে , দামটাও বেশ ভালো নিয়েছিল । তবে দামের থেকেও বেশি বড় ব্যাপার হচ্ছে , আমি কথা দিয়েছিলাম বাসার সবাইকে । এটাই আমার কাছে সব থেকে বড় বিষয় ।
বাসায় ফিরেই অনেকটা হুলস্থল কান্ড । সবাইকে আবার চেঁচিয়ে ডাকলাম । এই অর্থি এই ঐশী , কই তোরা আয় সকলে মিলে একসঙ্গে আইসক্রিম খাব । হীরাকে বললাম সকলকে একসঙ্গে বাটিতে করে দাও , আমরা সবাই মিলে আইসক্রিম খাব আর একসঙ্গে সময়টা উপভোগ করব ।
মেয়েগুলোও বেশ খুশি হয়েছে । আমার নিজেরও বেশ খুশি লাগছে কারণ তাদেরকে দেওয়া কথাটা আমি রাখতে পেরেছি এটা ভেবে । অবশেষে হীরা সবাইকে বাটিতে করে আইসক্রিম দিল এবং আমাকেও একটু দিল । এই সন্ধ্যা বেলা তীব্র গরম আবহাওয়ার মাঝে , যখন আইসক্রিম খেতে পারলাম তখন আলাদা একটা প্রশান্তি কাজ করছিল নিজের মাঝে । তাছাড়াও ভালোই লাগছিল কারণ সবাইকে নিয়ে সময়টা উপভোগ করতে পেরেছি এটা ভেবে ।
আজ ছবিগুলো শুধুই স্মৃতি। ওরা দোতালায় চলে গিয়েছে, বড্ড খারাপ লাগছে । আজ যখন ছবিগুলো দেখছি আর স্মৃতিচারণ করছি , তখন চোখের কোণায় অনেকটাই পানি জমে গিয়েছে । আজ বাবু একাই বাসার ভিতরে ছটফট করে , ওর খেলার সাথী নেই বললেই চলে ।
তবে ওরা মাঝে মাঝে বিকেল বেলা করে বাসায় আসে, হয়তো আগের থেকে সেটা অনেক কম । কারণ এখন চাইলেও আর হুটহাট করে আসা সম্ভব না । তবে আগের দিনগুলো আমাদের কাছে বেশ ভালই ছিল । তারপরেও বলব সবকিছুই এখন অতীত । আর অতীত বেশ আবেগপ্রবণ । এই সুন্দর অতীতগুলো মিশে থাকুক জীবন খাতায় ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
ভাইয়া আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে আমার মন ছুয়ে গেল। একজন বয়স্ক লোকের চোখের ভাষা যে আপনি সহজে বুঝতে পেরেছিলেন এটাই তো বিশাল ব্যাপার। তারপর আপনার দেওয়া ২০ টাকা দামের আইসক্রিম খেয়ে বয়স্ক ভদ্রলোকটি অমৃতের স্বাদ পেয়েছে আপনার জন্য এটা সত্যিই অনেক বড় মাপের একটা পাওয়া। আর পরিবারের সদস্যদের আইসক্রিম খাওয়ানোর কথা দিয়ে কথা রাখতে পেরেছেন এবং পরিবারের সকল সদস্যদের কে আইসক্রিম খাওয়াতে পেরেছেন এটা খুবই আনন্দের একটি কাজ। প্রিয় ভাইয়া আপনার জন্য অনেক অনেক আশীর্বাদ রইল।
এরকরম প্রতিবেশি আমার থাকলে মাঝে মাঝে সবাই মিলে মজা করে পিকনিক,ভালমন্দ খাওয়াদাওয়া করা যেত।মজাই লাগে এরকম সবাই একসাথে হয়ে আড্ডা দিতে দিতে খাওয়াদাওয়া করতে।দেখে অনেক ভাল লাগতেছে।
যার যেমন সামর্থ্য তার তেমন চাহিদা । ওই বয়স্ক লোকটির হয়তো আইসক্রিম কিনে খাওয়ার সামর্থ্য ছিল না তাই তার কাছে ওই আইসক্রিম অমৃত মনে হয়েছে । তাছাড়া আপনি আপনার কথা রেখেছেন সবাইকে নিয়ে আইসক্রিম পার্টি উদযাপন করেছেন দেখে ভালই লাগলো। এই গরমের মধ্যে আইসক্রিম খেলে আসলেই খুব তৃপ্তি লাগে। আর ওরা দোতলায় চলে গেলেও আশা করি সম্পর্ক এবং আসা যাওয়া আগের মতই থাকবে।
একদম ঠিক বলেছেন আপু , ভদ্রলোক যখন আইসক্রিম কিনে খাচ্ছিল তখন যেন অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম। কি একটা করুণ চাহনী । ছুঁয়ে যাওয়ার মতো ।
বিশ টাকা দিয়ে হয়তো কাপ আইসক্রিমটা খেয়েছন, তাই অমৃত মনে হয়েছে। আর ভাইয়া আপনি আপনার কথা রাখার জন্য এক কিলোমিটার হেটেছেন। তারও ভাল পেয়েগেছেন,যদি না পেতেন আরো হাটা লাগতো। সব থেকে ভাল লেগেছে,সবাই মিলে খুব আনন্দ করে আইসক্রিমটা খেয়েছেন। দিন শেষে এটাই সবাই চাই। হাসি খুশি থাকতে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাই এখন আইসক্রিম বাংলাদেশের অনেক উন্নত। সত্যি সত্যি অমৃতের স্বাদে পাওয়া যায়। বেশ ব্যতিক্রম একটি পার্টি করলে আজকে। বিভিন্ন পার্টিতে অংশগ্রহণ করেছি কিন্তু আইসক্রিম পার্টি তে কখনো অংশগ্রহণ করা হয়নি। পরিশেষে প্রতিবেশী পাশে না থাকার কারণে খারাপ লাগারই কথা বিশেষ করে বাবুর জন্য খুবই সমস্যা হয়েছে। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ভাই।
