প্রতীক
দীর্ঘদিন পর প্রতীকের সঙ্গে দেখা। আসলে কলেজ জীবনের ফেলা আসা সময়ের পরে সম্ভবত এবারই প্রথম ওর সঙ্গে বাস্তবে দেখা হলো। তাছাড়া ওর সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা না। এমনিতেই পথের দূরত্ব অনেক আর তারপরে আমি তো নিজেই মেডিকেল প্রফেশনের সঙ্গে আর জড়িত নেই। যার কারণে রীতিমতো অনেকের সঙ্গেই দূরত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে।
এতো কিছুর পরেও ওর সঙ্গে আমার একটা ভিন্ন রকম সম্পর্ক আছে। আসলে ও আমার মত ভীষণ স্বাধীনচেতা স্বভাবের মানুষ। নিজের মতো করে জীবনটাকে দেখার চেষ্টা করে। দুদিন আগে নাকি সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে গিয়েছিল। সেখানে মূলত তার এক ছোট ভাইয়ের বিয়েতে উপস্থিত হওয়ার জন্য। তাছাড়াও আমাদের আরেক ব্যাচমেটের বাবা হঠাৎ করে রোড এক্সিডেন্ট করেছে, তাকেও দেখতে গিয়েছিল।
তার এই পুরো জার্নিটা ছিল মোটরবাইক নিয়ে। ঐ যে বললাম আমার মত স্বাধীনচেতা মানুষ। যখন যা মন চায়, তাই করে। মোটরবাইকের প্রতি ওর অনেক আগে থেকেই দুর্বলতা আছে। এজন্যই মূলত ও যেখানেই যায়, সেখানেই ওর মোটরবাইক নিয়ে যায়। আর যেহেতু ও ঘোরাঘুরি করতে পছন্দ করে, তাই মোটরবাইক তার পছন্দের তালিকায় অন্যতম। বেশ নিয়মকানুন মেনে যে ও মোটরবাইক চালায়, তা ওর বেশভূষা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
গতকাল বিকেলবেলার দিকে ও আমাকে মেসেঞ্জারে ফোন দিয়েছিল। সেসময় ও বলছিল, আর ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগবে তোর বাসার সামনে পৌঁছাতে। তোর হাতে যদি সময় থাকে, তাহলে তুই আমার সঙ্গে দেখা করতে পারিস। দীর্ঘ দশ বছর পরে, প্রতীকের কাছ থেকে পাওয়া এমন প্রস্তাব, তা কি আর ফেলা যায়। মুহূর্তেই রাজি হয়ে গিয়েছিলাম।
এর আগে ওর সঙ্গে টুকটাক কথাবার্তা ও দেখা-সাক্ষাৎ ভিডিও কলেই হতো। তবে এভাবে কখন যে দীর্ঘ দশটা বছর সময় কেটে গিয়েছে, তা বুঝে উঠতেই পারলাম না। হঠাৎই আজ মনে পড়ছে, সেই ফেলে আসা সময় গুলোর কথা। বিশেষ করে কলেজ জীবনের কথা । আহা, সেকি মধুর সময়।
ওকে বললাম ঠিক আছে, আমি দ্রুত বাসা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছি। তাহলে দেখা হচ্ছে খানিক বাদেই। আমার বাহিরে বের হওয়া দেখে, বাবু মূলত কান্নাকাটি শুরু করছে। কারণ রোজ বিকেলে ওকে নিয়ে বাহিরে বের হওয়া,অনেকটা রীতিমত আমার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে।
যাইহোক তড়িঘড়ি করে বাসা থেকে বের হয়ে, বড় রাস্তার পাশে ওর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। একটা অদ্ভুত রকম অনুভূতি সেসময় কাজ করছিল নিজের মাঝে। দীর্ঘ দশ বছর পরে দেখা হচ্ছে। ভাবা যায়, সময় কত দ্রুত চলে গিয়েছে।
হঠাৎই একটা কালো রঙের মোটরবাইক এসে থেমে গেল রাস্তার ওপাশে। আমি বুঝতে পারলাম ও আমার বন্ধুর প্রতীক ।
আগের থেকে ওর কিছুটা ওজন কমে গিয়েছে। শুনলাম এখনো নাকি বিয়েটা করেনি। বয়স তো ৩১ অতিক্রম করতে চলেছে, বিয়ে কবে করবি। আমার বাবুকে দেখে একটু আদর করার চেষ্টা করল।
কিছুটা সময় ধরে এইভাবেই গল্প হচ্ছিল। অথচ আমরা দুজনই বড় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। সাইড দিয়ে ক্রমাগত গাড়ি যাচ্ছে, তাও যেন আমাদের দুজনের কথা কোনোভাবেই ফুরিয়ে যাচ্ছে না। ওকে বললাম, চল কোন জায়গায় গিয়ে বসি, না হয় আমার বাসায় আজ থেকে যা।
ও বলল, এখনো অনেকটা ব্যস্ততা আছে রে। একটু গুছিয়ে উঠি, তারপর না হয় এসে তোর সঙ্গে একদিন জমিয়ে আড্ডা দেবো।
আহারে সময়, শুধু যায় আর যায় । দীর্ঘ দশ বছর পরে দেখা, তাও আবার স্বল্প সময়ের জন্য। তবে এবারের দেখা হওয়ার মুহূর্তটাকে বন্দী করে রাখলাম মুঠোফোনে।
