তামান্না হোটেলে একদিন || @shy-fox 10% beneficiary

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

IMG-20220826-WA0001.jpg

রনি সঙ্গে পরিচয় আমার প্রাইমারিতে পড়ার সময় থেকেই আর তারপরে মোটামুটি বেশ কয়েকটা বছর কেটে গিয়েছিল এবং তারপর আমি অন্য বিদ্যালয়ে চলে গিয়েছিলাম । আসলে এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে চলে যাওয়া মানে সেখানকার বন্ধুদের সঙ্গে অনেকটাই সম্পর্কে ভাটা পড়ে যায় । তবে এক্ষেত্রে রনির সঙ্গে খুব একটা বেশি সম্পর্কে ভাটা পড়েনি । কারণ তাদের হোটেল ছিল বিধায় টুকটাক মাঝে মাঝে খাওয়া-দাওয়া হতো সেখানে । এই জন্য ওর সঙ্গে এখনও সম্পর্ক বেশ ভালোই আছে ।

IMG-20220826-WA0003.jpg

IMG-20220826-WA0004.jpg

অবশ্যই সম্পর্কগুলো কোন কিছুকে কেন্দ্র করেই হয়ে থাকে । আর রনির সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার মূল কেন্দ্র ছিল ওদের ওই হোটেলটা । কারণ যদিও স্কুল ছাড়া হয়েছিল কিছুদিন পরেই । তবে বন্ধুত্ব ছিল বেশ ভালোভাবেই । কারণ ও বিকাল বেলা করে ওর বাবার হোটেলে বসতো আর আমরা মাঝে মাঝে যেতাম । হয়তো এজন্য ওর সঙ্গে সম্পর্কটা বেশ পরিপক্ক হয়েছিল আর তাছাড়া ক্রমাগত দেখা হতো বিধায় , মুখটাও ছিল বেশ পরিচিত ।

IMG-20220826-WA0005.jpg

IMG-20220826-WA0006.jpg

ব্যস্ততার কারণে নিজেই বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়েছি । আজ শুনলাম রনি নাকি বিয়ে করেছে , ওর নাকি পৌরসভাতে একটা চাকরিও হয়ে গিয়েছে । সে আর হোটেলে খুব একটা বেশি বসতে পারে না । কথাগুলো বলছিল রনির বাবা । যাইহোক বেশ ভালো একটা সময় কাটিয়েছি আজকের সন্ধ্যাতে, সেই দীর্ঘদিন পরে তামান্না হোটেলে। রনির সম্ভবত বড় বোনের নাম ছিল তামান্না । সেই সুবাদেই আরকি হোটেলটির নামকরণ করা হয় ।

IMG-20220826-WA0007.jpg

IMG-20220826-WA0016.jpg

কয়েকদিন থেকে হীরা বলছিল বাড়িতে বেশ বড্ড একাকীত্ব লাগছে আর তারপরেও বলছিল বাড়ির খাবার গুলোর প্রতি অনেকটাই অনিহা চলে এসেছে । মূলত তার বায়না সে বাইরে খাবে । আমি আসলে ব্যাপারটা খুব সহজেই বুঝতে পেরেছি । অতঃপর সন্ধ্যা বেলার ঠিক একটু আগেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে টানা সম্ভবত বেশ কয়েকদিন পরে বাইরে বের হলাম ।

IMG-20220826-WA0017.jpg

এই শহরে রিক্সায় চড়ে ঘোরার একটা আলাদা মজা আছে । বিশেষ করে যখন রিক্সায় চড়ে সন্ধ্যাবেলার দিকে বাহিরে ঘোরাফেরা করা যায় , তখন হিমশীতল বাতাসে বেশ ভালোই সতেজতা ভাব কাজ করে নিজের মাঝে । অতঃপর মিনিট দশকের ভিতরেই পৌঁছে গেলাম তামান্নাতে ।

