সেই দিনের কাটানো সময় || @shy-fox 10% beneficiary
জীবনে বেঁচে থাকতে গেলে যে খুব বেশি কিছুর দরকার হয় , এটা নিছক ভুল কথা । আমি আসলে অল্পতেই সন্তুষ্ট । আমার কাছে জীবনটা এখন অনেকটাই স্পিন বলের মতো প্রক্রিয়া । এইতো খাচ্ছি, ঘুরছি আর লেখালেখি করছি । বেশ আছি, আমি কৃতজ্ঞ আমার জীবন নিয়ে।
সেদিন কেনাকাটা ও ঘোরাঘুরির পর্বে আমি বলেছিলাম যে, দ্বিতীয় পর্ব একটা শেয়ার করব আর সেখানে আমার ফ্রেন্ডস কিচেন রেস্টুরেন্টে কাটানো কিছু মুহূর্তের ঘটনা আপনাদের সঙ্গে আলোকপাত করবো । যাইহোক বন্ধুরা, আজকে সেই মুহূর্তগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব এবং সেই মুহূর্তের আলোকে কিছু মতামত লিখব , আশা করি ভালো লাগবে ।
আপনারা ইতিমধ্যেই জানেন যে , অর্থী কে আমি মায়ের আসনে স্থান দিয়েছি । আর তাছাড়া সবথেকে বড় ব্যাপার, ওদের দুই বোনকেই আমি অনেক স্নেহ করি । দীর্ঘ এক বছর থেকে ওদের দেখছি আর কিছুদিন পরেই ওরা দোতলায় চলে যাবে । তখন বড্ড একাকী লাগবে । বিশেষ করে ওদের হাতে বানানো চা, আমি খুব বেশি মিস করবো ।
সেদিন যখন আমি হীরা ও বাবু কেনাকাটার জন্য যাচ্ছিলাম, তখন অর্থী কে বললাম তুই যাবি মা আমাদের সঙ্গে । তখন ও বলল আঙ্কেল, তুমি আম্মুকে যদি ম্যানেজ করতে পারো । তাহলে আমার যেতে কোন সমস্যা নাই । সবথেকে বড় যে ব্যাপার, আসলে প্রত্যেকটা সন্তান তার বাবা-মার কাছে অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ । তারপরেও আমি বৌদিকে বললাম, বৌদি আপনার যদি কোন সমস্যা না থাকে তাহলে অর্থী কে আমাদের সঙ্গে ঘুরতে নিয়ে যেতে চাই ।
যদিও বৌদি প্রথমে একটু সংকোচ করছিল কিন্তু পরে আবার রাজি হয়ে গিয়েছিল । যদিও আমি ওদের দুই বোনকেই নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম । তবে ওর মা, শুধুমাত্র অর্থীকেই যেতে দিয়েছিল ।যাইহোক এই যাত্রায় হয়তো বৌদি একা একা বাসায় থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ খুব একটা করে না বিধায় তার বড় মেয়েকে আমাদের সঙ্গে যেতে দেয়নি ।
মোটামুটি কেনাকাটা করতে সন্ধ্যা লেগে গিয়েছিল আর তারপরে যখন ফ্রেন্ডস কিচেনে ঢুকলাম, সেখানে গিয়ে একটা ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা হলো । সামনে যেহেতু এসএসসি পরীক্ষা আছে, তাই এলাকার পরীক্ষার্থী ছেলেরা এখানে নিজেরা কিছুটা সময় কাটিয়েছে অনেকটা পার্টির মতো করে । যার কারণে রেস্টুরেন্টটা কিছুটা এলোমেলো ছিল এবং আমাদের সিট পেতে বেশ ভালই বেগ পেতে হয়েছিল । অবশেষে রেস্টুরেন্ট ক্লিন হওয়ার পরে ,আমরা মোটামুটি বেশ ভালোভাবে বসতে পেরেছিলাম ।
অর্থীর কাছেই খাবারের মেনু বুকটা দিলাম এবং বললাম তোর যেটা পছন্দ হয় মা, তুই সেটাই অর্ডার কর । যদিও ও প্রথমে একটু সংকোচ করছিল । তারপরে বলল যে ঠিক আছে আঙ্কেল, আপনাদের যেটা ভালো লাগে, সেটাই অর্ডার করুন । আমি আসলে ফ্রাইড চিকেন, ফ্রাইড রাইস , সালাদ ও কোক অর্ডার করলাম ।
