আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-৩৯ || নারিকেল পাতার চশমা
যখন আমি কলেজে পড়তাম সেসময় একবার আমাদের এনাটমি বিভাগের প্রধান প্রফেসরের অদ্ভুত রকম ছেলেমানুষী দেখেছিলাম। বৈশাখী মেলা উপলক্ষে কলেজ চত্বরে তিন দিনব্যাপী যে মেলার আয়োজন করা হয়েছিল, সেই মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের দিনে ভদ্রলোক হলুদ রংয়ের পাঞ্জাবির সঙ্গে এই রকম নারিকেল পাতার চশমা পরেছিল।
সেদিন ভদ্রলোক আসলে নিজের শৈশব স্মৃতিকে কেন্দ্র করে সেই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কিছু কথা বলেছিল। হয়তো তার কথা অনুযায়ী তার বেশভূষাতেও তার শৈশব জীবনের স্মৃতি কিছুটা ভাসমান ছিল। গতকাল রাতে যখন আমাদের সকলের মাঝে এই প্রতিযোগিতা নিয়ে কথা হচ্ছিল, তখনই তো আমি হালকা কিছুটা কথা এই বিষয়ে মুখ ফুটে বলেই ফেলেছিলাম।
আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি, আমাদের সকল সদস্যদের। বিশেষ করে আমাদেরকে নিয়ে যারা এমন প্রতিযোগিতা করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তাদেরকে। সত্যি বলতে গেলে কি, এটা একটা অনুভূতির ব্যাপার। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করছি নিজের অবস্থান থেকে। কারণ এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমি কিছুটা হলেও আমার সেই কলেজ জীবনের প্রফেসরের কথা মনে করতে পেরেছি এবং আমার নিজের শৈশবটাও যেন অনেকটাই হাতছানি দিচ্ছিল।
বিকেল বেলার দিকে আজ যখন বাহিরে বের হয়েছিলাম, তখন মোটামুটি অনেকটা হন্যে হয়ে নারিকেল গাছের সন্ধান করেছিলাম পাতা সংগ্রহ করার জন্য। ব্যাপারটা মোটেও আমার কাছে এত সহজ ছিল না। তার ভিতরে প্রথমদিকে যে নারিকেল গাছগুলো পেয়েছিলাম, সেগুলো ভীষণ লম্বা ছিল, সেখান থেকে পাতা সংগ্রহ করা বেশ কষ্টসাধ্য। তাই বাধ্য হয়েই গ্রামের দিকে গিয়েছিলাম।
এছাড়া পাতা সংগ্রহের কাজে আমাকে বেশ সহযোগিতা করেছিল, আজ যে রিক্সাওয়ালা ভদ্রলোকের সঙ্গে বেরিয়েছিলাম, সে। হয়তো সে না থাকলে, আজ কোনভাবেই পাতা সংগ্রহ করা হয়ে উঠত না। যাইহোক যেহেতু প্রতিযোগিতার ব্যাপার, তাই নিজের জায়গা থেকে আমার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করেছি। যদিও বেশ ভালোই খাটুনী হয়েছে, তবে আমি যখন সফলভাবে চশমাটা বানাতে পেরেছি, তখন আমার কাছে ব্যাপারটা বেশ হাস্যকর হলেও মজা লেগেছে।
আমি যাহা পারি, আমি তাহাতেই খুশি। সত্যি বলতে গেলে কি, এই প্রথম সম্ভবত আমি কোন ডাই পোস্ট শেয়ার করলাম। তাও সেটা এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। তাছাড়া এর আগে কখনো এ ধরনের পোস্ট করা হয়নি। আবারো সকলের প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি, আমার মত মানুষকে খোলসের ভিতর থেকে টেনে বাহির করে, এই কাজে অনুপ্রেরণা জোগানোর জন্য।
উপকরণ |
---|
নারিকেল পাতা |
ছোট কাঁচি |
ধাপ-১
প্রথমে আমি একটি নারিকেল পাতা নিয়েছি। এবার দুই পাশ থেকে কেটে ফেলে দিয়ে মাঝখানের সমান অংশটা নিয়েছি। দুই পাশ থেকে পাতাটা আলাদা করে নিয়ে মাঝখানের কাঠিটা আলাদা করে নিয়েছি।
