কাঞ্চনের সঙ্গে কিছুসময়
ছুটে চলা জীবনে প্রতিনিয়ত কত মানুষের সঙ্গেই তো দেখা হয়, নতুন মানুষগুলোর সঙ্গে যখন টুকটাক পরিচয় হওয়া যায়, তখন ভালো লাগার ব্যাপারটা কিছুটা হলেও যেন বৃদ্ধি পায়।
শখের জন্যই নাকি জীবন, তবে শখ কে ভিত্তি করে জীবিকার যে উৎস তৈরি করা যায়, তা হয়তো বাস্তবে কাঞ্চনকে না দেখলে, অনেকটা অজানাই থেকে যেত।
আসলে শখ কে পেশাতে পরিণত করা ব্যাপারটা যেমনটা সহজ ভাবা যায়, ব্যাপারটা মোটেও কিন্তু তেমন না। কি পরিমাণ চেষ্টা আর ধৈর্যের যে প্রয়োজন হয় তা হয়তো বলাবাহুল্য। আশেপাশে ভালোভাবে খেয়াল করলেই, এমন নজির মেলে। হয়তো তেমন কিছু কথাই আজ কাঞ্চনের মুখে শুনেছিলাম।
ওর সঙ্গে আমার, প্রথম পরিচয়টা সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণেই হয়েছিল। তবে সেভাবে কখনো সাক্ষাতে দেখা বা কথা হয়ে ওঠেনি। প্রায়ই যখন সোশ্যাল মিডিয়ার নিউজ ফিড ঘাঁটাঘাঁটি করতাম, তখন ওর অ্যাকুরিয়ামের সৌখিন মাছগুলোর ছবি দেখতে পেতাম। সঙ্গে দেশি-বিদেশি পাখির ছবি তো সেখানে যুক্ত থাকতোই।
বয়স ওর কতই হবে, হিসেব করে দেখলে খুব যে আহামরি তা কিন্তু না। তবে ওর ক্রমাগত চেষ্টা ওকে স্বাবলম্বী হতে অনেকটাই সহযোগিতা করেছে। সময় পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে, সঙ্গে মফস্বলের মানুষের রুচিবোধেও কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। তাই হয়তো সৌখিন মানুষগুলোই ভিড় করে ওর দোকানে।
এমনিতেই বেকারত্ব বাড়ছে, অনেকেই চাকরি খুঁজছে, কারো জুটছে আবার কেউ হতাশায় ডুবে যাচ্ছে , তবে সেখান থেকে ও যে কিছু একটা করার চেষ্টা করছে, সেটা কিন্তু বেশ প্রশংসনীয়।
সেই ছোটবেলা থেকেই কখনো কুকুর-বিড়াল নতুবা পাখি-কবুতর। এগুলোর সঙ্গে ওর সম্পর্ক ছিল অনেকটাই নিবিড়। তাই হয়তো পরবর্তীতে ওর শখ বাণিজ্যিকভাবে রুপ পেতে খুব একটা সময় লাগে নি।
তবে স্তরে স্তরে যেন স্মৃতিকথার সমাহার জমাট বেঁধে আছে। আজ এই পড়ন্ত বেলায় যখন বাহিরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছিল তখন খোশগল্পে মেতে উঠে ছিলাম ওর সঙ্গে। বড্ড আন্তরিক ছেলেটা, কত কথাই তো শোনা হয়ে গেল।
তখন ২০০৮ কি ২০০৯ সাল। সেবার ওরা পরিবারসহ ঘুরতে গিয়েছিল ঢাকাতে। তাতেই কোন না কোন জায়গায়, এই অ্যাকুরিয়ামের রঙিন মাছগুলোর সৌন্দর্য ওদের দুই ভাইয়ের দৃষ্টি কেড়ে ছিল। শুরুটা হয়েছিল ওর বড় ভাইয়ের মাধ্যমেই। তবে দু-ভাইয়ের চেষ্টা ছিল সমান তালে।
একদিকে যেমন পড়াশোনা চলছিল অন্যদিকে শখ তেমন ক্রমাগত লালিত হচ্ছিল ওদের মনে। অতঃপর ২০১৭ সালে হঠাৎ করেই দু-ভাইয়ের চেষ্টায় বাণিজ্যিকভাবে ওদের শখ বাস্তবে পরিণত হলো। তারপরে আর থেমে থাকতে হয়নি। শখ যেহেতু লালিত হয়েছে দীর্ঘ সময় থেকে তাই অভিজ্ঞতাও বলা যায় বেশ পরিপক্ব।
যদিও সমসাময়িক সময়ে ওর বড় ভাইয়ের প্রস্থান হয়েছে, তবে ব্যাপারটা বেশ হৃদয়বিদারক। আমি সেই বিষয়ে তেমন কোন কথা বাড়াতে চাচ্ছি না। তবে কাঞ্চন থেমে থাকেনি, অনেকটা একাই হাল ধরেছে পুরো ব্যবসার। অনেকটা সময় গল্প হয়ে গেল এই তরুণ স্বপ্নবাজের সঙ্গে। ঝুম বৃষ্টিতে ওর দোকানে বসে হালকা উষ্ণ চায়ে যখন চুমুক দিচ্ছিলাম আর ওর কথা শুনছিলাম, তখন কখন যে ঘন্টাখানেক সময় নিমিষেই কেটে গিয়েছে, তা যেন বুঝে উঠতেই পারিনি।
ভালো থেকো কাঞ্চন, তোমার জন্য শুভেচ্ছা রইল। তোমার শখ কে সত্যিই শ্রদ্ধা জানাতে ইচ্ছে করছে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1666745451528482816?t=CsHr3iyLS_Kfjo-95l1uRQ&s=19