আসেন একটা গল্প শুনাই ||@shy-fox 10%beneficiary
ঘটনাটা বছর দেড়েক আগের । হুট করে একদিন দুপুরবেলার দিকে আমার পরিবারের সব থেকে আদরের ছোট ভাইয়ের সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবে একটা ঝামেলা লেগে যায় এবং বিষয়টা এতটাই জটিল আকার ধারণ করে যে, আমি মানসিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়ে যাই যে, আমি আর পরিবারের সঙ্গে থাকব না এবং তখন থেকেই মোটামুটি বাড়ি ছাড়া ।
যাইহোক আমি মোটামুটি বিশ্বাস করি যে, এরকম ঘটনা আশেপাশে প্রতিনিয়তই ঘটছে। কারন পরিবার থেকে যত দূরে থাকা যায়, ততই মোটামুটি পরিবারের সবার সঙ্গে সবার সম্পর্ক গুলো ভালো থাকে । আমি মনে করি,আমি সেই সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তটাই নিয়েছিলাম । সেই সময়ে আমার বাবা-মা ও পরিবারের অন্য সকল সদস্যরা সবাই ছোট ভাইয়ের বিষয়টাকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছিল । আমি খুব একটা বেশি কষ্ট পাইনি । তবে আমি মনে করি ঐটাই জীবনের সবচেয়ে ,আমার জন্য বাস্তবিক শিক্ষার একটা সময় ছিল ।
এমনিতেই কখনো পরিবার ছাড়া বাইরে থাকি নি, একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে হুট করে একটা ট্রাক ডেকে নিয়ে এসে নিজের বলতে, একটা খাট একটা ড্রেসিং টেবিল ও একটা ছোট বাক্স (মানে যেটার ভিতর আমার শিক্ষা জীবনের কিছু মুলা ঝুলানো সার্টিফিকেট ছিল) তাই নিয়েই মোটামুটি সঙ্গে হীরাকে নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম । গুনে গুনে পকেটে এগারোশো টাকা ছিল। ঐ টাকায় কি হবে, না হবে আমার কোন কিছু মাথায় ঢুকছিল না। জীবনটাকে সেদিনই মনে হয়, প্রথম নতুন করে চিনতে শিখেছিলাম । কারন একটা বিশাল ছায়া যখন মাথার উপর থেকে সরে যায় তখন মনে হয় জীবনটাকে নতুন ভাবে দেখা যায় ।
28 বছর থেকে এই শহরে বাস করেছি, এই শহরের অলিতে গলিতে প্রতিটি জায়গায় আমার শৈশব, কৈশোর ও অন্যান্য সময়ের স্মৃতি জড়িত আছে। হুট করে মুহূর্তের মধ্যেই যেন এ শহরটা আমার কাছে অচেনা হয়ে গেল । এ শহরের নতুন একটা রূপ দেখলাম । এ শহরটা যেন কোনোভাবেই আমাকে আপন করে নিতে পারছিল না সেই সময় । মান-অভিমানের হিসাব চুকিয়ে নিজেকে শক্ত করে, সোজা গ্রামের দিকে রওনা দিলাম । সাঁ সাঁ গতিতে যখন, গাড়ি চলছিল তখন মনে হচ্ছিল ভিতরটা ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছিল। তবে আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল ছিলাম ।
গ্রামে এসে নিজেকে নতুন করে আবারও প্রমাণ করার চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। নিজের বাস্তব জীবন ও ভার্চুয়াল জীবনে একদম লেগে পড়লাম কঠিন থেকে কঠিনতর ভাবে এবং নিজেকে যাচাই বাছাই করার চেষ্টা করলাম। গ্রামে আসার পরে যে , সময়টা একদম খুব স্বাভাবিক যাচ্ছিল তেমনটা কিন্তু মোটেও না । গ্রামে এসেও চিত্র ছিল একদম উল্টো, সবদিক থেকে সমালোচনায় জর্জরিত হয়ে গেছিলাম। কোনরকমে ধারদেনা করে ছোট্ট একটা চেম্বার দিয়ে দিছিলাম এবং ভার্চুয়ালে লেখালেখি করে,মোটামুটি দুইদিক থেকে একটা ভালো সঞ্চয় করেছিলাম ।
