"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা-২৩ | | আমার স্কুল জীবনের একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি | |

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আমার বাংলা ব্লগ

আজ ২৮ শে সেপ্টেম্বর ,রোজ বুধবার

আসসালামু আলাইকুম ,আদাব “ আমার বাংলা ব্লগ “ এর ভারতীয় ও বাংলাদেশের সব ভাই ও বোনেরা সবাই কেমন আছেন । আশাকরি সবাই ভালো আছেন ।আমিও আপনাদের শুভকামনায় ভালোই আছি । আজ প্রতিদিনের মতই আমি আমার ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি ।তবে আমার আজকের ব্লগ একটু আলাদা ।

“ আমার বাংলা ব্লগ “ এর ২৩ তম প্রতিযোগিতায় আমি আজ অংশগ্রহন করতে আমি আমার আজকের ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম ।প্রতিযোগিতার বিষয় হচ্ছে -” আমার স্কুল জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি “। সত্যি কথা বলতে আমার স্কুল , কলেজ ,বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন কোন তিক্ত অভিজ্ঞতা নেই । খুব ভাল দিন কেটেছে আমার । কারন আমি খুব শান্ত স্বভাবের ছিলাম ।আর অযথা কথা ও বলতাম না । সবচেয়ে বড় কথা ভীতু ও ছিলাম । যাই হোক ছোট একটা অভিজ্ঞতা হয়েছিল , তা খারাপ হতে পারতো হয়নি । সেই তিক্ত অভিজ্ঞতাই আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব ।

Screenshot_82.jpg
সোর্স

আমার স্কুল জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা

বন্ধুরা, আমি আমার তিক্ত অভিজ্ঞতার গল্পটি শুরু করি --- সত্যি বলতে আমার সাথে ঘটে যাওয়া এই তিক্ত অভিজ্ঞতা লিখে আমি প্রকাশ করতে পারব না । আমি একটি ছোট মেয়ে তখন আর ভীতু । এই ঘটনায় আমি মানসিকভাবে কতটা ভেঙ্গে পরেছিলাম তা আমি আপনাদের লিখে বোঝাতে পারব না ।

আমি তখন ক্লাস সিক্স এর ছাত্রী । পুরনো ঢাকার একটি গার্লস স্কুলে আমি পরতাম ।এখন মায়েরা বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে যায় ,কিন্তু আমার আম্মু কখনও স্কুলে নিয়ে যায়নি । আমি বড় কাজিনদের সাথে যেতাম ।আর স্কুল বেশী দূরেও নয় কাছেই ছিল ২০ টাকা রিকশা ভাড়া হবে এখন এমনটাই দূরত্ব । আমি স্কুলে ৯.৩০ টার মধ্যে চলে যেতাম ,শুরু হত ১০.৩০ টায় আর ছুটি ৪.৩০ শে হত । এত আগে যেতাম কারন আমি গল্প করতে করতে ওদের সাথে হেঁটে যেতাম । আমি বাসা থেকে বের হয়ে কিছুটা পথ গেলে ওদের বাসা, ওরা দাঁড়িয়ে থাকত বাসার কাছে আমাকে দেখলে ওরা ও এসে আমার সাথে স্কুলে যেত । আমি একদিন স্কুলে যাচ্ছিলাম হঠাৎ দেখি আমাদের এলাকার একটি ছেলে আমার পিছু পিছু আসছে । আমার ত বুক কাঁপছিল । উনি আমার আগে হেঁটে যাচ্ছে না সুযোগ থাকার পরেও । আমার কপাল ,হাত খুব ঘামছিল বুঝতে পারছি । আমি বার বার ভাবছিলাম কাজিনরা আসে না কেন ? বাসায় গিয়ে জানি ওরা যাবে না । কি আর করা আমি ভাবলাম ,যাক উনি বোধয় চলে গেছে ,বাঁচলাম ।

Screenshot_83.jpg
সোর্স
কাজিনদের সাথে স্কুলে যাওয়া

আমি হেঁটে হেঁটেই যাচ্ছিলাম আর ত কিছুটা পথ । কিছু পথ যেতেই দেখি উনি কোন এক দোকান থেকে বের হল এবং আবার আমার পিছু পিছু হেঁটে আসছিল ।আমার এবার খুব অস্বস্তি হচ্ছিল । ক্লাস শেষ করে ফ্রেন্ড কে নিয়ে যাচ্ছি দেখি ছেলেটি এসে দাঁড়িয়ে । ভয়ে ত আমার আবার বুক কাঁপুনি শুরু হল । আবার আমাদের পেছন পেছন হেঁটে আসছিল ।

