জাগ্রত হোক বিবেক || @shy-fox 10% beneficiary
রোজার মাসে কারো যেমন ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠেছে আবার কারো ব্যবসাতে তেমন অনেকটাই ধ্বস নেমেছে । ব্যাপার গুলো যদি বুঝতে অসুবিধা হয়, তাহলে একটু আশেপাশে তাকিয়ে দেখুন ।এগুলো কিন্তু বাস্তব সত্য কথা । বিশেষ করে যারা বিভিন্ন ব্যবসায়িক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন, তারা এই ব্যাপারটা খুব ভালোভাবেই জানেন । হয়তো একটা সময় সব ঠিক হয়ে যাবে, তবুও এই সাম্প্রতিক সময়ে ব্যপারগুলো অনেকটাই জটিলতা সৃষ্টি করেছে ,সাধারণ মানুষজনের ভিতরে ।
এমনিতেই প্রচন্ড গরম তার ভেতরে বিশেষ করে যারা দৈনিক কর্মজীবী মানে এককথায় যারা দিন আনে দিন খায় , তাদের অবস্থা অনেকটাই কাহিল হয়ে গিয়েছে এই সময়ে । কেউ হয়তো কাজের জন্য ছুটছে , কেউ হয়তো কাজ পাচ্ছে আবার কেউ সেই ভাবে কাজ খুঁজে পাচ্ছে না । যাইহোক সর্বোপরি একটা অর্থনৈতিক বিভীষিকা সবার মাঝে লেগেই আছে । সামনে উৎসব সবাই পরিবার নিয়ে একটু ভালোভাবে সময় কাটাতে চায় । এই জন্যই সবার পয়সা দরকার । এক কথায় বলতে গেলে, সবাই এখন অনেকটা পয়সার পাগল হয়ে গিয়েছে ।
সেদিন যখন বর্ষণমুখর দিনে হুট করে মজনু চাচার দোকানে গিয়েছিলাম । সেদিন আমি রোজা ছিলাম না । যাইহোক গিয়েছিলাম মুহূর্তটাকে উপভোগ করার জন্য । ভাবলাম মজনু চাচার দোকানে বসে টিনের ফুটো দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়া দেখব এবং সঙ্গে ধোঁয়া ওঠা গরম চায়ে চুমুক দেবো । কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই আশা আমার পূরণ হয়নি । সেদিন থেকে তার দোকান খোলা পাইনি । এখনো খোলা নেই , কি যে চলছে তার ভেতরে তা আমি জানিনা ।
আজ যখন অনুসন্ধানে নেমেছি তখন যে তথ্যগুলো পেয়েছি, সেটা অনেকটাই শরীরে কাঁটা দেওয়ার মতো । হুট করে যখন আজ মজনু চাচার দোকানটা খোলা দেখলাম । তখন অনেকটা আগ্রহ নিয়েই দোকানের সামনে গেলাম কিন্তু গিয়ে দেখি চাচা নেই । তার ছোট ছেলে দোকান সামলাচ্ছে । চেষ্টা করলাম কথা শোনার জন্য, বললাম মজনু চাচা কোথায় এবং তার ফোন নাম্বারটা সংগ্রহ করে নিলাম ।
দুপুরের পর ফোন দিলাম আমার নাম্বার থেকে। ফোন বেজেই চলেছে । হুট করে ফোনটা রিসিভ হলো এবং বললো , হ্যালো কে বলছেন । সেই চিরচেনা কন্ঠস্বর , আমি অনেকটাই অপ্রস্তুত ছিলাম । আমি বলেই ফেললাম ,আমি তোমার ডাক্তার ভাতিজা ।
মায়ার বায়না নতুন জামা, শিহাবের নতুন শার্ট-প্যান্ট, বাড়িতে বাজারের বন্দোবস্ত করা, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে দাওয়াত পাঠানো, তোর চাচীরো তো কিছু শখ আছে ,যদিও হাতের অবস্থা খারাপ দেখে বলে না । তবে আমি বুঝি রে বাপ । সবমিলেয়ে বহু পয়সার দরকার । তাই মাটি কাঁটার কাজ নিয়েছি রে বাপ । যে সময় যাচ্ছে, এতে তো চায়ের ব্যবসা করে পয়সার যোগান দিতে পারছিনা রে বাপ । তাই এই অবস্থায় ব্যবসা পাল্টিয়েছি, ব্রিজের পাশে নতুন রাস্তায় মাটি কাঁটার জন্য লোক নিয়েছে । সেখানে আপাতত সময় যুক্ত হয়েছি । তোর কি খবর রে বাপ , তোকে বহুদিন দেখি না ।
মনের অবস্থা পরিবর্তন হয় , হুট করে হয়, মুহূর্তেই হয়,নিমিষেই হয়ে যায় ,অনেকটা আচমকাই হয়ে যায় । কেউ বিশ্বাস করুক আর না করুক, এই ব্যপারগুলো আমি বিশ্বাস করি । কি বলবো ফোনে, বুঝে উঠতে পারছিনা । খালি বললাম চাচা, আমি ভালো আছি । তোমার বানানো দুধ চা খেতে ভীষণ ইচ্ছে করছে, সঙ্গে তোমার রস মেশানো কথা গুলো শুনতে চাই আরেকবার ।
