লাগ ভেলকি লাগ || @shy-fox 10% beneficiary
দুনিয়াটা চলছে ভেলকির উপর । এটা কেউ বিশ্বাস করুক আর না করুক, এটা আমি বিশ্বাস করি । প্রতিনিয়ত ভেলকি হচ্ছে, কেউ দেখতে পাচ্ছে আর কেউ চোখ বন্ধ করে রাখছে । আবার কেউ বুঝেও না বোঝার ভান করছে । আবার কেউ ভেলকিতে অহেতুক পা দিয়ে ফেলছে । যখন বুঝতে পারছে তখন যেন আর সময় থাকছে না । আপামর দৃষ্টিতে আমি যদি বলি, তাহলে আশেপাশে যা দেখছেন সবই ভেলকির কারসাজি । ঐ যে একটা আছে না ,
লাগ ভেলকি লাগ চোখে মুখে লাগ ।
এমনিতেই যে গরম পড়েছে, তাতে যেন স্বস্তি পাচ্ছি না । চেম্বারে গিয়ে একদম ব্যস্ততা পূর্ণ সময় কাটছে , একটানা দুটো রোগী দেখার পরে মাথা যেন একদম চেপে ধরেছে । বুঝলাম আমার এখন মজনু চাচার চা খাওয়া দরকার। কই মনের সুখে একটু চায়ে চুমুক দেবো আর তাতেই দেখলাম বেশ কাছেই একটা জটলা পেকে আছে লোকজনের । সবাই কত মনোযোগ সহকারে শুনছে ।
কথাগুলো অনেকটা এইরকম , আরে ভাই খাঁড়ান এই যে বাতের বিষ , হাড্ডির বেদনা , দাঁতের লড়া-চড়া , শরীর দুর্বলতা, সব কাম এক বোতলেই । খালি একটু মালিশ জায়গা মতো ।
বাহ মুহূর্তেই জনগণের ভিড় । বয়স কত হবে, সবগুলোর চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ বা তার বেশি । হকারের চেঁচামেচিতে মজমা যেন একদম জমে উঠেছে । দুই-একজন শুয়ে-বসে পড়েছে, কেউ কেউ কারো মাথার উপর দিয়ে, ঘাড়ের পাশ দিয়ে হুড়োহুড়ি-ঠেলাঠেলি করে দেখার চেষ্টা করছে ।
পৃথিবী উল্টে যাক, ঝড়-তুফান হোক বা হোক মহামারী । তাতে এদের কোনো যায় আসে না । হকারের রস-কষ মেশানো কথায় এরা একদম মগ্ন । মাঝেমাঝেই হকার চেঁচিয়ে বলছে, এই যে বাচ্চা ছেলেরা তোমরা এখান থেকে চলে যাও, এখানে এখন অন্য কথা হবে ।
একবিংশ শতাব্দীর পরে এসেও এমন চিত্র দেখতে হচ্ছে , এটা ভাবতেই যেন আমার শরীরে ফোঁসকা পড়ে যাচ্ছে । এখনো গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারে এমন চিত্র রোজকার । এখানে সুস্থ মস্তিষ্কের লোক কারা, আমি না তারা । এমন প্রশ্নে যখন আমি নিজেকে জড়িয়ে ফেললাম, তখন আমি চুপসে গেছি ।
এরচেয়েও বড় বড় প্রতারণা বহু জায়গাতেই হচ্ছে আর এটাতো চুনোপুঁটি । ইচ্ছে করেই সরে গেলাম কারণ এখানে মানুষ নিজের থেকে আকৃষ্ট হয়েছে । তারা নিজের ইচ্ছাতেই বা অনেকটা স্বেচ্ছায় ভেলকিতে পা ফেলছে । যখন কেউ নিজের থেকে ভেলকিতে পা দেয় , তখন আসলে হাজার সঠিক পরামর্শ তার কাছে অনেকটা তিতা লাগে । তাই এখান থেকে সরে যাওয়াই আমার বুদ্ধিমানের কাজ ।
