লাইফ স্টাইল -- 😐 " দুর্বিষহ কয়টি দিন যেভাবে কেটেছে "
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয়"আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগন,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ্র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।
আমি @shimulakter,"আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার।আমি ঢাকা থেকে আপনাদের মাঝে যুক্ত আছি।আমি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিষয় নিয়ে ব্লগ শেয়ার করে থাকি।কিন্তু বেশকিছু দিন আমি আমার অ্যাক্টিভিটিজ আপনাদের মাঝে ধরে রাখতে পারিনি।এর যথেষ্ট কারন আছে।আর অনেকদিন অ্যাক্টিভ না থাকার কারন আপনারা সবাই জেনেছেন ইতিমধ্যে গণমাধ্যম দ্বারা।নতুন করে আর কি ই বা বলবো।দেশের এই দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে খুব বেশী নাজেহাল সময় পার করেছি আমি।সেই বিষয় নিয়ে আজ আপনাদের মাঝে হাজির হলাম।আশাকরি সঙ্গেই থাকবেন।
দুর্বিষহ কয়টি দিন যেভাবে কেটেছেঃ
কানভা দিয়ে বানানো
বন্ধুরা,আজ আবার হাজির হয়ে গেলাম নিজের জীবন থেকে নেয়া কিছু দিনের কিছু স্মৃতি নিয়ে। চলে এলাম আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে।গেলো এক সপ্তাহ কেমন কেটেছে সবার তা আমরা সবাই কম-বেশী জানি।এমন পরিস্থিতিতে ভালো যে থাকা যায় না বা ভালো থাকতে চাইলে ও চোখ -কান বন্ধ করে ভালো থাকা যে যায় না তা আমরা সবাই ই বেশ ভালো ভাবেই জানি।তাই এই পরিস্থিতিতে আমার ও ভালো থাকাটা হয়ে উঠেনি।দিনগুলো কেমন দুর্বিষহ কেটেছে তাই আজ তুলে ধরব আপনাদের মাঝে।
একটি সপ্তাহ কেমন কেটেছে?? এর উত্তরে একেক জন একেক রকম অনুভূতির কথা শেয়ার করবে।তবে আমার কেটেছে দুর্বিষহ।প্রথম দুইদিন ইউ টিউব আর ফেসবুকে অনেক খবর দেখা হয়েছে।যে আমি ফেসবুকিং করার ইচ্ছা পোষন করিনা।সেই আমি ওই সময়ে বার বার ফেসবুকের নানা ভিডিও দেখে, ইউ টিউবের নানান খবর দেখে অসুস্থ হয়ে পরেছিলাম।টানা দুদিন খুবই সিক ছিলাম।এরপর নেট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ভাবলাম যাক খবর দেখা হবেনা মনের মধ্যে চাপটা ও কম হবে।কিন্তু যখন টিভিতে খবর দেখতে যাই।খবরে তেমন কিছুই আসলে জানা যাচ্ছিল না।অনেকে আহত ও নিহত হয়েছে বললে ও তা দেখানো হচ্ছিল না।এতে করে আমি আরো বেশী অসুস্থ হয়ে পরেছিলাম।পরের দিন ডাক্তারের কাছে যেতে হয়েছিল।পরিবারের সবাই ফোন দিয়ে অনেক বুঝিয়েছিল আমাকে।নিজের মনকে শক্ত করার চেষ্টা করছিলাম।
মোবাইল থেকে স্ক্রিন শর্ট
এরপর চেষ্টা করছিলাম খাতা নিয়ে কিছু একটা লেখার।কবিতা লেখার চেষ্টা করলাম।কিন্তু কিছুতেই একটি লাইন ও আমার কলম দিয়ে বের হলো না।এরপর ঠিক করলাম রঙিন কাগজ দিয়ে কিছু একটা তৈরি করার।কিন্তু না এখানেও আমি কিছুই তৈরি করতে পারলাম না।এরপর রঙ নিয়ে বসে আঁকার চেষ্টা করলাম।সেখানেও আমি ফেল।এত বড় সময় কি করে কাটাই? খুব বিরক্ত লাগতে শুরু করেছিল।হঠাৎ মনে হলো আমিতো রেডিও শুনতে পারি।এক সময় অনেক রেডিও শুনতাম আমি।মোবাইলের রেডিও শুনতে গিয়ে আমি ৯৬.৪ fm এ সঙ্গে ই আছি শো টি নিয়মিত শুনতে শুরু করলাম।এখানে আর জে কাব্য ও যাযাবর রাসেল সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে সবাইকে কিছুটা বিনোদন দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন দিন-ভর।তাদের শো টি সাকসেস।কারন বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে থেকে প্রতিনিয়ত সবাই এক এক করে কল দিয়ে তাদের মনের অনুভূতি গুলো শেয়ার করছিলো। আর কথার ফাঁকে ফাঁকে সবার পছন্দের গান ও প্লে হচ্ছিল। কিছুটা হলে ও মানসিক শান্তি ফিরে পেয়েছিলাম বাকি কটা দিন।এরপর রেডিও ফুর্তি ও শোনা হয়েছিল।
