ভাইয়ের শখ পূরণ || @shy-fox 10% beneficiary
আমার ভাই আমার থেকে সতের মাসের বড় । সবথেকে বড় ব্যাপার হচ্ছে , যেহেতু আমরা একদম সমবয়সী তাই মোটামুটি বলা চলে যে, আমাদের ছোটবেলা থেকেই চাহিদা গুলো একটু ভিন্ন রকম ছিল । ও পড়াশোনায় বেশ ফাঁকিবাজ ছিল । তবে ওর চাহিদাগুলো ছিল ছোটবেলা থেকেই অনেকটা ভিন্ন । যেমন ও ব্যক্তি জীবনে খুব খেলাধুলা ও ঘোরাফেরা করতে পছন্দ করতো আর আমি বলা যায় উল্টোটা । আমি অনেকটাই খেলাধুলা ও ঘোরাফেরা করতাম, তবে সেটা অতোটা খোলামেলা ভাবে না , যেমনটা ও করতো ।
ওর অবশ্য পড়াশুনো ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত । তবে সেটাও হয়েছিল বাবা-মার অনেক চাপের কারণে এবং বাসায় টিউশন মাস্টার দিয়ে । মাস্টার মশাই সারাক্ষণ ওর পিছনে লেগেই থাকতো । কোনোরকমে ওকে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত পড়ানো গিয়েছিল । তারপরে তো ও বলেই যে , ওর দ্বারা আর পড়াশোনা হবে না । ওকে ওর মতো করেই থাকতে দিতে হবে । আমি মনেকরি ওর জীবনের বেশি পরিবর্তন এসেছিল, ওর বিয়ের পরবর্তী সময়ে । যখন ও জীবনটা কে খুব ভালোভাবেই অনুভব করল যে, পৃথিবীতে পয়সার বিকল্প অন্য কোন কিছু নেই ।
অতপর আমার সেজো চাচার তদবিরে একটা মাল্টিন্যাশনাল মেশিনারিজ কোম্পানিতে কোনরকম একটা চাকরি জুটলো । তবে ঐ যে বললাম একেক জনের মেধা একেক রকম । ও খেলাধুলায় যেমন এক্সপার্ট ছিল তেমন টেকনিক্যাল কাজেও খুব বেশ পারদর্শী ছিল । আট বছরের কর্মজীবনে মোটামুটি ও ঐ কোম্পানিতেই সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার পদের রোলটা পেয়ে গেল ।
তবে ওর কিন্তু বিন্দুমাত্র পড়াশোনা ইঞ্জিনিয়ারিং ছিল না । আসলে ওর চেষ্টা ও আগ্রহের কারণেই আর প্রতিনিয়ত মেশিনারিজ কাজ গুলো খুব ভালোভাবেই রপ্ত করেছিল । যার কারণে আজ অনেক গুলো প্রমোশন একই কোম্পানিতেই পেয়েছে । সেই চার হাজার টাকার সেলারি থেকে এখন প্রায় লাখ টাকার মতো সেলারি পাচ্ছে । জীবন বদলায় আসলে জীবন বদলানোর জন্য অনেকগুলো ধাপ পাড়ি দিতে হয় । তাহলেই হয়তো অনেক সময় জীবনের সফলতা গুলো কাছে এসে ধরা দেয় ।
ওর আসলে সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার রোল পাওয়ার পরে, ওর দায়িত্ব পড়ে গিয়েছে মূলত বিভিন্ন জাহাজ গুলোতে মানে সামুদ্রিক এলাকাতেই বেশি ওকে থাকতে হয়। যেখানেই বড় বড় জাহাজ থাকে, সেই জাহাজগুলোর যখন ইঞ্জিনের কোন সমস্যা হয়, ঠিক তখনই ওদের ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপটার ডাক পরে আর ওরা সেখানেই চলে যায় । মূলত বেশিরভাগ সময় বাসার বাহিরেই থাকে আর ওর পরিবার থাকে ঢাকাতেই ।
যার কারণে যখন ও ঢাকায় ফিরে আসে , তখনই চেষ্টা করে পরিবার নিয়ে একটু ঘোরাফেরা করার জন্য । আমাকে বেশ কিছুদিন থেকেই বলছিল,ওর বাইকের প্রতি খুব আগ্রহ বেড়ে গিয়েছি। কারণ যখন ও বাসায় আসে, তখনই চেষ্টা করে বাইক নিয়ে ঘোরাফেরা করার জন্য ।
এমনিতেই ঢাকা শহরে থাকে , তার ভিতরে ঢাকা শহরে লাখ টাকা খুব একটা আহামরি কিছু না । কারণ পুরো পরিবার নিয়ে সেখানে থাকে, বুঝতেই তো পারছেন অনেক খরচা । তারপরেও অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে ছিল । তবে ওর যে বাইকটা পছন্দ, সেটার দাম আসলে অনেকটাই বেশি এবং নাম্বার করা ও আরো বাইকের আনুষাঙ্গিক খরচ সহ প্রায় পাঁচ লাখ টাকার উপর দাম । অবশ্য অনেকগুলো টাকা ও নিজেই ম্যানেজ করেছিল ।
তারপরেও হিসেব করে দেখলো, হাজার পঞ্চাশেক টাকা শর্ট পড়ছে । আমাকে বারবার বলছিল যে, কিছু টাকার জন্য । আমি ওকে শুধু একটা কথাই বলেছিলাম, ভাইয়া যখন তুমি সবকিছু ম্যানেজ করতে পারবা । তারপরে অবশেষে যতটুকু লাগবে, সেটা আমি তোমাকে দিয়ে দেবো ।
অতঃপর ঈদের দুই দিন আগে আমাকে ফোন করেছিল । বললো আমার চার লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ম্যানেজ হয়েছে আর পঞ্চাশ হাজার টাকা লাগবে । আমি খালি বললাম যে, তোমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বারটা দাও আর তুমি গাড়ি কিনতে যাও,বাকিটা আমি দেখছি ।
ভাই আমার ঈদে বাড়িতে এসেছে । এক কথায় গাড়ি কিনে নিয়েই এসেছে । আজ যখন অফিসে যাব, ঠিক তার পূর্ব মুহূর্তে আমাকে ফোনে বললো । তুমি যখন অফিসে যাবা, আমাকে বলিও । আমি তোমাকে রেখে আসব । অতঃপর বিকেলের দিকে দুইভাই একসঙ্গে বেড়িয়ে পড়লাম । ভালই লাগছিল ।
যদিও আমার মোটরসাইকেলের প্রতি খুব একটা আগ্রহ নেই, তবে মানুষের শখ পূরণের ক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়াতে পারলে ভালোই লাগে । ভাইয়াকে শুধু বললাম , সাবধানে গাড়ি চালাইয়ো আর গতিটাকে নিজের আয়ত্বে রাখার চেষ্টা করিও ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
খুব ভালো লাগলো ভাই। আসলে পরিবারের অনেকেই থাকে যারা পড়াশুনার প্রতি কোন আগ্রহ কম থাকে। তবে ও নিজে কষ্ট করে এত দূর এসেছে আমার কাছে এটা হবে অবাক লেগেছে ভাই। আসলে কাজে লেগে থাকলে যে মানুষ অনেক কিছুই করতে পারে আপনার ভাইকে দেখলে সেটা বোঝা যায়। খুব ভালো লাগলো অনেক কিছু আসলে বুঝতে পারলাম জীবনে কোন কিছু শর্টকাট না। শেষমেষ বাইকটা কিনা যে নিজের শখ পূরণ করতে পেরেছে এটা অনেক ভাগ্যের একটা ব্যাপার। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এরকম সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
জীবন এমনই , কখন কার কি হয়ে যাবে এটা বলা মুশকিল । তবে চেষ্টা করতে হবে । চেষ্টা করলেই আসলে অনেক কিছুই সম্ভব হয়ে যায় ।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়ের স্বপ্ন পূরণ করে দেয়ার জন্য।সত্যিই আপনি অনেক মহৎ।সাথে করে আজকাল বাইক দুর্ঘটনার কথা ও বলেছেন। আমি বলবো আপনার ভাইকে দেখে শুনে বাই ড্রাইব করতে।শুভ কামনা রইল আপনাদের দুইয়ের প্রতি।
তার নিজের স্বপ্ন সে নিজেই পূরণ করেছে । আমি শুধু একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি এতোটুকুই ভাই ।
শখ পূরণ হোক আর যাই হোক ভাই লাস্টের তিন নম্বর ফটোটা এত সুন্দর হয়েছে তা বলার কথা নয়। নতুন মোটরসাইকেলের উপরে আপনাকে নতুন নতুন লাগছিল। আর পিছনের গাছের সারিতে বেস দারুন মানিয়েছে। তবে পিছনের গাড়িটা কার ছিল?