সব হবে রে বাপ, খালি রোজাটা শেষ হতে দে। তারপর আবারও জমিয়ে ব্যবসা শুরু করে দেবো । এখন রাখি রে, আমার মাটি কাঁটতে হবে ।
আচ্ছা মজনু চাচাকে তো খুঁজে পাওয়া গেল । তবে আমাদের বিবেকবোধের জায়গা থেকে তাদের জন্য কি কিছুই করার নেই । এই মানুষগুলো আমাদের বিনোদনের খোরাক পূরণ করে থাকে হয়তো অনেক ভাবেই । সেই হাসি-ঠাট্টা , সেই চিরচেনা মুখ , সেই নিরিবিলি সময়ে তারা কতই না বিনোদন জুগিয়েছে। আজ তারা অনেকটাই পয়সার কাঙ্গাল । প্রেক্ষাপটটা অনেকটাই আলাদা ।
আমার মনে হয়, এইরকম বহু মানুষ আমাদের আশেপাশে আছে । যাদেরকে আমরা একটু সহযোগিতার হাত বাড়ালেই, তাদের কাছেও এই উৎসবটা আরো প্রাণবন্ত হবে এবং তারাও আমাদের মত পরিবার পরিজন নিয়ে ভালোভাবেই উৎসব কাটাতে পারবে । এমনটাই তো মনেহয় আমার ।
জাগ্রত হোক মনুষ্য জাতির বিবেক,এই কামনাই করছি।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
অবশেষে মজনু চাচাকে খুঁজে পেয়েছেন আপনি।আমিও শেষ অনুসন্ধানের জন্য আমি অপেক্ষা করতেছিলাম। যাই হোক মজনু চাচা অনুসন্ধানে বের হয়ে আসার কারণটা জানতে পেরে কষ্ট লাগল, কারণ আসলে যারা দিন আনে দিন খায় এরকম মানুষদের এই রোজার মাসে চলা খুবই কষ্টকর হয়ে গিয়েছে। তার পরে মজনু চাচা মাঠি কাটার কাজ নিয়েছে এটা জেনে খুবই খারাপ লাগলো, কারণ বয়স হয়েছে তার পরেও সে পরিবারের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যাই হোক রোজার পর ইনশাল্লাহ সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে সেই আগের মতন, গল্প হবে আপনার সাথে। এই দোয়া রইলো।
সব কিছু ঠিক হয়ে যাক , সকলের মনে ও পরিবারে আবারও শান্তি ফিরে আসুক এই কামনাই করি ।
সকল ধর্মে আমি বিশ্বাস করি। সর্বোপরি মহান সৃষ্টি কর্তাতে। তার উপরেও মানুষকে। শুধু বিশ্বাস করিনা রমজান মাসে খাবারের দাম বাড়ে। ধর্মের নামে কোন উন্নতি কিংবা অবনতি। ধর্ম যদি হয় যুদ্ধের মত বাজার উঠানামার হাতিয়ার তাহলে ধর্মও কি যুদ্ধের ন্যায় ধ্বংসাত্মক !৷? তাহলে আমি কঠিন নাস্তিক।
মজনু চাচারাই হোক সমাজের মডেল, এই কামনা আমার পুর্ন হোক।
এমনটাই তো আজকাল হচ্ছে বড়ভাই আশেপাশে । আসলেই মজনু চাচারা সমাজের মডেল হোক এই প্রত্যাশা আমারো ।
আসলে আমরা রুমের ভিতরে বসে থেকেই শান্তিতে থাকতে পারছি না। যারা দিন আনে দিন খায়। এই রোদের মধ্যে কত কষ্ট করেই না পরিশ্রম করছে। আসলে তাদের কথা মনে পড়লে মনে হয় দুনিয়াটা কতই না কঠিন।বর্তমানে মানুষ পয়সার জন্য পাগল হয়ে গেছে এটায় বাস্তব। আসলে মানুষ সব কিছুই কিন্তু করে পয়সার জন্য। পড়াশোনা করার পর দিন শেষে সেই টাকা ইনকাম করার জন্যই কিন্তু পড়াশোনা করে চাকরি করে। আমি অনেকটাই আবেগ এ পড়ে গেলাম। কথাগুলো হৃদয় স্পর্শক। ছিল আসলে মানুষ সংসার চালানোর জন্য কতই না কষ্ট করছে সংগ্রাম করছে কিন্তু যারা আছে সে মূল্যটা বোঝে না কিন্তু যার নাই সেই বোঝে দিনে 1 টাকা ইনকাম করা কতটা কষ্টের । আপনি ঠিকই বলেছেন আমরা যদি একটু সহযোগিতার হাত বাড়াই তারা ওই পরিবারের সাথে প্রাণবন্তভাবে উৎসব উদযাপন করতে পারবে কিন্তু দিন শেষে আমরা নিজেদের জন্যই ব্যস্ত থাকি এটা বাস্তব। লাখ টাকা খরচ করে ভ্রমণ করছে মার্কেট করছে কিন্তু মানুষ একটু সহযোগিতার হাত বাড়ালেই তারা একটু স্বাস্থ্য নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবে 🥺🥺
