চিফ শেফ বেলাল ||@shy-fox 10% beneficiary
আচ্ছা আমার যারা চার পর্বের সিরিজ গুলো পড়েছিল । আমি শেষের পর্বে একটা কথা দিয়েছিলাম যে, মূলত আমি মম ইনে গিয়ে বেশ কয়েকটা চরিত্র খুব কাছ থেকে দেখেছি এবং সেগুলো নিয়ে আমি পরবর্তীতে লিখতে চেয়েছিলাম । যাইহোক আজকে আমার কাছে হয়তো সেই সময়টা এসেছে এবং সেই কথাটা আমি রাখার চেষ্টা করছি । মূলত আমি যে দুটো চরিত্র নিয়ে লিখব , আশাকরি সেই দুটো চরিত্রের ঘটনাটাই আপনাদের ভালোই লাগবে ।
সফলতা আসলে মুখ দেখে আসে না । সফলতার জন্য ছুটতে হয় । এই যে দেখুন, ভদ্রলোক বেলাল সাহেব কে । মম ইন পাঁচ তারকা মানের হোটেলের চিপ শেফ । মোটামুটি তার আন্ডারে এই হোটেলে কমপক্ষে শতাধিক লোক রান্না সম্পৃক্ত কাজের সঙ্গে যুক্ত আছে এবং যেহেতু এই ফাইভ স্টার হোটেলে শুধুমাত্র একটা রেস্টুরেন্ট যে আছে তা কিন্তু না । কারণ এখানে একাধিক ক্যাফেটেরিয়া এবং অনেকগুলো খাবারের দোকান আছে । মূলত সব খাবারের গুণগত মান এবং কোনটা কিভাবে বানাতে হবে, সে এই বিষয়গুলোতে নিয়ে ট্রেনিং করাই সবাইকে ।
তার সঙ্গে আমার সৌজন্য সাক্ষাৎ করার হওয়ার সুযোগ হয়েছিল । আমি যখন প্রথম তাকে দেখেছিলাম , তার শরীরের জামাতে কয়েকটা দেশের পতাকার চিহ্ন ছিল এবং তার সঙ্গে যখন আমি কথা বললাম । সে ভীষণ আন্তরিক ভাবে আমাকে বলল যে, সে মূলত এই কয়েকটা দেশে রান্না বিষয়ক কাজে অতিথি হিসেবে ভ্রমণে গিয়েছিল এবং সেই সব দেশগুলোর বড় বড় হোটেল গুলোতে , সে রান্না করেছিল এবং যার ফলশ্রুতিতে , মোটামুটি এই মম ইন হোটেলটাতে সে দীর্ঘ চার বছরের অধিক সময় থেকে চিফ শেফের দায়িত্বে আছে বেশ সুনামের সঙ্গে ।
বেলাল সাহেবের কাজ হচ্ছে , এখানে মূলত তার অধীনে যারা আছে , তারা প্রতিনিয়ত ঠিকমতো রান্না করছে কিনা এবং সেই খাবারগুলোর গুণগতমান কেমন হচ্ছে সেই ব্যাপার গুলো সে দেখভাল করে । এখানে মূলত সব ধরনের খাবার পাওয়া যায় , বলতে গেলে বাংলা এবং চাইনিজ সব ।
বেলাল সাহেবের এত দূরে আসার জার্নিটা যে খুব সহজ ছিল তা কিন্তু না । আসলে বহু কাঠখড় পুড়িয়ে মূলত এই পজিশনটাতে এসেছে । তার যখন আমি অতীতটা একটু জানার চেষ্টা করেছিলাম , সে মূলত গ্রাম থেকেই বেড়ে উঠেছিল শৈশবে এবং সেখান থেকেই ছোটবেলাতে মায়ের কাছে টুকটাক রান্না দেখেছিল এবং রান্নাটাকে ছোটবেলা থেকেই ভালোবেসে ছিল ।
তার পরবর্তী সময়ে সে চেষ্টা করছিল, নিজের মতো করে কিছু করার জন্য বিশেষ করে রান্না সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে । তারপরে মোটামুটি একটা সময়ে গিয়ে , সে গ্রামীণ বাজারের হোটেলের বার্বুচি । তারপরে তার যখন রান্নার প্রসার ঘটেছিল, তখন ছোট্ট শহরের হোটেলে পদার্পণ । সেখান থেকে ভাগ্য শুধুমাত্র এগিয়েই যাচ্ছিল । পরবর্তীতে সেখান থেকে বড় শহরের রেস্টুরেন্ট তারপর আবার বিদেশ ভ্রমণ আবার সব কিছুই নিজের চর্চার ভিতরে রাখা । পরবর্তীতে অনেক জায়গায় স্থানান্তর হয়েছিল এবং এই ভাবেই একটা সময়ে সে আজকের এই পজিশনে এসেছে । এক কথায় তাকে বেশ ভালোই কষ্ট করতে হয়েছিল ।
