ঝিলের পাড়ে কিছু সময়
আমাদের এই মুহূর্তটা সেদিন বিকেল বেলার। সেদিন হয়তো বলেছিলাম সবিতা দিদির দোকানে যেদিন আমরা খাইতে গিয়েছিলাম, ঐ দিনই মূলত বিকেল বেলায় আমরা এই ঝিলের পাড়ে সময় কাটিয়েছিলাম।
এই ঝিলের পাড়কে কেন্দ্র করে আমার শৈশব জীবনের বহু স্মৃতি এখানে বিজড়িত আছে। যেহেতু ছোটবেলা থেকেই এই শহরে বড় হয়েছি, তাই এদিকটাতে প্রায়ই আসা হতো।
আগে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে প্রতিদিন রোজ বিকেলে এখানে আড্ডা দিতাম এবং বিশেষ করে শৈশব কালে বন্ধুরা মিলে গরমের দিনে এই ঝিলের পানিতে মাঝে মাঝেই গোসল করতাম। তবে আজ সেই সকল কথা সবই অতীত।
গত কয়েকদিন থেকে মোটামুটি বেশ ভালই বৃষ্টি হচ্ছে। তাই ঝিলের পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে, অনেকটা নতুন পানির আগমন। তাছাড়া আমরা সেদিন যে সময় গিয়েছিলাম, ঐদিনও আবহাওয়া মেঘাচ্ছন্ন ছিল আর চতুর্দিকটা এতটা পরিমাণ সবুজ যা এমনিতেই প্রকৃতিপ্রেমীদের মনটা ভরে তুলবে।
এই ব্যস্ততম শহরের মাঝে এই ঝিলের পাড়ের এলাকাটাই একটু নিরিবিলি জায়গা। যেখানে আসলে মানুষ বুক ভরে বিশুদ্ধ অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে। শহরের মতো এতোটা কোলাহল যুক্ত পরিবেশ এই দিকটাতে নেই। অনেকে নিজেদের মতো করে এখানে সময় কাটায়। কেউ কেউ সময় পেলে নৌকো নিয়ে ঝিলের পানিতে ঘুরে বেড়ায়।
যদিও আমাদের তেমনটাই ইচ্ছে ছিল, তবে শেষমেশ তা আর হয়ে ওঠেনি, এমনিতেই সময় স্বল্পতা আর বাবুর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই নৌকায় উঠিনি। একটা বিষয় বারবার ভাবছিলাম, আগে বন্ধু-বান্ধবরা সবাই মিলে এই ঝিলের পাড়ের রাস্তায়, ব্রিজে কত যে বসে আড্ডা দিয়েছি হোক সেটা বিকেলে-সন্ধ্যায় নতুবা সময়-অসময়ে তার কোন হিসেব নেই। তবে আজ যখন পুরো পরিবার নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছি, তখন সেসব দিনের কথা ভাবছিলাম আর পুরনো স্মৃতির মাঝে নিজেকে কিছুটা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছিলাম ।
ছেলে আমার বেশ খুশি হয়েছিল ঝিলের পাড়ের উপর বেঁধে রাখা ছাগলের সঙ্গে খেলা করে। তবে একটা বিষয় নিয়ে আমি খুবই চিন্তিত আছি, যেভাবে প্রতিনিয়ত অপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো গড়ে উঠছে আর কত বছর যে এই ঝিলটা থাকবে, সেটাই কিছুটা ভাবনার বিষয় ।
আমরা প্রকৃতিটাকে এমনভাবে ধ্বংস করে ফেলছি এবং প্রত্যেকটা জায়গায় এমনভাবে অপরিকল্পিত ভাবে অবকাঠামো গড়ে তুলছি, তাতে সত্যিই প্রকৃতি অসহায় হয়ে গিয়েছে, আমাদের কাছে। বাড়ির ছাদে গাছ লাগানো বা ছাদ বাগান করাকে অবশ্যই আমি সাধুবাদ জানাই, তবে তা অপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো নির্মাণ করে বা বনভূমি উজার করে বা প্রকৃতিকে ধ্বংস করে নয়।
আমি যখন এই শহরে বড় হয়েছি, তখন অনেক ফাঁকা জায়গা ছিল, অনেক খেলার মাঠ ছিল। তবে সেসব আজ আর নেই বললেই চলে এবং এই ঝিলটাও বেশ বড় ছিল, তবে সময়ের পরিবর্তনে এখন ঝিলের অনেকটা অংশ দখল হয়ে গিয়েছে এবং সেই জায়গা গুলোতে অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। সত্যিই অনেক দুশ্চিন্তায় আছি, আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বেড়ে ওঠা নিয়ে।