এই বাজারে প্রতিনিয়তো আমি চেম্বার করার জন্য আসি । ব্যক্তি জীবনের প্রতিদিন তিন ঘণ্টা করে সময় দেই আমি এই গ্রামীণ মানুষদের দন্ত চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য । অনেকটা প্রফেশনকে ভালবেসেই আসি । সত্যি বলতে কি, এই গ্রামীণ চেম্বার থেকে আমার বিন্দুমাত্র লাভ হয় না বরং হিসাব করে যদি দেখি, আমার লোকসানের ভাগটা অনেকটাই বেশি । তাও আমি এই সহজ সরল লোকজন গুলোর স্বাস্থ্যসেবার কথা চিন্তা করেই আসি ।
যদিও কখনো মুখ ফুটে এই কথাগুলো কাউকে আমি বলিনি । তবে কে শোনে কার কথা, এরা আসলে অভ্যস্ত ঐ ভেলকির কাছে ।
সত্যি বলতে কি, এই তিন ঘণ্টা সময় যদি আমি আমার লেখালেখির পিছনেও ব্যয় করতাম হয়তো আর্থিকভাবে আরও অনেকটাই বেশি লাভবান হইতাম । তবে ব্যক্তি জীবনের পরিচয় রক্ষা ও নিজের একাডেমিক পড়াশোনার সার্টিফিকেটের মর্যাদা রক্ষা করার জন্যই হয়তো এই চেম্বারে আসি । তবে আজকাল বেশ নিজেকে হতাশাগ্রস্থ মনে হয় এই সকল ভেলকির কাছে । মনেহয় সব জলাঞ্জলি দিয়ে দেই ।
কেমনে বুঝাই, হুট করে যদি ক্যান্সার হয়ে যায় । হুট করে যদি বড় ধরনের কোনো ইনফেকশন বাসা বাঁধে শরীরে তখন কিন্তু শেষমেশ আমাদের কাছেই আসতে হবে । তখন হয়তো আর সময় হাতে থাকবে না । কিচ্ছু করার নেই, যদি মানুষ নিজের থেকে সচেতন না হয় তাহলে ।
আমার তো এখনো মনে আছে, যখন আমি শহরে চেম্বার করতাম , ঠিক সেই সময়ে একজন গ্রামীণ রুগী পেয়েছিলাম । যে কিনা এইরকম ভেলকির শিকার হয়েছিল । তার শেষ অবস্থা খুবই করুণ ছিল । সে আসলে মুখের ক্যান্সারে ভুগছিল এবং যার শেষ পরিণতি হয়েছিল মৃত্যু দিয়ে।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
ভাইয়া, দারুণ একটি বিষয় তুলে ধরেছেন।দুনিয়াটা সত্যিই রহস্যময়,আর রহস্যময় দুনিয়ায় এক একজন এক একভাবে পেট চালাচ্ছে।এইসমস্ত লোকেরা মানুষকে বোকা বানিয়ে ফালতু ঔষধ দিচ্ছে।মানুষ ও সেই কুসংস্কার ধরে ধোকা খাচ্ছে ।আধুনিক যুগে এগুলো বেমানান তবুও ট্রেন ,বাসে ও রাস্তাঘাটে এদের দেখা মেলে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
এমনটাই তো হচ্ছে আশেপাশে আপু । সময় থাকতে কেউ বুঝে না , যখন বুঝে তখন আর সময় থাকে না ।
ভাই এই সমস্ত অশিক্ষিত দরিদ্র মানুষগুলোর দোষ দিয়ে কোন লাভ নেই। দারিদ্র্যের কাছে এরা অসহায়। আর অশিক্ষা আর অজ্ঞতা এদের শিরায়-উপশিরায়। হয়তো একসময় এ সবকিছুই পরিবর্তন হবে তবে সেটা কবে তা একমাত্র উপরওয়ালাই বলতে পারে।
একদম ঠিক বলেছেন ভাই । তাই উপরের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো বুদ্ধি নেই ।
প্রায়ই জায়গায় দেখি এমন, যদিও আমি জানি না এত মানুষের জনসমাগমে মানুষ কি করে।আজকে জানতে পেলাম।আসলেই মানুষকে মানুষ কত ভাবেই প্রতারণা করে।সহজ সরল মানুষ গুলো কোন কথা চিন্তা না করেই ফাঁদে পা দেয়।ভালো লাগলো কথাগুলো।ধন্যবাদ