আবারো এমন সময়, আমাদের ফিরে আসুক। পুরনো মানুষগুলোর সঙ্গে নতুন করে আবারো দেখা হোক, অনেকটা নতুন আঙ্গিকে,এমনটাই প্রত্যাশা করছি এই সময়ে এসে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
সত্যি একেবারে দশ বছর পর যদি কোন বন্ধুর সাথে দেখা হয় ওই মুহূর্তটা একদমই অন্যরকম। কিন্তু দশ বছরের মধ্যে যোগাযোগ থাকলেও দেখা হয়নি দেখছি আপনাদের। আবার দেখছি এত বছর বয়স হয়ে গিয়েছে এখনো বিয়ে করেনি। আসলে যারা বাইক চালাতে পছন্দ করে তারা যে কোন জায়গায় বাইক চালিয়ে চলে যায়। এত বছর পরে দেখা হলেও সময়টা খুবই স্বল্প ছিল। তবে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছে দেখে ভালো লাগলো।
বাবা!! দীর্ঘ ১০ বছর পর আপনাদের দেখা হয়েছে শুনে সত্যি খুব অবাক হলাম। আসলে অনেক ফ্রেন্ডশিপ গুলো এমনই হয় দেখা না হলে ওদেরকে ভোলার মতো না। দশ বছর পর দেখা হলে সল্প সময়ের জন্য দুই বন্ধুর কথা কি আর শেষ হয়। আপনাদের দেখা হওয়ার মুহূর্তটার কথা শোনে আমার নিজের কাছে খুব ভালো লাগছে। বয়স তো অনেক হলো এখনো বিয়ে করেনি!!!!! আচ্ছা যাই হোক বাবুকে নিয়ে আসলে আমাদের প্রতিদিন একটু একটু বাইরে যাওয়া উচিত বাইরের আবহাওয়া বাচ্চাদের গায়ে লাগা উচিত খোলামেলা পরিবেশ ওদের জন্য বেশ উপকার।
মানুষের জীবনটা এমন একটা পর্যায়ে চলে গেছে কাছের মানুষের সাথে দেখা করার সময়টাও হয়ে ওঠেনা। আরে সময়ের অভাবে অনেক সময় কাছের মানুষও দূরে সরে যায়। তবে বন্ধুর সাথে দেখা তাও আবার ১০ বছর পরে ওই মুহূর্তের অনুভূতিটা ছিল অন্য রকম যা বোঝানোর মতো না। বাইক চালানো মানুষের অন্যতম একটি শখ। তিনি বাইক চালিয়ে সিরাজগঞ্জে গিয়েছিলেন। গতকাল বিকেলে আপনাকে মেসেঞ্জারে মাধ্যমে জানিয়েছিল আপনার বাসার সামনে তিনি আসবেন। তবে তিনি বাইক চালান নিয়মের মধ্যে দিয়ে এতে কোন সন্দেহ নেই। সবকিছুর মধ্য দিয়ে আপনার বাবুকে কিন্তু অনেক কিউট লাগছে ভাইয়া। আপনার বাবুর জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ ভাই, আমার অনুভূতি বুঝতে পারার জন্য।
আসলে একটা সময় গিয়ে একেক জন একেক জায়গায় চলে যায়। আর কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে আর সামনাসামনি তেমন একটা দেখা হয় না। বর্তমান ডিজিটাল যুগের কারণে মোবাইলে যোগাযোগ রক্ষা হয়। ১০ বছর পর বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়ে পুরোনো দিনে ফিরে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। আর গল্প তো শেষ হওয়ার কথাই না । যাই হোক আপনার বন্ধু সময় করে আসতে পেরেছে জন্যই আপনাদের ভালো একটা সময় কাটলো।
আসলে বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া না থাকলে, পুরনো মানুষ গুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা বেশ কঠিন হয়ে যেত। এইটার সঙ্গে আমি একদম সহমত পোষণ করছি।
সত্যি ভাইয়া সময় শুধু যায় আর যায়। আর সেইসাথে জীবনের স্মৃতি গুলো অতীত হয়ে যায়। ফেলে আসা সেই দিনগুলো আর বন্ধুত্ব সবকিছু আজ অতীত। ক্ষনিকের জন্য হলেও দীর্ঘদিন পর আপনার বন্ধুর সাথে দেখা হয়েছে জেনে ভালো লাগলো। স্বাধীনচেতা মানুষ বলেই হয়তো আপনার বন্ধু নিজের মত করে নিজের জীবনটা উপভোগ করার চেষ্টা করছে। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো ভাইয়া।
তাই তো দেখছি আপু, যে সময় চলে যাচ্ছে, তা ফিরে পাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে, তবে স্মৃতি গুলো অমলিন থেকে যাচ্ছে।
দশ বছর পর বন্ধুর সাথে দেখা। আপনার অনুভুতিটা যে কেমন ছিল তা বুঝানো যাবে না। খুব কাছের কোন বন্ধু যদি দশ বছর পর এভাবে এসে কিছু সময় পর চলে যায় তাহলে কি মেনে নেওয়া যায়? এক রাত্র থাকলে হয়তো কষ্ট টা একটু দূর হতো এ আর কি। তবুও বলবো। বন্ধুত্ব টিকে থাক সারা জীবন। ধন্যবাদ ভাইয়া।