অর্থী সম্ভবত এবার নিয়ে দ্বিতীয় বার এই রেস্টুরেন্টে এসেছে । তবে এবারের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণটাই ওর কাছে আলাদা । কারণ এর আগের বার এসেছিল ওর আব্বু-আম্মুর সঙ্গে আর এবার এসেছে আমাদের সঙ্গে। যাইহোক আমরা চেষ্টা করছিলাম , নিজেদের মতো করে সময় কাটানোর জন্য । যেহেতু এই সকল রেস্টুরেন্টে একটু খাবার আসতে সময় লাগে । তাই চেষ্টা করছিলাম আমরা নিজেরাই শায়ান বাবুর সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা করে বেশ ভালো সময় কাটানোর জন্য এবং সকলে মিলে সময়টাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছিলাম ।
আমার আসলে প্রতিনিয়ত বাইরে খেতে গেলে যে সমস্যাটা হয় , সেটা হচ্ছে আমাকে বাবুকে কোলে করে নিয়ে থাকতে হয় অনেকটা সময় পর্যন্ত । তারপরে যখন আগে আমার পরিবারের লোকজনের খাওয়া শেষ হয়ে যায় , তখন মূলত বাবুকে ওদের কোলে দিয়ে আমি নিশ্চিন্তে খেতে পারি ।
আসলে জীবনে সবকিছু মানিয়ে নিয়ে চলতে হয় । অর্থী আমাদের সঙ্গে এই প্রথম এসেছে । আমি মনে করি ও আমার অতিথি । তারপরেও ও আমার মা । ওকে বড্ড স্নেহ করি আমি । চেষ্টা করলাম, নিজের সন্তানের মত করেই তাকে আপ্যায়ন করার জন্য । ও বেশ খুশি হয়েছে আমাদের আপ্যায়নে । অতঃপর সকলে মিলে খাওয়া-দাওয়া করে , সেখানকার বিল মিটিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলাম ।
তবে মজার একটা ব্যাপার হচ্ছে, হীরা রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়েই রিক্সায় ওঠার আগে, সামনের যে কনফেকশনারির দোকানটা ছিল, সেখান থেকে ঐশীর জন্য বিস্কুটের প্যাকেট কিনে নিল এবং অর্থী কে বলল, তোকে তো আমরা হোটেলে খাইয়েছি । তবে তোর বোনকে তো কিছু খাওয়ানো হলো না । এ বিস্কুটের প্যাকেটটা নেওয়া হলো তোর বড় আপুর জন্য । অতঃপর সন্ধ্যা বেলার দিকে, সকলে মিলে রিক্সায় চড়ে বাসার উদ্দেশ্যে চলে আসলাম ।
আমরা জানি যে অর্থীর মা, অর্থীর জন্য চিন্তায় আছে । কারণ ওকে কখনো এর আগে একা কোথাও ছাড়েনি । তারপরেও যেহেতু আমরা ওদের প্রতিবেশী , আমাদের প্রতি একটা বিশ্বাস আছে । আমরা চেষ্টা করেছি, সঠিক সময়ে বাসায় ফিরে আসার জন্য এবং এসেই বৌদি কে বললাম, আপনার মেয়েকে ঠিকঠাক মতো পৌঁছে দিতে পেরে, আমরাও বেশ চিন্তামুক্ত হলাম ।
