ঘুরপাক
আমার শাশুড়ি কমবেশি প্রত্যেক সপ্তাহে আমাদের বাসায় আসে। যেহেতু বাসায় আমি, গিন্নি আর সঙ্গে আমার ছোট বাবু থাকি। তাই মূলত সপ্তাহের কয়েকদিন যেতে না যেতেই, আমার শাশুড়ির প্রতিনিয়ত আগমন হয়।
কারণ গিন্নি আমার প্রায়ই তার মাকে মুঠোফোন মারফতে বাসায় আসতে বলে। এই ব্যাপারটাকে আমি খুবই সাধারণ ও স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করি। কারণ আমাদের দুজনের সঙ্গে বাবু প্রতিনিয়ত যে পরিমাণ দুষ্টামি করে, তা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তির জন্যই মূলত আমার শাশুড়িকে ডাকা হয়। আর মজার একটা ব্যাপার হচ্ছে, বাবুর নানি বাসায় আসলেই, বাবু একদম ঠান্ডা।
যেহেতু এই মাসের প্রথম দিকে আমরা কয়েকদিন গ্রামে ছিলাম, তাই এই মাসের বাজার এখনও করা হয় নি। তাই আজ বাসায় আমার শাশুড়ির আগমন। একদম পুরো মাসের জন্য বাজার করা হয়েছে আজ। বিশেষ করে ভারী যে বাজার গুলো ছিল মানে মাছ-মাংস,তেল-ডাল-চাল, মসলা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। সবকিছুই আমার শাশুড়ি নিজে হাতে বাজার করে দিয়েছে।
আজকের লেখাটা যে কারণে লিখছি, সেটা হয়তো পড়ে আপনাদের কিছুটা হাসি লাগতে পারে। তবে আমি যা লিখছি, সেটা অনেকটাই চিরন্তন সত্য কথা লিখছি এবং আমার মনেহয় যে, প্রতিনিয়ত তো অনেক ধরনের লেখায় লিখি। যদি একটু সতর্কমূলক পোস্ট লিখি, তাহলে কমবেশি অনেকের উপকার হতে পারে। সেই চিন্তাধারা থেকেই আজকের লেখা।
আবহাওয়ার যে পরিবর্তন হচ্ছে, এটা নিয়ে নতুন করে আর বলার কিছুই নেই। এখন মোটামুটি বলা যায় যে, প্রতিনিয়ত বেশ ভালই গরম পড়ছে এবং যতই দিন গড়িয়ে যাচ্ছে গরমের তীব্রতা যেন ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। যাইহোক এ সময় মূলত রসালো খাবার খাওয়া ভালো। তবে অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার পরিহার করাই শ্রেয় ।
আমার শাশুড়ি গ্রাম থেকে আসার সময় প্রত্যেকবার দেশি মুরগি নিয়ে আসে। তাই বলা যায়, আমার শাশুড়ি আসলেই বাসায় বিরিয়ানি বা পোলাও রান্না হয়। যেহেতু এই খাবার গুলোর প্রতি আমার দুর্বলতা আছে, তাই হয়তো রান্না করা হয়ে থাকে।
আজকে সকাল বেলা আমি ঘুম থেকে ওঠার আগেই আমার শাশুড়ি বাসায় এসে বাজার করা শেষ করে, দুপুরের রান্নাও মোটামুটি শেষ করেছে। যাইহোক অতঃপর যখন ঘুম থেকে উঠে চোখের সামনে গরম গরম সাদা পোলাও আর দেশি মুরগির রোস্ট রান্না দেখেছি, তখন যেন ঘুম থেকে উঠেই আমার পেটের ভিতরে মোচড় দিয়ে উঠেছিল। কোন রকম নিজেকে সামলে, বাবুকে আদর করে, বসে গেলাম খাবার টেবিলে।
যেহেতু সকালের খাবার খাচ্ছি দুপুর বেলার দিকে, তাই মূলত বলা যায় ক্ষুধার তীব্রতা বেশ বেড়ে গিয়েছিল। আর যেহেতু লোভনীয় খাবার, তাই পরিমানের থেকে কিছুটা বেশি খেয়ে ফেলেছি।
দুপুর বেলা খাবারের পরে, শরীরটা অনেকটাই ভারভার লাগে, মনেহয় একটু বিশ্রাম নিতে পারলে কিছুটা শান্তি পেতাম। সেই চিন্তা থেকেই, মূলত শুয়ে পড়েছিলাম বিছানায়। তবে কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই মোটামুটি আমার অবস্থা কাহিল, হঠাৎ করেই পেটের ভিতরে ঘুরপাক শুরু হয়ে গিয়েছিল। বুঝতে পারলাম যে, আমার এতোটা পরিমান খাওয়া ঠিক হয়নি ।
বেশ কয়েকবার টয়লেটে যেতে হয়েছিল এবং মোটামুটি শরীরের অবস্থা বেশ ভালই কাহিল। কারণ শরীরে অনেকটাই পানি শূন্য হওয়ার মতো অবস্থা। লোভনীয় খাবারের প্রতি সীমিত লোভ থাকা ভালো, তবে অতিরিক্ত লোভ কোনভাবেই ভালো না। যেটার প্রমাণ আবারও পেয়ে গেলাম। আর তাছাড়া এই গরমের দিন এতো তৈলাক্ত খাবার আমার খাওয়াই উচিত হয়নি।
