সুবোধ
ডিজাইন canva দ্বারা বানানো
একটা বিষয় আমাকে প্রতিনিয়ত ভাবিয়ে তোলে, সেটা হচ্ছে দিন দিন মানুষের বুদ্ধি ও বিবেক কেমন জানি লোপ পেয়ে যাচ্ছে। সবথেকে বড় ব্যাপার হচ্ছে, সেদিন খুব বাজে একটা অভিজ্ঞতার শিকার হলাম। বিশেষ করে যখন দেখলাম, শিক্ষিত লোকজনের মাঝেও এখন এসে এইসব প্রবণতাটা আছে এবং যখন দেখছি এইসব ব্যাপারগুলো নিয়ে অনেকটা গর্ব করে কথা বলে, তখন আসলে দিন শেষে মনে হয় যে, আমি অযথা সময় নষ্ট করছি তাদের সঙ্গে কথা বলে।
সেদিন যখন রাজ্জাক ভাইয়ের হোটেলে বিকেল বেলার দিকে পুরি খাচ্ছিলাম, ঠিক সেই সময় হঠাৎ করেই এক ভদ্রলোকের সঙ্গে আমার দেখা হয়ে গিয়েছিল। যদিও ভদ্রলোক আমার অনেকটা পূর্ব পরিচিত। তারপরেও ভদ্রলোক চা খেতে বসেছিল আমার সামনের টেবিলে। বেশ স্বাভাবিক ভাবেই কুশল বিনিময় হলো ।
একেক জনের মতামত একেক রকম হবে এটা নিতান্তই স্বাভাবিক। তবে সবার সুস্থ মতামতকেই আমি প্রতিনিয়তই শ্রদ্ধা করি। তবে কিছু কিছু ব্যাপার আমাকে বেশ ভাবনায় ফেলে দেয়। তবে তারপরেও সেখান থেকে নিজের মতো করে সমাধানের পথ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করি।
মমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। আসলে সেদিন রাজ্জাক ভাইয়ের হোটেলে মমিনের বাবার সঙ্গেই কথা হয়েছিল। ভদ্রলোক হাইস্কুলের শিক্ষক। আমার কাছে একটা ব্যাপার বেশ অবাক লেগেছে, সেদিন মমিনের বাবা চা খাওয়ার সময়ে বেশ গর্ব করেই বলছিল, তার ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের ক্ষমতাসীন দলে যুক্ত হয়ে ছাত্র রাজনীতি করে, এখন সে সেই হলের সভাপতির পদ পেয়েছে।
এই তুচ্ছ ব্যাপারটা মমিনের বাবা এমন ভাবে গর্বের সঙ্গে বুক ফুলিয়ে বলছে, যেন তার ছেলে নাসার বিজ্ঞানী হয়ে গিয়েছে। আমার আসলে ব্যাপারটা ভাবতেই শরীরটা যেন গুলিয়ে উঠলো।
হতেই পারে আপনি ব্যক্তি জীবনে রাজনীতি পছন্দ করেন বা ক্ষমতা প্রদর্শনে ব্যস্ত থাকেন। তবে একটু পারিপার্শ্বিক অবস্থার কথা গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন তো, সত্যিই কি কোন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ এখনকার রাজনীতি পছন্দ করে। হয়তো আপনি আপনার উত্তর পেয়ে যাবেন। আচ্ছা যদি খবরটা এমন হতো, আপনার ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ হলের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র হিসাবে বিবেচিত হয়েছে,তাহলে ব্যাপারটা শুনতে কেমন লাগতো।
আমি এখানে কোন দলের নাম নিতে চাই না। তবে বর্তমান ছাত্র রাজনীতি বা দেশের বাস্তবিক প্রেক্ষাপটের দিকে যদি একটু ভালোভাবে তাকানোর চেষ্টা করেন, তাহলে মনে হয় একটু হলেও বুঝাতে পারবেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি কি। শুনতে খারাপ লাগলেও, যারা আসলেই প্রকৃত পক্ষে শিক্ষিত ও সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ তাদের কাছে আসলে এই সময়ের রাজনীতি বা ছাত্র রাজনীতি অনেকটা নর্দমাতে ভেসে বেড়ানোর মতো ব্যাপার। আর তাছাড়াও আমার কাছে ব্যক্তিগত ভাবেই এটা কে কখনোই সুস্থ রাজনীতি মনে হয় না ।
