আমার বাবার শখের কবুতরের খামার 🕊️ || আমার বাংলা ব্লগ || @shopon700 [১০% লাজুক খ্যাঁকের জন্য]

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।



প্রিয় বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশে থেকে। আজ আমি আমার বাবার শখের কবুতরের খামার সম্পর্কে কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। কবুতর আমার খুবই প্রিয়। আমার গ্রামের বাসায় আমার বাবা কবুতর পালন করেন। কবুতর পালন করা তার একটি শখের কাজ। তিনি বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর পালন করতে পছন্দ করেন। আজ আমি আমার বাবার শখের কবুতরের খামার সম্পর্কে কিছু কথা এবং এর কিছু ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।



আমার বাবার শখের কবুতরের খামার🕊️:

IMG20211108093328.jpg
Cemera: Oppo-A12.

IMG20211108085811.jpg
Cemera: Oppo-A12.



কবুতর পালন করা আমার বাবার খুবই প্রিয় একটি শখ। আমি ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি আমার বাবা তার প্রিয় কবুতর গুলোকে অনেক ভালোবাসেন। আমিও আমার বাবার মতোই এই সুন্দর কবুতরগুলোকে ভালোবাসি। আমার বাবার এই ছোট্ট কবুতরের খামারে প্রায় ৫০ জোড়া কবুতর রয়েছে। এই ৫০ জোড়া কবুতরের মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর রয়েছে। যেমন গিরিবাজ, সিরাজী ও অন্যান্য দেশী বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর এই খামারে রয়েছে। আমি যখন আমার গ্রামের বাসায় যাই তখন সকালবেলায় কবুতরের মিষ্টি সুরে বাকবাকুম ডাকের মাধ্যমে আমার ঘুম ভাঙ্গে। তখন আমার খুবই ভালো লাগে।



আমার বাবার শখের কবুতর খামারে খাবার দেওয়ার মুহূর্ত🕊️:

IMG20211108090110.jpg
Cemera: Oppo-A12.

IMG20211108090054.jpg
Cemera: Oppo-A12.

IMG20211108090124.jpg
Cemera: Oppo-A12.



আমি যখন আমার গ্রামের বাসায় যাই তখন আমার বাবার কবুতরের খামারের কবুতরগুলোকে খাবার দেই। বাবা সব সময় এই কবুতরের জন্য খাদ্য শস্য সংগ্রহ করে রাখেন। আমি যখন আমার গ্রামের বাসায় যাই তখন আমি আমার বাবার শখের কবুতরের খামারের কবুতরগুলোকে খাবার দেই। আমি সেদিনও অর্থাৎ গত রবিবার সকালবেলা কবুতরগুলোকে গম ও পানি খেতে দিয়েছিলাম।



🕊️কবুতরের খাবার🕊️:

IMG20211108085955.jpg
Cemera: Oppo-A12.

IMG20211108090143.jpg
Cemera: Oppo-A12.



এই খামারের কবুতর গুলোকে গম, চাল, ধান, সরিষা দানা, ডাল ইত্যাদি খাওয়ানো হয়। কবুতরকে রোগমুক্ত রাখতে ও বিভিন্ন ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করার জন্য মাঝে মাঝে ঝিনুকের চূর্ণ বা চুনাপাথরের চূর্ণ খাওয়ানো হয়। আবার মাঝেমধ্যে ইটের গুঁড়ো খাওয়ানো হয়। এগুলো কবুতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং অন্যান্য ভিটামিনের ঘাটতি পূরণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।



🕊️কবুতরের বাসস্থান🕊️:

IMG20211108090024.jpg
Cemera: Oppo-A12.

IMG20211108090608.jpg
Cemera: Oppo-A12.

IMG20211108085708.jpg
Cemera: Oppo-A12.



কবুতর পালনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো কবুতরের বাসস্থান সঠিকভাবে তৈরি করা। আমার বাবা কবুতরের বাসস্থান সুন্দর করে সাজানোর জন্য অনেক গুলো কবুতরের থাকার জায়গা তৈরি করেছেন। কাঠ দিয়ে ছোট ছোট করে কবুতরের ঘর বানিয়ে দিয়েছেন। কবুতরগুলো যাতে সহজেই ডিম দিতে পারে এবং ডিম ফুটে বাচ্চা তৈরি করতে পারে এজন্য কাঠের তৈরি ঘরগুলোর মাঝে মাঝে একটি করে মাটির পাত্র দেওয়া হয়েছে। আবার কবুতরের খামারের কোন কোন অংশে টিনের ব্যবহার করা হয়েছে। ক্ষতিকর জীবজন্তু যেন কবুতরের খামার আক্রমণ করতে না পারে সেজন্য লোহার নেট জাল দিয়ে চারপাশে ঘিরে দেয়া হয়েছে।



🕊️কবুতরের ছোট ছোট বাচ্চা🕊️:

IMG20211108090229.jpg
Cemera: Oppo-A12.