মোবাইল থেকে স্ক্রিন শর্ট
এরপর ছেলের সাথে সাপ লুডু খেলে নিজেকে সবকিছু ভুলে থাকার চেষ্টা করে গিয়েছি।আজ অনেকটাই সুস্থ আছি।কাল নেট আসার পর প্রথমেই ডিসকোডে সবার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি।তখন মনে হয়েছে হয়তো সবকিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।হয়তো সবকিছুর মাঝে থেকে সব চাপ মন থেকে কিছুটা সরেও গিয়েছে।কিন্তু মনের মাঝে একটি ক্ষত কিন্তু রয়েই গেলো।এই ক্ষতটি মাঝে মাঝেই আমাকে ভোগাবে।দুর্বিষহ এই সাতটি দিন কখনও ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়।ভুলতে চাইলেও আসলে অনেক কিছু ভোলা আমাদের হয় না।আমরা দিনের পর দিন অনেক কিছুই সয়ে যেতে শিখে নেই। কিন্তু যারা অধিকারের দাবীতে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলো তাদের পরিবার পরিজন কিভাবে সহজ হবে এই ভাবনাটা মনের মাঝে রয়েই গেলো।এমন এক স্বাধীন দেশে আমরা বসবাস করি যেখানে অধিকারের কথা বলাটাও ঠিক নয়।নিজের বাক স্বাধীনতা ও নেই।তবে এ কেমন স্বাধীনতা পেয়েছি আমরা??
আজ আর লিখছি না।এখানেই ইতি টানছি। ভালো থাকবেন সবাই।সুস্থ থাকবেন।পরিবার-পরিজনকে নিয়ে সুন্দর সময় কাটাবেন এমনটাই প্রত্যাশা করি।
পোস্ট বিবরন
শ্রেনি | লাইফ স্টাইল |
---|---|
প্রয়োজনীয় ডিভাইস | Samsung A 20 |
ফটোগ্রাফার | @shimulakter |
স্থান | ধানমন্ডি ,ঢাকা |
আমার পরিচয়
আমি শিমুল আক্তার।আমি একজন বাংলাদেশী।আমি এম এস সি(জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি স্বাধীনচেতা একজন মানুষ।ভালোবাসি বই পড়তে,নানা রকমের রান্না করতে,ফটোগ্রাফি করতেও আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।
আসলেই ইন্টারনেট না থাকার কারণে আমাদের সকলের জীবনই এমন হয়ে গিয়েছিল কি করব আর কি করবো না কিছুই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। আমি তো পুরনো দিনের নাটক গুলো দেখতে শুরু করে দিয়েছিলাম। আর অন্যের মোবাইল থেকে বিভিন্ন ধরনের গেমস নিয়ে খেলতে শুরু করে দিলাম।
সত্যিই সবার ই খুব খারাপ সময় গিয়েছে।মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাই।
সত্যিই এ যেন এক অপরিচিত জীবন। এই জীবনের সাথে আজ আর অভ্যস্ত নই আমরা। বাংলাদেশ এক অস্বাভাবিক অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে গেল। জানিনা সামনে কি আছে। তবে ভারতে বসেও আপনাদের জন্য অনেক চিন্তা হচ্ছিল। মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াবে এটাই প্রতিক্রিয়াশীল মানুষের বৈশিষ্ট্য। তবে এমন ইন্টারনেটহীন জীবনের কথা আজ যেন আর কল্পনাই করা যায় না। তবু সব কিছু আমাদের কেমন মানিয়ে নিতে হয়। এটার নামই হয়তো জীবন।
ঠিক দাদা এর ই নাম জীবন।
X-promotion
ওই দিনগুলো আসলেই অনেকটা কষ্টে কেটেছে ।আমার সারাদিন টিভির সামনে বসে কেটেছে নিউজ দেখে।আপনি ছেলে সাথে লুডু খেলেছিলেন।আসলে সময় পার করার জন্য লুডু অনেকটা ভালো একটি মাধ্যম।ভালো লাগলো আপনার পোস্টটির।ধন্যবাদ আপু সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।