ঐ যে বললাম জায়গাভেদে একেক জনের চিন্তাভাবনা ও প্রত্যাশার ব্যাপারটা সম্পুর্ণ আলাদা। তাছাড়াও এখন অনেকের কাছে এই অসুস্থ রাজনীতি করাটাও একটা সম্মানের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি আমার ব্যক্তি জীবন থেকে ছোট্ট একটা উদাহরণ দিচ্ছি । যখন আমি রাজশাহীতে ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলাম, সেই সময় খুব কাছ থেকে দেখেছি।
যারা এরকম ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং যারা বিভিন্ন হলের সভাপতি ও অন্যান্য পদে দায়িত্বে ছিল, তাদেরকে হলের ক্যান্টিন ও সিট বাণিজ্য করতে দেখেছি। সত্য কথা বলতে গেলে কি, যে ছেলেটা ক্যান্টিনের কয়েক টাকা মূল্যের খাবার নিয়ে লম্ফঝম্ফ করতে পারে, সেখান থেকে কিভাবে পয়সা বাগিয়ে নেবে সেটা ভাবতে পারে, হলের সিট থেকে কিভাবে বাণিজ্য করবে, সেটা নিয়ে ভাবতে পারে। সেই ছেলেটা আর যাই করুক তার ভবিষ্যৎ যে কেমন হবে, তা আসলে সে এখন থেকেই একটু পরখ করে নিচ্ছে।
তারপরেও অদূর ভবিষ্যতে হয়তো ক্ষমতা দিয়ে, এই ছেলে গুলোই দেশের আমলা-কামলা হবে। তাদের নর্দমাতে ভাসমান চিন্তাগুলো পরিহার তো হবেই না বরং আরও পরিপক্ব হবে। যা দেশের বাস্তবিক প্রেক্ষাপটের রূপরেখা পরিবর্তনে আরও গতিশীল ভূমিকা পালন করবে ।
মমিনের বাবা স্কুল শিক্ষক হয়েও, তার ছেলের রাজনীতি করা ব্যাপারটা নিয়ে যেভাবে বুক ফুলিয়ে গর্ব করে সেদিন কথা গুলো বলছিল, তা যেন ভাবতেই আমি কিছুটা হলেও শংকিত হয়ে গিয়েছিলাম।
আমি বলছি না, রাজনীতি করাটা উচিৎ নয়। তবে দিনশেষে সুস্থ রাজনীতি কয়জন করতে পারে, এটাই হচ্ছে মুখ্য বিষয় । মানুষগুলোর সুবোধ জাগ্রত হোক, সুশিক্ষার পরশ তাদের মস্তিষ্কে প্রবেশ করুক, এমনটাই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
মমিনের বাবা একজন শিক্ষিত মানুষ হয়েও নিজের ছেলেকে রাজনৈতিক কাজের সাথে সম্পৃক্ত হওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেননি জেনে সত্যিই খারাপ লাগলো। আসলে রাজনীতি করা খারাপ এটা কখনো বলতে চাই না। তবে একটি সুস্থ স্বাভাবিক জীবন সবারই প্রত্যাশা। কিন্তু রাজনৈতিক ক্ষেত্রে হাঙ্গামা লেগেই রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হল দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। আর সেখানে ভর্তির সুযোগ যার হয়েছে সে অবশ্যই সেরা দশের মধ্যে একজন। তার ভবিষ্যৎ কি হবে সেটা নিয়ে সত্যি চিন্তা হচ্ছে। আসলে তাদের মত মেধাবীদের হাতেই আমাদের দেশ একসময় চলে যাবে। তারা যদি এখন থেকেই ছোট মনমানসিকতায় বড় হয় ও সিট বাণিজ্যের সাথে জড়িয়ে পড়ে তাহলে তারা দেশের জন্য কি করবে এটা ভাবতেই অবাক লাগছে ভাইয়া।