যাইহোক প্রকৃতির প্রতিশোধ কিন্তু বড্ড নিষ্ঠুর, তাই প্রকৃতি কে তার আপন গতিতে চলতে দেওয়াই শ্রেয়। যদি আপনার ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুন্দরভাবে বেড়ে তুলতে চান, তাহলে অবশ্যই প্রকৃতিকে বাঁচানোর চেষ্টা করুন।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
শৈশবের স্মৃতি ঘেরা জায়গা গুলোতে যেতে আসলেই খুব ভালো লাগে। ঝিলের পাড় টা অনেক বেশি সুন্দর। আমাদের সায়ান বাবু তো দেখছি খুব খুশি। সবাই মিলে খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন ঝিলের পাড়ে। আসলে বড় বড় অবকাঠামো গুলো আমাদের এই সুন্দর প্রকৃতি গুলোকে ধ্বংস করে ফেলছে। যা আমাদের জীবনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বেশ ভালো লাগলো। মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলেই শায়ান বাবু বেশ খুশি হয়েছিল ঐ জায়গাটাতে গিয়ে। আর আমরাও সময়টা বেশ ভালোই কাটিয়েছিলাম।
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1671477247700766721?t=w8j1pHKOLRowy9_RhpA9iQ&s=19
আপনার মত সবাই যদি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করত তাহলে সবকিছুই আরো সুন্দর হতো এবং সবাই পরিবেশ রক্ষা করার চেষ্টা করত। আসলে একটা সময় খোলা মেলা মাঠ, নদীর পাড় সবকিছুই ছিল। সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই হারিয়ে যাচ্ছে। ছোট বাচ্চাদের খেলার জায়গাও হারিয়ে গেছে। দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া সবাইকে নিয়ে এত সুন্দর জায়গায় ঘুরতে গিয়েছেন এবং ফটোগ্রাফি করেছেন।
সত্যি বলতে কি আপু, আমার এই শহুরে জীবনটা আর ভালো লাগেনা। সেরকম যদি সামর্থ্য থাকতো, তাহলে অনেক আগেই গ্রামে চলে যেতাম।
আমি প্রথমেই বলবো আপনার ফটোগ্রাফি গুলোর কথা। বেশ দারুন লাগছে প্রকৃতি ঘেরা পরিবেশের প্রতিটি ছবি। তবে ভাবছি সবাই যদি আপনার মত করে চেষ্টা করতো তাহলে হয়তো পৃথিবীর অবস্থা এমন হতো না। আর পরিবার নিয়ে এমন জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার আইডিয়াটা কিন্তু খারাপ না। এতে করে প্রকৃতির প্রেমে হৃদয় স্নিগ্ধ হয়।
বর্তমান অবস্থার জন্য আমরা দায়ী, তবে আমরা চাইলেই কিন্তু এই অবস্থার পরিবর্তন করতে পারি।
আপনার বহু স্মৃতি বিজড়িত ঝিলের পাড়ের দৃশ্যটি দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আসলে এরকম সুন্দর জায়গায় কাটানো মুহূর্তটুকু নিশ্চয় আপনাদের খুবই আনন্দের ছিল। আর ঝিলের পাড়ে বেঁধে রাখা ছাগলের সাথে শায়ান বাবুর খেলা করার দৃশ্যটি দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। ছেলের পাড়ে কাটানো অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য প্রিয় ভাইয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।