ওদেরকে আসলে আমি কখনোই , প্রতিবেশী চোখে দেখি না । অনেকটা নিজের পরিবারের লোক ভাবী । সত্য কথা বলতে কি, ওরা যখন সামনে মাসে নিচে চলে যাবে বড্ড খারাপ লাগবে । হয়তো বিকেল বেলার সময়টা নতুবা সন্ধ্যা বেলায় বিশেষ করে যখন আমার চা খাওয়ার সময় হয়, তখন বেশ মনে পড়বে ওদের কথাগুলো । তবে আমি মনে করি, সম্পর্ক গুলোর মাঝে দূরত্ব রাখা উচিত । তাহলে সম্পর্ক গুলো আরো বেশি নিবিড় ও গভীর হয় ।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আপনাদের সাথে অর্থী ঘুরতে যেতে পেরে যে অনেক খুশি হয়েছে তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ফ্রাইড রাইচ আমারও অনেক প্রিয় একটি আইটেম। বাইরে রেস্টুরেন্টে গেলে আমার প্রথম চয়েজ থাকে ফ্রাইড রাইচ। যাইহোক, সবাই মিলে ভালো একটা সময় কাটিয়েছেন তবে কিছু দিন পর থেকে শায়ানকে কুলে নিয়ে আর অপেক্ষা করতে হবে না। কারণ সে নিজেও তখন খেতে পারবে। তখন সবাই এক সাথেই খাওয়া শুরু করতে পারবেন।
বেশ মুখরোচক ও জনপ্রিয় একটা সেট মেনু খাবার এটি ভাই ।
আসলে ভাই সম্পর্কের মাঝে একটু দূরত্ব হলে সম্পর্কটা আরও ভালো থাকে। তবে বেশি দূরত্ব হয়ে গেলে সে সম্পর্কটা আর ভালো থাকা না। প্রায় শেষই হয়ে যায়। তাই বেশি দূরত্ব নয় অল্প একটু দূরত্ব সম্পর্কগুলো অনেক ভাল হয়। আপনি পাশের বাসার অর্থীকে নিয়ে ঘুরতে গেলেন এবং অর্থীর মা আপনার সাথে যেতে দিল। কারণ আপনার কাছে তার একটা বিশ্বাস আছে এবং আপনি খুবই ভালো মনের মানুষ।যাইহোক আপনারা অনেক সুন্দর মুহূর্ত পার করেছেন। খাওয়া-দাওয়ার মধ্যে দারুন সময় পার করেছেন এবং অর্থীকে ঠিকঠাক তার মায়ের কাছে পৌঁছাতে পেয়ে যেন অন্যরকম একটা শান্তি পেলেন। সত্যি খুব ভাল লাগলো, আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।
বেঁচে থাকুক সুন্দর সম্পর্ক গুলো এমনটাই তো প্রত্যাশা করি সব সময় ।
অর্থী বাবা - মা আপনাকে অনেক বিশ্বাস করে ও ভালোবাসে যার কারণে অর্থীকে আপনাদের সাথে যেতে দিয়েছেন। আর আপনি ও তাদের দুই বোন কে অনেক স্নেহ করেন।কতোটা ভালোবাসলে একজনকে মায়ের আসন দেওয়া যায় তা দেখে বুঝা যাচ্ছে। পরিবারের সাথে ঘোড়া ঘুরি কেনাকাটা অতঃপর খাওয়া দাওয়া বেশ বেশ সুন্দর সময় কাটিয়েছেন ভাইয়া।ছোট বাবুকে কোলে নিয়ে খাওয়া একটু কষ্ট হয়। তাই আপনি পরে একা হলে ও।রিলাক্সে খেয়েছেন।সুন্দর মহত্ত্ব কাটানো ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
অনেক ভাল লাগলো পড়ে ভাইয়া। সত্যি কথা মেয়েদের একা কোথাও কোন মা ই ছেড়ে দেয় না। কিন্তু আপনি, আপু সে বিশ্বাসটা অর্জন করতে পেরেছেন, দেখেই বোঝা যায়। কারন বিশ্বাস সবার উপর হয় না। আপনি বিশ্বাস করার মত ই একজন মানুষ। অনেক ভাল লাগলো সবাইকে। অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য ভাইয়া। ভাল থাকবেন, ভাল রাখবেন সবাইকে। ধন্যবাদ।
ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন সম্পর্কের মাঝে কিছুটা দূরত্ব থাকলে সেই সম্পর্ক সব সময় অনেক সুন্দর হয়। তবে অর্থী এবং তার পরিবার যদি আলাদা ফ্ল্যাটে চলে যায় তাহলে শায়ান বাবু অনেকটা কষ্ট পাবে। কারণ শায়ান বাবু তাদেরকে একেবারে আপন করে নিয়েছে। তার খুব মন খারাপ হবে। কি আর করার প্রয়োজনে হয়তো কিছুটা আলাদা থাকতে হয়। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর ভাবে এই পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন।