ফ্রেন্ড ওর বাড়ির পথে হেঁটে গেল ,আমি আমার বাড়ির পথে ঢুকে পরলাম । ছেলেটিও আমার পেছন পেছন হেঁটে এলো । আমি চিন্তা করছিলাম ,উনি যদি আমাকেই না ফলো করবে তবে আমার আগে যাচ্ছে না কেন ? এভাবে কদিন গেলো ।একদিন বাসায় গিয়ে দেখি বড় ভাইয়া বাসায় আমি আম্মুকে ধরে কেঁদে ফেললাম । ওই যে বললাম আগেই আমি নরম মনের ছিলাম । যাই হোক আম্মু আর ভাইয়া ত অবাক কি হল ? আমাকে জিজ্ঞেস করছে কি হল ? আমার কান্নার পরিমান তখন আরও বেড়ে গেল । আম্মু ত ভয়ে অস্থির ,কি হল ? আমার কান্না থামিয়ে জানতে চাইল কি হয়েছে ? তখন আমি সব বললাম আর বললাম কাল থেকে আমি আর স্কুলে যাব না । ভাইয়া বলল , ঠিক আছে ,খেয়ে নে ,কাল থেকে আমি যাব তোর সাথে । এটা শুনে কিছুটা স্বস্তি পেলাম ।

Screenshot_85.jpg
সোর্স
ভাইয়ার সাথে স্কুলে যাওয়া

পরেরদিন ভাইয়া আমার সাথে বের হল ,ওমা দেখি ছেলেটি আজ আর নেই ।এভাবে পর পর কদিন গেল ,ছেলেটির দেখা আর পেলাম না ।পেছন পেছন না এলেও তার বাসার সামনে নয়ত কোন একটা দোকানে দাঁড়িয়ে থাকত । এমন কি আমার ছুটির সময় টাতেও ।ভাইয়া কদিন এভাবে গেল ,তারপর আম্মুকে এসে বলল আম্মু ওর ভুল হচ্ছে ।

আবার একা পথ চলা শুরু হল ,আবার ছেলেটির ও আগমন শুরু হল ।আমার ও অস্বস্তি বেড়েই চলল । এভাবে যাচ্ছিল অস্বস্তি নিয়ে সময় ।একদিন দেখি ছুটির সময় ছেলেটি দারোয়ান আংকেলের সাথে কথা বলছে ।দারোয়ান আংকেল কে উনি বুঝাচ্ছে ,তার বোন এ স্কুলে পড়ে , তাকেই সে নিতে আসে রোজ । দারোয়ান আংকেল ও এজন্য তার সাথে ভালো ভাবে কথা বলে । কিন্তু আমিতো জানি উনি কেন এসেছে । এত ভয় পেতাম তখন ,আজ ভাবলেই অবাক হই ।

যাই হোক এভাবে দিন কেটে যাচ্ছিল । আমি আমার অস্বস্তি নিয়ে স্কুল করে যাচ্ছিলাম । মেজাজ খুব খারাপ হত এটা ভেবে ,মানুষের কি খেয়ে দেয়ে কাজ নাই ? তার নিজের পড়াশুনা নাই ? এসব মনে মনে ভেবে রাগ সামলে নিয়ে দিন পার করছিলাম । আর ছেলেটির বাবার এলাকায় কিন্তু অনেক নাম আছে । এলাকায় নিজের বাড়ি তাদের । বাবার কথা ও ভাবে না । আমিতো ভাবতাম ,আমার এ এলাকায় আমার সব চাচা ,ফুপুরা থাকে ,তারা যদি দেখে আমার পেছন পেছন একটা ছেলে রোজ যায় ,তবে তো আমাকেই দোষ দেবে,আমার সাথে ছেলেটার কিছু আছে ভেবে ।উফফ , কি যে যন্ত্রনা নিয়ে দিন পার করছিলাম , তা বলে বোঝাতে পারব না ।

এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে গেল , একদিন হঠাৎ আমি স্কুলে ঢোকার আগেই ছেলেটি আমার আগে স্কুলে গেল এবং দারোয়ান আংকেলের সাথে কি কথা বলছিল । আমি স্কুল গেট পার হতেই ,ছেলেটি দারোয়ান আংকেলের হাতে কিছু একটা দিল । দারোয়ান আংকেল কিছু বোঝার আগেই ছেলেটি আমাকে ডাকতে বলায় উনিও আমাকে ডাক দিল ।ঠিক সেই মুহূর্তে আমাদের স্কুলের বাংলা মিস নাইমা রহমান আমাদের তিনজনকে দেখতে পেল । মিস বুঝতে পারল ,এখানে কিছু একটা হচ্ছে । আর বলে রাখা ভাল আমাদের স্কুলের সবচেয়ে রাগী মিস নাইমা মিস আর স্যার দের মধ্যে নুরুজ্জামান স্যার রাগী ছিলেন । স্কুলের সবাই এই দুজনকে ভয় পেত । পর ত পর ওই রাগী মিসের সামনেই হল । যা হওয়ার ত হল । মিস দারোয়ান আংকেলকে আর আমাকে ডাকার সাথে সাথে ছেলেটি হন হন করে চলে গেল ।

Screenshot_86.jpg
সোর্স
টিচার্স রুমে সবাই যখন

মিস আমাদের দুজনকে প্রিন্সিপ্যাল ম্যাডামের রুমে নিয়ে গেল ।আমার ত বুক দুরু দুরু করে কাঁপছে । আগেই বলেছি আমি ভীতু ছিলাম ।আমি যে বলব কিছু ,সেই শক্তি আমার নেই ।মিস সবকিছু প্রিন্সিপ্যাল ম্যাডামকে বলছিল ,দারোয়ান আংকেলকে খুব শাসাচ্ছিল। বলল দেখি কি হাতে দাও , দারোয়ান আংকেল দিল একটা কাগজের টুকরো । সত্যি কথা বলতে দারোয়ান আংকেল ও বুঝতে পারেনি । উনি ভাবতো ওটা আমার ভাই বা কেউ ।কারন প্রতিদিন ই তো আমার সাথে পেছন পেছন আসতো ।

শেষে কাগজের টুকরো খুলে দেখে নিয়ে , নাইমা মিস দারোয়ান আংকেল আর আমাকে এক হাত দেখাবেন এভাবেই কাগজটি খুলতে লাগলো । খুলে দেখে সেটা একটা প্রেমপত্র ।আমিতো মনে মনে আল্লাহকে ডাকছিলাম , আমার উপর যে দোষ আসতে পারে ,তাতো আমি আগেই ধারনা করেছিলাম ।দোষ না করেও আজ আমি দোষী ।স্কুল শুরু হয়নি ,তাই প্রিন্সিপালের রুমে সবাই ভীর করছিল শোনার জন্য । আমি সিক্সে পড়া একটি ছোট মেয়ে আজ বাইরের একটি ছেলের জন্য সবার কাছে দোষী হলাম । সবাই আমার দিকে ,ঠিক অমন করেই তাকাচ্ছিল ।আর আমি মাটির সাথে মিশে যাচ্ছিলাম ।

তবে ভাগ্য একদিক দিয়ে ভালো আমার নাম ছেলেটি জানে না ,তাই পত্রের উপরে নামটা লিখেনি , লিখেছিল নাকি 'অপরিচিত' , তাই মিস বলছিল । আর ইতি লিখেছিল নাকি -পিছু পিছু আসা ছেলেটি । যাই হোক দারোয়ান আংকেলকে খুব করে বকছিলেন । দারোয়ান আংকেল বলল , তার ভুল হয়ে গেছে ,সে বুঝতে পারেনি ছেলেটি আমার ভাই না ।মিস আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছিল যে, এতটুকু মেয়ে এই বয়েসেই প্রেম করে বেড়ায় । আমার খুব রাগ লাগছিল সেদিন ,স্কুলে নিজের একটা ইমেজ নষ্ট হওয়াতে ।ছেলেটির উপর এত রাগ হচ্ছিল ,সামনে পেলে দু গালে চড়াতাম । আমার ফ্রেন্ডরা সব দাঁড়িয়ে আছে ,ওরা ত জানে আমি কেমন ।দেখে মনে হচ্ছে ওরাও আমার জন্য কষ্ট পাচ্ছে ।

Screenshot_84.jpg
সোর্স
মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরা আমি

