বাবু ও আমি
গরমের অবস্থা নিয়ে নতুন করে তেমন বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না। কারণ এ সমস্যায় যে শুধু আমি একাই ভুগছি তা বলবো না। বলা যায়, সবাই একই রকম অবস্থায় ভুগছে। এইভাবে প্রতিনিয়ত চলতে থাকলে, এ সমস্যা যে কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা বলা মুশকিল।
এত কিছুর মাঝেও টুকটাক স্বস্তি খুঁজে পাই একটু ভিন্নভাবে। গতরাতে ঘুমিয়ে গিয়েছি একদম ভোরবেলার দিকে। আসলে সারারাত ঘুমানোর মতো অবস্থা ছিল না বললেই চলে। এমনটা যে শুধু গতকালই হয়েছে তা বলবো না। গরমে ঘুম না হওয়াটা এখন প্রতিদিনের নিত্যসঙ্গী। বিদ্যুৎ সঠিকভাবে থাকছে না আর অন্যদিকে তীব্র গরম, সব মিলিয়ে অবস্থা নাজেহাল।
বিছানা থেকেও যেন প্রতিনিয়ত তাপ ছড়াচ্ছে। অনেকটা দিন হলো মেঝেতে থাকি, কিচ্ছু করার নেই। তাও যদি শরীরটা একটু ঠান্ডা হয়। একটু যদি আরামে থাকা যায়, হয়তো সেই চেষ্টায়।
প্রতিনিয়তই অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে, এমন খবর রোজ শোনা যাচ্ছে। অনেকেই নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা লিখে যাচ্ছে। সত্যিই পৃথিবীটা ঠান্ডা হওয়া বড্ড জরুরী। মনে মনে ভাবছি কয়েকদিন ধরে যদি টানা বৃষ্টি হতো, তাহলে মনেহয় সবকিছুতে আবারও সজীবতা ফিরে আসতো। এই ক্লান্তিকর জীবনে যেন তখন একটু হলেও প্রশান্তির বাতাস ছুঁয়ে যেত।
আমার নিজের জন্য যতটা না কষ্ট হয়, তার থেকেও বেশি কষ্ট পাই ওর জন্য। ওর গায়ে ঘামাচি উঠেছে। এটা অতিরিক্ত গরমের জন্যই হয়েছে। আমি নিজেই এই গরমে কৈ মাছের মতো প্রতিনিয়ত ছটফট করছি, তাহলে ও তো ছোট মানুষ, ও কিভাবে এই গরম সহ্য করছে এটা ভাবতেই যেন আমার মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে।
নিজে কোনরকমে ঘুমিয়ে গিয়েছি ভোরবেলার দিকে। একটু পরেই ও পিঠের উপরে উঠে লাফালাফি করছিল, মাঝে মাঝে চুল ধরে টানাটানি করছিল, আমি বুঝতে পারছি গরমের কারণেই ওর এতো দ্রুত ঘুম ভেঙে গিয়েছে। আমি বুঝেও যেন, কোন সমাধান খুঁজে বের করতে পারছি না, কিচ্ছু করার নেই আমার হাতে।
তারপরেও খানিকটা সময় ঘরের মাঝেই এদিক-সেদিক একটু ওকে নিয়ে হাঁটাহাঁটি করে মেঝেতেই আবার শুয়ে থাকার চেষ্টা করছিলাম। ওর ছোট্ট শরীরের সঙ্গে যখন নিজের শরীরটা লাগিয়েছিলাম, তখন যেন আলাদা একটা প্রশান্তি পাচ্ছিলাম, এই অসহ্য গরমের মাঝেও। এই প্রশান্তির ব্যাপারটা অনুভব করতে হয়, এটা আসলে বলে বোঝানো মুশকিল। একমাত্র যারা বাবা হয়েছে, তারাই বোঝে এই অনুভূতি কতটা গভীর।
ওর আসলে এতো সকালে ঘুম ভাঙার কথা না। ঘুম ভেঙেছে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে এবং ঘুম থেকে উঠেই ও আমার কাছে চলে এসেছিল এবং আমাকে জাগানোর চেষ্টা করছিল, আমি ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছি। এমনিতেই সারারাত নিদ্রাহীন থাকার পরেও, ওকে নিয়ে স্বল্প সময়ের জন্য যখন ছেলেমানুষী করছিলাম তখন একটুও ক্লান্ত লাগেনি, মনে হয়নি যে আশেপাশে এত অসহ্য গরম পড়েছে ।
একজন বাবা, পরিবারের কর্তা বা মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ হয়ে, আমার আর কিবা করার আছে। তাও যে বিকল্প টুকটাক ব্যবস্থা করেছি, সেটা আসলে যথেষ্ট নয়। সবকিছুই যেন নিজের সাধ্যের বাহিরে চলে যাচ্ছে। এই গরমে যেন হার মেনে যাচ্ছি ক্রমাগত। তারপরেও নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে ওকে বেড়ে তোলার চেষ্টা করছি, তাও ও বড় হোক-বেঁচে থাকুক।
এমন নিদ্রাহীন সময়, ক্লান্ত শরীর এবং অজস্র ঝামেলার মাঝেও যখন এরকম ছোট ছোট কিছু আনন্দঘন মুহূর্ত তৈরি হয়, তখন যেন বেঁচে থাকার আরো হাজার গুণ প্রাণশক্তি ফিরে পাই।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1666384599000424454?t=vrGXlWgqrDXnHID_siMgig&s=19
প্রচন্ড গরম। আর এই প্রচন্ড গরমে শুধু বাবু কেন আমারও প্রতিদিন ভোর বেলাতে ঘুম ভেঙে যায়। যতই সমস্যা থাকুক না কেন ছোট বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা করলে কেন যেন মনটা ভালো হয়ে যায়।
আসলে ভাইয়া বিদ্যুৎ না থাকার কারণে ছোট বাচ্চার একেবারেই রাত্রে ঘুমাতে পারছে না। পাশাপাশি প্রচন্ড গরমের কারণে ছোট বাচ্চাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে যাচ্ছে। যাহোক ভাইয়া, নিদ্রাহীন ক্লান্ত শরীরে শায়ান বাবুকে সময় দিয়ে সেই মুহূর্তটুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।