মিষ্টি সকাল
বহুদিন পরে একটা স্নিগ্ধ সকালের পরশ পেলাম । ঠিক কতদিন পরে , এটা সঠিক বলতে পারবো না । তাও তো মাস দুয়েক পরে হবে । গত দিন যদি হুট করে গ্রামে আসার সিদ্ধান্ত না নিতাম, তাহলে মনে হয় এমন একটা মুহূর্ত দেখতে আরও অনেকটা সময় লেগে যেত ।
শহরের যান্ত্রিক কোলাহল , সেই ঘরবন্দী জীবন, আমাকে যেমন খুব একটা টানে না, তেমন গ্রামে এসে একদম প্রকৃতির মাঝে নিজেকে উজাড় করে দিতে বড্ড ভালোই লাগে । এটা একটা ভিন্ন রকম অনুভূতি। যা আসলে মুখে প্রকাশ করা বেশ কঠিন ।
হঠাৎ কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া , তা আসলে বলাবাহুল্য । হয়তো একদম গৃহবন্দী থেকে হাঁপিয়ে উঠেছি তাই একটু পরিবেশের পরিবর্তন দরকার বিধায় এমন গ্রামীণ পরিবেশ আমাকে টানছিল বড্ড আপন করে ।
সেটা আর অন্য কোথাও না, সেই ফেলে আসা জীবনের ছোট্ট গ্রামে । যেখানে আমার জীবনের বিগত সময়ে দেড়টা বছর কাটিয়ে দিয়েছিলাম, এক কথায় আমার শ্বশুর বাড়িতে । এ যাত্রায় অবশ্য আমার থেকে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেছিল, আমার সহধর্মিনী । হয়তো রোজ ফোনে মায়ের সঙ্গে কথা বলে বিধায় তার এমন আগ্রহ প্রকাশ হয়েছিল । তাছাড়াও এমনটা হওয়া ভীষণ স্বাভাবিক ।
এখানে আসার পরে প্রথমত যে প্রশ্নের সম্মুখীনটা বেশি আমাকে হতে হয়েছিল, সেটা হচ্ছে এখন বাবা তুমি কি করছো । বেশ বিরক্ত লাগে , এই কথাটা শুনলে । তারপরেও একদম সোজা উত্তর, বলে দেই কিছুই করি না । মানুষজন দেখি আর চুপচাপ থাকি । অনেকে তো ফিসফিস করে বলাবলি করে, মনে হয় জামাইয়ের অন্য কোন ঝামেলা হয়েছে , তাই হয়তো এমন কথা বলে ।
আসলে এই গ্রামের বাজারে দীর্ঘ সময় ডাক্তারি করেছি । যার কারণে তাদের এমন চিন্তা-ভাবনা । এটা হওয়া নিতান্তই স্বাভাবিক । কারণ ডাক্তারি পেশা ছেড়ে দিয়েছি বহু আগেই। হয়তো এমন ভাবনা থেকেই তারা এমন কথা বলে । যদি তাদেরকে বলি , লেখালেখি করি । তাহলে হয়তো সহজ সরল মানুষগুলোকে তা বলে বোঝানো বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে । তাই বলেই দেই কিছুই করি না , খাই-দাই আর ঘুমাই ।
এখানে থাকলে ঘড়ির দিকে আমাকে তাকাতে হয় না । এই ভোরবেলা যখন হিম শীতল বাতাস জানালা দিয়ে ফিরফির করে আসছিল , তখন আমি বুঝতে পেরেছি , এখন সকাল হয়ে গিয়েছে। কারণ চতুর্দিকে পাখির কিচিড়-মিচিড় আর সঙ্গে সহজ সরল মানুষ গুলোর হালকা কথোপকথনের সেই আওয়াজ । যা কিনা সহজেই ঘুম ভাঙানোর জন্য যথেষ্ট। এই মানুষগুলোর জীবন সত্যিই অনেকটা আলাদা । কারণ তাদের কাছে সকালটা শুরু হয় একদম ভোর রাত থেকে ।
সকাল যেহেতু হয়েই গিয়েছে , তাই ঘুম থেকে উঠতেই একদম উষ্ণ অভ্যর্থনা । সেই গরম ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠা এবং সঙ্গে খেজুরের গুড় । এদিকে শীত একটু দ্রুতই নেমে যায় । এখনো শহরে যেখানে ফ্যান ছেড়ে দিয়ে দিব্যি ঘুমিয়ে থাকতে হয় আর সেখানে এই গ্রামীণ অঞ্চলে সকালবেলা জানালা খুলে বাহিরে তাকিয়েই দেখি চর্তুদিক একদম কুয়াশায় ঘেরা ।
