দীর্ঘদিন পর || @shy-fox 10% beneficiary
ইদানিং আমার খুব বেশি মুহূর্ত জমে যাচ্ছে, কোনটা ছেড়ে কোনটা আগে শেয়ার করব, সেটা নিয়ে আমি খুব মাঝে মাঝে চিন্তিত হয়ে যাই । যেহেতু আমি জীবন নিয়ে লিখতে পছন্দ করি। তাই জীবনে ঘটে যাওয়া প্রতিনিয়ত ঘটনাগুলি আপনাদের সামনে আলোকপাত করার চেষ্টা করি । আজকে শেয়ার করা ঘটনাটি ছিল ২৭ শে রোজার দিনের।
আমার এখনো খুব ভালোভাবে মনে আছে, যেদিন আমার নানী মারা গিয়েছিল সেই দিনও আমি হ্যাংআউট শোর দায়িত্ব পালন করেছিলাম । যাইহোক মৃত্যু বরই স্বাভাবিক ও সত্য একটা বিষয়, এটাকে মেনে নেওয়াই শ্রেয় । নানী আমার কাছে খুবই প্রিয় একজন মানুষ ছিলেন এবং আমাকে ভীষণ পছন্দ করত ।
আজ যখন তার কথা লিখছি তাকে ভেবে, তখন চোখের কোণে পানি জমে গিয়েছে । তবে জীবন এমনই, যেতেই হবে এটাই নিয়ম । আজ যখন নানী বাড়িতে যাচ্ছি, তখন ভাবছি সবাই সেখানে থাকবে কিন্তু নানী থাকবে না । তবে আজকে সেখানে যাওয়ার উদ্দেশ্য কিন্তু নানী কে কেন্দ্র করেই । মূলত দোয়া মাহফিলের একটা ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং সেই উপলক্ষে গ্রামবাসীকে হালকা খাওয়ানোর ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়েছে ।
যদিও মানুষকে হাজার ভালো খাইয়ে কোন লাভ নেই । কারণ যদি একটু উনিশ বিশ হয় , তাহলেই অনেকটা লঙ্কাকাণ্ড হয়ে যায় । মানে অনেকটা পেট ভরে খাওয়ার পরেও বলবে যে, তরকারিতে লবণের পরিমাণটা একটু বেশি ছিল, ব্যাপার গুলো অনেকটা এই এরকমই । যদিও আমি এইরকম সামাজিকতাপূর্ণ ব্যপারগুলোর সঙ্গে সহজে জড়িত হতে চাই না । তবে যেহেতু মাধ্যমটা ছিল নানী কে কেন্দ্র করে, তাই বাধ্য হয়েছি যেতে ।
বিকেলের ঠিক পরেই বাসা থেকে বের হয়ে , একটা সিএনজি নিয়ে চলে গেলাম সোজা নানী বাড়ীর উদ্দেশ্যে । শহর থেকে বেশ ভালই দূরে আমার নানীর বাড়ি । মিনিট বিশেকের মত লাগে যেতে সিএনজিতে । দুই পাশের ফসলের মাঠের ভিতর দিয়ে পাকা রাস্তা চলে গিয়েছে এবং আশেপাশের মনোরম দৃশ্য বেশ ভালোই উপভোগ করছিলাম । দীর্ঘদিন পরে নানী বাড়িতে যাচ্ছি, অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করছিল নিজের ভিতরে।
আমি অবশ্য অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করে চলা মানুষ । যাইহোক এই প্রথম শায়ানকে নিয়ে আমার নানীর বাড়িতে গেলাম । আজ হয়তো নানী বেঁচে থাকলে খুব খুশি হইত, আমাদের পরিবারের সবাইকে দেখলে । একটু আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিলাম । গিয়েই সেখানকার পরিবেশ বোঝার চেষ্টা করলাম । সকলের সঙ্গে কুশল বিনিময় করলাম ।
সকলে বারবার বলছিল তুমি অনেক মোটা হয়ে গিয়েছো । স্বাস্থ্যের পরিবর্তন হয়েছে এবং চেহারাটাতেও আগের থেকে অনেকটাই ভিন্নতা চলে এসেছে । আমি বলছি যে, সব কথা ঠিক আছে । তবে মানুষ হিসেবে আমি একটুও পরিবর্তন হয়নি । আগেও যেরকম ছিলাম এখনও ঠিক তেমনটাই আছি ।