আজ ঠিক দেড় বছর পরে, পুরনো সেই শহরের সব থেকে উচু বিল্ডিংটাতে আমরা সংসার পাততে শুরু করেছি । এই দেড় বছর খুবই কঠিন সময় ছিল আমার কাছে এবং আমি মনে করি এই দেড় বছরেই আমার জীবনের সবথেকে বেশি পরিবর্তন হয়েছে । নিজেকে পুড়ে পুড়ে কয়লা বানিয়ে ,সেখান থেকে নিজেকে একদম ইস্পাতের মতো শক্ত করে ফেলেছি এবং নিজেকে প্রমাণ করে ছেড়েছি যে, আমি এগিয়ে যেতে পারি ।
আজ আমার ঘর ভর্তি আসবাবপত্র , পকেট ভরা পয়সা, ইচ্ছামত প্রয়োজনে পয়সা উড়াই আবার প্রয়োজন মিতব্যয়ী হয়ে যাই। সত্যিই আমার কারো উপর কোন প্রকার অভিমান নেই । আমি মনে করি, নিজের কাছে আমি অনেক কৃতজ্ঞ যে নিজের জীবনটাকে আমি নিজের মতো করে চিনতে শিখেছি । আর এই জন্য সবচেয়ে বড় কৃতজ্ঞ আমি, আমার পরিবারের কাছে । কারণ সেই দিনের সেই ঘটনা যদি না ঘটতো, তাহলে আজকে হয়তো আমি এখানে আসতে পারতাম না । আমি মনে করি, সেই দিনের সেই সিদ্ধান্তটাই আমার জীবনকে আজকে এই পর্যন্ত নিয়ে আসতে সহযোগিতা করেছে ।
বি:দ্র: নিজের সফলতা নিজের হাতেই নির্ভর করে, শুধুমাত্র চেষ্টা ও ধৈর্য্য ধারণ করতে হয় । জীবন আসলেই সুন্দর, সেটা সময় ও জায়গা ভেদে ।
একটা কথা সত্যি আই এর পরিবারের থেকে নিজেদের দূরে থাকা যায় তাহলে সম্পর্কটা অতি কাছের থাকে নষ্ট হয় না। তবে আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম আপনি খুব রাগী একজন মানুষ , হুট করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাগ করে সব নিয়ে এভাবে চলে আসবেন এটা আসলে কল্পনার বাহিরে তবে যাইহোক আপনার সব মিলে এখনকার সময় আশা করি খুব ভাল যাচ্ছে দোয়া করি সারা জীবন খুব ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার সফলতার গল্পটা আমাকে সত্যিই মুগ্ধ করেছে।আমি দোয়া করি আপনি আরো অনেক দূর এগিয়ে যান।পারিবারিক বন্ধন আরো গভীর হয়েই টিকে থাকুক সারা জীবন।অনেক অনেক ভালোবাসা ও শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ভাইয়া আপনার এই লেখাটা, এই লাইনটা পড়ে আমি যেন একদম থমকে গেলাম আজকে। ১১০০ টাকায় আজকাল আসলে কিছুই হয় না!! কিন্তু আপনার শুরুটা, আপনার এগিয়ে যাওয়া টা, আপনার উপরে উঠাটা এই এগারো শো টাকা থেকেই যেন শুরু হয়ে গেল। খুব অনুপ্রেরণা পেলাম আপনার আজকের লেখায়। আর ধন্যবাদ ভাইয়া আমার কথাটি রাখার জন্য, আমি বলেছিলাম বাসার সবকিছু দেখাতে।আপনি দেখিয়েছেন তার জন্য আমি অনেক বেশি খুশি। শুভকামনা রইলো আপনাদের ছোট সংসার টির জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার কথা বলার যেই ধরনটা সেটার মধ্যে একটা অন্যরকম ধার রয়েছে। আপনি মোটিভেশনাল স্পিকার হলে অনেক বেশি ভালো করতেন। আপনার জীবনের দেড় বছরের সংগ্রামের কাহিনী এবং বাসা ছেড়ে চলে আসার কথা গুলো পড়ে আপনি যে দিনে দিনে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে একজন খাঁটি হীরায় পরিণত হয়েছেন সেটা ঠিকই বুঝতে পেরেছে। “পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না” আমি এই কথাটা আমার এক শিক্ষকের কাছ থেকে শুনেছিলাম এবং আমি মনে প্রাণে এটা বিশ্বাস করি। আর একটা কথা আমি খুব বেশি পছন্দ করি সেটা হচ্ছে শান্ত সমুদ্রে কখনো দক্ষ নাবিক তৈরি হয় না। আমাদের জীবন চলার পথ যত বেশি অমসৃণ হবে আমরা তত বেশি দক্ষ সৈনিক হয়ে উঠব জীবনের যুদ্ধে। আপনার এই জীবন সংগ্রামের কাহিনী শুনে সত্যিই খুব মোটিভেশন খুঁজে পাচ্ছি। একটা সময় আমিও খুব পরিশ্রম করেছিলাম কিন্তু বর্তমানে খুব ভালো অবস্থায় আছি। এটাই জীবন আর এভাবে করেই আমাদের জীবন এগিয়ে যাচ্ছে আর আমাদের জীবনে তৈরি হচ্ছে সুন্দর সুন্দর নতুন নতুন অনেকগুলো গল্প।