পিছনের গাড়িটা সম্ভবত পথযাত্রীর ছিল । যাইহোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ।
ভাইয়ার টেকনিক্যাল লাইনে কোন পড়াশোনা ছিল না কিন্তু তবুও সে সেই কোম্পানিতে ভালো একটা পদে চাকরি করেছে, আমিও মনেকরি সবটাই সম্ভব হয়েছে তার চেষ্টা এবং আগ্রহের ফলে।
আপনি ভাইয়ার স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। আপনি সত্যিই অনেক মহৎ এবং অনেক বড় মনের একজন মানুষ।
যাইহোক আপনাকে বাইকের উপর বসে কিন্তু দারুণ মানিয়েছে ভাইয়া।
আসলে চেষ্টা পরিশ্রম ও ধৈর্য্য মানুষকে কোথায় থেকে কোথায় নিয়ে যাবে, এটা বলা খুব মুশকিল । এটাই চিরন্তন সত্য কথা ।
লাস্ট লাইনগুলো বাইক চালানোর ক্ষেত্রে খুবই দরকারি।বাইকের গতি অনেক কিছুই নির্ধারণ করে দেয়।সহযোগিতা সবসময় সুন্দর।
চেষ্টা করেছি কিছু কথা বলার জন্য, হয়তো মেনে চললে ভালো ।
স্বপ্ন পূরণ হলে জীবনে অনেক বেশি একটা আলাদা অনুভুতি হয় যে অনুভূতিটা আসলে অন্য কিছুতে পাওয়া যায়না। আর আপনি ঠিক বলেছেন ভাই জীবন বদলায় আসলে জীবন বদলানোর জন্য অনেকগুলো ধাপ পাড়ি দিতে হয়। খুব ভালো লাগলো আপনার এই দুই ভাইয়ের খুনসুটি এবং আপনার ভাইয়ের স্বপ্ন পূরণের মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
আসলে আমি দীর্ঘদিন পরে ওর সঙ্গে বের হয়েছিলাম ।আমাদের সময়টা ভালই কেটেছে । তার মধ্যে আমারও খুব ভালো লেগেছে ওর সঙ্গে, ওর নতুন গাড়িতে চড়ে ঘোরাঘুরি করে ।
এটা দারুণ বলেছেন ভাই। সফলতা একদিনে ধরা দেয় না এরজন্য বহু পথ পাড়ি দিতে হয়। আপনার ভাই সেই চার হাজার টাকার কর্মচারি থেকে আজ লক্ষ টাকা বেতনের সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার। আসলে সবকিছুই হয়েছে তার পরিশ্রমের জন্য শেখার আগ্রহের জন্য।
এবং ছোট ভাই হিসেবে আপনি যেভাবে আপনার বড় ভাইকে সাহস জুগিয়েছেন এবং যেভাবে আপনার ভাইয়ের শখ পূরণে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন সেটা সত্যি প্রশংসনীয়। বাইকটা সত্যি অনেক সুন্দর হয়েছে। এবং আপনার ভাইকে একটু সাবধানে চলাচল করতে বলবেন। কারণ আপনার ভাই সচেতন কিন্তু অন্য যারা রাস্তায় চলাচল করে তারা মোটেও সচেতন না।
আসলে জীবন বদলায় , এ জীবনে শুধু লেগে থাকতে হয় ।তাহলেই জীবন আপনাকে অনেক দূর থেকে বহুদূরে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করবে , এটাই তো আমি চিন্তা করি ।হয়তো তার প্রতি ফলন হয়েছে আমার ভাইয়ের মাধ্যমে ।
খুবই সুন্দর কথা বলেছেন ভাইজান। এখনকার সময়ে বেশিরভাগ এক্সিডেন্ট হয় বাইকে। অনেকেই আছে বাইক কে বলে মরণ গাড়ি। আর আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ শেষ মুহূর্তে আপনার ভাইয়ের স্বপ্নটা পূরণ করে দেয়ার জন্য। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমি শুধু সহযোগিতা করেছি । বাকি কাজটা ও নিজেই করেছে । তবে ভালো লেগেছে ওর শখ পূরণের ক্ষেত্রে সামান্য হলেও অবদান রাখতে পেরে ।
ভাই ঘটনাটা আসলে উল্টো হওয়ার কথা ছিল। মনে হচ্ছে আপনিই যেন বড় ভাইয়ের দায়িত্ব পালন করলেন। সাধারণত এসব ক্ষেত্রে ছোট ভাইরাই বড়দের কাছে আবদার করে কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে দেখলাম উল্টো। যাই হোক সখ পুরন বলে কথা। আপনজনের ইচ্ছা পূরণ করতে ভালই লাগে। সাবধানে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দিতে ভুলবেননা। শুভকামনা রইল
অবস্থান কাল ভেদে কখন কার কি হবে এটা বলা যায়না, তবে আমি চেষ্টা করেছি শুধুমাত্র সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ।
ভাইয়া আপনি সবসময় খুব গুছিয়ে কথা বলেন। এই ব্যাপারটা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। দুই ভাইয়ের অনুভূতিগুলো এত সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লিখেছেন অনেক ভালো লেগেছে।মানুষের সব সময় সার্টিফিকেট টাই বড় মুখ্য বিষয় নয়। মাঝে মাঝে কর্মদক্ষতা টাও অনেক বেশি ভূমিকা পালন করে। আপনার ভাই সেটাই দেখিয়ে দিয়েছে। আপনার ভাইয়ের স্বপ্নপূরণ মোটরসাইকেল কেনার কাজে আপনি হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ব্যাপারটা যথেষ্ট মূল্যায়ন করার মতো ছিল। ধন্যবাদ অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু আমার অনুভূতি বোঝার জন্য। আসলেই চেষ্টা করেছি নিজের জায়গা থেকে নিজের মতো করে কাজটা করার জন্য , তবে ভালই হয়েছে ।