যেহেতু অনেক লোকের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে । তাই মোটামুটি বেশ ভালোই ব্যস্ত দেখলাম পরিবারের অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনদেরকে। আমি খুবই অলস স্বভাবের মানুষ । যেখানে যাই, সেখানে গিয়েই সুযোগ বুঝে বসে থাকি নতুবা ঘুম পাড়ি।
বাবুকে নিয়ে একটুও গ্রামের রাস্তায় ঘোরাফেরা করলাম । চেষ্টা করছিলাম আশপাশের পরিবেশ প্রকৃতি দেখার জন্য । কারণ আমি প্রকৃতি প্রেমী মানুষ । দীর্ঘদিন পর গ্রামে গিয়েছি, তাই প্রকৃতিটাকে যেন আরও নিজের মত করে দেখার চেষ্টা করছি । চেষ্টা করছি একদম বিশুদ্ধ অক্সিজেন প্রাণভরে নেওয়ার জন্য ।
হুটকরে আজান দিয়ে দিল , বুঝলাম আমাকে ফিরতে হবে । গিয়ে দেখি মোটা মোটামুটি সবাই ইফতারি নিয়ে ব্যস্ত । বসে পড়লাম তাদের সঙ্গে, গ্রামীণ সহজ-সরল লোকগুলোর সঙ্গে প্রাণখুলে কিছুটা কথাবার্তা ও খাওয়া-দাওয়া করে অতঃপর বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
জানিনা আবার কবে আসবো,তবে স্বল্প সময়ের জন্য এসেও বেশ ভালই বোধ করলাম । তবে নানী থাকলে আরো উপভোগ্যকর হতো সময়টা । ভালোবাসি নানী তোমাকে, সৃষ্টিকর্তা তোমাকে বেশ ভালো একটা স্থানে রাখুক , এই প্রার্থনাই করছি ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
ভাই চরম সত্য কথা বলেছেন। এই মানুষগুলো আসলে দোয়া করতে যায় না যায় খাওয়ার জন্য। অনেকে তো আমিন ধরে মাংসের টুকরা যাতে বেশি পায়।সেই দোয়া করে।
যাইহোক, আপনার নানীর জন্য মন থেকে দু'আ করি তিনি যেন জান্নাত বাসী হয়। আসলে মৃত্যু বড় কঠিন সত্য যা আমাদের মেনে নিতেই হবে। আসার সিরিয়াল আছে কিন্তু যাওয়ার সিরিয়াল নাই। 🤲🤲
দেখছি আর শিখছি। তবে যা লিখেছে, একদম বাস্তব কথা লেখার চেষ্টা করছি । এমনটাই হচ্ছে প্রতিনিয়ত ভাই ।
সত্যি বলতে সময় বড় অদ্ভুত । সময় প্রতি মূহুর্তে আমাদের কিছু না কিছু শিখিয়ে যাচ্ছে। সময়ের সাথে আমি তাল মেলাতে খুব একটা পারি না। যাই হোক মূহুর্ত গুলো হয়তো আরো সুন্দর হতে পারতো যদি প্রানের মানুষ , মনের মানুষ টি কাছে থাকতো। তবে তার দেয়া আর্শিব্বাদ সবসময় আপনার মাথার উপর রয়েছে। ভাল ছিল লেখনী। ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ ভাই , আসলেই নানিকে খুবই ভালবাসতাম । দীর্ঘদিন পরে নানি বাড়িতে গিয়ে, বড্ড ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল বাড়িটা । ভালো লেগেছে আপনার মন্তব্যটা ।