IMG20211108090259.jpg
Cemera: Oppo-A12.



আমি যখন আমার বাবার কবুতরের খামারে গিয়েছি তখন আমি দেখতে পেলাম মাটির পাত্রের মধ্যে ছোট ছোট কবুতরের বাচ্চা বসে আছে। বাচ্চাগুলো দেখতে অনেক সুন্দর লাগছিল। দেখে মনে হচ্ছে এ বাচ্চাগুলো অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ডিম থেকে ফুটে বের হয়েছে। আশা করি এই বাচ্চাগুলো অল্পদিনের মধ্যেই অন্যান্য কবুতরের সাথে উড়ে বেড়াতে পারবে। এই বাচ্চা কবুতরগুলো ৪ থেকে ৫ মাস পরে নিজেরাই বাচ্চা ফুটাবে। আমি আমার বাবার কাছ থেকে জানতে পেরেছি সাধারণত কবুতরের ডিম থেকে ১৮/ ২০ দিনের মধ্যেই বাচ্চা ফুটে বের হয়। এক জোড়া কবুতর বছরে প্রায় ১১ থেকে ১২ জোড়া বাচ্চা দেয়।



🕊️কবুতরের খরকুটো সংগ্রহ🕊️:

IMG20211108102127.jpg
Cemera: Oppo-A12.

IMG20211108090846.jpg
Cemera: Oppo-A12.



কবুতরগুলো নিজের বাসস্থান তৈরি করতে নিজে নিজেই খরকুটো সংগ্রহ করে। খরকুটো সংগ্রহ করে নিজেদের বাসা তৈরি করে। এই দৃশ্যটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।



🕊️কবুতর শান্তির প্রতীক🕊️:

IMG20211108101650.jpg
Cemera: Oppo-A12.

IMG20211108093313.jpg
Cemera: Oppo-A12.



কবুতরকে শান্তির প্রতীক বলা হয়ে থাকে। আমার বাবার শখের কবুতর খামারের সুন্দর সুন্দর কবুতরগুলা দেখলে মন শান্তিতে ভরে উঠে। কবুতর পালনের মধ্যে রয়েছে অনেক বেশি প্রশান্তি। আমার বাবা তার মনের ভালোবাসা থেকেই এই সুন্দর কবুতরের খামার তৈরি করেছেন। তিনি এই খামারের প্রতিটি কবুতরের নিয়মিত যত্ন করেন এবং পরিচর্যা করেন। আর এই কবুতরগুলো মনের আনন্দে সারাক্ষণ ছোটাছুটি করে। যা দেখতে খুবই ভালো লাগে।



আমার বাবার শখের কবুতরের খামারটি আপনাদের কাছে কেমন লাগলো দয়া করে জানাবেন। আমি আশা করবো আপনারা সকলেই কবুতর পালনে উৎসাহী হবেন। শখের পাশাপাশি আপনারা চাইলে বাণিজ্যিকভাবেও কবুতরের খামার তৈরি করতে পারেন।



সবগুলো ছবির লোকেশন:
https://w3w.co/business.stank.ministry

💖ধন্যবাদ সকলকে।💖

Sort:  
 3 years ago 

কবুতর শান্তির প্রতীক। অনেক ভাল লাগল ভাই আপনার কবুতরের খামার দেখে। পাশাপাশি কবুতরের খাবার দেওয়া এবং যত্ন নেওয়া দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। ভাইয়া আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।

 3 years ago 

একদম সত্যি কথা কবুতর হচ্ছে শান্তির প্রতীক। মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।

 3 years ago 

সত্যি ভাইয়া আমার আব্বু ছোটকাল থেকেই কবিতরের প্রতি আলাদা একটা টান ছিল। অনেক কবুতর কিনে আনত। বিশেষ করে সিরাজি কবুতর ও ছিল আমাদের বাসায় অনেক ভালো লাগতো এবং এগুলোর দাম বেশি এবং কবুতর আসলেই অনেক শখের একটা জিনিস। এখানে কোনো টাকা-পয়সা ম্যাটার করে না। জিনিসটা শখের মাধ্যমে মানুষ কবুতর পালন করে থাকে। ভালোলাগলো কবুতরের ঘর এবং দুঃখের বিষয় একটা অসুখ হলে প্রতিটা কবুতর মারা যায় এবং অনেক কবুতর মারা গিয়েছিল দিয়ে বিক্রি করে দিয়েছিল আর আপনার ঘর এবং কবুতর থেকে খুবই ভালো লাগছে। অত্যন্ত সুন্দরভাবে বর্ণনা দিয়েছেন

 3 years ago 

দেশি কবুতর বাদে অন্যান্য কবুতর পালন করলে অবশ্যই নিয়মিত রোগ প্রতিরোধক খাদ্য ও ঔষধ খাওয়াতে হবে। আপনাদের কবুতরগুলো মারা গিয়েছে জেনে খুবই খারাপ লাগলো। মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 3 years ago 