কিচ্ছু করার নেই আপু পরিবেশ পরিস্থিতি এখন এমনটাই হয়ে গিয়েছে।
রাজনীতির ব্যাপারে এতে আইডিয়া নেই! বাংলাদেশের রাজনীতি যে কতটা নোংরা এটা চোখ দিয়ে তাকালেই দেখা যায়! রাজনীতি নিয়ে এখন মানুষজন ক্ষমতা প্রদর্শন করে! সব থেকে খারাপ লাগলো রাজ্জাক সাহেব একজন স্কুল শিক্ষক হয়েও তার ছেলে সভাপতি হয়েছে! এটাতেই খুশি। আজ যদি তার ছেলে ভার্সিটির রেজাল্টে ফার্স্ট হতো সেটা গর্ব করে বললেও ভালো লাগতো! মানুষের বিবেক জাগ্রত হোক এটাই কামনা করি।
আসলে ভাই কি আর বলবো, পারিপার্শ্বিক অবস্থাটাই এখন এমনি চলছে।
ছেলে রাজনীতি করে এতে বাবার গর্ব হয় জীবনে প্রথমবার শুনলাম। হা হা হা... আমি যতদূর জানি রাজনীতির সাথে যারা জড়িত থাকে তাদের বাপ-মা সবসময় ভয়ে থাকে, যে আমার ছেলের কিছু হয়ে না যায়। আসলে কি বলব সেটাই বুঝতে পারছি না। একটা শিক্ষক মানুষ হয়েও উনার এরকম মানসিকতা হবে সেটাই চিন্তা করতে পারছি না। তবে আমি মনে করি, যারা রাজনীতির সাথে জড়িত হয়ে যায় পড়াশুনো চলাকালীন সময়ে, তাদের নিয়ে অন্তত গর্ব করার মতো কিছু নেই।
জীবন যেখানে যেমন ভাই, তবে তোমার মতো আমি বেশ অবাক ই হয়েছিলাম, সেই ভদ্রলোকের কথা শুনে।
আসলে কি বলবো বুঝে উঠতে পারছি না। এখন কি দিনে দিনে মানুষের বুদ্ধি লোপ পাচ্ছে, নাকি সামাজিক অবক্ষয় বৃদ্ধি পাচ্ছে তা বুঝে উঠতে পারছি না। বর্তমানে মানুষ শিক্ষার চেয়ে ক্ষমতার দাপট দেখাতেই বেশী পছন্দ করে। হ্যাঁ শিক্ষক হিসাবে মোমিনের বাবা যদি তার সন্তানের মেধা নিয়ে গর্ব করতো সেটা মেনে নেওয়া যেত। স্কুল শিক্ষক হয়েও, তার এধরনের ব্যবহারই প্রকাশ করে যে সত্যিই সামাজিক অবক্ষয় দিন দিন বেড়ে চলেছে। ভবিষ্যতে কেন বর্তমানে ও তো ক্ষমতার দাপটে এরাই আবার দেশের আমলা-কামলা হচ্ছে। ভালছিল আজকের পোস্টটি।
অনেক প্রাচীনকাল থেকেই ছাত্র জীবনের রাজনীতির যে প্রভাব সেটা খেয়াল করলে দেখা যাবে। আসলে ছাত্র জীবনে আমার মতে রাজনীতি নামক জিনিসটা রাখাই উচিত না। আমার মতে স্কুল কলেজ গুলোর থেকে এইসব রাজনীতি তুলে দেওয়া উচিত। কারো যদি রাজনীতি করতেই হয় সে যেন পড়াশোনা শেষ করে তারপরে যুক্ত হয়।কারণ এই ছাত্র জীবনের রাজনীতি অনেক ভালো ভালো ছেলে মেয়েকে নষ্ট করে দিয়েছে। আর যারা শুরু থেকে বিশৃঙ্খল ছিল, তাদের হাতে না চাইতেই অসম্ভব কিছু শক্তি দিয়ে দিয়েছে।যার ফলে তারা এখন ধরাকে সড়া জ্ঞান করছে। এটা শুধু বাংলাদেশ বা ভারত বলে নয়, সারা বিশ্বব্যাপী এই ঘটনা।আপনি একটা দারুন টপিক তুলে ধরেছেন।
রাজনীতি জায়গাটা এখন ক্ষমতা প্রদর্শনের জায়গায় পরিণত হয়েছে। রাজনীতির চক্করে অনেক ভালো মানুষকে খারাপ হতে দেখেছি। আমিও চাই মানুষের সুবোধ জাগ্রত হোক। মানুষ সুস্থ রাজনীতিতে ফিরে আসুক এবং রাজনীতি একটা গর্বের জায়গায় পরিণত হোক।