সময় রাত্রি বারোটা
যদিও আগে থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে ছিলাম যে, এবার নতুন বছর আগমন উপলক্ষে কোন জায়গায় যাবো না। এমনিতেই বাহিরে প্রচুর ঠান্ডা আর তাছাড়াও পরিবারে ছোট বাচ্চা আছে । সব কিছু বিবেচনা করে আরকি নিজেকে সংযত করে রেখেছি ।
একটা জিনিস খেয়াল করে দেখবেন, আমার আপনার চিন্তায় যেটা ভীষণ সহজ সাবলীল, অন্যজনের চিন্তায় সেটা একটু জটিলতা সম্পন্ন হতে পারে।
এই কথাটা বলার অবশ্য যথাযথ কারণ আছে। আসলে নিজের সমস্যা না হইলে কেউ অন্যের সমস্যা বুঝতে চায় না। হয়তো এমনটা আমিও আগে বুঝতে পারতাম না। তবে এখন নিজের সঙ্গে হয় বিধায় অনেক কিছুই বুঝতে পারি এবং অন্যকে বোঝানোর চেষ্টা করি। তবে কে শুনে কার কথা। সবাই ব্যস্ত, আপন মনে আপন গতিতে ।
অবশ্যই, নতুন বছর কে আনন্দ উৎসবের সঙ্গে গ্রহণ করা উচিত। তবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণের ভিতরে রেখে। আমি জানিনা, অন্যান্য জায়গার কি অবস্থা। তবে আমি যে জায়গাটাতে অবস্থান করছি, তার আশেপাশে আনন্দ উৎসবের নামে যেভাবে উচ্চস্বরের গান বাজনা আর আতশবাজির বিকট শব্দ প্রতিনিয়ত করা হয়েছে, যেটা আমার মত মানুষের কাছে বেশ ভালই বিরক্তকর ও শোচনীয় অবস্থা সৃষ্টি করেছিল ।
ঐ যে বললাম বাসায় ছোট বাচ্চা আছে। আমি আপনি বা আমরা,যারা বয়সে একটু পরিপক্ক আছি, তারা হয়তো অনেক কিছুই মেনে নিতে পারি বা সহ্য করতে পারি। কিন্তু ছোট বাচ্চারা তো অনেক কিছুই বুঝতে পারে না বা তাদের জীবনযাত্রা তো আর আমাদের মত না ।
বাবু সন্ধ্যেবেলাতেই ঘুমিয়ে গিয়েছিল, এমনটা আসলে প্রতিনিয়তই করে,যেটা ওর অভ্যেস। আজকেও ব্যতিক্রম করে নি। তবে রাত্রি ১২ টা বাজা মাত্রই আশেপাশের আনন্দ উল্লাসের মাত্রাটা এতটা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণহীন হয়েছিল, যাহাতে আমার ঘরের ভিতরের ছোট বাচ্চাটা বারবার ভয়ে কুঁকড়ে উঠছিল। একজন বাবা হিসেবে, আমি ভীষণ অসহায় হয়ে গিয়েছিলাম ঐ সময়ের জন্য।
আমি কোন কিছুতেই কাউকে নিষেধ করি না। তবে যদি সেটা সহ্যের বাহিরে চলে যায়, যদি সেটা মাত্রা অতিরিক্ত হয়ে যায়, তখন সেটা মেনে নিতে বেশ ভালোই কষ্ট হয়। এমন ঘটনা যদি আশেপাশের সব জায়গাতেই হয়, তাহলে এখান থেকে আসলে কে কি শিক্ষা গ্রহণ করেছে, এটা আমি জানিনা। তবে আমার অভিজ্ঞতা ভাল ছিলনা।
হয়তো জায়গাভেদে একেক জনের চিন্তাভাবনা বা আনন্দ উল্লাসের ধরনটাও আলাদা হতে পারে। তবে মানবিক ও পারিপার্শ্বিক ব্যাপার চিন্তা করেও হয়তো অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণে রেখে করা যায় ।
পুরো আকাশ জুড়ে এত বিকট শব্দ আর ক্রমাগত উচ্চস্বরের গান বাজনাতে বাবু আমার কোনভাবেই নিজেকে সামলে নিতে পারছিল না। হয়তো তাদের আনন্দ উল্লাসের কাছে, আমার বাচ্চার দু ফোঁটা চোখের জল কিছুই না।
সত্যিই আমি কারো দোষ দেবোনা । তবে ঘুনে ধরা সমাজের পরিবর্তন হওয়াটা খুবই জরুরী ।
আমিও হয়তো চেয়েছিলাম যে, আনন্দ উল্লাস করেই বছরটা শুরু করব এবং ঠিক সেভাবেই হচ্ছিল সবকিছু। তবে হুট করেই যখন বাসার ভিতরে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছিল তখন আসলে আনন্দ উল্লাসটা আমার মুহূর্তেই ফিকে হয়ে গিয়েছিল।
তারপরেও বলবো, আমার কোন অভিমান নেই, কোন অভিযোগ নেই, সবার সময়টা ভালো কাটুক, আগামীটা আরও সুন্দর হোক। নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইল সকলের জন্য।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
রুমের ভেতরে দরজা জানালা সব আটকানো ছিল বলে বাইরের আমেজ অত বুঝতে পারিনি। তবে গ্রামে এতটা জাঁকজমক ভাবে কোন অনুষ্ঠান হয় না। শহরের প্রতিটা গলিতে রাত বারোটার পর থেকেই হইহুল্লা শুরু হয়ে যায়। অনেকের কাছেই এটা মজা লাগে আবার অনেকেই এই কাজে বিরক্ত বোধ করে। কারো ছোট বাচ্চা থাকতে পারে, কারো বাসায় অসুস্থ মা-বাবা থাকতে পারে তাদের সমস্যা হতে পারে তাই এ বিষয়ে একটু খেয়াল রাখা দরকার। যেমন একটি ভিডিও দেখলাম সকালবেলায় যেখানে আতশবাজি ফোটানোর কারণে ঝাকে ঝাকে পাখি সেখান থেকে রাতের অন্ধকারে উড়ে যাচ্ছে। এই কাজে শুধু কিছু মানুষ বিরক্ত বোধ করে এটা নয়, নিরীহ পাখিগুলো তো বিরক্ত বোধ করে সে জায়গা ত্যাগ করে চলে যাচ্ছে।
আমার মনে হয় এই উৎসবের জন্য ছেলেমেয়েরা একটু অতিরিক্ত করে ফেলে। তাদের এই উৎসবের জন্য অসুস্থ ব্যক্তি ও ছোট বাচ্চারা অনেক আতঙ্কে থাকে। যে বিষয়টা একদমই ভালো লাগেনা। অতিরিক্ত কোন জিনিসই ভালো না। ঠিক বলেছেন আপনি ঘুনে ধরা সমাজের পরিবর্তন খুবই প্রয়োজন।
এই পৃথিবী বড় অদ্ভুত কারো চিন্তার সাথে কারো চিন্তা মেলে না। আমার কাছে যেটা সহজ অন্যের কাছে সেটা সহজ নাও হতে পারে। আসলে ভাইয়া আমাদের সমাজটা এমনি করো ভালো কেউ দেখতে পারে না।নিউ ইয়ার হোক কিংবা যেকোন অনুষ্ঠান হোক আনন্দ করা উচিত, তবে সেই আনন্দে যেন কারো ক্ষতি না হয়, সেদিকে একটু খেয়াল রাখলে আর কোন সমস্যা হয় না।কিন্তু আমাদের সমাজ করে তার উল্টো। যাইহোক ভাইয়া কিছু মানুষ এমন করবে এটাই স্বাভাবিক। পুরানো দিনের সকল গ্লানি মুছে নতুন বছরকে স্বাগত জানাই।
ঢাকা ডিএমপি থেকে আগেই বলা হয়েছিল,আকাশে ফানুস, ফটকা উড়ানো যাবে! কারণ গতবার একজনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল! কিন্তু কে শুনে কার কথা! আমরা বাঙালি, এসব দেখার টাইম কই!! একে একে নতুন বছরকে বড়ণ করে নেয়ার জন্য আকাশে আতশবাজি আর ফটকা ফুটাতে ব্যস্ত! কিন্তু তারা জানেনা, অনেকের যে সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে। নতুন বছরে তাদের মানসিকতার পরিবর্তন হোক এমনটাই কামনা করছি।
আপনি ঠিক বলেছেন নিজের সমস্যা না হলে অন্যের সমস্যাটা মানুষ বুঝতে পারেন। আপনার পোস্টটি পড়ে বুঝতে পারলাম আপনার বাবুকে কালকে রাত্রে বেশ ভালোই বেগ পেতে হয়েছিল। আসলে আমাদের সবারই নিজের নিজের স্বাধীনতা আছে। তবে সেগুলো ভোগ করতে গিয়ে জেনে অন্যের স্বাধীনতাই হস্তক্ষেপ না হয়,সেই বিষয়ে আমাদের আগে থেকে নজর দেয়া উচিত। দোয়া করি যেন সবার মন-মানসিকতা পরিবর্তন হয়ে যায়। এবং আনন্দ উল্লাস করতে গিয়ে যেন অন্যের স্বাধীনতা হস্তক্ষেপ না কর। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এই সুন্দর পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
এটাই নিয়ম এখনকার সমাজের,দিন যত যাচ্ছে ততই যেন সব কিছু নিজের হাতের আর কথার বাহিরে চলে যাচ্ছে। দেখতে বিষয়গুলো খারাপ লাগলে ও কিছু করার নেই। তবে শায়ান বাবুর কথা শুনে কষ্টটা একটু বেশিই লেগেছে।
আমাদের সমাজের মানুষগুলো কখনো অন্যের সমস্যা বুঝতে চায় না। আসলে তারা নিজের আনন্দ উল্লাস কে বড় মনে করে। চারপাশের মানুষগুলোর কথা চিন্তা করে না। তাদের যে সমস্যা হতে পারে সেটা কখনো ভেবেই দেখেনা। বিশেষ করে বাচ্চাদের যে কষ্ট হয় তা কখনো ভেবেই দেখেনা তারা। আতশবাজি বা বিভিন্ন বিকট শব্দের বাজি ফাটানো আর উচ্চ ভলিউমের গান বাজানো সবকিছু যে ছোট বাচ্চাদের মানসিক চাপের মধ্যে ফেলে দেয় সেটা তারা বুঝতেই পারেনা। আসলে মাঝে মাঝে আমরা হয়তো তাদের কাছে অসহায় হয়ে যাই। কিছুই করার থাকে না। কারণ তারা কখনো অন্যের সমস্যা অনুভব করার চেষ্টাই করেনা।
কে শুনে কার কথা। সবাই ব্যস্ত, আপন মনে আপন গতিতে ।
কথাটির বাস্তবতা অনেক গভীরভাবে স্পর্শ করে।