এটা যে শীতের আগমনী বার্তা , তা হয়তো নির্দ্বিধায় বলে দিলাম । কারণ এদিকে সবকিছু একটু দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যায় । যা হয়তো সেই কংক্রিটের শহরে খুব একটা ভালোভাবে বোঝা যায় না । ঋতুর যে পরিবর্তন হয়েছে এবং শীতের যে আগমনী বার্তা , তা বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করলাম এই মিষ্টি সকালে ।
থেকে যাই দু-তিনটে দিন । হয়তো ভিন্ন রকম কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরতে পারব আবারও সেই কংক্রিটের শহরে । আপাতত একটু এই গ্রামীন পরিবেশে নিজেকে বিচরণ করতে চাই । বেশ ভালো ছিল আজকের সকালটা , একদম সতেজ ও প্রাণবন্ত।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আসলে ভাইয়া মানুষের সমস্যা বেশি অন্যের জীবনে কি হচ্ছে তা নিয়ে।তাই আপনি চুপচাপ থাকলেও আপনাকে এসে খুঁচিয়ে জিজ্ঞেস করবে আপনার বর্তমান অবস্থা।এজন্যেই আমি খুব দূরে থাকি আত্বীয় থেকে। আর গ্রামীণ পরিবেশের তুলনাই হয়না আসলে।
এমনটাই তো চলছে পারিপার্শ্বিক অবস্থাতে আপু । তাই চুপ করে থাকি ।
ভাইয়ার শ্বশুর বাড়ি এলাকা তো অনেক সুন্দর।একদম চোখ জুড়ানো সবুজের মেলা।ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে এরকম সবুজ প্রকৃতি দেখলে সারাদিন এমনিতেই ভাল যাবে।অনেক ভাল লাগল আপনার অনুভূতি পড়ে।আর ফটোগ্রাফ গুলোও সুন্দর হয়েছে।ধন্যবাদ আপনার সুন্দর অনুভূতি আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।
গ্রামের পরিবেশ সত্যিই অনেক ভাল লাগে। চারিদিকে সবুজ দেখলে মনটা হারিয়ে যায় সত্যি। একথা সত্যি সবাইকে বলে বোঝান যাবে না, লেখালেখি করি।শহরের শিক্ষিত মানুষই বুঝতে চায় না, আর ত গ্রামের সহজ সরল মানুষ।যাই হোক ভাইয়া, আপনার ভাপা পিঠার কথা শুনে আমার নিজেরই খেতে ইচ্ছে করছে। 🥰 অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।
এইটা কিন্তু ঠিক বলেছেন আপু , লেখালেখির বিষয়টা আসলে অনেক শিক্ষিত মানুষকেই বোঝানো বেশ কষ্টসাধ্য। তবে ভাপা পিঠার দাওয়াত চাইলেই কিন্তু আপনি নিতে পারেন । দাওয়াত দিলাম আপনাকে ।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। 🙏😊
হুম ভাই এই তিনটে দিন একটু কোলাহল থেকে মুক্ত থাকি , তারপর না হয় আবারও ফিরব সেই কংক্রিটের শহরে । আপাতত উপভোগ করি সময়টা ।
মিষ্টি সকালটা না যতটা ভালো লাগছিল তার চেয়ে আপনার কথাগুলো ।আমি মনে হচ্ছে কোন বইতে পড়ছি। এত সুন্দর ভাবে মিষ্টি সকাল কে আপনি স্বাগত জানিয়েছেন ।আসলে শ্বশুরবাড়িতে এসে বেশ উপভোগই করছেন দেখছি। আর শহরের ব্যস্ত জীবনকে ছেড়ে যখন কেউ হঠাৎ করে গ্রামে আসে তখন তাদের কাছে গ্রামের এই সৌন্দর্য অমলিন লাগে। আমরা অবশ্য প্রতিনিয়ত গ্রামে থাকতে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি তবুও গ্রামকেই বেশি ভালোবাসি।
সত্যিই বলেছেন ভাইয়া শহরের যান্ত্রিক কোলাহল , ঘরবন্দী জীবন থেকে গ্রামের প্রকৃতির পরিবেশ অনেক ভালো। গ্রামের মানুষ এমন প্রশ্ন করবে স্বাভাবিক, যেমন এখন বাবা তুমি কি করছো? আপনাকে তো আরো করবে, কারণ আপনি সেখানে ডাক্তারি করেছেন বহুদিন। । আর ফিসফিস করে কিছু বলা এটা গ্রামের মানুষের একটা অভ্যাস বলা চলে।চতুর্দিকে পাখির কিচিড়-মিচিড় আর সঙ্গে সহজ সরল মানুষ গুলোর হালকা কথোপকথনের আওয়াজে ঘুম ভাঙা স্বাভাবিক । আর গ্রামের মানুষের সকালটা ভোর দিয়েই শুরু হয়।আপনি খেজুরের গুড়ের দারুণ ভাপা পিঠা খেয়েছেন।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ মিষ্টি সকালের অনুভূতি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু ,কারণ আপনি খুব সহজেই আমার মনের অনুভূতি বুঝতে পেরেছেন।