প্রিন্সিপ্যাল ম্যাডাম মিস কে থামতে বলে আমার কাছে জানতে চাইল , আমি তাকে চিনি কিনা ? আমার সাথে তার কি ? এত মোলায়েম করে ম্যাডাম কথা বলছিল ,আমি কেঁদেই দিলাম তখন । প্রিন্সিপ্যাল এম্নিতেই খুব শান্ত স্বভাবের মানুষ ছিলেন । দারোয়ান আংকেল তখন বলল , মিস এই মেয়ের কোন দোষ নেই । আসলে ছেলেটির সব দোষ ।মেয়েটি খুব শান্ত স্বভাবের সব সময় দেখি । তখন প্রিন্সিপ্যাল বলল , ঠিক আছে আজকের মত সব শেষ করলাম । আর যেন এমন কিছু না হয় ,হলে তোমার আব্বু -আম্মুকে ডাকব । এত তিক্ত অভিজ্ঞতা আমার জীবনে ঘটবে কখনও বুঝিনি । সেদিন স্কুল করেছি সত্যি মন বসেনি কখন বাসায় যাব তাই ভাবছিলাম । সবাই আমাকে এমনভাবে দেখছে ,আমি যেন একজন আসামী মানুষ , শুধু আমার ফ্রেন্ডরা ছাড়া ।সেদিন বাসায় গিয়ে খুব কেঁদেছি । আম্মু অনেক বুঝালো ।এরপর ভাইয়া ছেলেটিকে ডেকে সব বলল । আর বলেছে তোমার বাবার একটা সম্মান আছে আমি তাকে কিছু বলতে চাইনা । আমি আশাকরব তুমি আর এমন কিছু করবে না ,যাতে তাদের কাছে আমাকে যেতে হয় । এরপর ছেলেটি পেছন পেছন না এলেও দুই টাইম কোথাও না কোথাও দাঁড়িয়ে থাকত ।

এত বছর পর স্কুল জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বলতে পেরে ভালোই লাগছে । আজ ভাবছি ,কেন এত ভীতু ছিলাম ।সেদিন মনের যে কষ্ট হয়েছিল , তা লিখে ঠিক হয়ত বোঝাতে পারিনি । আশাকরি আমার তিক্ত অভিজ্ঞতা আপনাদের কিছুটা হলেও বোঝাতে পেরেছি । আজ এ পর্যন্তই । সবাই ভালো থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন ।

ধন্যবাদ সবাইকে

@shimulakter

Sort:  
 2 years ago 
আপু বর্তমান যুগে এ ধরনের বখাটে ছেলে অনেক রয়েছে। যারা স্কুলের মেয়েদের পিছু নেয় এবং তাদেরকে সব সময় বিরক্ত করে। সত্যি আপু এটা অনেক দুঃখজনক একটা ঘটনা।
 2 years ago 

হে ভাইয়া, অনেক ধন্যবাদ আমার তিক্ত অভিজ্ঞতার গল্পটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য। অনেক অভিনন্দন আপনাকে।

 2 years ago 

ঘটনাটি পড়ে খুবই খারাপ লাগলো। আসলে যতদিন যাচ্ছে তত বখাটে ছেলের আড্ডা বেড়ে চলছে, বেড়ে চলছে ইভটিজিং এর সংখ্যা। যাইহোক আপনি আপনার সেই পূর্বের দিনগুলোর কিছু স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। আপনার জীবনের অজানা কিছু তথ্য জানতে পারলাম।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। আমার ব্লগটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য। মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগলো। অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

Hi, @shimulakter,

Thank you for your contribution to the Steem ecosystem.

Your post was picked for curation by @rex-sumon.


Please consider voting for our witness, setting us as a proxy,
or delegate to @ecosynthesizer to earn 100% of the curation rewards!
3000SP | 4000SP | 5000SP | 10000SP | 100000SP

 2 years ago 

আপনি খুব সুন্দর ভাবে স্কুল জীবনের একটি তিক্ত অভিজ্ঞতা পরে ভালো লাগলো এবং অনেক খারাপ লাগলো। সত্যি ই এমন বখাটে ছেলে এখন সমাজে এভেলে এভেল আছে। আপনি তো ওই সময় অনেক ছোট ছিলেন তারপর আপনার পিছনে বকাটে ছেলেটি পিছে নিয়েছিল। আপনি বাড়িতে গিয়ে আপনার মাকে ধরে কান্নাকাটি করলেন আর স্কুলে যাবেন না। সত্যি এগুলো খুব দুঃখজন। খুব সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

সত্যি বলতে ওই বয়সে এমন একটা ঘটনায় আমি কতটা আহত হয়েছিলাম বোঝাতে পারব না। আমি এমনিতে ই শান্ত স্বভাবের, সেই আমার পেছন পেছন একজন মানুষ রোজ আসে ব্যাপারটা আমার জন্য সহজ ছিল না। আপনার মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগলো আপু। অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.31
TRX 0.12
JST 0.034
BTC 64418.55
ETH 3157.64
USDT 1.00
SBD 4.06