ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা
সেদিন যখন কলেজে গিয়েছিলাম, কলেজের খুব কাছে সাম্প্রতিক সময়ে নতুন একটা রেস্টুরেন্ট হয়েছে। এক কথায় বলা যায় রেস্টুরেন্টটা মূলত চায়ের জন্য বিখ্যাত। বিভিন্ন রকমের চায়ের সমাহার সেখানে।
দিন যতো এগিয়ে যাচ্ছে, ততোই যেন সবকিছুতেই ভিন্নতা চলে এসেছে। সেটা খাবার থেকে শুরু করে সবকিছুতেই। যেহেতু এটা মেডিকেল কলেজের পাশেই অবস্থিত। তাই মোটামুটি এখানে বহু মানুষজনের প্রতিনিয়ত সমাগম হয়। হয়তো সেই দিকটাকে কেন্দ্র করেই, রেস্টুরেন্টের মালিক এখানে এই রেস্টুরেন্টটা দিয়েছে।
রেস্টুরেন্টের নামটাও বেশ অদ্ভুত, ব্যাম্বু হাউস রেস্তোরাঁ। মূলত এই রেস্টুরেন্টের প্রধান আকর্ষণ মটকা চা। এই চায়ের পরিবেশনটাও বেশ দারুণ, কখনও মাটির কাপে,কখনো বাঁশ দিয়ে বানানো কাপে আবার কখনো অন্য কোন পাত্রে।
প্রস্তুত প্রণালী সম্পর্কে আমার বিন্দুমাত্র কোন ধারনা নেই। তবে যতটুকু দেখে বুঝেছি, সেটা গরম ঘন দুধের মধ্যে হালকা লিকার দিয়ে সঙ্গে মালাই ও নারিকেলের ভিতরের সাদা অংশের মিশ্রন দেওয়া হয়। যেটা খেতে অনেকটা দইয়ের মতো লাগে।
সন্ধ্যের পরে এই জায়গাটাতে ভীষণ ভিড় হয়। কারণ অনেকেই এখানে চা খেতে আসে। যেহেতু বিকেলের পরে কলেজ ছুটি হয়,তাই হোস্টেলে থাকা ছাত্র-ছাত্রীরা ও হাসপাতালে আসা লোকজন এখানে আসে। তখন রেস্টুরেন্টের লোকজনের ভিতরে বেশ ব্যস্ততা বেড়ে যায়।
যেহেতু চা আসতে অনেকটাই দেরি হচ্ছিল, তাই এই ফাঁকে আমি ভেজিটেবল রোল অর্ডার করেছিলাম। এটা খেতেও বেশ ভালোই মজা ছিল। ইচ্ছে করেই চা বানানোর প্রক্রিয়াটা স্বচক্ষে দেখার চেষ্টা করছিলাম। মূলত একটা কাঁসার পাতিলে দুধ নিয়ে, সেই পাতিলটা গরম বালুর উপর রেখে, সেই পাতিলে রাখা দুধ গুলো গরম করানো হয়।
প্রথমত একটা বড় পাত্রে অনেকটা পরিমাণ বালু রাখা হয়। সেই বালু রাখা পাত্রটি চুলার উপর বসিয়ে বালু গুলো গরম করা হয়। বালু গুলো যখন প্রচুর গরম হয়ে যায়,তখন কাঁসার পাতিলটি গরম বালুর উপর রাখা হয়, মূলত পাতিলে রাখা দুধ গরম করার জন্য।
এদের কার্যক্রম দেখে যা বুঝলাম, তা হচ্ছে ব্যাপারটা অনেকটা রাজকীয় ও সময় সাপেক্ষ।
অতঃপর যখন চা আসলো তখন একটু মুখে দেওয়ার চেষ্টা করলাম। সঙ্গে একটা প্লাস্টিকের চামুপ দিয়েছিল এবং বলেছিল যে, চা খাওয়ার আগে যেন নারিকেলের অংশগুলো ভালোভাবে গুলিয়ে নেই।
সত্যি কথা বলতে কি, এর আগে এই চা কখনো আমার খাওয়া হয়নি। এমন পরিবেশে এভাবে চা খাওয়ার সৌভাগ্য আমার এই প্রথম হল। দিন যত এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের কলেজের এরিয়া ও তার আশেপাশের এলাকার অনেক যে উন্নয়ন হয়েছে, তা হয়তো দীর্ঘ সময় পরে এবার কলেজে গিয়ে বুঝতে পারলাম।
চা খাওয়া শেষ হতে না হতেই, একদল ছাত্র-ছাত্রী এসে হাজির। বুঝতে পারলাম কলেজ ছুটি দিয়েছে। বিকেলের পর থেকে যে এই জায়গাতে কিছুটা ভিড় লেগে যায় তার হয়তো প্রমাণটা এখনই পেয়ে গেলাম।
আমি অনেক দূর থেকে এসেছিলাম আর আমারও এই প্রথম এই ধরনের চা খাওয়ার সৌভাগ্য হলো। তাই একদিক থেকে এবারের অভিজ্ঞতা বেশ ভালোই ভিন্ন রকম ছিল।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি এতো চায়ের পাগল ভাইয়া আপনার চা এর কাপ দেখে এখনই চা খেতে ইচ্ছে করছে। আপনার ফটোগ্রাফি দেখে আমার কাছে রাজকীয় আঙিকে বানানো চা ই মনে হলো।কত রকম ভাবে চা পরিবেশন করা হয়।আর ভেজিটেবল রোলটা ও বেশ মজার খেতে ফটোগ্রাফি দেখে বুঝতে পারছি। খুব ভাল লাগলো আপনার তোলা চা এর ফটোগ্রাফি গুলো । 🥰ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।
এতো দারুণ চা একা একাই খেলেন, আমাদেরক একটু বলতে পারতেন আমরাও যেতাম।জানেন তো আমি চা-খোর একজন মানুষ ভালো চায়ের নাম শুনলেই জিভে জল চলে আসে।😋চা দেখেই বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু ছিলো।চায়ের সাথে রোল অনেক মজা করে খেয়েছেন তা বুঝতে পারছি। অনেক সুন্দর মুহুর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া।
এরপরে গেলে না হয়, বলবো নি বৌদি। ধন্যবাদ আপনার সাবলীল মন্তব্যের মন্তব্যের জন্য।
বালুর উপরে চা বানানোর সিস্টেমটা আমি মোবাইলে একবার দেখেছিলাম। বেশ ভালই লেগেছিল। আজকে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে বাস্তবে দেখতে পেলাম। এরকম মাটির ভারে চা খেতে বেশ ভালো লাগে। তাছাড়া এই চায়ের মধ্যে আবার নারকেলও দেয়। অনেকটা ইউনিক পদ্ধতিতে বানিয়েছে মনে হচ্ছে। খেতে যে মজাদার হবে বোঝাই যাচ্ছে। ভাইয়া আপনার কাছে কিন্তু আমার এক কাপ চা পাওনা ছিল। এখন তো মনে হচ্ছে ওই রেস্টুরেন্টে না এই রেস্টুরেন্ট থেকেই চা খেতে হবে।
আপনার যেখানে খেতে মন চায় আপু, আমি সেখানেই খাওয়ার আপু। 🙏