ধাপ-২
কাঠিগুলো আলাদা করে রেখে একটি পাতার অংশ নিয়েছি এবং সেখান থেকে ২ ইঞ্চি পরিমাপে পাতা কেটে নিয়েছি।
ধাপ-৩
এবার ২ ইঞ্চি পরিমাপে যে পাতার অংশটা কেঁটে নিয়েছিলাম এটা লম্বা পাতার সঙ্গে দুইপাশ দিয়ে ভাঁজ করে চাপ দিয়ে পাতার অপর পাশের মাথাটা অন্য হাত দিয়ে আটকে দিতে হবে যাতে খুলে না যায়।
ধাপ-৪
এরপর আটকে দেওয়া অংশটুকুর মাঝখান দিয়ে পাতার অপর মাথাটা ঢুকিয়ে দিয়ে গোলাকার করে নিতে হবে।একটা গোল বানানো হয়ে গেলে ওই গোলের মধ্য দিয়ে পাতাটা টেনে আরেকটি গোল বানিয়ে নিতে হবে। এবার বাকি যে অংশটা থাকবে সেটা কাঁচি দিয়ে কেটে নিতে হবে। এরপর দুটি কাঠি সমান ভাবে কেটে নিতে হবে।
ধাপ-৫
এবার চশমার শেপ দিয়ে যে গোল গুলো বানিয়ে নিয়েছিলাম তার দুই পাশ দিয়ে কাঠি দুটো গেঁথে দিতে হবে।
ধাপ-৬
একই ভাবে অপর পাশে কাঠি গেঁথে দিলেই তৈরি হয়ে গেল নারিকেল পাতার চশমা।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
ছোটবেলায় নারকেল পাতার এ ধরনের চশমা কত যে বানিয়েছে আর কত যে পড়েছি তার কোন হিসাব নেই। আপনি অনেক সুন্দর করে নারকেলের পাতা চশমাটি বানিয়েছেন। আর চশমা বানানোর মধ্য দিয়ে আপনি আমার বাংলা ব্লগ এর ৩৯ তম প্রতিযোগিতায় নিজের নামটি নিশ্চিত করলেন। শুভকামনা রইল আপনার প্রতি ভাইয়া।
এটা সত্য এটাই আমার প্রথম ভাই পোস্ট করা।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। খুব সুন্দর লাগছে আপনাকে নারিকেল পাতার চশমাতে।আপনি খুব যত্ন নিয়েই চশমা করে আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন, দারুন হয়েছে। আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে যে ছেলেবেলায় হারিয়ে গেলেন কিছু সময় এটা খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার জন্য রইলো অনেক শুভকামনা।
আমি চেষ্টা করেছি আপু, শৈশব কে মনে করে কিছু করার জন্য।
ছোট্ট বেলার কথা মনে করিয়ে দিলেন যখন প্রাইমারি স্কুলে পড়তাম এই ধরনের নারকেলের পাতা দিয়ে চশমা ঘড়ি আরো কত কি তৈরি করেছি। সেই মধুর দিনগুলো এখন হারিয়ে গিয়েছে। আসলেই ভাইয়া আপনার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ চশমা তৈরির দিয়ে অনেক সুন্দর হয়েছে অনেক ভালো লাগলো। রিক্সাওয়ালার মাধ্যমে ছোট্ট নারকেল গাছের সন্ধান পেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।
আসলেই কিন্তু সেই মধুর দিনগুলো হারিয়ে গিয়েছে, এখন আর চাইলেও সেটা ফিরে পাওয়া সম্ভব হয় না।
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1665312593874153472?t=Z1eIxZzxz-bRwsr3QK-1zA&s=19
যেমনটাই হোক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করাই বড় কথা।আসলেই ব্যাপারটা বেশ মজার।আপনার চশমা বানানো দেখে আমার নিজেরও ছোটবেলার কথা মনে পরে গেলো।বেশ ভালো লাগলো আপনার নারিকেল পাতার চশমাটা। শুভ কামনা রইলো। ধন্যবাদ
আসলে আমার কনসেপ্ট ছিল সবার শৈশব স্মৃতি মনে করিয়ে দেওয়া, হয়তো যেটা করতে আমি কিছুটা হলেও সফল হয়েছি।