আমরা যারা ভাবি , সফলতা হয়তো মুখ দেখে দেখে আসবে । এমন চিন্তা করাটা যদি প্রতিনিয়ত করে থাকেন , তাহলে আসলে সফল কোনভাবেই হবেন না । যদি বেলাল সাহেবের কথাই বলি, তাহলে একটু খেয়াল করে দেখুন। ভদ্রলোক সেই ছোটবেলা থেকেই রান্নাটা কে ভালোবাসতো । সেই ভালোলাগা ও ভালোবাসাকে লালিত করেই হয়তো আজ এই পর্যন্ত এসেছে । তাই হয়তো আজ তার শরীরে চিফ শেফের জামাটা উঠেছে । আমি মনেকরি তার পরিশ্রম , তার সততা এবং নিষ্ঠার কারণেই সে আজকে এই দায়িত্বে আছে এবং এত সম্মানীয় ব্যক্তি ।
মূল কথা হচ্ছে আপনাকে সফল হওয়ার জন্য পরিশ্রম করতেই হতে হবে । আপনার যে কাজটা করতে ভালো লাগে , সেই কাজের দিকে নিজেকে প্রতিনিয়ত অগ্রসর করতে হবে এবং সেই কাজটা কে আরো কিভাবে প্রতিনিয়ত ভালো করা যায় সেই ব্যাপারটার দিকে নজর রাখতে হবে এবং তার পরের ব্যাপারটা হচ্ছে, আপনাকে সেই কাজের প্রসার ঘটাতে হবে । সেটা আপনি চাইলে বহুভাবেই করতে পারেন । মূলত আপনাকে কায়িক পরিশ্রম থেকে শুরু করে মানসিক স্থিরতা এবং প্রচারণার ব্যাপারটা প্রতিনিয়ত নিজের ভিতরে আয়ত্তে রাখতে হবে । তাহলে দেখবেন সফল হওয়ার রাস্তাটা অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে ।
সফলতা তো আর আলাদিনের চেরাগ না যে, আপনি চাইলেন আর পেয়ে গেলেন । ব্যাপারটা যদি এমন হতো , তাহলে মনে হয় ঘরে ঘরে সফল ব্যক্তি থাকতো । আসলে সফল ব্যক্তি হতে গেলে, যে কথাগুলো বললাম সেই কথাগুলো আপনাকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে । আর যদি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে সফলতা পাওয়া যেত , তাহলে তো হতোই।
মানুষের জীবন গুলো দেখতে আমার খুব ভালো লাগে এবং সেই জীবনগুলো যখন আমি গল্পের মাধ্যমে লেখার চেষ্টা করি, তখন আরো বেশি ভালো লাগে যে , সেই জীবনটাকে আমি লিপিবদ্ধ করতে পারছি নিজের লেখার মাঝে । আসলে সেই ভদ্রলোকের পাশে যখন দাঁড়িয়ে ছবি তুললাম, তখন আমার বেশ ভালোই লাগছিল । কারণ এত বড় একজন মানুষ, সে শুধুমাত্র রান্নার মাধ্যমেই আজকে সকলের মন জয় করে নিয়েছে এবং এতবড় একটা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে । আমি মনেকরি এটা তার কাছে অনেকটাই বড় প্রাপ্তি ।
আর আমরা যারা প্রতিনিয়ত সফলতা নিয়ে এলোমেল ভাবি , তাদের কে বলবো আঙ্গুল চোষা বাদ দিন এবং কাজের কাজ করুন । হয়তো পরবর্তী সফল মানুষটা কিন্তু আপনিই হতে পারেন ।