কতো ভালোভাবে সকালটা শুরু হল আর বিকেল বেলার দিকে হঠাৎ করেই শারীরিক অবস্থা এতটাই নাজুক হয়ে গিয়েছে যে, শেষমেষ বারবার খাবার স্যালাইন খেতে হচ্ছে। এখন যখন লেখালেখি করছি ,তখনও যে শরীরটা খুব একটা ভালো যাচ্ছে, তা বলবো না। তবে আগের থেকে এখন কিছুটা সুস্থ আছি। তবে এই যাত্রায় যে শিক্ষাটা পেলাম, সেটা হচ্ছে এই গরমের আবহাওয়ার সময় অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার গ্রহণ করা থেকে, বিরত থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।
যার যতটুকু প্রয়োজন, ঠিক ততটুকুই খাবার গ্রহণ করা উচিত। অবশ্যই আজকের রান্না ভালো ছিল। তবে অতিরিক্ত খাওয়াটা আমার মোটেও ঠিক হয়নি।
যাইহোক আমার জায়গা থেকে, আমার অভিজ্ঞতা মোটামুটি আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিলাম। সামনের দিনগুলোতে এবার প্রচুর পরিমাণে গরম পড়বে, যা ইতিমধ্যেই আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখে বোঝা যাচ্ছে। তাই চেষ্টা করুন, প্রচুর পরিমাণে ফ্লুইড বা তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করার জন্য। ভারী খাবার থেকে আপাতত কিছুটা দূরে থাকুন ।
সকলের সুস্থতা কামনা করছি, ভালো থাকুন সবাই।
ধন্যবাদ
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
মেয়েরা বিয়ের পরে শ্বশুরবাড়ি এসে তারা সবচেয়ে বেশি মিস করে তার মা এবং বাবাকে। হয়তো ভাবি মাকে না দেখে থাকতে পারে না তাই বারবার মুঠোফোনে আসতে বলে। যেহেতু আপনার ছেলে তার নানীকে দেখে শান্ত হয়ে যায় এর জন্যও হতে পারে। আপনার পোস্টগুলো পড়ে বুঝতে পারলাম শাশুড়ি আসলে বেশ খাওয়া-দাওয়া দিয়ে শুরু করে সবকিছুই একশ তে একশ। তবে একটা কথা ঠিক বলেছেন ভাই এই সময় ঠান্ডা গরম পড়ছে এবং চারিদিকে অনেক অসুখ হচ্ছে । এ বিষয়টি আমাদের সবাইকে গুরুত্ব ভাবে নেওয়া উচিত। বাসায় ভালো কিছু রান্না হইলে এমনিতে একটু বেশি খাওয়া পড়ে যায়। তবে বেশি খাওয়ার ব্যাপারে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে কারণ এটা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত খারাপ। ধন্যবাদ ভাই আপনার পরিবারের সমস্ত গল্পগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আপনার পরিবারের জন্য আপনার সন্তানের জন্য দোয়া রইল।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই, আমার অনুভূতি বোঝার জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
এ গরমে বেশি পরিমাণে পানি পান করা দরকার। এবং মশলা জাতীয় খাবার কম খাওয়া । আপনি সকাল বেলায় খালি পেটে তৈলাক্ত খাবার খাওয়া এবং বেশী পরিমাণে খেয়ে ফেলায় শরীর খারাপ হয়ে গেল। আপনার শ্বশুরিরও খারাপ লাগছে নিশ্চয়ই। তাই আমাদের এ গরমে সাবধান থাকতে হবে। তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে উঠেন এ কামনা করি। অনেক অনেক শুভ কামনা।
সত্যি বলতে ভাই বর্তমান সময়ে উল্টাপাল্টা কিছু খেলেই বিপদ। মানে যদি একটুখানি তেলমসলা খেয়েছেন তো পেটের অবস্থা খুব বেশি খারাপ হয়ে যাবে। তখন বন্ধুত্ব করতে হবে ওয়াশরুমের সাথে। তবে এই গরমের শুরুতেই যে হারে গরম পরছে পুরো গরম যখন পড়বে তখন কি অবস্থা হবে সেটাই ভাবছি। বর্তমান সময়ে কারেন্টের যে অবস্থা লোডশেডিং তো লেগেই থাকে। যাই হোক সবার সুস্থতা কামনা করছি।তার পাশাপাশি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন এই প্রত্যাশা করি।