ভোজন || @shy-fox 10% beneficiary

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

20220818_144821-01.jpeg

মাস খানেক আগের ঘটনা । তখন সম্ভবত পাশের ফ্ল্যাটে বৌদি থাকতো । কোন এক দুপুর বেলা খুব কড়া রান্নার ঘ্রাণে ক্ষুধার তীব্রতা যেন হঠাৎই বেড়ে গিয়েছিল। আসলে চার দেয়ালের মাঝে এমনভাবে রান্নার ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়েছিল যে নিজের অজান্তেই আন্দাজ করতে লাগলাম মনেহয় বেশ বড়সড় রান্নার আয়োজন করা হচ্ছে । এমন অবস্থায় যে কারো পেটের ভিতরে মোচড় দেওয়াটা নিতান্তই স্বাভাবিক ।

পেট বড় অদ্ভুত জিনিস রে ভাই , এটা কোন বাঁধা-বিপত্তি মানতে চায় না । সেই দুপুর বেলায় আমি বড্ড ক্ষুধার্ত ছিলাম । ঘুম ভেঙেছে কড়া ঘ্রাণে ।তাই উঠেই গিন্নিকে বলে ফেললাম খেতে দাও । সেই দুপুরে খুব যে আহামরি খাবার আমার বাসায় ছিল তা কিন্তু আমি বলবো না । হয়তো সবজি রান্না করেছিল ছোট মাছ দিয়ে । কিন্তু সেই মুহূর্তে যখন এমন কড়া রান্নার ঘ্রাণ আমার নাকে আসছিল তখন আর সেই সবজি ভাতে খুব একটা আগ্রহ থাকলো না ।

বৌদির ছোট মেয়ে অর্থী সেদিন দুপুরে এসেছিল বাবুর সঙ্গে খেলতে । ওকে বলেই ফেললাম,তোর মা আজকে কি রান্না করছে রে , যে ঘ্রাণ ছড়িয়েছে । ও বলল আংকেল, মা তো আজ খাসির মাংস, রুই মাছের ভুনা আর ডাল রান্না করছে । তা তোরা কি আজ একাই সেই গুলো খাবি, আমার তো বড্ড খেতে ইচ্ছে করছে । আমার কথা শেষ হতে না হতেই, অর্থী ছুটে গিয়েছিল ওর মায়ের কাছে ।

একটু পরেই দেখি ছোট্ট একটা খাবারের ট্রেতে করে তিনটা বাটি নিয়ে হাজির অর্থী । যদিও মজা করেই বলেছিলাম, তবে দেখি বাস্তবে পূর্ণ হয়ে গেল ব্যাপারটা । অর্থীর হাতে খাবারের ট্রে দেখে গিন্নি আমার রাগে গজগজ করছিল । ও বলছিল, তুমি আমার মান-সম্মান কিছুই রাখবে না ।

আমার কোন দোষ নেই , সব দোষ পেটের । পেট শান্তি তো দুনিয়া শান্তি । অতৃপ্ত মনটাকে যেন কোনোভাবেই যেন আটকানো গেল না । হাত বাড়িয়ে খাবারের ট্রেটা নিয়ে নিলাম । ট্রেতে দেখি খাসির মাংসের কষা, রুই মাছের ভুনা আর ডাল । মুহূর্তেই অনেকটা ভাত খেয়ে ফেললাম তরকারি গুলো দিয়ে । বেশ ভালোই রেঁধেছে বৌদি । নিঃসন্দেহে তার রান্নার তারিফ করতে হয় ।

সেদিনের দুপুরের ঘটনাটা আজ যখন কল্পনায় এই মাঝরাতে ভাবছিলাম, তখন যেন সেই খাবারের স্বাদের তৃপ্তি আবারো পুনরায় ঢেকুর দিয়ে উঠছিল । বেশ চেটেপুটে খেয়েছিলাম তরকারি গুলো ।গরম ধোঁয়া ওঠা সাদা ভাতের সঙ্গে ঝাঁঝালো তরকারি গুলো খেতে ভালোই লেগেছিল।

এমন দুপুর আবার কবে আসবে তা আপাতত বলতে পারছি না । আসার সম্ভাবনাও খুব একটা নেই বললেই চলে । তাছাড়া আসবেই বা কিভাবে, ওরা তো এখন দোতালায় থাকে । তবে এটা সত্যি, বৌদি নিচে যাওয়ার পর থেকে মনটা ভালোই পোড়ায় । সেই ধোঁয়া ওঠা চা , কড়া ধূপের গন্ধ, ঝাঁঝালো তরকারির স্বাদ আর ঘুড়ে ফিরে ঐ লাল টিপ । স্মৃতি গুলো বড্ড নাড়া দিয়ে যায় ।

Banner-3.png

ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 2 years ago 

এটা ঠিক বলেছেন ভাইয়া মাঝে মাঝে আশেপাশের মানুষের খাবারের ঘ্রানে ঠিক থাকা যায়না। তখন আর নিজের বাসার খাবার খেতে মন চায় না, তখন মন চায় যে অন্যের খাবার যদি খেতে পারতাম। আপনি তো মুখ ফুটে বলেই ফেললেন আর আমরা তো মুখবুঝে সহ্য করে নেই খেতে তো পারি না। দুপুর বেলা খাসির মাংস রুই মাছের ঝোল আর ডাল দিয়ে তো ভালোই খেলেন। এখন তো আর বৌদির হাতের খাবারের ঘ্রাণ ও পাবেন না খেতেও পারবেন না আহা কি দুঃখ।

 2 years ago 

আমি আসলে মুক্তমনা মানুষ আপু সবকিছু সহজেই বলে ফেলি , তাই হয়তো কথা গুলো সহজেই বলে ফেললাম।