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
অসাধারণ একটি সফলতার গল্প বলেছেন আপনি, এই গল্প শুধু আমাদের মনকে আকৃষ্ট করে নি,
আমাদের জীবনের সফলতার পথ গুলো আরো সুগম এবং আমাদের মনকে আরো শক্ত করে দিয়েছে। এই গল্প থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত মানুষ জীবনে কতটা যুদ্ধ করতে পারে, আর কতটা চেষ্টার পর সে উন্নতির শেখরে পৌঁছাতে পারে।
গল্পটা পড়ে আমি সত্যিই অবাক হয়েছি ভাইয়া। আপনি কত কিছু পেরিয়ে আজ এখানে এসেছেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে,,,, এত সুন্দর একটি সত্তিকারের গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার জীবনের বাস্তব গল্প থেকে বিপদে পড়ে হাল ছেড়ে না দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় খুঁজে পেলাম। শোলে নিজের বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়াটা আপনার সঠিক সিদ্ধান্তই ছিল। জীবনটাকে চিনতে শিখেছেন ওই সময়। কাছের মানুষগুলো দূরে চলে গেলে কেমন অনুভূতি হয় তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন। পরবর্তীতে আবার শক্তিশালী রূপ নিয়ে আপনার এলাকায় ফিরে এসেছেন। খুব ভালো লাগলো আপনার গল্প পড়ে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার সফলতার গল্পটা আমাকে সত্যিই মুগ্ধ করেছে।আমি দোয়া করি আপনি আরো অনেক দূর এগিয়ে যান।পারিবারিক বন্ধন আরো গভীর হয়েই টিকে থাকুক সারা জীবন।অনেক অনেক ভালোবাসা ও শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার সফলতার গল্পটা আমাকে উপলব্ধি করেছে।আপনি আরো অনেক দূর এগিয়ে যান আমি সেই দোয়া করি। শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনার গল্পটি হামেশাই সমাজে ঘটছে।তবে কেউ উঠে দাঁড়াতে পারে, কেউ বা পিছিয়ে পড়ে।পরিশ্রম সফলতার মূল।তারই প্রতিফলন ঘটেছে আপনার জীবনে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
পরিশ্রম সৌভাগ্যের চাবিকাঠি। কখনো যদি আমাদের জীবনে ব্যর্থতা নেমে আসে তাহলে আমাদেরকে জীবনে থমকে থাকলে চলবে না ।নতুন করে মনোবল ও ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং জীবনে চলার পথে কঠিন পরিশ্রম করে এগিয়ে যেতে হবে তাহলেই জীবনে সফলতা মিলবে। পরিবার আমাদের জীবনের সবথেকে বড় সাপোর্ট সিস্টেম। কিন্তু জীবনের কোন একটি ক্ষেত্রে পরিবার থেকে দূরে থেকেই পরিবারের সবথেকে কাছাকাছি থাকা সম্ভব এবং পরিবারের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখা সম্ভব। দোয়া করি ভাই সারা জীবন সুস্থ থাকেন ভালো থাকেন পরিবার নিয়ে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।