ভাইয়া, প্রতিটা নানা নানীর কাছে তার মেয়ের ঘরের ছেলে মেয়ে খুবই প্রিয় থাকে।আর নাতি নাতনির কাছে নানা-নানি খুবই প্রিয় হয়।। ভাইয়া, আপনার নানুর রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।ভাইয়া,আপনার নানু আপনাকে দেখে এবার যদি বেঁচে থাকতেন যতটুকু খুশি হতেন ।তার থেকে বেশি খুশি হতেন আপনার প্রিয় সন্তান আমাদের প্রিয় বাবু শায়ন কে দেখে তার চেয়েও বেশি খুশি হতেন।আপনার পোষ্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে আর পোস্টে ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আমার মন জুরিয়ে গেছে।আমাদের প্রিয় শায়ান বাবাকে নিয়ে আপনি গ্রামের দূষণ মুক্ত বাতাসে ঘুরতে গিয়েছেন আসলে ভাইয়া, যারা শহরে থাকে তাদের এই দূষণ মুক্ত বাতাস আর গ্রামীণ পরিবেশ দেখা হয় না।ভাইয়া,ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
💐ঈদ মোবারক💐
আমি আপনার কথার সঙ্গে সহমত পোষণ করছি । কারণ আমার নানী আমাকে প্রচুর ভালোবাসতো । আজ বেঁচে থাকলে, সে খুবই খুশি হত ।
প্রথমে আপনার নানীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আপনার নানী মারা যাওয়ার ঘটনা টি এর আগে একটি পোস্ট পড়েছিলাম মনে হয়। সেই উপলক্ষে তার আত্মার মাগফেরাত কামনার জন্য আপনারা 27 রমজান সেখানে গিয়েছিলেন। কাজের ব্যস্ততা থাকে সে কাজে ব্যস্ততার মাঝেও পরিবার আত্মীয় স্বজনের সাথে সময় কাটানো খুব প্রয়োজন হয় তা অবশ্য আপনি খুব ভালোভাবে পালন করেন।শায়ান বাবুকে নিয়ে গ্রামে রাস্তায় ঘোরাফেরা বিষয়টি আমাদের ভালো লেগেছে বাচ্চাদের সব সময় প্রকৃতির সংস্পর্শে রাখতে হয়। অনেকদিন পর আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা হলে সেটা যে প্রেক্ষাপটেই হোক অবশ্যই মন ভালো হয়ে যায়। আশা করছি ব্যস্ততার মাঝেও এই দিনটি ছিল আপনার জন্য ভালো লাগার একটি দিন।
সময়টি আসলেই ভাল ছিল । তবে আরো বেশি ভালো হতো যদি নানি বেঁচে থাকত । যাইহোক তবে মন্দ কাটেনি সময়টা ।
প্রিয় মানুষগুলো যখন হারিয়ে যায় তখন তাদের কথা আরো বেশি মনে পরে। আসলে আমাদের জীবন এমনই। কখন যে কাছের মানুষগুলো হারিয়ে যায় তা বুঝতেই পারিনা। আপনার নানী থাকলে হয়তো আজ অনেক খুশি হতেন। কারণ আপনি আপনার পরিবারের সকলকে নিয়ে আপনার নানী বাড়িতে গিয়েছেন। আসলে যে বাড়িতে প্রিয় মানুষটি না থাকে সেই বাড়িতে গেলে অনেক সময় মন খারাপ হয়ে যায়। তবে যাইহোক আপনার নানী যেন ওপারে ভালো থাকে এবং মহান আল্লাহতালা উনাকে যেন বেহেস্ত নসিব করেন এই কামনাই করছি।
হুট করে কাছের মানুষ চলে গেলে , আসলেই স্থানটা ফাঁকা হয়ে যায় । যতভাবেই পূরণ করার চেষ্টা করি না কেন, সেটা আর আগের মতো পূর্ণ হয় না ।
আসলে এই পৃথিবী থেকে আমরা সকলে একদিন চলে যাব, কিন্তু প্রিয় মানুষগুলো হারানোর বেদনা কখনো ভোলা যায়না। আপনার নানী আপনার কাছে অনেক প্রিয় ছিল, এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো। তবে আপনার নানীর মৃত্যুতে আমার খারাপ লাগলো, যাইহোক আল্লাহতালা যেন তাকে জান্নাতবাসি করে এই দোয়া করি এবং নানির মৃত্যুর দোয়া মাহফিল উপলক্ষে খুবই সুন্দরভাবে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেন। আসলে রোজার মাসে খাওয়া-দাওয়া করালে অনেক বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। আল্লাহতালা যেন আপনাদের এই দোয়া মাহফিল কবুল করে এবং আপনার নানিকে যেন বেহেস্ত নসিব করে এই দোয়া করি।