মাঝে মাঝে ইট পাথরে ঘিরা দেয়ালের মাঝে বন্দী থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠি। মনে হয় যেন দেয়ালের ইট গুলো মুক্ত হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তাই তো প্রাণ খুলে শ্বাস নিতে পারি না। সত্যি কথা বলতে মাঝে মাঝে গ্রামে গেলে সত্যিই ভালো লাগে। আর যেই বাড়িতে আপনি বেশ কিছু তিন কাটিয়েছেন তাইতো সেই জায়গাটি অবশ্যই আপনার অনেক প্রিয়। হিরা আপুর বাবার বাড়িতে গিয়ে আপুও নিশ্চয়ই অনেক খুশি হয়েছে। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে শায়ান ওর নানি মনির কাছে থাকতে অনেক পছন্দ করে। সেও নিশ্চয়ই অনেক খুশি হয়েছে। আপনি আপনার নিজের ডাক্তারি পেশা ছেড়ে দিয়েছেন এসব আসলে গ্রামের লোক গুলোকে বোঝানো সত্যিই অনেক কঠিন। তবে যাই হোক গ্রামে সুন্দর সময় কাটুক এই কামনাই করি।
আসলে আপনার ভাবির জন্যই মূলত হঠাৎই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া আপু । হুম ও বেশ খুশি হয়েছে আপু ।
গ্রামের মানুষদের আবার এগুলো নিয়ে চুলকানি বেশি। আমি যায় করি তাতে কী হে। যাইহোক শহরে জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে গ্রামে গিয়েছেন এটা দেখে ভালো লাগল। মন মাইন্ড ফ্রেশ হয়ে যাবে আশাকরি। গ্রামে শীত প্রায় আগত বলা যায়।
শীতের শুরুতেই তাহলে ভাপা পিঠা খাওয়ার উদ্বোধন করেই ফেললেন হাহা।
আসলে গ্রামে পাখির কলোধনিতে ঘুম থেকে জেগে উঠা কি যে প্রশান্তির এটা ভাষায় প্রকাশের না।আর দুই একদিন থাকবেন কেনো একটু বেশি সময় নিয়েই থাকেন নাহলে তো শীতকালীন আমেজটা শহরে গিয়ে পাবেন না☺️।
ইচ্ছা তো ছিল , তবে এখানে নেটওয়ার্কের বেশ ঝামেলা রে ভাই । কাজ করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে । ধন্যবাদ তোমার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ভাই ।
আসলে ভাইয়া,গ্রামের সহজ-সরল মানুষগুলো কিচ্ছু বুঝে না বিদায় বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন করে,আর প্রশ্নের উওর যদি তাদের মনমতো না হয় তাহলে বিভিন্ন চিন্তাভাবনা করতে থাকে। যাইহোক ভাইয়া, গ্রামের পরিবেশটা আসলে খুবই সুন্দর।শহরে কংক্রিটের দালান কোঠা থেকে যখন হাপিয়ে উঠি আমরা তখন একটু প্রকৃতির পরশ পেতে গ্রামে সবুজ পরিবেশে যেতে ইচ্ছে করে। ভাইয়া, আপনার শ্বশুর বাড়ি গ্রামের প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছে। সকাল বেলা পাখির কিচিরমিচির ডাকে গ্রামের সহজ সরল মানুষের কথোপকথন শুনে ঘুম ভাঙে এযেনো অন্যরকম অনূভুতি। ঠিক বলেছেন ভাইয়া,গ্রামে তারাতারি শীতের আগমনটা ঘটে।ভাইয়া, দু-তিন দিন আপনার শ্বশুর বাড়িতে থাকবেন শুনে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া,লেখাটি পড়ে ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সত্যিই খুব ভালো লেগেছে।