চেষ্টা করো মানবিক গুনে মানুষ হওয়ার জন্য। বাড়িয়ে দাও সহযোগিতার হাত তোমার আশেপাশের ছিন্নমূল মানুষ গুলোর কাছে ।
ভাই যারা ধর্ম মানে তারা শান্তি খুঁজে পায়। আমাদের ইসলাম ধর্মে যাকাত নামে একটি ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। যেখানে প্রত্যেক ধনী মানুষের সম্পদে একটি নির্দিষ্ট অংশ গরীব মানুষের জন্য নির্ধারণ করা আছে। মুখে আমরা বড় বড় কথা বললেও কাজের বেলায় ঠন ঠনা ঠন। যাকাতের এই পয়সাগুলো যদি আমাদের আশেপাশে গরীব মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেয়া যেত তাহলে প্রত্যেকের জন্যই উৎসবগুলো হয়ে উঠত আনন্দমুখর। আর ব্যবসায়ীদের কথা কি বলব। তারা তো শুধু সুযোগ খোঁজে কাস্টমারের গলা কাটার। সারা পৃথিবীতে যেখানে রমজান মাসে সবাই লাভের পরিমাণ কমিয়ে দেয় সেখানে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা......
পৃথিবী কোন দিকে ঘুরপাক খায় ভাই , আমি বুঝে উঠতে পারি না । তবে মানবিক গুনে মানুষ হওয়া জরুরী ।
মজনু চাচাকে নিয়ে আমিও অনেক আগ্রহে ছিলাম। আমি তো ভাবছিলাম সে আবার অসুস্থ হলো নাকি। তবে যাইহোক শেষ পর্যন্ত তার সাথে আপনার ফোনে কথা হলো।
আসলেই ভাই মজনু চাচার মতো আমাদের চার পাশে অনেক মানুষ আছে। আমাদের সবার সামান্য সাহায্য তাদের জন্য অনেক বড় কিছু। ঈদে নিজে খুশি থাকার পাশাপাশি কাউকে সামন্য কিছু দিয়ে খুশি করতে পারলে তাতেই বেশি আনন্দ। ভালো লাগলো ভাই আপনার পোস্ট পড়ে৷
এমনটাই তো আমিও মনেকরি ভাই । ভালো থাকুক সবাই নিজ নিজ অবস্থানে ।
ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর লিখেছেন। আসলে আমাদের সকলেরই মনের পরিবর্তন হয়। কারণ সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই পরিবর্তন হয়। সেই সাথে যদি আমরা আমাদের মনুষ্যত্ব ও বিবেকবোধের পরিবর্তন করি তাহলে আমাদের আসে পাশের মানুষগুলো অনেক ভালো থাকতে পারবে। আর কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের সাথে অনেক গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়। তারা হয়তো রক্তের সম্পর্কের থেকেও কোনো অংশে কম নয়। মজনু চাচার মত হাজারো মানুষ তাদের নিজের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক এবং পরিবার নিয়ে ভালো থাকুক। দারুন কিছু কথা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া। 💓💓
এই প্রত্যাশাই আমিও ব্যক্ত করছি ভাই । উৎসবটা সবাই ভালো ভাবেই পালন করুক ,এই কামনাই করছি ।
মজনু চাচার মতন বহু লোক আছে যারা তাদের পরিবারের কথা চিন্তা করে দিন পার করে দেয়। তারা মনে মনে স্বপ্ন দেখে তাদেরও কিছু একটা গতি হয়েছে কিন্তু বাস্তবতা কখনই তা করে না। তারা প্রতিনিয়ত অতলে তলিয়ে যাচ্ছে। আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা এমন একটা সময়ের দ্বার প্রান্তে এনে দ্বার করিয়েছে আমরা সবাই নিরুপায়। পুজিঁবাদী সমাজ ব্যবস্থায় এক সময় বিল্পব অনিবার্য। তখন কিন্তু মানুষের পাশেই থাকবো। ধন্যবাদ ভাই । ভাল লিখেছেন।
ধন্যবাদ ভাই আপনার গঠনমূলক মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।