আসলে এখানে মানুষ বুঝে শুনেও অনেক সময় ফাঁদে পা দেয় । এটা আসলে একটা বিশ্বাস নিয়ে ছিনিমিনি খেলা ।
আপনি অসাধারণ একটি বিষয় আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ভাইয়া ।আসলে আমাদের চারপাশে সব সময় ভেলকি খেলা চলছে যে যার চোঁখে ভেলকি দিতে পারছে সে সামনে দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের চারপাশে শুধু ভেলকি খেলায় চলছে। তবে আপনি যে ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এগুলো স্ট্রিট হকার এর নাম আমি শুনেছি তবে আজ প্রথম দেখলাম।তবে কলেজে এক ছেলের হকারের কৌতুক কথা মনে পড়ে গেল আপনার এই বাত ব্যথা , মাঝা ব্যথা ,পানব্যাথা লেখা গুলো পড়ে।
কি আর বলব , কিছুই বলার নেই । তবে যা হচ্ছে , শুধু দেখে যাচ্ছি , কবে যে মানুষ গুলো ঠিক হবে, কে জানে ।
দুনিয়াটা ভেলকির ৎপটে চলছে ভাই এটা কিন্তু আমিও বিশ্বাস করি। আর মাঝে মাঝে এসব ঝটলা দেখিও বিশেষ করে যখন লঞ্চে যায় তখন বেশি দেখি। লঞ্চে অনেক এরকম কিছু অনেক কিছু নিয়ে উঠে যেটা আসলে মানুষ গুলো খুব অল্পেই বিশ্বাস করে। আমার কাছে খুবই অবিশ্বাস্য লাগে যে মানুষ এগুলো কিভাবে বিশ্বাস করে। আর অনেক ভালো লাগছে আপনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পোষ্ট শেয়ার করছেন হয়তো আপনার এই পোস্ট দেখে অনেকেই এই ভেলকি থেকে বাঁচবে।
হ্যাঁ এটা সত্য কথা , লঞ্চঘাট ও লঞ্চের ভিতর এই ব্যপারগুলো অনেকটাই বেশি হয় । ধন্যবাদ আপনার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ।
হ্যাঁ ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন আমরা নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনি এবং ফাঁদে পা দি। আর একটা কথা বললেন না পিছনে কে মরল কেউ আচলো নাকি মহামারী হচ্ছে তা দেখার সময় নেই। কিন্তু সবার মনোযোগ ওই হকারের বেলকির ওপর। অসাধারণ একটি পোস্ট করেছেন এবং আপনার মনের ভাবগুলো খুব সুন্দর করেই প্রকাশ করেছেন। তবে আপনার কষ্টটা একটু আন্দাজ করতে পারছি। নিজের আত্মসম্মান বোধকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এবং কি সার্টিফিকেট এর মর্যাদা দেওয়ার জন্য এই চ্যাম্বারে আসা। দুঃখ করে আর কি করবেন, যার জন্য করি চুরি সেই বলে চোর। আর যার ঘর চুরি করবেন সে তো চোর বলবে। আমাদের সাথে এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক অভিনন্দন এবং ভালোবাসা অবিরাম ভাইয়া।
ধন্যবাদ ভাই আমার অনুভূতি বোঝার জন্য। তবে পারিপার্শ্বিক অবস্থা এমনটাই হচ্ছে ।
এই ধরনের ধান্দাবাজি গুলো শেষ হবে না কখনোই। সময়ের পরিবর্তনে তারা ও নিজেকে পরিবর্তন করে নতুনভাবে মানুষের কাছে উপস্থাপন করছে। প্রতিদিনই কাউকে-না-কাউকে তাদের ফাঁদে ফেলে দিচ্ছে। আর হাতিয়ে নিচ্ছে কষ্টের টাকা। সত্যি বলতে বিষয় গুলি খুবই দুঃখজনক।
