অনুগল্প:হয়তো তুমি ফিরবে💔||[10% shy-fox]
আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।
বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। অনুগল্প লিখতে আমার বেশ ভালো লাগে। তাই মাঝে মাঝেই বিভিন্ন রকমের অনুগল্প লিখে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করি। তেমনি আজকেও আমি একটি সুন্দর অনুগল্প লিখে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
অনুগল্প:হয়তো তুমি ফিরবে
রাকিব ও নিরুপমা একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল। দুষ্টু মিষ্টি প্রেমের সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত পূর্ণতায় ভরে গিয়েছিল। তাদের মিষ্টি প্রেমের সম্পর্কের হয়েছিল মিষ্টি পরিণতি। তাদের সম্পর্কের মিষ্টি পরিণতি তাদের জীবনকে আরও বেশি আনন্দে ভরিয়ে তুলেছিল। অনেক চাওয়া, অনেক আশা, অনেক আকাঙ্ক্ষার পরে দুজন একসাথে মিলিত হয়েছিল। হয়তো তাদের ভালোবাসা তাদেরকে পূর্ণতা দান করেছে। হাজার বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে যখন দুজন একসাথে মিলিত হয়েছে তখন তারা সুখে-শান্তিতে তাদের জীবন কাটাচ্ছিল। সময়ের সাথে সাথে কেন জানি তাদের সম্পর্ক রং বদলাতে শুরু করলো। ব্যস্ততার বেড়াজালে রাকিব ও নিরুপমা একে অপরের থেকে দূরে সরে যেতে লাগলো।
রাকিবের কর্মব্যস্ত জীবন ও নিরুপমার একাকীত্ব সবকিছু মিলে তাদের মাঝে অনেক বেশি দূরত্ব তৈরি হয়ে গেলে। হয়তো রাকিব নিরুপমাকে ভালোবাসে। তবে ব্যস্ততার কষাঘাতে তাদের ভালোবাসা আজ ফিকে হয়ে গেছে। ভালোবাসার সেই অনুভূতিগুলো আজ তিক্ততায় ভরে গেছে। রাকিব নিজের কর্মব্যস্ত জীবন নিয়ে থাকতো। আর নিরুপমা ঘরের কোণে বন্দী থেকে একাকীত্বকে আপন করে নিয়েছিল। হয়তো একাকিত্বকে সাথী করে নিয়েছিল নিরুপমা। সারা দিনের জমানো কথাগুলো বলবে বলে রাকিবের অপেক্ষায় থাকত নিরুপমা। তবে রাকিব যখন অফিস থেকে ফিরত তখন অনেকটা রাত হয়ে যেত। রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তো রাকিব। আবার ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে অফিসে চলে যেত। এভাবেই চলতে লাগলো তাদের জীবন। হয়তো নিরুপমার মনে জমানো কথাগুলো রাকিবকে বলা হয়ে উঠতো না আর।
এদিকে নিরুপমা মুখ বুজে সব কিছু মেনে নিতো। কারণ নিরুপমা রাকিবকে অনেক ভালোবাসতো। তাই মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছিল না। রাকিবের এই ব্যস্ত জীবনের মাঝে নিরুপমাকে দেবার মত একটু খানি সময় ছিল না তাঁর। হয়তো চাইলে সে তার ব্যস্ততার মাঝেও নিরুপমাকে সময় দিতে পারতো। হয়তো নিরুপমার ছোট ছোট আশা গুলিকে পূর্ণ করতে পারতো। হয়তো এক মুঠো বেলি ফুল এনে নিরুপমার খোঁপায় গুঁজে দিতে পারতো। হয়তো নিরুপমার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য হঠাৎ করেই বলতে পারতো চলো বৃষ্টিতে ভিজি। তবে রাকিব তা করেনি। রাকিব নিজেকে এতটাই ব্যস্ত রাখত যে নিরুপমার সাথে কথা বলার মত সময় ছিলনা তার।
অন্যদিকে নিরুপমা যখন রাকিবের সাথে গল্প করতে চাইতো তখন রাফির ব্যস্ততার অজুহাতে তাকে দূরে সরিয়ে দিতো। হয়তো নিরুপমার চাওয়া খুবই অল্প ছিল। হয়তো সে তার প্রিয় মানুষটির সাথে একসাথে চাঁদের আলো উপভোগ করতে চেয়েছিল। হয়তো সে বারান্দায় বসে তার প্রিয় রাকিবের সাথে গল্প করতে চেয়েছিল। হয়তোবা জ্যোৎস্না মাখা রাতে তার প্রিয় মানুষটির কাঁধে মাথা রেখে জ্যোৎস্নার আলো দেখতে চেয়েছিল। কিন্তু তার সেই ছোট ছোট চাওয়াগুলো পূর্ণতা পেল না। সময়ের সাথে সাথে রাকিব যেমন বদলে গেল তেমনি নিরুপমাও নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে। আজ তার আশা গুলো সব মলিন হয়ে গেছে। তার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চাওয়া গুলো সব ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। হয়তো সেই মিষ্টি প্রেমের সম্পর্ক আজ নেই। সময়ের ব্যবধানে সবকিছুই আজ বদলে গেছে।একবার কথা বলার জন্য যে রাকিব সারাদিন অপেক্ষা করতো সেই রাকিব আজ নিরুপমার মনের কথাগুলো শোনার সময় পায়না। সময়ের ব্যবধানে তাদের সম্পর্কের মাঝে এসে গেছে অনেক বেশি তিক্ততা ও অবহেলা।