IMG-20220826-WA0008.jpg

সেই চিরচেনা আঙ্কেলের মুখ । তবে চেহারায় বেশ পরিবর্তন চলে এসেছে হয়তো বয়সের ছাপ । তা বেশ ভালোভাবেই বোঝা যাচ্ছে । ওয়েটার ভাই কে বললাম , ভাইজান কষ্ট করে খুচরো বিশ টাকা দিয়ে রিক্সাটাকে বিদায় করে দিন । আমার কাছে খুচরো পয়সা নেই । আঙ্কেল বেশ ভালই খুশি হয়েছে । কারণ আমার সঙ্গে বাবু ও হীরা কে দেখে । আমিও পরিচয় করে দিলাম, আংকেলের সঙ্গে ওদেরকে ।

IMG-20220826-WA0013.jpg

IMG-20220826-WA0012.jpg

সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে ওদের হোটেলের খাবারের মেনুতেও পরিবর্তন এসেছে এবং ওদের হোটেলের অভ্যন্তরীণ ডেকোরেশন পরিবর্তন হয়েছে এবং সর্ব রকম সার্ভিস আগের থেকে অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে । কারণ ওরাও চেষ্টা করছে সময়ের সঙ্গে নিজেদেরকে একটু এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য । মোটামুটি ফাস্টফুড থেকে শুরু করে এখন সব ধরনের কমবেশি খাবার এখানে পাওয়া যায় এবং খাবারগুলোও বেশ স্বাদ যুক্ত ।

IMG-20220826-WA0015.jpg

IMG-20220826-WA0000.jpg

আমার তো শুরুতেই হোটেলে ঢুকতেই যে গরম গরম পরোটা ভাজা দেখছিলাম এবং সঙ্গে থাকা নান রুটি গুলো দেখে অনেকটাই খেতে ইচ্ছে করলো আবার এক পাশে রকমারি মিষ্টি সাজিয়ে রাখা হয়েছে এবং অন্য পাশে বিভিন্ন রকমের ফাস্ট ফুড এবং তাছাড়াও তো অন্যান্য খাবার আছেই । মোটামুটি হোটেলের ভিতরের পরিবেশটা একটু লোকজনে ভর্তি । কারণ এই সময়টা বেশ লোকজন হয় এখানে , এটা ভীষণ স্বাভাবিক ।

IMG-20220826-WA0019.jpg

IMG-20220826-WA0010.jpg

তারপরেও আমি যেহেতু ওদের পরিচিত । তাই আমাকে এক ওয়েটার ভাই বেশ কষ্ট করেই শেষের দিকে একটা ভালো টেবিল ম্যানেজ করে বসিয়ে দিল । মোটামুটি বাবু বেশ ভালোই ঝামেলা পাকিয়ে ফেলল আমাদের সঙ্গে । কারণ সে আসলে এত লোকজন দেখে অনেকটাই অস্বস্তি বোধ করছিল । তাও চেষ্টা করছিলাম ওকে স্থির রাখার জন্য । এবং মোটামুটি মেনু কার্ড দেখে অর্ডার করে ফেললাম হীরার আমার পছন্দের খাবার । আমি মূলত অর্ডার করেছিলাম, নান রুটি আর হালিম আর হীরা অর্ডার করেছিল মুরগির গ্রিল আর পরোটা ।

IMG-20220826-WA0018.jpg

আমি তো মোটামুটি দুটো নান আর সঙ্গে নেওয়া হালিম বেশ তৃপ্তি সহকারেই খেলাম । আর হীরাও বলল বেশ ভালই হয়েছে, এখানকার গ্রিলটি বিশেষ করে সঙ্গে যে সালাদ দিয়েছে সেটা বেশ ভালোই লাগছে খেতে এবং সেটাতে কাসুন্দি দেওয়া ছিল । যাইহোক এই সন্ধ্যাবেলায় এরকম ভাজাপোড়া জিনিস খেতে মোটামুটি ভালই লাগছিল ।