কি আর করার আপু , বলেন । সবাই ব্যস্ত নিজের আখের গোছানো নিয়ে । এটা একদম সমসাময়িক ব্যাপার ।
আসলে ভেলকির কাছে নিজেকে বড় অসহায় মনে হয়। হাটে বাজারে যেসব মানুষ ভেলকি দেখায় তাদের দ্বারা মানুষ অনেক ভাবে প্রতারিত হয়। তারাই যদি সর্ব রোগের ঔষধ জানতো তাহলে ডাক্তারের প্রয়োজন হতো না। অনেক ক্ষেত্রে তাদের চিকিৎসার করুন পরিনতি হয়। তবে যাই হোক আপনার এই লেখাগুলো পড়ে সবার মাঝে সচেতনতা আসবে এবং ভেলকির কবল থেকে সবাই নিজেকে আড়াল করে রাখবে। ভাইয়া আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং সেইসাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। ♥️♥️♥️
ভাই সবাই ভেলকিতে ব্যস্ত , সচেতনতা এদের মধ্যে নেই ।হাজার বুঝালেও সচেতনতা আসবেনা , তবুও অপেক্ষায় থাকি ।
ভাইয়া,আপনি একদম ঠিক কথা লিখেছেন দুনিয়া উল্টাপাল্টা হয়ে গেল তাদেরকে ওই ভেলকি থেকে ফিরিয়ে আনা যাবে না।আসলে ভাইয়া, গ্রামের সরল মানুষগুলোকে প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে তাদের জীবন শেষ করে দিচ্ছে।ভাইয়া, কতটা স্বাস্থ্যসম্মত ঔষধ তারা মানুষকে দেয় সেটা আপনি ভালোই জানেন।ভাইয়া, আপনি অথবা আমি যদি তাদেরকে বুঝাতে চাই তারা উল্টা আমাদের কথা শুনতে হবে। ভাইয়া, আমি তো সবসময়ই আপনার লেখা পড়ি আপনার লেখার মধ্যে কিছু লেখা পড়ি যেগুলো মনে দাগ কাটে। যেমন গ্রামের চেম্বারে আপনি তিন ঘন্টা সময় চিকিৎসা দিয়ে থাকেন সে সময়টা আপনি যদি লেখালেখি করতেন তাহলে আপনার আর্থিক দিক দিয়ে অনেক লাভবান হতেন এটা সত্যি কথা।তবে ভাইয়া, গ্রামের সহজ সরল মানুষের জন্য এই মহৎ কাজ আপনি করতে পারেন বলে এইটা ভাইয়া আপনার একটি মহৎ গুন। শেষের লেখা টি পড়ে খুব খারাপ লেগেছে, আসলে ভাইয়া আমরা অনেকেই না বুঝে ভুল ঔষধ নিয়ে থাকি পরিমাণ মৃত্যু । ধন্যবাদ ভাইয়া, এতো সুন্দর এবং বাস্তব একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।।
যা লিখেছি একদম জীবন থেকে লিখেছে আপু । প্রতিনিয়ত এমনটা দেখছি আর এমনটাই ঘটছে আশেপাশে । তাই চেষ্টা করেছি সমসাময়িক ব্যাপারটা তুলে ধরার জন্য ।
মানুষের দুর্বল পয়েন্ট বুঝাই তাদের ঝোপ বুঝে কোপ মারতে হয়, মানুষকে বোকা বানানোর জন্য তাদের অনেক ধরনের ফন্দি রয়েছে, মানুষ নিজ দায়িত্বে তাদের কাছে যায় বোকা হওয়ার জন্য, রাস্তায় অহরহ দেখা যায় এরকম ঘটনা। এ দুনিয়ায় কেউ কারো নয় সবাই আছে নিজের ধান্দায়।চমৎকার লিখেছেন ভাই।💖
তাই তো দেখছি ভাই, যে যেভাবে পারছে মানুষকে ফাঁদে ফেলছে । মানুষ মানুষের বিপদ ডেকে নিয়ে আসছে, কি একটা অবস্থা ।