আপনার সাথে সাথে আমারও শৈশবের কথা মনে পড়ে গেল। ছোটবেলায় অনেকবার তৈরি করা হয়েছে এবং পডরাও হয়েছে । যাইহোক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করায় আপনাকে অভিনন্দন জানাই। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা জানাই
ধন্যবাদ আপু আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য, আমি আমার চেষ্টাটুকু করেছি।
ভাইয়া, প্রথমেই আপনাকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাচ্ছি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। আপনার চশমা পরা ফটোগ্রাফি দেখে সত্যিই খুব মজা পেলাম। যদিওবা আমরা জানি আপনি খুব মজার মানুষ, তবুও আজ আপনার নিজের তৈরি নারকেল পাতার চশমা পড়ে ফটোগ্রাফি দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগলো।এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ সফল হোক এই কামনা করছি। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
আমি নিজেই ইচ্ছে করেই আর কি আমার শৈশব ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছিলাম, তাছাড়া আমি বেশি উপভোগ করেছি সময়টা।
এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেই আপনি নারিকেল পাতা দিয়ে চশমা তৈরি করেছেন আর এটা দেখে আমার ছোটবেলার অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল। যখন আমরা এভাবে নারিকেল পাতা দিয়ে চশমা, ঘড়ি বানিয়ে খেলতাম। যদি এখন এগুলো খুব বেশি দেখা যায় না তবে আপনি খুব কষ্ট করে এই নারিকেল পাতা সংগ্রহ করেছেন তারপর এই চশমাটি বানাতে সফল হয়েছেন। অনেক ভালো লাগলো এই প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করেছেন বলে।
সত্য কথা বলতে গেলে কি আপু, এই শহরের জীবনে গাছপালা এমনিতেই কম, তার ভিতরে আসলেই বেশ কষ্ট করতে হয়েছে নারিকেল পাতা সংগ্রহ করতে।
বাহ! নারকেল পাতার চশমা দেখে ছোটবেলার সেই স্মৃতির কথা মনে পড়ে গেল। এই নারকেল পাতার চশমা অনেক তৈরি করতাম এবং চোখে পড়ে খুব খেলাধুলা করতাম তখন ছোট বেলায়। এছাড়াও নারকেল পাতার কিন্তু সুন্দর করে পাকা বানিয়ে বাতাসে দিলে বেশ ঘুরতো। আপিনি অনেক কষ্ট করে নারকেল পাতা সংগ্রহ করে ডাই পোস্ট তৈরি করলেন অনেক ভালো লাগলো। সুন্দর একটি ডাই প্রজেক্ট নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
পাখা বানানোর ব্যাপারটি ভেবেছিলাম তবে এটা বানাতেই অবস্থা আমার খারাপ হয়ে গিয়েছিল।
ভাইয়া, প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য প্রথমে আমি আপনাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আপনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে নারিকেল পাতা দিয়ে চমৎকার একটি চশমা তৈরি করেছেন। আপনার চোখে চশমাটি দারুন ভাবে মানিয়ে গেছে। এত সুন্দর একটি সৃজনশীলমূলক পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলে চশমাটা বানানোর পরে, সেটা পড়ে সত্যিই আমাকে হাস্যকর লাগছিল, তবে আমি আনন্দিত।