ফিরে আয় || @shy-fox 10% beneficiary
আচ্ছা কল্পনার গল্প যদি বাস্তবে মিলে যায় । তাহলে কেমন হয়, হয়তো মাঝে মাঝে একটা উৎসাহ কাজ করে আবার মাঝে মাঝে হৃদয়টা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়, রক্তাক্ত আভা ধারণ করে ।রাব্বানী আমার বাল্যবন্ধু । সেই ক্রিকেট খেলা থেকেই ওর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল।
হাইস্কুলের মাঠে যেবার ওকে প্রথম দেখেছিলাম, আমার এখনো মনে আছে । লিকলিকে গড়নের একটা ছেলে, ট্রাউজার পরে যখন বল করছিল বেশ ভালো গতি ছিল । ওর তিন বল মোকাবেলা করতে না করতেই, আমার অফ স্টাম্প ভেঙ্গে ফেলেছিল । ওর সঙ্গে যতবার দেখা হয়েছে ততবারই ক্রিকেট মাঠে । যাইহোক আস্তে আস্তে জানতে পারলাম, সে এই এলাকার স্বনামধন্য পরিবারের ছেলে । পড়াশোনা তাকে খুব একটা টানে না , ছোটবেলা থেকেই দেখেছি সে মোটামুটি একটু উগ্র স্বভাবের।
এভাবেই চলছিল জীবন । তারপর হুট করে বাবার কর্মস্থল পরিবর্তনের কারণে আর সেভাবে যোগাযোগ হয়নি । বছর দশেক পরে যেবার প্রথম সাক্ষাত হলো, সেই ঘটনাটা একটু ভিন্ন ছিল । সেবারই প্রথম তার সোশ্যাল মিডিয়ার আইডি লিংক নিয়ে ছিলাম। তাও সেটা অনেক কাহিনী, মোটামুটি ঢাকা থেকে ফিরছিলাম । মাঝে ফুড ভিলেজে যাত্রাবিরতিতে হুট করে দেখা, চেহারাটা পরিচিত পরিচিত লাগছিল । তাই বলে ফেললাম, আমি যদি ভুল না করি তাহলে আপনার নাম রাব্বানী । সে তো মোটামুটি খোলামেলা ভাবেই বললো , আরে তুই শুভ নাহ ।
যাইহোক এখন কই থাকিস আর কি করিস । তোর তো চেহারার বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি । যাইহোক মোটামুটি ভালই কথা চলল । অতঃপর আমি বলে ফেললাম প্রাইভেট এক মেডিকেলে দন্ত বিদ্যায় পড়াশোনা করছি। তারপর তুই কি করিস এখন রব্বানী , সেই আগের মতোই সোজাসুজি উত্তর । ঐ আরকি আগের মতোই জীবনের তেমন গতিপথ এখনো খুঁজে পাইনি , খাই দাই ঘুরি ফিরি ।
যাত্রাবিরতি শেষ । তারপর যে যার গন্তব্যে চলে গেলাম । ঐযে সোশ্যাল মিডিয়ার আইডি লিংক লেনদেন হলো, তারপর থেকে টুকটাক কথাবার্তা সোশ্যাল মিডিয়াতেই হতো আর দেখা হয়নি । সম্ভবত ছয় থেকে সাত বছরের মতো হবে । কিছু মানুষ থাকে ভীষণ চাপা স্বভাবের । তাদের আসলে তেমন এক্টিভিটিস সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখে পড়ে না বললেই চলে। জায়গাভেদে একেক জনের পছন্দ একেক রকম হয়ে থাকে । তাই হয়তো রব্বানীর তেমন কোনো কার্যকলাপ আমার চোখে পড়েনি ।
বছর দুয়েক আগে সেই যে ওর একটা স্ট্যাটাস দেখেছিলাম সোশ্যাল মিডিয়াতে, সেটা ছিল ইউক্রেন যাওয়া কে উদ্দেশ্য করে । তারপরেও খুব একটা বেশি কথা হয়নি । জানতাম না , সে সেখানে কি করে বা তার কাজ কি । তবে একটু ভাবছিলাম, যে ছেলেটা ব্যক্তিগত জীবনে এত স্বাধীন স্বভাবের , সে কিভাবে গন্ডিবদ্ধ নিয়মের মাঝে প্রবাস জীবন মানিয়ে নিয়েছে, এটা ভাবতেই অবাক লাগত ।
আজ বছর দুয়েক পরে, আমি ভুলেই গিয়েছিলাম ইউক্রেনে রব্বানী আছে । ভুলে যাওয়ার ই তো কথা, কত কাজ ব্যক্তি জীবনে , কতকিছু সামলানো লাগে , সেই সংসার থেকে শুরু করে নিজের কর্ম , আসলে অনেক কিছু মনে রাখতে চাইলেও মনে করা যায় না । আজ যখন সোশ্যাল মিডিয়ার নিউজফিড ঘাঁটাঘাঁটি করছিলাম । ঠিক তখন একটা নিউজ দেখে হৃদয়টা বেশ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে ।
