কোন এক সন্ধ্যায় || @shy-fox 10% beneficiary

শেষ যেবার ইরফানের সঙ্গে দেখা হয়েছিল , তখন সম্ভবত ব্যাচ ভিত্তিক ফুটবল খেলা হচ্ছিল। সেবার তো হালকা টুকটাক একটু কথা হয়েছিল। তারপর তো আর দেখা হয়েই উঠেনি । দেখা হবেই বা কিভাবে , আজকাল তো সময়ের অজুহাতে শুধু পালিয়ে বেড়াই ।

তবে হুটহাট যখন পরিচিত মানুষগুলোর সঙ্গে দেখা হয়ে যায় তখন একটা অন্যরকম ভালো লাগা বোধ কাজ করে নিজের মাঝে । টুকটাক গল্প করতে করতে কখন যে সময় গুলো কেটে যায় তা তো বুঝে ওঠাই যায় না । হয়তো তেমনটাই ছিল আজকের সন্ধ্যাটা।

পাওয়া না পাওয়ার হিসেব যেখানে বড্ড বেশি, সেখানে আসলে দিনশেষে মন খুলে দুটো কথা বলে আত্মতৃপ্তি পাওয়াটাই যেন অনেকটা প্রশান্তির ব্যাপার । ছোটাছুটির এই জীবনে কত গল্পই তো থেকে যায়, কেউ কি কারো কথা কখনো কান পেতে শোনার চেষ্টা করি । বেশ লজ্জিত হয়ে যাই নিজের কাছে নিজেই ।

কত পরিচিত মানুষজনের যে, কত অব্যক্ত কথা জমে আছে , সেগুলো যে সময় করে শুনে উঠবো তা তো করতেই পারছি না । হয়তো কারো সংকীর্ণতা থাকে নতুবা কেউ স্বাচ্ছন্দেই বলতে পছন্দ করে , তাও তো শোনা হয়েই উঠছে না । তবে যখনই সময় পাই, কান পেতে থাকি । চেষ্টা করি অব্যক্ত কথাগুলো শোনার জন্য ।

আজ যদি হয়তো চুল-দাড়ি কাটার সিদ্ধান্ত না নিতাম , তাহলে মনে হয় ইরফানের সঙ্গে দেখা করার সৌভাগ্যটাই হয়ে উঠতো না । হয়তো দুজনের গন্তব্যই এক ছিল বিধায় আকস্মিক ভাবে দেখা হয়ে গিয়েছিল । সেই চিরচেনা চেহারা, কোন পরিবর্তন নেই । সম্ভবত বছর খানেক আগেও দেখা হয়েছিল । তখনও যেরকম দেখেছি , ঠিক এখনো তেমন ।

যেহেতু বন্ধু মানুষ আর দীর্ঘদিন পরে দেখা । তাই শুরুটাই হয়ে গেল হালকা কিছু কথোপকথন দিয়ে । এখন কি করছো , এই প্রশ্নের প্রতিউত্তরে কিছু মুখস্ত বিদ্যার মতো গোছানো কথা । অনেকটাই গড়গড় করে বলে দিল । এই গোছানো উত্তরে ও যে একাই অভ্যস্ত তা কিন্তু না । একদিকে বয়স বাড়ছে অন্যদিকে বেকারত্ব । মূলত এই চক্রাকার বৃত্তের মধ্যেই সে আবদ্ধ হয়ে আছে ।

কিছু বিষয় যেমন কান পেতে শুনতে হয় আবার কিছু বিষয় তেমন আক্ষরিক ভাবেই বুঝে নিতে হয় । বুঝতে পেরেছি সময়টা ওর খুব একটা ভালো যাচ্ছে না । আর ওর জায়গা থেকে এটা নিতান্তই স্বাভাবিক ।

পুলিশের চাকরির প্রতি ঝোঁক তার বহু আগে থেকেই। তবে এই মামা-তামার দুনিয়ায় তার আসলে ঘুমন্ত ইচ্ছাটাকে পূর্ণ করতে পারে নি । হয়তো নিয়তি বেশ ভালোই জ্বালাতন করেছে । কপাল খুলতে খুলতে যেন খোলে নি ।

কতগুলো অর্জিত সার্টিফিকেট , বারবার দেখে আর দীর্ঘশ্বাস ফেলে । চাকুরির বয়স তো একদম শেষের দিকে , এখন আর ঘুমন্ত ইচ্ছে নিয়ে ওর তেমন একটা প্রত্যাশা নেই । কোনরকম একটা চাকরি জুটলেই তাতেই জীবনটা কাটিয়ে দিতে পারলেই হলো ।

একেক জনের গল্প একেক জনের কাছে শুধুমাত্র হালকা কিছুটা সহানুভূতি সৃষ্টি করতে পারে, তবে সমাধানের পথ কয়জনই বা বাতলে দেয় , এটাই তো একটা ব্যাপার । ওর চোখে মুখে হতাশার ছাপটা বেশ ভালোই দেখতে পেরেছি । ওর সমস্যার সমাধান আসলে আমার কাছেও নেই ।

ধোঁয়া ওঠা গরম চায়ে যখন চুমুক দিচ্ছিলাম আর এই ছোট্ট শহরের ব্যস্ত রেস্তোরাঁয় বসে যখন ফিসফিস করে দুজনে গল্প করছিলাম , তখন ভালো লাগার থেকে বরং বেশ ব্যথিত হয়ে গেলাম।

তারপরেও যেহেতু ও বন্ধু মানুষ , আবার কবে দেখা হবে, তা তো বলতে পারছি না । তবে এর পরবর্তী দেখাতে যেন ওর একটা সুসংবাদ পাই , এমনটাই তো প্রত্যাশা করছি । ভালো থেকো ইরফান, দেখা হবে আবারও।

ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy