প্রয়োজনের ফেরিওয়ালা ||@shy-fox 10%beneficiary

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

20211008_135621.jpg
ইদানিং রাহুল সাহেবের মেজাজ খিটখিটে থাকে। আর এত খিটখিটে হয়ে গিয়েছে যে, যার কারণে সে প্রতিনিয়ত কফি খাওয়ার চেষ্টা করে। ব্যাপারটা তার কাছে এমন হয়ে গিয়েছে যে, কফি না খেলে তার মনে হয় সারা দিনটাই মেজাজ খিটখিটে থাকবে। যাইহোক রাহুল সাহেব নামটা ছদ্ম হলেও কিন্তু রাহুল সাহেবের আচরণটা ছদ্ম না ।


কি একটা মানসিক চাপ রাহুল সাহেবকে, প্রতিনিয়ত আঘাত করে চলে। রাহুল সাহেব পরম সযত্নে সেগুলো সহ্য করে এবং দাঁতের উপর দাঁত পিষে, সে তার মস্তিষ্কের উপর একটা চাপ ফেলে দেয় । তখন যেন তার কফি না হলে চলেই না । গুনে গুনে তিন কাপ কফি খেয়েছে সকাল থেকে। দুপুর বারোটা না বাজতেই এই তিন কাপ কফি তার হজম করা হয়ে গিয়েছে । তাও যেন সে কিছুতেই নিজেকে শান্ত করতে পারছে না। কারণ চোখের সামনে যেটা ঘটেছে ,সেটা যেন রাহুল সাহেব কোন মতোই ভুলতে পারছে না ।
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে, যখন কর্পোরেট মোবাইলটা হাতে নিল । তখন দেখল তিনটা মিসকল উঠে আছে এবং নাম্বারটা যখন দেখল, তখন রাহুল সাহেব কিছুটা বিস্ময় প্রকাশ করলো। কারণ এই নাম্বারটা থেকে তো সহজে কল আসে না। কারণ রাহুল সাহেব জানে যে, তাকে শুধুমাত্র এই নাম্বার দিয়ে তখনি কল করা হয়, যখন ঐ নাম্বারের মালিকের সহযোগিতার প্রয়োজন হয় তখনি ।
রাহুল সাহেব মূলত, প্রয়োজনের ফেরিওয়ালা হয়ে গিয়েছে এখন মানুষের কাছে । মানুষ শুধুমাত্র এখন রাহুল সাহেবকে প্রয়োজনে ব্যবহার করে । আর প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলেই রাহুল সাহেবের সামনে যেন প্রেক্ষাপট ভিন্ন হয়ে যায় । রাহুল সাহেব ব্যাপার গুলো বোঝে ,কিন্তু তার মুখ থেকে কথা গুলো বের হয় না। বেচারা ভীষন ধৈর্যের অধিকারী । শুধু কফি খায় আর হজম করে ।
20211008_135749.jpg
যাইহোক রাহুল সাহেব, অবশেষে সেই নাম্বারে ফোন দিল । অপরপ্রান্ত থেকে বলল,আরে রাহুল তোকে তিন বার ফোন দিলাম তুই ফোনটা ধরলি না । এত বেলা পর্যন্ত ঘুমাস নাকি। কি একটা অবস্থা তোর । যাইহোক তাড়াতাড়ি দুটো ওষুধের নাম বলতো, তোর ভাবীর রাত থেকে দাঁত ব্যথা করছে । রাহুল সাহেব এবার লজ্জা পায়, নিজে নিজে লজ্জা পায় । কেন যে সে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিল , এটা ভেবে সে লজ্জা পায় ।
যাইহোক রাহুল সাহেব যখন মুখ ফুটে বলতে যাবে, ভাবিকে নিয়ে চেম্বারে আসার কথা । তখন অপর প্রান্ত থেকে সুর পাল্টে যায়। আরে রাহুল, কি বলিস এই সব । এই সামান্য ব্যাথার জন্য কি, আবার চেম্বারে যাওয়া লাগে নাকি। খালি দুইটা ওষুধের নাম বলবি, তার জন্য আবার এত কিছু । রাহুল সাহেব বুঝাতে চায় , ব্যপারগুলো সে যেভাবে ভাবছে ব্যপারগুলো তেমন না। এখানে কিছু পর্যবেক্ষণের বিষয় আছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা, অপর প্রান্তের মানুষ তা বুঝতে নারাজ । সে শুধু ঔষুধের নাম চায় ।