IMG-20220826-WA0009.jpg

অতঃপর খেয়েদেয়ে সঙ্গে হালকা সফট ড্রিংকস পান করে । মোটামুটি বিল মিটিয়ে বাড়ির পথে ফেরার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং আঙ্কেলের সঙ্গে হালকা আবারও কুশল বিনিময় করলাম এবং বললাম যে, সময় পেলে আমাদের বাসায় বেড়াতে আসার জন্য । সর্বোপরি যদি একটা কথাই বলি, দীর্ঘদিন পরে যেহেতু বাসা থেকে বের হয়েছি । বেশ ভালোই ছিল তামান্না হোটেলে কাটানো আমাদের সময়টা ।

Banner-3.png

ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

ভাই, এখনকার সবাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে চায় আর তাই হয়তো যুগ পরিবর্তনের সাথে সাথে তামান্না হোটেলেরও অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে ও ডেকোরেশন চেঞ্জ করেছে। তানাহলে তো কাস্টমার ওই রেস্টুরেন্টে যেতে চাইবে না। যাইহোক ভাই তামান্নার খাবারগুলো দেখে বেশ লোভনীয় মনে হচ্ছে, তাই খেয়েও নিশ্চয়ই খুবই স্বাদ পেয়েছেন। পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া এবং মুখরোচক খাবার খাওয়া আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। তাই আপনার পুরো পরিবার সহ সময়টা বেশ ভালই কেটেছে দেখে খুবই আনন্দিত হলাম। আপনার পুরো পরিবারের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

আমিও তো এমনটাই ভাবি ভাই , হোটেল ব্যাবসায় আসলে যদি সময়ের সঙ্গে তাল যদি না মেলানো যায় তাহলে অনেকটাই পিছিয়ে থাকতে হয় । এইটা একদম সত্য কথা বলেছেন ভাই ।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাই, কোন বন্ধু স্কুল পরিবর্তন করলে তার সাথে সম্পর্ক টাও কেন জানি একটু ভেঙে যাওয়ার মত হয়ে যেত। কারণ তার সাথে খুব একটা দেখা সাক্ষাৎ হতো না। তবে আপনি সেই বন্ধুর বাবার দোকান এসে খুব চমৎকার একটি সময় অতিবাহিত করেছেন। হীরা ভাবি ঠিকই বলেছে সব সময় বাসার খাবার ভালো লাগে না, মাঝে মাঝে ভাবিকে নিয়ে এভাবে খেতে যাবেন।

 2 years ago 

ভাই রিকশা করে ঘুরতে আমারও বেশ লাগে সন্ধ্যে বেলা। আঁধারের একটা আলাদা মায়া আছে। বড্ড আপন করে নেয়। ভাবির আবদার বেশ ভালোই বুঝতে পেরেছিলেন । সেই সুবাদে পুরোনো মানুষ জনের সাথেও কুশল বিনিময় হয়ে গেল। অনেক দিন গ্রিল খাই না। দেখে বেশ চুলকালো মুখটা 😊। ভালোবাসা রইলো ভাই।

 2 years ago 

তুই চলে আয় সময় করে , দুই ভাই মিলে আবারো গ্রিল খেতে যাবো ।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার এই পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আপনার বন্ধুর বাবার হোটেলটি দেখে বোঝা যাচ্ছে অনেক সুন্দর এবং পরিপাটি। খাবার গুলো বেশ লোভনীয়। আমাদের ছোটবেলার অনেক স্মৃতি হয়তো অনেক হোটেলের সাথেই জড়িয়ে আছে। যেখানে আমরা ছোটবেলায় পছন্দের খাবার গুলো খেতাম। মাঝেমাঝে যদি পুরনো স্মৃতিগুলো ফিরে পেতে পরিবার নিয়ে সেখানে খেতে যাওয়া হয় তাহলে খুবই ভালো লাগে। আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া।♥️♥️

 2 years ago 

হুম ওদের হোটেলের সুনাম অনেক আগে থেকেই। এইটা সত্য ওদের খাবার গুলোর মান ও স্বাদ আসলেই ভালো ।