আপনার লেখাটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো । বয়স্ক লোকটির চাহিদা কত কম ছিল মাত্র ২০ টাকার আইসক্রিম কে অমৃত মনে করল। আসলে মানুষের জীবনে অনেক ছোট ছোট চাহিদাও থাকে । আমার কাছে আপনাদের দুজনের অর্থাৎ বয়স্ক লোকটি ও আপনার একসঙ্গে আইসক্রিম খাওয়াটা বেশ ভালো লেগেছিল। তারপর পরিবারের সবাই মিলে চকলেট আইসক্রিম খেয়েছেন যেটি সত্যি বেশ আনন্দের ছিল । আসলে অতীত বেশির ভাগ সময়ই কষ্টদায়ক হয় ।ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্য বলতে কি ছোট ছোট কিছু ঘটনার মাঝে আলাদা রকম প্রশান্তি কাজ করে ম্যাম । আসলে যা বলে প্রকাশ করা কিছুটা কঠিন ।
চকলেট ফ্লেভার এবং কফি ফ্লেভারের দুইটা আইসক্রিম আমার খুব পছন্দ। আইসক্রিম খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। খুবই ভালো লাগলো সেই বয়স্ক লোকের কথাটি শুনে। যাকে আপনি ২০ টাকা দিয়ে অমৃত খাইয়ে এসেছেন। নিশ্চয়ই তার কোটি কোটি দোয়া আপনার ওপর পড়েছে। অনেক সময় আমরা মানুষকে অনেক কিছু খাইয়েও কোন নাম পাই না বদনামি হই। কিন্তু এসব মানুষকে দুই টাকা দিয়ে একটা চকলেট কিনে দিলেও হাজার ভালবাসা পাবেন তাদের কাছ থেকে।
আমাদের চারপাশে এমন কিছু মানুষ আছে যারা ২০ টাকা দিয়ে একটুখানি আইসক্রিম কিনে খাওয়ার সামর্থ্য রাখেনা। হয়তো তাদের ইচ্ছে করে নিজের ভেতরটা ঠাণ্ডা করতে। ভাইয়া আপনি একজন অতৃপ্ত মানুষের তৃষ্ণা মিটিয়েছেন যেটা সত্যি অনেক ভালো লাগলো। আমাদের প্রত্যেকের উচিত আমাদের আশেপাশের মানুষগুলোকে একটু হলেও সাহায্য করা। যাই হোক বৌদির বাসা পরিবর্তনের ফলে বৌদির মেয়েদের ছাড়া শায়ান বাবু অনেকটা একা হয়ে পড়েছে। আশা করছি ধীরে ধীরে সেও নতুন ভাবে নিজেকে মানিয়ে নেবে। ভাইয়া আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। ♥️♥️
হুম ভাই তেমনটাই তো লক্ষ্য করেছিলাম সেদিন । আসলেই ব্যাপারটা বেশ আবেগপ্রবণ ছিল ভাই ।
ভাইয়া আপনার আইসক্রিম খাওয়ানোর গল্প পড়ে এক নিমেষেই আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিলাম, এই তো কয়দিন আগের কথা, আমরা সবাই একসাথে বসে কত আড্ডা কত গল্প করেছি, সকাল থেকে রাত অবদি কম করে হলেও দশবার দেখা হতো অথচ আজ একই বিল্ডিং এ থেকেও দিনে একবার দেখা হওয়াটাও কষ্টকর হয়ে গেছে, শায়ান বাবুকে খুব মিস করছি, আপনাদের সবাইকে অনেক মিস করছি। দিন শেষে হয়তো একবার দুইবার দেখা হবে কিন্তু আগের দিনগুলোতে আর ফিরে যাওয়া সম্ভব নয় এটা ভেবেই অনেক খারাপ লাগছে। সুন্দর মুহুর্ত গুলো তুলে ধরার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভকামনা রইল ভাইয়া।
জীবন এমনি বৌদি । তবে আমি আমি মনেকরি কিছু কিছু সম্পর্ক পরিপক্ক করতে গেলে দূরত্বের দরকার আছে । সুস্থ ও সুন্দর থাকুন এমনটাই প্রত্যাশা করি বৌদি ।
অর্থি এবং ঐশী আমাদের সকলের কাছেই পরিচিত নাম। শায়ান বাবুকে তারা অনেক ভালোবাসে। আর শায়ানও তাদের কাছে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তবে এখন যেহেতু তারা বাসা চেঞ্জ করেছে তাই শায়ানের মনে হয় একটু কষ্ট হচ্ছে। যাই হোক মাঝে মাঝে পুরনো স্মৃতিগুলো দেখলে ভালো লাগে। সকলের জন্য লোভনীয় চকলেট আইসক্রিম নিয়ে এসেছেন দেখে ভালো লাগলো। এই গরমে চকলেট আইসক্রিম খেতে দারুন লাগে। আপনি একজন মানুষকে ২০ টাকার বিনিময়ে তৃপ্ত করতে পেরেছেন এটাই অনেক বড় পাওয়া। কিছু কিছু মানুষের হাসি মুখ দেখলেই হৃদয় ভরে যায় ভাইয়া।
একটু না আপু , ওরা চলে যাওয়াতে বেশ ভালোই কষ্ট হয়েছে । শায়ান তো এখন একা একা থাকতেই চায় না ।