 2 years ago 

ভাইয়া খাসির মাংস দেখে তো আমারও খিদা লেগে গেল। আপনার সাথে আমিও একমত পেট বড় অদ্ভুত জিনিস , এটা কোন বাঁধা-বিপত্তি মানতে চায় না। আমার কোন দোষ নেই , সব দোষ পেটের । পেট শান্তি তো দুনিয়া শান্তি। কিন্তুু আপনি তো চাওয়ার সাথে সাথেই পেয়ে গেলেন কিন্তুু আমি কি করবো ভাইয়া। হা হা হা ধন্যবাদ খুব ভাল লাগলো।

 2 years ago 

গরম ধোঁয়া ওঠা সাদা ভাতের সঙ্গে ঝাঁঝালো তরকারি গুলো খেতে ভালোই লেগেছিল।

খাবারের ঘ্রাণ পেয়ে আপনার পেটে মোচড় দিয়েছে আর আপনার লেখাগুলো পড়ে আমার ক্ষুধা লেগে গেল 😅। একা একা রান্নাবান্না করে খেতে খেতে একদম বিরক্ত হয়ে গেছি। এভাবে যদি কেউ খাবারের বাটি এগিয়ে দিত তাহলে বেশ ভালই হতো। সেটা হয়তো সম্ভব নয় শুধু কল্পনাই করতে হবে ভাইয়া। কিছু কিছু স্মৃতি আছে যেগুলো সারা জীবন মনে থাকে। তাইতো আপনিও সেই স্মৃতি মনে রেখেছেন এবং আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন।

 2 years ago 

হাহাহা, ভালো প্রতিবেশী বানিয়ে ফেলুন তাহলে অনেক কিছুই জুটে যাবে ভাগ্যে ।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন সব দোষ পেটের।😜।আমিও কাল কেমন জানি বিরিয়ানির গন্ধ পাচ্ছিলাম কার বাসা থেকে আসছে তা জানি না😜।কড়া গন্ধে বেশ খেতে ইচ্ছে করছিলো।যাই হোক আমার তো আর আপনার মত বৌদি নেই, যে পাঠিয়ে দিবে হা হা।ধন্যবাদ

 2 years ago 

প্রতিবেশীর সঙ্গে সু সম্পর্ক স্থাপন করুন তাহলে বিরিয়ানি পেয়ে যাবেন ।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাই পেট ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা। দুনিয়ায় খাবার ছাড়া আর আছে কী। ঐ বলেনা পেটে খেলে পিঠে শয়। আর এইরকম প্রতিবেশি পাওয়া কিন্তু ভাগ‍‍্যের ব‍্যাপার ভাই।।

 2 years ago 

আমার কাছেও ঠিক তেমনটাই মনেহয় । পেট ভর্তি থাকলে সব কিছুই ভালো লাগে ।

 2 years ago 

আসলে ভাই আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। পেট ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা। আজকে আপনার খাবারের পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। খেতে খুব ইচ্ছা করলো। এরকম প্রতিবেশী পাওয়া কিন্তু ভাগ্যের ব্যাপার। কেউ সহজে এরকম পায় না। আসলে আপনি মানুষ হিসেবে খুবই ভালো যার কারণে আপনাকে সবাই ভালোবাসে।

 2 years ago 

সত্যি ভাইয়া পেট বড় অদ্ভুত জিনিস , এটা কোন বাঁধা-বিপত্তি মানতে চায় না । ক্ষুধার সময় তো কথায় নেই। আপনি তো মজা করে বলেছিলেন,তা বাস্তবে পূর্ণ হয়ে গেল। অনেকই তো চাইলে ও পায়। যাইহোক পেট ঠিক সব ঠিক। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপনার খাবার চাওয়ার ভয়েই মনে হয় বৌদিরা নিচে চলে গিয়েছে😛🤣।( মজা করলাম)
হীরা আপুর তো রাগ করার কথাই। সে কষ্ট করে আপনার জন্য রান্না করেছে আপনি সেই খাবার না খেয়ে অন্যের খাবারের ঘ্রাণে অস্থির হয়ে আছেন। যাইহোক শেষমেষ খাবার গুলো খেতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো। যেভাবে বর্ণনা করছেন আমারই তো এখন খেতে ইচ্ছা করছে।
সায়ান বাবুর কি অবস্থা এখন? কমেছে কিছু এলার্জি?

 2 years ago 

আমারও তাই মনেহয় বেশ জ্বালাতন করেছি তাদের কে আপু । তবে তারা প্রতিবেশী হিসাবে বেশ ভালোই ছিল । শায়ানের অবস্থা খুব একটা ভালো না , অবনতি হয়েছে আরও।

 2 years ago 

বাসায় যাই থাকুক না কেনো,এমন কিছু পেলে কিন্তু সবসময় একটু বেশিই মজা লাগে।

 2 years ago 

ভাইয়া মাংস গুলোর পরিবেশন দেখে যতটা না লোভ লাগছে তার চেয়ে বেশি লোক লাগছে আপনার মন ভোলানো কথা দিয়ে। এত ইনিয়ে বিনিয়ে লিখেছেন যে খাবার আগ্রহ আরও বেশি বেড়ে গেছে। আসলেই দুপুর বেলা যখন রান্নার ঘ্রান আসে তখন যেন আর তর সয় না। আর তা যদি হয় খাসির মাংসের ঘ্রান তাহলে তো কথাই নেই। সেদিন মনটাকে আর ধরে রাখতে পারেননি তাই তো বেশ ভালো খাবার ইচ্ছেমতো খেয়েছেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56477.82
ETH 2390.38
USDT 1.00
SBD 2.33