 2 years ago 

রেস্টুরেন্টে গিয়ে খুবই মজাদার মজাদার খাবার খেয়েছেন আপনার শেয়ার করা ফটো গুলো দেখে খুব লোভ হচ্ছে।। খাবারের গুণগত মান ভালো ছিল দেখেই বোঝা যাচ্ছে আর সব থেকে বড় কথা হলো বন্ধুর বাবার হোটেল বলে কথা ভালো খাবার তো হতেই হয়।। তন্দুর রুটি আর গ্রিল খেতে বরাবরই আমার অনেক ভালো লাগে মাঝে মাঝেই খাওয়া হয় বন্ধুদের সাথে রেস্টুরেন্টে।। তবে বার্গার গুলো দেখে আমার বেশি লোভ হচ্ছিল মনে হচ্ছিল আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে আমারও ইচ্ছে করছিল নিয়ে খেতে শুরু করি।।

 2 years ago 

হুম ভালোই ছিল আমাদের সময়টা । আমরা ভালোই সময় কাটিয়েছি ।

 2 years ago (edited)

হ্যাঁ খাবারের মানটা খুব যে সুন্দর সেটা ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে আর আমাদের এখানে কলকাতাতেও হালিম টা বেশ সুন্দর হয়। সুন্দর বলতে আরসালানে তো খুবই ভালো হয়। যাইহোক, ভালো কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন দাদা।

 2 years ago 

আসলেই হালিমটা খেতে ভালোই লেগে ছিল । কারণ সঙ্গে গরম পরোটা আর নান রুটি ছিল এই জন্যই।

 2 years ago 

দেখে বোঝা যাচ্ছে ভাইয়া আপনার বন্ধুর বাবার রেস্টুরেন্ট অনেক সুন্দর ভাবে পরিপাটি করে সাজানো রয়েছে। রেস্টুরেন্টে গিয়ে অনেক মজাদার মজাদার খাবার খেয়েছিলেন আপনারা। আপনি হীরা আপু ও বাবু কিছু অনেক সুন্দর মুহূর্ত ওখানে কাটিয়েছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

হুম ওদের হোটেলের ডেকোরেশন বেশ ভালই এবং আমরা ভালই সময় কাটিয়েছি সেখানে ।

 2 years ago 

নান রুটি আমিও খুবই পছন্দ করি ভাই। বিশেষ করে বাহিরে গেলে শুধু সবজি দিয়ে নান রুটি খাই। যাইহোক ভাবি ও ছোট বাবাজী কে নিয়ে বেশ ভালোই সময় কাটিয়েছেন আপনার বন্ধুর বাবার হোটেলে। আপনার পরিবারের জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

আজকে আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলেই আপনারা মাঝেমধ্যে ভ্রমণে যান এবং বাইরে খাওয়া-দাওয়া করেন। বিষয় গুলো খুবই ভালো লাগে। তাই আপনারা আজকে তামান্না হোটেলে আসলেন। আর এই হোটেলের সৌন্দর্যময় পরিবেশন ভালই লাগল এবং আপনার বন্ধুর রনি এখন বিয়ে করেছে, আবার চাকরি হয়েছে বিষয়টি জেনে ভালো লাগলো। আপনার খুবই আনন্দময় মুহূর্ত পার করেছেন।শায়ান বাবু অনেক বড় হয়ে গেছে। সে এখন খাওয়া-দাওয়ার ভাগ নেয়া শুরু করবে। শুভকামনা রইল আপনাদের জন্য।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার পোষ্ট গুলো এজন্য ভাল লাগে যে আপনি এ টু জেট বিস্তারিত বলেন। যেমন তামান্না রেস্টুরেন্টের খাবার, নাম,মালিক,ফ্রেন্ড সব কিছুই জানতে পারলাম। পড়েও অনেক মজা লাগলো। শুধু কত টাকা বিল দিলেন সেটাই জানতে পারলাম না হা হা হা ধন্যবাদ।

 2 years ago 

খাবারের দাম সাধ্যের ভিতরেই ছিল ভাই । ধন্যবাদ আপনাকে ।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 68530.21
ETH 2695.40
USDT 1.00
SBD 2.72