সেই যে স্বাধীনচেতা রব্বানীকে আমি চিনতাম, সে আজ অজানা দেশের ভূখণ্ডে একটা বাসের মধ্যে বসে , কোন রকম শুকনা খাবার খাচ্ছে আর নিউজ চ্যানেলের কর্মীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছে । তার জীবন এখন সংকটাপন্ন, সে কোন মতো দেশে ফিরতে চায় । সে কয়েকদিন থেকে নিদ্রাহীন ও খেয়ে না খেয়ে কোন মতে পোল্যান্ডের বর্ডারের কাছে এসেছে এবং তার উপর দিয়ে যে ভীষণ মানসিক ও শারীরিক চাপ গিয়েছে , সেটা তার চোখ মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে ।
আমি আমার বন্ধু বলে বলছিনা, আমি মনে করছি সেই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে অবস্থানরত সাধারণ মানুষ গুলোর কথা । আমি নিউজে রব্বানীর অবস্থা দেখেই অনেকটাই আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছি । না জানি সেখানে বসবাসরত মানুষজন গুলোর এই মুহূর্তে কি অবস্থা , তা একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানে ।
সমসাময়িক যুদ্ধের ব্যাপার নিয়ে, আমি তেমন কোন কথা বলতে চাই না বা ইচ্ছুক নই । তবে আমি শুধু মানুষ হিসাবে , সাধারণ মানুষ গুলোর কথা চিন্তা করছি । তারা যেন নিরাপদে থাকতে পারে এই কামনাই করছি । ভালো থাকুক, আমার বন্ধু রব্বানী এবং ভালো ভাবে দেশে ফিরে আসুক এই কামনাই করি ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
ছোটবেলার ফ্রেন্ড এই রকম একটা পরিস্থিতিতে আটকা পড়ে আছে এমন নিউজ দেখার পর খারাপ লাগাটা স্বাভাবিক। তবে আপনার পরিচিত বন্ধুর মতো অনেকেই এই কষ্টকর অবস্থায় আছেন। আমার খুব খারাপ লাগে এমন নিউজ দেখলে।
সৃষ্টিকর্তা ভালো জানেন কবে এই ভয়াবহতা শেষ হবে! করোনার প্রভাব শেষ হতে না হতেই কৃত্তিম দূর্যোগের আগমন। দোয়া করি আপনার বাল্যবন্ধু রাব্বানীর মতো আরো যারা আটকা পড়ে আছে, তারা যেন ভালোভাবে দেশে ফিরে আসতে পারে।
হুম ভাই এমনটাই হলেই ভালো । সবাই নিরাপদে থাকুক এই কামনাই করি ।
প্রিয় বন্ধুদের নিয়ে এরকম খবর সত্যিই একটি মর্মাহত বিষয় যাইহোক আপনার পরিবেশ পরিস্থিতি দেখে খুবই খারাপ লাগছে আপনার সাথে সহমত পোষণ করছি ফিরে আয় রব্বানী।
♥♥
ভাইয়া আপনার বাল্যবন্ধু রব্বানী ভাইয়ের কথা শুনে খুবই খারাপ লাগছে। রব্বানী ভাইয়ের মতো হাজারো মানুষ না খেতে পেয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে অনেক মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের এই দুঃখ-দুর্দশা দেখলে খুবই খারাপ লাগে। সেই অসহায় মানুষগুলোর কথা মনে হলে হৃদয় কেঁপে ওঠে। আমরা সকলেই চাই সেই পরিস্থিতি যেন খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক হয় এবং আপনার বন্ধু খুব দ্রুতই দেশে ফিরে আসতে সক্ষম হন। শুধুমাত্র আমি আপনার বন্ধু রব্বানী ভাইয়ের কথাই বলছি না এরকম হাজারো রব্বানী আছে যারা নিজের দেশের মাটিতে ফেরার প্রতীক্ষায় রয়েছে। তারা জীবন সংশয়ে দিন কাটাচ্ছে। সবাই আমরা দোয়া করি তারা যেন নিজের দেশের মাটিতে ফিরতে পারে। অনেক সুন্দর ভাবে আপনার মনের ব্যক্ত কথা উপস্থাপন করেছেন এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ভাইয়া।
