মিনি

in আমার বাংলা ব্লগlast year

20230706_181714.jpg

মানুষ হয়ে মানুষের খোঁজখবর নেওয়ার যেখানে কারো সময় নেই, সেখানে নিরীহ প্রাণীর খোঁজ কে রাখে । তবে সেদিন বিকেলে স্বচক্ষে যখন দেখেছিলাম এই দৃশ্য তখন ঝটপট কিছু ফটো তুলে রেখেছিলাম এবং শুনেছিলাম পিছনের কিছু কথা। তা বেশ ভালো লেগেছিল।

আক্ষরিকভাবে তো কাউকেই তেমন বোঝা যায় না তবে তারপরেও বাহ্যিকভাবে যতটুকু দেখা যায়, ততটুকু নিয়েই যদি একটু ভালো মন্তব্য করা যায়, তাহলে ক্ষতি কোথায়।

নিজের বাসস্থানে পরম যত্নে, নিজের সন্তানের মতই বেড়ে উঠছে মিনি। এমন নজির এসময় খুব একটা দেখা যায় না বললেই চলে। ভদ্রলোক পেশায় শিক্ষকতা করলেও, বিড়াল লালন-পালন করা তার এক প্রকার শখ। তাকে আমি তেমনভাবে খুব একটা চিনি না, তবে তাকে জানতে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছিলাম, তার নিরীহ প্রাণীর প্রতি এই গভীর ভালোবাসা দেখে।

শূন্যদার চায়ের দোকানের পাশে যেখানে প্রাইমারি স্কুলটা আছে, ওখানেই ভদ্রলোককে দেখেছিলাম। শুনেছি এই স্কুলেই সে নাকি চাকরি করে। যদিও কথার ফাঁকে বলেই ছিলাম এই স্কুল থেকেই কিন্তু আমার পড়াশুনা জীবনের শুরু হয়েছিল, তাছাড়া আমার মা নিজেও শিক্ষকতা করেছিলেন এই স্কুলে। তখন ভদ্রলোক বেশ স্বাচ্ছন্দেই আমার সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।

20230706_181910.jpg

20230706_181635.jpg

20230706_181632.jpg

তবে ভদ্রলোক বড্ড ব্যস্ত ছিলেন, মুহূর্তেই তার মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার ফোন এসেছিল। স্কুলের খুব কাছেই যেহেতু তার বাসা, তাই মোটামুটি বিকেলবেলা এদিকটাতে চা খেতে এসেছিলেন আর সঙ্গে এসেছিল মিনি। মূলত মিনিই ছিল আমার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।অনেকটা নির্ভয়ে কাঁধের উপর দিয়ে কখনো এপাশে বা ওপাশে যাচ্ছিল মিনি। বেশ আদর যত্ন যে ওকে প্রতিনিয়ত করা হয়, তা যেন দেখেই বোঝাই যাচ্ছে।

নিজের ছেলেকে যেমন মোটরসাইকেলের পিছনে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, ঠিক তেমনি যখনই ভদ্রলোক বাসা থেকে বের হয়, মিনিও যেন তাদের সেই সময় সফর সঙ্গী হয়ে যায়। যতবারই পরিবারের লোকজন খাবার খেতে বসে, ততবারই সবার সঙ্গে ও যুক্ত থাকে।

এসবের মাঝেও ভদ্রলোকের মনটা কিছুটা খারাপ, এই ঈদের সময়ে কে বা কারা যেন তার মিনিকে রাস্তায় একা পেয়ে কৌশলে নিয়ে গিয়েছিল এবং খাঁচায় বন্দি করে রেখেছিল। যদিও ভদ্রলোক সেইসব অপহরণকারীদের কে খুঁজে পায়নি, তবে ভদ্রলোকের বড্ড সন্দেহ তার প্রতিবেশীরাই হয়তো এমনটা করেছিল। যদিও মিনি সুযোগ বুঝে কোনভাবে সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হয়েছিল, তবে ওকে যে বেশ ভালই নির্যাতন করা হয়েছিল সেটা ভদ্রলোক ওর শরীর দেখেই বুঝতে পেরেছিল। নখগুলো কেটে দিয়েছিল, খেতে দিয়েছিল না ঠিকমতো।

ভদ্রলোক যখন কথা গুলো বলছিল, তখন বুঝতে পেরেছিলাম সে আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছে। বুঝতে পারছি সে মিনিকে বড্ড ভালোবাসে। শুধু কি ভদ্রলোক নিজেই ভালোবাসে মিনিকে, তা কিন্তু মোটেও না। ভদ্রলোকের ছেলেও বেশ সযত্নে মিনিকে কাঁধে নিয়ে এদিক-সেদিক হাঁটছিল। মিনি যে তাদের পরিবারের কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, তা যেন বারবার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছিল।

ভদ্রলোকের বিড়ালের প্রতি এমন ভালোবাসা দেখে, বেশ শ্রদ্ধাবোধ কাজ করছিল তার প্রতি। সে ব্যক্তি জীবনে কেমন সেটা আমার জানার তেমন কোন ইচ্ছে নেই, তবে তার যে নিরীহ প্রাণীর প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ দেখেছি, আমি যেন তাতেই মুগ্ধ হয়েছি।

Banner-23.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 last year 

কোন পশু পাখি পুষলে তার প্রতি যে মায়া জন্মায় এটা সত্যি কথা।তখন তাকে নিজের সন্তানের মতো ই মনে হয়।তাইতো মিনিকে অপহরন করেছিল বলতে গিয়ে লোকটি আবেগপ্রবণ হয়ে পরে।আপনার ফটোগ্রাফি দেখে বেশ বুঝতে পারছি মিনির অনেক আদর যত্ন হয় সেখানে। ধন্যবাদ ভাইয়া মনের অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 last year 

এটা সত্য যে, ভদ্রলোক বিড়ালটিকে বেশ ভালোই আদর যত্ন করে।

 last year 

আসলে ভাইয়া পোষা প্রাণীর প্রতি মানুষের মায়া থাকে অন্য রকম। সত্যি মিনিকে তারা পরিবারের একজন মনে করে সব সময়। আর এমন কিছু লোক আছে যারা অন্যের ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে থাকে। যেমন মিনিকে চুরি করে নিয়ে গেলে সত্যি মিনির থেকে মিনির মালিকের অনেক কষ্ট হয়েছে। যাক অবশেষে মিনিকে ফিরে পেয়েছে এটাই অনেক। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আমিও যখন কথাগুলো শুনছিলাম তখন বেশ ব্যথিত হয়েছিলাম, বিশেষ করে মিনির অপহরণের ঘটনাটা।

 last year 

চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে আপনি আলোচনা করলেন ভীষণ ভালো লেগেছে আপনার লেখা গুলো পড়ে। আসলেই মানুষ এমন এক সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষের কাছে সবকিছুই পোষ মানায় যদি পোষতে জানে। আপনি চমৎকার একটি বিষয় তুলে ধরলেন উনার কাছ থেকে শুনে ভালো লাগলো। তবে মিনির চেহারা অনেক মায়ায় ভরা। মিনির চোখের চাহনি দেখে বুঝা যাচ্ছে বেশ ভালো ভাবেই আদর যত্নে বড় হয়েছেন ওই ভদ্রলোকের পরিবারে। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া পুরো লেখাটি পড়ে অনেক বেশি অনুপ্রাণিত হয়েছি।

 last year 

এটা একদম সত্য কথা যে পুষতে জানে, তার কাছে সব কিছুই পোষ মানে।

 last year 

পৃথিবীটা হলো একটা স্বার্থের জায়গা। আর মানুষ হলো স্বার্থ ছাড়া কোন কিছুই বোঝেনা। বর্তমান পৃথিবীতে মানুষ মানুষের দেখার সময় নেই, আর সেখানে পশু পাখি তো দূরের কথা। তবে ভদ্রলোকের এই আচরণ টা আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। ভদ্রলোকের স্কুলে চাকরি করেন এবং উনি এই স্কুলের ছাত্র ছিলেন উনার মাও স্কুলের শিক্ষকতা করেছেন। মিনিকে এই ভদ্রলোক যথেষ্ট আদরের মধ্যেই রাখে। তাকে অনেক সে ভালোবাসে। ভাই এই মিনির মত আমাদের বাসায় একটা বিড়াল রয়েছে। সে বিড়ালটি আমার অনেক প্রিয় আর আমাকে দেখলে দৌড়ে ছুটে চলে আসে। ভদ্রলোকের এই বিড়ালের প্রতি ভালোবাসা আমাকেও মুগ্ধ করেছে ভাই ধন্যবাদ সুন্দর করে লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 66603.07
ETH 3335.94
USDT 1.00
SBD 2.70