সম্পর্কের তিক্ততার মাঝে কখন যে রাকিব নিরুপমাকে হারাতে লাগলো তা বুঝতেই পারলো না। হঠাৎ একদিন রাকিব যখন বাসায় ফিরল তখন দেখল পুরো ঘর জুড়ে নিরুপমার কোন অস্তিত্ব নেই। কারণ নিরুপমা আজ তার জীবনে নেই। নিরুপমা নিজেকে আড়াল করে নিয়েছে। একাকিত্বের জীবন মেনে নিতে না পেরে নিরুপমা নিজেকে শেষ করে দিয়েছে। একাকীত্ব ও অবহেলা তাকে শেষ করে দিয়েছে। এভাবেই শেষ হয়ে গেছে একটি সুন্দর সম্পর্কের। এরপর অনেকদিন কেটে গেছে। আজ যখন চার দেয়ালের মাঝে রাকিব নিজেকে বন্দী করে নিয়েছে তখন বারবার নিরুপমার কথা মনে পড়ছে। তার সেই একাকিত্বের মাঝে বারবার ভাবছে হয়ত তুমি আসবে ফিরে। সে বারবার ভাবছে তার প্রিয় নিরুপমা হয়তো কোনদিন ফিরে আসবে। হয়তো তার কাঁধে মাথা রেখে জ্যোৎস্না দেখার বায়না করবে। হয়তো সেই নিরুপমা আবার কোনদিন ফিরে এসে বৃষ্টির রিমঝিম শব্দের সাথে রাকিবের কানে কানে বলবে চলো দুজন বৃষ্টিতে ভিজি। রাকিব মনে করে আজও তার নিরুপমা তার কাছেই আছে। সে অনুভবে নিরুপমাকে খুঁজে পায়। রাকিব তার এই জীবনে আজও খুঁজে নিরুপমাকে।
যখন আমাদের জীবনে আমাদের প্রিয় মানুষটি থাকে তখন আমরা তার মূল্য বুঝতে পারিনা। যখন সেই মানুষটি হারিয়ে যায় তখন তার মুল্য বুঝতে পারি। যখন একাকিত্বের এই জীবনে প্রতিটি মুহূর্ত কাটার মত হয়ে বিঁধে তখন আমরা প্রতিটি মুহূর্তে প্রিয় মানুষটির অভাব অনুভব করতে পারি। তাই আমাদের সম্পর্ক গুলো আমরা যদি ভালো রাখতে চাই এবং নিজের প্রিয় মানুষটিকে সারা জীবনের জন্য পাশে চাই তাহলে অবশ্যই প্রিয় মানুষটিকে সময় দিতে হবে। তবেই এই সম্পর্ক গুলো আরো বেশি সুন্দর ও মধুর হবে। তা না হলে হয়তো নিরুপমার মতো হাজারো নিরুপমা হারিয়ে যাবে এই পৃথিবী থেকে। আর রাকিবের মত হতভাগ্য প্রেমিক সারাজীবন অপেক্ষা করবে নিরুপমার জন্য। আশা করছি আমার লেখা এই অনুগল্পটি সকলের ভালো লেগেছে।
জি ভাই সত্যি বলছি গল্পটি অনেক অনেক ভাল লেগেছে, তবে রাকিব এর জন্য খুব খারাপ লাগছে সে সাথে নিরুপমার জন্য ও। বিশেষ করে নিরুপমার সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে এটা আসলে কারো সাথে ঘটা উচিত না আমাদের প্রত্যেককেই এ বিষয়টি আসলে খেয়াল রাখা উচিত। আপনার আজকের এই অনুগল্পের মধ্যে অনেক শিক্ষণীয় বিষয় ছিল যা আমাদেরকে ভবিষ্যতে এরকম দুর্ঘটনা থেকে বাঁচাতে সহযোগিতা করবে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই শুভকামনা অবিরাম আপনার জন্য।
আমার লেখা এই গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশী হলাম ভাইয়া। আপনি একদম ঠিক বলেছেন নিরুপমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি আসলে কারো সাথে ঘটা উচিত নয়। এই গল্পটির মাঝে সত্যি অনেক শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ।
যারা অল্পতেই খুশি হয়, সেই অল্পটাই তাদের ভাগ্যে থাকে না।
কথা না বলতে বলতে একদিন কথাটারাও হারিয়ে যায়। অনেক কথা জমে গেলে কথা বলার মতো কোন ভাষা থাকেনা। নিরুপমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। একাকিত্বের কষ্ট মানুষের মস্তিষ্ককে গ্রাস করে। আর মনের ভিতর চাপা কষ্টগুলো সইতে না পেরেই মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
এরকম ঘটনা মোটেও কাম্য নয়। তাই সময় থাকতেই প্রিয় মানুষটিকে সময়ের দিতে শিখতে হবে।
আপু আপনি একদম ঠিক বলেছেন যারা অল্পতেই খুশি থাকতে চায় তাদের ভাগ্যে সেই খুঁজে থাকে না। নিরুপমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। আপু আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আপনার অনুভূতি আমাদের মাঝে প্রকাশ করেছেন জেনে ভালো লাগলো। সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ।
রাকিব এবং নিরুপমা কে নিয়ে এত সুন্দর একটি অনুগল্প লিখলেন যে মন ছুয়ে গেল। এরকম ছোটগল্পগুলো পড়তে সত্যি দারুন লাগে। এগুলো ছোট হলেও অনেক রহস্য আর রোমান্টিকতা থাকে। আপনার ছোট গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। দোয়া করি
রাকিব ও নিরুপমাকে নিয়ে লেখা অনুগল্পটি আপনার মন ছুঁয়ে গেছে জেনে অনেক খুশী হলাম। আমার লেখা গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। আপনি আমার লেখা এই গল্পটি পড়েছেন এবং মন্তব্য করেছেন এজন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ।