সেলুনের ঘটনা
চায়ের দোকানে গিয়ে মানুষ যেমন দীর্ঘ সময় ধরে খোশগল্প করে ঠিক হয়তো তেমনি যেখানে মানুষ চুল-দাড়ি কাটতে যায় অর্থাৎ সেলুন সেখানেও গিয়ে মানুষ অনেক সময় গল্পে মেতে ওঠে। মানুষের ভালো কথা শুনতে ভালোই লাগে। বিশেষ করে কেউ যখন অন্য কারো উপকার করেছে বিনা স্বার্থে ঠিক এমন কথা।
শিবপুর থেকে রতন ও মোহন দুই বন্ধু এসেছে শহরের সেলুনে চুল কাটতে। আজ আমার কিছুটা দেরি হয়েছে সেলুনে যেতে তাই হয়তো তাদের কথাগুলো শোনার সৌভাগ্য হয়েছে। বয়স তাদের কতই হবে ২৪-২৫ এর বেশি নয়। মূলত রতন চুল কাটাচ্ছে আর মোহন সঙ্গে এসেছে। দেখে বোঝাই যাচ্ছে তাদের এলাকার সমসাময়িক ব্যাপার নিয়ে তাদের আলোচনা চলছে।
চোখ হয়তো আমার খবরের কাগজে তবে কান আমার বড্ড সজাগ। ভাগ্যিস মতিন চাচা গরুটা গতরাতে ফেরত পেয়েছে নইলে তো তার যে অবস্থা, এমন ক্ষতি হলে তাকে হয়তো পথেই বসতে হতো। দুই বন্ধুর কথাবার্তার মাঝে তৃতীয় পক্ষ ঢুকে গিয়েছে নাপিত নিজেই। তখন আর আমাকে আগ বাড়িয়ে কোন কিছু জিজ্ঞেস করতে হয়নি।
তেমন কিছু না গতরাতে যখন বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলাম, তখন দেখলাম রাত্রিবেলা কার যেন গরু পাকা রাস্তার কাছাকাছি একাই দাঁড়িয়ে আছে আর দূরে একটা মিনি ট্রাক ও সঙ্গে অচেনা দুজন মানুষ । ব্যাপারটা যেটা ঘটেছে সেটা হচ্ছে, আমাকে দেখেই অচেনা লোক দুটো গরুর দড়ি ছেড়ে দিয়েছে আর তাতেই গরু নিজের মতো করে কিছুটা দূরে চলে এসেছে। অচেনা লোক দুটোর মূলত টার্গেট ছিল গরুটাকে মিনি ট্রাকে করে নিয়ে চলে যাবে তবে এই গ্রামীন পাকা রাস্তায় আমি তাদের বাধা হয়ে গিয়েছি অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে।
রতন যখন গরুটাকে এভাবে রাস্তায় একা দেখেছে আর গ্রামের পাকা রাস্তায় অচেনা মানুষ আর মিনি ট্রাক, তখন তার সন্দেহ আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। এমনিতেই আজকাল আশেপাশের এলাকা থেকে বেশ গরু চুরি হচ্ছে। এমন খবর মাঝে মধ্যেই পাওয়া যায়। তাই রতনের কাছে ব্যাপারটা সুবিধার মনে হয়নি। রতন, মনের জোরেই মোহনকে ফোন দিয়েছিল এবং বলেছিল দুটো অচেনা লোক, মিনি ট্রাক আর ছেড়ে দেওয়া গরুর সম্পর্কে ।
এই মিনি ট্রাকটাকে যেতে হলে অবশ্যই মোহনদের এলাকার উপর দিয়েই যেতে হবে। ব্যাপারটা মোহনের কাছেও খুব একটা ভালো ঠেকেনি, তাই ওরা এলাকার লোকজন মিলে রাস্তা অবরোধ করে রেখেছিল আর গ্রামের ভিতর যেহেতু মতিন চাচা চিল্লাচিল্লি করে আসছিল, কে যেন তার গরু নিয়ে গিয়েছে এমন কথা বলে,তাই সকলেই যে যার মত করে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছে। ট্রাকটা বেশি দূরে যেতে পারেনি। এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়েছে গরু চোর।
মতিন চাচা তার গরুকে পেয়ে গিয়েছে, তবে হাউমাউ করে কেঁদে উঠেছে সেটা হয়তো গরু ফিরে পাওয়ার আনন্দে আর ঐদিকে এলাকাবাসী চোরের যা প্রাপ্য ছিল তা হিসেব করে বুঝিয়ে দিয়েছে। ভাগ্যিস স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এসেছিল, নইলে তো প্রাণেই মারা পড়তো চোর দুটো। আসলে এমন গল্পই করছিল রতন আর মোহন।
তবে যাই বলুন না কেন, বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলের দিকে যারা থাকে তারা একটু সতর্কই থাকুন। সময়টা আসলেই খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। মানুষ কিন্তু তার মনুষত্ব হারিয়ে ফেলেছে। সত্যিই দিনশেষে ভালো লেগেছে রতন আর মোহনের এই ঘটনাটি যখন নিজের কানে শুনছিলাম তখন আর ভাবছিলাম সেই মতিন চাচার কথা, আসলেই বেচারা বড় ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে গিয়েছে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1680187589264031745?t=i35uJuR3aL0L7p_antggwg&s=19
বাহিরে গেলে এরকম অনেক ঘটনা শুনতে পাওয়া যায়। আসলে চোরের উপদ্রব অনেক বেড়ে গেছে। তাইতো সবাইকে সাবধান হতে হবে। এমন অনেক মানুষ আছে যারা চোরের ঘৃণ্য কাজের জন্য একেবারে নিঃস্ব হয়ে যায় এবং নিজের মূল্যবান সম্পদ হারিয়ে ফেলে। ভাইয়া আপনি সব সময় বাস্তবতা নিয়ে লিখেন এজন্য আপনার লেখাগুলো পড়তে অনেক ভালো লাগে।
চেষ্টা করেছি আপু সমসাময়িক ব্যাপারে একটু আলোকপাত করার জন্য, জাস্ট এতোটুকুই। ধন্যবাদ আপনাকে।