আপনি যে অবস্থানেই থাকুন না কেন, সেখান থেকেই নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলুন । সফলতা যে কোন কাজ থেকেই আসতে পারে । একটু ভাল ভাবে চোখ মুখ খুলে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করুন দেখুন আশেপাশে । সত্যি বলতে কি , প্রচুর সফল মানুষ আপনার সাথে আশেপাশে ঘুরপাক করছে । আপনি আসলে নিজের চিন্তাকে পরিহার করুন এবং সেই মানুষগুলোকে জানার চেষ্টা করুন, তাদের অতীতটা কেমন ছিল এবং চেষ্টা করুন যে, আপনার জীবনের সঙ্গে কার জীবনটা মিলে যাচ্ছে। সেই ভাবে একটু এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেই হয়তো কিছুটা হলেও সফলতার সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন । একটা চিরন্তন সত্য কথা হচ্ছে , আমাদের আসলে মিশতে হবে , জানতে হবে এবং ব্যাপারগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, তারপর না হয় কাজ করে এগিয়ে যেতে হবে ।
কত সময় কত মানুষের জীবন নিয়ে লিখি , আজকে না হয় একটু ফাইভ স্টার হোটেলের শেফ এর জীবন নিয়ে লিখলাম । হয়তো তার জীবনটা নিয়ে লিখে একটু আত্মতৃপ্তি পেলাম ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
পরিশ্রম যে সৌভাগ্যের চাবিকাঠি কথাটা কাটায় কাটায় সত্য। বেলাল সাহেব গ্রামের হোটেলের বাবুচি থেকে আজ পাঁঁচ তারকা হোটেলের চীপ শেফ। এই ঘটনা থেকেই আমরা বলতে পারি পরিশ্রম আর নিজের টার্গেট ঠিক রাখলে সফলতা পাওয়া সম্ভব। আপনার আজকের লেখা পড়ে অনুপ্রেরণার শক্তি পেলাম ভাই। ❣️❣️
যথার্থ বলেছেন। এমনটাই হয় সফলতার ক্ষেত্রে । তাছাড়া সফলতার সিঁড়ি গুলো এমনি ।
মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সফলতা আনতে হলে অবশ্যই তাকে কাই পরিশ্রম অথবা মেধা শক্তি বিনিয়োগ করতে হবে। তাছাড়া সফলতা কখনোই আসবেনা। খুবই অসাধারণভাবে ফুটে তুলেছেন একজন সফল মানুষের গল্প। যা থেকে আমাদের অনেকেই শিক্ষা গ্রহণ করবে। সেই সাথে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সেই বিষয়ের উপর মনোনিবেশ করবে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই। সফলতা অর্জন করতে হলে অবশ্যই নিজেকে কঠোর পরিশ্রমে হতে হবে। তবে কঠোর পরিশ্রমে হওয়ার আগে নিজেকে লক্ষ্য স্থির করতে হবে। আর নির্দিষ্ট বিষয়ে পরিশ্রমে হতে হবে। আপনার আজকের এই পোস্ট পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। খুব সুন্দর শিক্ষনীয় পোস্ট করেছেন আপনি।।
ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো এবং অনুপ্রেরণা পেলাম। সত্যি কথা বলতে কোন সফল মানুষের অতীত কখনোই সুন্দর ছিল না। নিজেদের অদম্য মেধা এবং পরিশ্রমে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মানুষগুলো আজ সফল হয়েছে। এর পেছনে তাদের অনেক প্রচেষ্টা ছিল এবং সফলতা অর্জনের পেছনে অনেক গল্প ছিল। ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।❤️❤️❤️
এমনটাই তো আমিও ভাবি ভাই । লেগে থাকলে অবশ্যই সফল হওয়া যায় ।
ঠিকই বলেছেন ভাই সফলতা যেকোনো জায়গা থেকেই আসতে পারে এজন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। অনেক সংগ্রাম পরিশ্রমের পরই কিন্তু সফলতার চূড়ায় উঠা যায়। বেলাল সাহেবের সম্পর্কে জেনে ভালো লাগল। চীফ শেফ বলে কথা উনার অভিজ্ঞতার শেষ নেই।
এইটা একদম সঠিক কথা সফলতা কোন স্থানের উপর নির্ভর করে না । সফলতা নির্ভর করে কাজ ও দক্ষতার উপর ।
একজন মানুষের ভিতরে যদি ধৈর্য এবং ইচ্ছাশক্তি থাকে তাহলে সে অবশ্যই সফল হতে পারবে। গ্রামের একজন সাধারণ মানুষ থেকে ফাইভ স্টার হোটেলের চিফ শেফ হওয়ার গল্প মোটেও সহজ ছিল না। সাধারণ পরিবেশ থেকে বেড়ে উঠা একজন মানুষ এত বড় একটি হোটেলের চিফ শেফ সেটা সত্যি অনেক বিশাল ব্যাপার। ভাইয়া আপনার এই পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
ঐ যে বললাম জীবন গুলোকে যতই কাছ থেকে দেখি , ততই যেন শিখছি ও জানছি ।
ভাইয়া আপনার সাথে যখনই কথা বলি বা আপনার পোস্টগুলো পড়ি তখনই কাজের আলাদা একটা উৎসাহ পাই। আপনার কাজের মূল মন্ত্র গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। যেমন ধৈর্য পরিশ্রম, কাজের সাথে লেগে থাকা,সৎ চিন্তা নিয়ে স্বপ্ন দেখা।আপনার মত মানুষ আমাদের সমাজে অনেক দরকার। বেলাল সাহেবের গল্প টি ও আমাকে অনেকটা উৎসাহ দেবে। ভালো থাকবেন ভাইয়া।
লেগে থাকার চেষ্টা করুন সামনে ভালো কিছু অপেক্ষা করছে ম্যাডাম। শুভেচ্ছা রইল।
অনেক উৎসাহ পেলাম তার জীবনী থেকে।ধন্যবাদ এরকম উৎসাহ মূলক পোষ্ট করার জন্য।
বাহ,চিফ শেফ বেলালের জীবন সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়ে ভালো লাগলো ভাইয়া।আসলে রান্নাটা একটা আর্ট আর আমি মনে করি এটা অন্যান্য কাজের থেকে বেশ কঠিন কাজ।কারন প্রত্যেক মানুষের মুখে স্বাদ এনে তৃপ্তি মিটিয়ে মন জোগানোর কাজ বেশ কঠিন ও ধৈর্য্যের।আসলে পরিশ্রম ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়,ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলেই সফলতা এমনি এমনি কেউ পায়না, এর পেছনে থাকে অনেক কষ্ট, গ্লানি, হতাশা আর কাজে লেগে থাকার তীব্র বাসনা। যারা সত্যিই আজ সফল তাদের জীবনের পেছনের গল্পগুলো বেশ কঠিন সংগ্রামের।
দারুন অনুপ্রেরণা মূলক পোস্ট ছিল ভাই।
ব্যাপার গুলো অনেকটাই এমনিরে ভাই । একটি অন্যটির সঙ্গে অতপ্রত ভাবে জড়িত।