Sort:  
 3 years ago 

অনেক ক্ষমতাবান ব্যক্তি আছে সময়ের কাছে হার মানতে হয়। রাহুল সাহেবের মেজাজ খিটখিটে হচ্ছে তার কফি খাওয়ার পর ও কন্ট্রোল হচ্ছে না। এটা ঠিক যেই ফোন করুক ডাক্তারগণ পর্যবেক্ষণ না করে কখনো ওষুধ দেন না। আমি দেখেছি এমন পরিস্থিতি হয় রোগীর আচরণ বা রোগীর সাথে যারা থাকে তাদের আচরণ দেখে শরীরের পশম পর্যন্ত দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু নিরুপায় কিছুই বলার থাকেনা। আমারে অভিজ্ঞতাটা ছোট থেকে আমার বাবা একজন পেশায় ডাক্তার ছিল। প্রায় সময় দেখতাম যার যে যোগ্যতা নেই তার চেয়ে বড় কথা বলে বসে। কিন্তু রাহুল সাহেবকে তো কথা বলা সেই সুযোগটাই দেওয়া হয়নি। মেজাজ কার না খারাপ হবে। ভাইয়া আপনার গল্পটির আকর্ষণ দিন দিন বাড়ছে। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল ভাইয়া।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

প্রয়োজনের ফেরিওয়ালা আমরা তো সবাই ভাইয়া।কাজ শেষে কেউ আর কাউকে মনে রাখে না এটাই বাস্তবিক সত্য।এরপরেও জীবন তো আর থেমে থাকে না এটি তার নিয়ম অনুসারে চলতেই থাকে।

রাহুল সাহেব নামটা ছদ্ম হলেও কিন্তু রাহুল সাহেবের আচরণটা ছদ্ম না ।
আপনার এই কথাটি আমার সব থেকে ভালো লেগেছে-**আমরা আমাদের নাম পরিবর্তন করতে পারলেও আচরণটা কিন্তু পারি না**।কারণ এটিই আমাদের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য যা ব্যাক্তিবিশেষে আলাদা হয়।আপনার আজকের অভিজ্ঞতাটা তিক্ত হলেও খুব সুন্দরভাবে ছদ্দনাম ও কফি খাওয়ার উপমার মাধ্যমে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন।আমার মতে সব মানুষের জীবনেই এরকম হাজারো অভিজ্ঞতা আছে তবে দিনশেষে আমাদের প্রফেশন লাইফটাই মেইন ফ্যাক্টর।
 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 3 years ago 

আমি প্রথমেই বুঝেছি এই রাহুল সাহেবটা আসলে কে।
আপনার পোস্ট পড়ে একটা কথা মনে পড়লো ভাইয়া, " আমি তো আর মানুষ দেখি না রে?! "
সত্যিই তাই। আমরা অনেকেই যেনো প্রয়োজনের ফেরিওয়ালা। প্রয়োজন শেষে হাওয়া!!
লেখাটা পড়েই কেনো যেনো মনে হলো রাহুল সাহেবের আসলেই মস্তিষ্কের উপর চাপটা বেশি ই পরছে।
রাহুল সাহেবকে বলবেন, এতো চাপ ভালো না। ❤️

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 3 years ago 

সত্যিই তাই। আমরা অনেকেই যেনো প্রয়োজনের ফেরিওয়ালা। প্রয়োজন শেষে মুছে ফেলা। ভাই আপনার গল্পটা অনেক আকর্ষন ছিলো। আসলেই রাহুল সাহেবের মস্তিষ্কের উপর চাপটা বেশি ই পরছে।ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এমন সুন্দর গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। শুভ কামনা রইল ভাইয়া আপনার জন্য।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 3 years ago 

ভাইয়া কিছু মানুষ আসলেই এমন থাকে যারা প্রয়োজন ছাড়া কোন দিন খোজ নেয় না। আমার এক বন্ধু আছে ও কল দিলেই আমি ভয় পাই শুধু টাকা লাগলেই কল দেয় আর টাকা নিলে দিতেও চায় না হাহাহাহাহহাহা কিন্তু এমন ভাবে চায় না দিয়েও পারি না। যাই হোক রাহুল সাহেব কে মনে হয় আমরাও চিনি।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 3 years ago 

ভাই। এই রাহুল সাহেব টা আর কেউ নয়।হয়তো আপনি বা আমি।আমিও তো এই রকম একটি পেশার সাথে জড়িত।এমনকি রাত ৩ টা বাজে তখনো গ্রামে রোগী দেখতে যেতে হয়।জন সেবা বলে কথা।কাঁচা ঘুম থেকে উঠে যেতে হয়,একদম বিরক্তিকর ব্যাপার।উপায় নেই তবুও যেতে হয়।যাই হোক অনেক সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন ভাই।ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 3 years ago 

আমরা অনেকেই যেনো প্রয়োজনের ফেরিওয়ালা। প্রয়োজন শেষে হাওয়া!!
লেখাটা পড়েই কেনো যেনো মনে হলো রাহুল সাহেবের আসলেই মস্তিষ্কের উপর চাপটা বেশি ই পরছে। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এমন সুন্দর গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। শুভ কামনা রইল ভাইয়া আপনার জন্য।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64623.67
ETH 3421.73
USDT 1.00
SBD 2.51