বাহ!!! আপনার বাবার শখের কবুতরের খামার দেখে সত্যিই অভিভূত হলাম।।এবং আপনি ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছেন বাবা কবুতরগুলোকে খুবই ভালবাসেন। সাথে সাথে আপনিও কবুতরগুলোকে অনেক বেশি ভালোবাসেন। শুভকামনা আপনাদের দুজনের জন্য♥♥

 3 years ago 

মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 3 years ago 

আপনার বাবার শখের কবুতরের খামার দেখে একেবারে প্রাণটা জুড়িয়ে গেলো। আসলে আমি একটা কথা ভাবছি। তা হচ্ছে এই যে এইযে পঞ্চাশ জোড়া কবুতর আপনার বাবা পালেন। এতো গুলো কবুতর পালতে আপনার বাবার কত বেশি পরিশ্রম করতে হয়!তাও আপনার বাবা শুধুমাত্র ভালোবাসার কারণে এইগুলো কে এইভাবে যত্ন করে।

 3 years ago 

সত্যি বলেছেন আপু আমার বাবা অনেক পরিশ্রম করে এই কবুতরের খামারটি গড়ে তুলেছেন এবং তিনি কবুতরগুলোকে খুবই ভালোবাসেন। এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ আপু।

আমার বাবাও একসময় কবুতর পালতেন যখন বাড়িতে থাকতেন। যদিও আমি কখনো দেখিনি। পরে চাকরির জন্য চলে আসলে সেগুলো আর দেখাশোনা করা হয়নি বাবার। আমিও কিছুদিন আমাদের বাসার ছাদে কয়েকটি কবুতর পালতাম। পরে বিড়ালের যন্ত্রণায় আর পালা হয়নি। আপনাদের কবুতর গুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো। আপনি বেশ যত্ন করেন কবুতর গুলোর বোঝা যাচ্ছে। আপনাদের কবুতরগুলো অনেক সুন্দর। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

আপনি এবং আপনার বাবা একসময় কবুতর পালন করতেন এটা জেনে অনেক ভালো লাগলো। মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।

 3 years ago 

আপনার বাবার শখের কবুতরের খামার দেখে ভালো লাগলো কবুতর আমার অনেক পছন্দ। কবুতর গুলো দেখতে অনেক সুন্দর। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া আপনার জন্য শুভকামনা রইলো

 3 years ago 

মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।

বাহ স্বপনভাই কবুতরগুলো তো অনেক কিউট,কবুতর হলো শান্তির প্রতীক দেখতে আমার বাসার ছাদে কবুতরের বাগান আছে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা জিনিস শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

ধন্যবাদ শুভ ভাই এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

ভাইয়া আপনার কবুতরের খামারটি অসাধারণ। ছোট ছোট বাচ্চা গুলো দেখতে খুব ভালো লাগছে। আমাদের বাসার ছাদ এর উপর আমার বাবা অনেক বড় একটি ঘর করেছেন। ওখানে প্রায় বিশ জোড়ার মতো কবুতর আছে। আসলে শখ করেই পশু পাখি পুষে থাকি আমরা। এখানে টাকা না শখটাকেই সকলে প্রাধান্য দেই। ভাইয়া আপনি অসাধারণ ভাবে বর্ণনা দিয়েছেন আপনার কবুতর পালন এর। আপনার জন্যে শুভকামনা।

 3 years ago 

আপনাদের ছাদের উপর আপনার বাবার 20 জোড়া কবুতরের একটি খামার রয়েছে জেনে খুবই ভালো লাগলো আপু। গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 3 years ago 

বাহ ব্যাপারটা খুব ভালো লেগেছে আমার। কবুতর মনে হয় আমাদের সবারই বেশ পছন্দের। আপনার বাবার এত সুন্দর শখ দেখে খুবই ভালো লাগলো। কবুতর পুষতে পুষতে ওদের ওপর দারুন একটা মায়া হয়ে যায়। ওদেরকে ছাড়া থাকা যায়না। আমার এক দাদা এরকম ছাদে কবুতর পালেন। একবার কবুতরের বাচ্চা বিড়াল এসে খেয়ে ফেললে দাদা এত কষ্ট পান যে একমাস মনে হয় ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করেননি।

 3 years ago 

আপনি ঠিক বলেছেন আপু এই আদরের পোষা কবুতরগুলোকে কোন ক্ষতিকর প্রাণী আক্রমণ করলে সত্যিই অনেক খারাপ লাগে। গঠনমূলক একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ আপু।

 3 years ago 

খুব ভালো লিখেছেন। আপনার পোস্টটি পড়ে কবুতর পালন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম। একসময় আমারো কবুতর পালনের খুব শখ ছিল কিন্তু নানারকম ঝামেলায় কখনো করা হয়নি।

 3 years ago 

মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 62881.38
ETH 2449.40
USDT 1.00
SBD 2.62