ওপারে ভালো থাকুক আমার নানী, আপনি এই প্রার্থনা করেছেন, এতেই আমি খুশি হয়েছি ।
ভাইয়া, আপনার মনের জোর দেখে আমি কিছুটা হতভম্ব হয়ে গেলাম। কেননা আপনার নানী যেদিন মারা গিয়েছিল, সেদিনও আপনি হ্যাংআউট শোর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কতটা মনের বল থাকলে এরকম একটি দায়িত্ব পালন করা যায় তা আমার মাথায় আসছে না। আপনার পোস্টগুলো পড়ে যতই আপনাকে দেখছি ঠিক ততটাই মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছি। ভাইয়া আপনি আমার কাছে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে পরিচিত। আপনি খুব সহজেই সবকিছুকে সামলে নিতে পারেন, আবার কাউকে কখনোই তোয়াক্কা করেন না, আবার পিছু লোকে কিছু বলবে তার ধার ধারেন না, আপনার ইচ্ছামত স্বাধীন জীবন যাপন করেন এটা আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। আপনার নানীর জন্য আল্লাহর কাছে অনেক অনেক প্রার্থনা করছি তিনি যেন পরপারে শান্তি লাভ করেন। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
নিজের মত করে বাঁচতে শিখতে হবে ভাই। এটাই দিনশেষে মুখ্য কথা । তবে চিরন্তন সত্য কথাগুলো, মাঝে মাঝে মেনে নিতে হয় । চেষ্টা করছি মানুষ হওয়ার জন্য ।
আসলে নানী থাকলে শায়ান বাবুকে দেখলে কতোটা যে খুশি হতো তা জাস্ট বলার বাহিরে।ভালো লাগলো সব দেখে।
আমিও সেটাই ভাবছিলাম আপু । আসলেই তখন পরিবেশটা হয়তো একটু অন্যরকম হতে পারতো । তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস মেনে নিতে হয় ।
আনন্দ-বেদনা মুহুর্তে, আলোকচিত্রের ছড়াছড়ি,অনেক নতুন-পুরাতন অতিথীর উপস্থিতি, ভালমন্দ আলাপ- আলোচনা ও অভিজ্ঞতা, সব মিলিয়ে দারুন উপভোগের আধার অন্বেষণ। ভিষন কিছু।
সবার জন্য দোয়া রইল।
বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
আমি কৃতজ্ঞ আপনার মন্তব্যের কাছে । আশীর্বাদ করবেন আমার নানির আত্মার জন্য ।
মৃত্যু জিনিসটা যদি না থাকতো তবে মনে হয় জীবনের এত মূল্য থাকতো না?মৃত্যুই মনে করিয়ে দেয় জীবন মূল্যবান এবং জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত অনেক মূল্যবান।আর আমিও কিন্তু আপনার মত একজন বাস্তবমুখী মানুষ,আর আপনার চিন্তাভাবনা গুলোর সাথে আমার চিন্তাভাবনা গুলো প্রায় মিলে যায়।আর এজন্য আপনার লেখা গুলো ভীষণ ভালো লাগে আমার কাছে।আর শায়ান বাবুর মাথায় চুল উঠতেছে তাহলে আবার😍
ভালো লাগে তখন , যখন কোন গুণী মানুষের কাছ থেকে অনেক মূল্যবান মন্তব্য শুনতে পারি । চেষ্টা করছি বাস্তবতাকে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য । ধন্যবাদ