আমার কাছেও ঠিক এমনটাই মনে হয় আপু । একটু দূরত্ব তৈরি হলেও তাও যেন টিকে থাকুক সম্পর্ক গুলো বেশ পরিপক্ক ভাবে ।
শেষ দিকে দারুণ একটা কথা বললেন ভাই। আসলেই সম্পর্কের মাঝে একটু দূরত্ব রাখা ভালো। অর্থীর কথা আপনার পোস্টে বেশ কয়েকবার পড়েছি। বেশ শান্তশিষ্ট লক্ষী একটা মেয়ে। অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। অনেক সুন্দর গুছিয়ে লিখেছেন ভাই।
ধন্যবাদ ভাই আপনার সাবলীল ও সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
কথা গুলো মধ্যে আমি মত পোষোণ করি , কারন এটি বাস্তব। কাছে থাকলে কেউ মর্ম বুঝেও বুঝে না। যাই হোক । অর্থীকে বেশ খুশি লাগছিল তবে বরাবরের মত শাওন বাবুকে নিয়ে রেস্টুরেন্ট এ খাওয়া কষ্টটা আপনাদের অনেক প্রশান্তি দেয় বলে মনে করি ।শুভকামনা আপনার পরিবারের জন্য
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজ ছাড়া মানুষ চলতে পারে না। এই সমাজে চলতে ফিরতে নানাভাবেই নানান সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। এবং সেই সম্পর্কগুলো তিল তিল করে মনের গভীরে স্থান করে নেয়। একই স্থানে ,একসঙ্গে, একই ছাদের তলায় দীর্ঘদিন ছিলেন হঠাৎ করে তারা চলে গেলে মন খারাপ হওয়ারই কথা। কি করবেন করার তো কিছুই নেই। তবে সাধুবাদ জানাই আপনার ভালোবাসাকে। এভাবেই যেন কেটে যায় আপনার জীবন পরবর্তী সময় এই প্রত্যাশায় শুভকামনা আপনার জন্য।
আমি আপনার সঙ্গে সহমত পোষণ করছি ভাই । কিছু সম্পর্ক মধুর করে তুলে ধরার জন্য অবশ্যই দূরত্ব কে মেনে নেওয়া দরকার।
অন্যকে আপন করে নেয়ার মাঝে অন্য রকম সুখ আছে। অর্থী বাবা মা ছাড়া গেলেও আপনারা যে পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন তাতে আমার মনে হচ্ছে না তার খুব খারাপ লেগেছে। পরিবার নিয়ে বাইরে ঘুরা, খাওয়া, কেনাকাটা আমারও খুব পছন্দ। শায়ান কে খুব সুন্দর লাগছে আর শায়ানের জুতাগুলোর মত সেম আমার মেয়ের জুতা আছে। খাবারের ছবি ভাল ছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া আমাদের সাথে আপনার সুন্দর মুহুর্তগুলো শেয়ার করার জন্য।
বাহ্ ভাইয়া আপনার মন্তব্যের শুরুটা বেশ ভালো লেগেছে । আসলেই অন্য রকম একটা তৃপ্তি পাওয়া যায় ।
ভালই সময় কাটিয়েছেন ফেমিলির সাথে, শায়ন বাবুকে অনেক খুশি দেখলাম। সাথে অপনার মা অর্থীকেও। তারা তো নিচে যাচ্ছে এলাকা ছেড়ে তো আর যাচ্ছে না। সুতরায় টেনশের কিছু নেই । শায়ন বাবুকে তারা তাদের বাসায় নিয়ে খেলবে।আর আপনাকেও সময় মত চা- বিস্কুট খাওয়াবে হা হা হা বন্যবাদ ভাইয়া।
এইটা সত্য শায়ান ও অর্থী ঐ দিন দুজনেই বেশ খুশি ছিল ।