যুদ্ধ মানবতার শত্রু । শান্তি ফিরে আসুক এই কামনাই করি ভাই ।
দুয়া করছি আপনার বন্ধু রব্বানী যেনো সহি সালামত থাকতে পারে এবং ফিরে আসতে পারে৷ পোস্ট টি পড়ে খুবই খারাপ লাগছে। আল্লাহ পাক হেফাজতে রাখুক সকলকে।
একদম সঠিক কথা বলেছেন। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ভাই আপনার বন্ধু রব্বানীর মত অনেক বাঙালি সন্তানই আটকা পড়ে আছে ইউক্রেনের মাটিতে। অনেকেই আত্মরক্ষা করতে পেরেছেন কোনমতে আবার অনেকের জীবন এখনও সঙ্কটাপন্ন। জানিনা ভবিষ্যতে কি হবে। প্রার্থনা ছাড়া আমরা আর তাদের জন্য কি করতে পারি। শুভকামনা রইল।
সকলের প্রার্থনাই থাকুক বিপদগ্রস্ত মানুষ গুলো । শান্তি ফিরে আসুক সকলের জীবনে । ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
অনেক মানুষ এইরকম চাপা স্বভাবের হয়ে থাকে,আবার হুট করেই অবাক করা কিছু করে ফেলে।এটি সত্য ইউক্রেনে প্রচুর বাঙালি রয়েছে যাদের অবস্থা এখন করুন।যুদ্ধ কখনো বলে আসে না, তারপর ও আমরা তাদের নিরাপত্তার জন্য প্রে করি।ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল ভালো মানুষ।ধন্যবাদ ভাইয়া।
সবাই নিরাপদে থাকুক ,এই কামনাই করি ।
আসলেই ভাইয়া আজকের পোস্টটা পড়ে খুবই খারাপ লাগলো। আসলে এভাবে যে দেশে যুদ্ধ সেই দেশের সাধারণ মানুষের অবস্থা খুবই খারাপ থাকে। আর আপনার বন্ধু রাব্বানীর জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল, যেন সে সুস্থ ভাবে দেশে ফিরতে পারে। আর সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়।
এই কামনাই করছি ভাই । সবাই নিরাপদে থাকুক এই কামনাই করি ।
ভাই আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে আমার প্রথমে অনেক ভালো লেগেছিল কারণ আপনার বাল্যবন্ধু রব্বানীর সাথে ক্রিকেট মাঠে পরিচয়। তারপরে অনেক দিন পর আপনাদের দেখা। সেখানে কথা সাক্ষাৎ এবং সোশ্যাল মিডিয়ার লেনদেনের মাধ্যমে কথা হতো। কিন্তু যখন আপনার বন্ধু রব্বানী ইউক্রেনে বসবাস করে আর এখন যুদ্ধ চলছে এই কথাটা মুনেই ভয় কষ্ট হচ্ছে। যুদ্ধের মধ্যে বসবাস করা খুবই কঠিন। সে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছে। তার চেহারা দেখে আপনার অনেক কষ্ট হয়েছে। আমারও খুবই খারাপ লাগছে। আসলে যুদ্ধ আমাদের কখনো শান্তি এনে দেয় না। যুদ্ধ সবসময় ধ্বংস বেঁয়ে আনে। মানুষের জীবন যাত্রার মান নষ্ট করে দেয়। তাই আমি আপনার বন্ধুর জন্য দুয়া করি। সে যেন সুস্থ ভাবে আমাদের বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারে।
যুদ্ধ মানবতার শত্রু । শান্তি ফিরে আসুক , সবাই নিরাপদে থাকুক এই কামনাই করি ।
হৃদয় টা শুধু আপনার না ভাই আমারও চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেল। সত্যি রব্বানী ভাই এখন কতো ঝুকির মধ্যে রয়েছে। আমাদের আশেপাশে এমন অনেকেই আছে যারা স্বাধীনচেতা কিন্তু জীবন ও জীবিকার তাগিদে একটা কিছু করার জন্য নিয়মবদ্ধ হয়ে যায়। যেমনটা রব্বানী ভাইয়ের ক্ষেএে দেখলাম।আমরা যুদ্ধ না শান্তি চাই। যাইহোক আমি দোয়া করব রব্বানী ভাই যেন সহীহ সালামতে দেশে ফিরে আসে। অসাধারণ উপস্থাপন করেছেন ভাই। পুরোটা পড়ার মধ্যে আলাদা একটা টান ছিল।
এইটা সমসাময়িক অবস্থা ভাই , সবার জীবনে শান্তি ফিরে আসুক এই কামনাই করি ।